লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মো: মনোয়ারুল হাসান
মোট লেখা:২
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ডাটা ব্যাকআপের কিছু সহজ নিয়ম ও নিরাপত্তা
ডাটা ব্যাকআপের কিছু সহজ নিয়ম ও নিরাপত্তা
মুহম্মদ মইনুল হোসেন
ব্যাকআপ কাকে বলে, কত ধরনের, কোন ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশন ভালো, জচঙ/জঞঙ কী, এগুলো বলার জন্য লেখাটি নয়। এ লেখাটির উদ্দেশ্য ডাটা ব্যাকআপ সম্পর্কে কিছু সহজ টিপ ও ব্যাকআপ ডাটার নিরাপত্তা বিষয়ে অবগত করা এবং এটা থেকে কেউ যদি উপকৃত হন, তবেই এই লেখাটি সার্থক বলে বিবেচিত হবে। আমার এক যুগের বেশি সময় ডাটা ব্যাকআপ, রিকোভারি ও নিরাপত্তার সাথে যুক্ত থাকার সময় যে নিয়ম মেনে কাজকে সহজ করার চেষ্টা করেছি তা তুলে ধরা হয়েছে এ লেখায়।
০১. ব্যাকআপ, ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেটরকে একসাথে কাজ করতে হবে ডাটার ব্যাকআপ প্ল্যান, নিরাপত্তা ও ডিজাস্টার রিকোভারির সময়।
০২. ডাটাবেজ ব্যাকআপ নেয়ার সময় আর্কাইভ লগের ব্যাকআপ নিশ্চিত করা জরুরি। সুতরাং ডাটাবেজ ব্যাকআপ প্ল্যান করার সময় আর্কাইভ লগের ব্যাকআপ একসাথে অথবা আলাদা আলাদা করতে পারেন। আপনার ডাটাবেজের আর্কাইভ লগ যদি প্রচুর তৈরি হয়, তবে নির্দিষ্ট সময় পরপর নিয়মিতভাবে আর্কাইভ লগ ব্যাকআপ করে আর্কাইভ লগের জায়গাটি ফাঁকা রাখতে পারেন।
০৩. ব্যাকআপ প্ল্যান করার সময় অবশ্যই অ্যাপ্লিকেশন ঙহিবৎ-এর কাছ থেকে জানতে হবে, কোন কোন ফাইলগুলো তার আপ্লিকেশনে আপ করা জরুরি। তেমনি ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বলবে ডাটাবেজ ব্যাকআপ এবং আর্কাইভ লগ ব্যাকআপ কখন, কীভাবে নিতে হবে। ব্যাকআপ অ্যাডমিন লক্ষ রাখবেন কোনো কোনো ডাটা ডুপ্লিকেট হচ্ছে কিনা, ব্যাকআপ হতে কত সময় লাগছে এবং ডাটা রিস্টোর (restore) করতে কত সময় লাগতে পারে। রিস্টোর সময়টি অবশ্যই ডাটাবেজ অ্যাডমিন ও অ্যাপ্লিকেশন অ্যাডমিন জানা প্রয়োজন।
০৪. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রচুর ডুপ্লিকেট ব্যাকআপ করা হয় এবং এতে প্রচুর স্টোরেজ ও সময় নষ্ট হয়। একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে।
যদি সাপ্তাহিক ব্যাকআপ Full Backup হয় এবং মাসিক ব্যাকআপ ও ঋঁষষ ইধপশঁঢ় হয়, তবে একটি সাপ্তাহিক বাদ দিয়ে সেই সপ্তাহে মাসিক ব্যাকআপ চালানো হলে একটি সাপ্তাহিক ব্যাকআপ কমে যায়। মাসিক ঋঁষষ ইধপশঁঢ় এবং ডাটা রিটেনশন সবসময়ই বেশি থাকে। তেমনি মাসিক এবং বার্ষিক ব্যাকআপের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
০৫. ব্যাকআপ সময় বেশি লাগার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। সাধারণত প্রচুর ছোট ছোট ফাইল থাকলে, ল্যান (LAN) ব্যাকআপ, ব্যাকআপ এবং অফিসের জন্য যদি একই খঅঘ হয়, ব্যাকআপ সার্ভার ও যে সার্ভার থেকে ডাটা ব্যাকআপ করা হচ্ছে তাদের যদি দূরত্ব অনেক হয় (different location), একই সময় যদি প্রচুর ব্যাকআপ একসাথে স্টার্ট হয়, একটি সার্ভার থেকে যদি একাধিক ব্যাকআপ চলে।
০৬. ব্যাকআপ বেশি লাগার কারণগুলো কিছু ক্ষেত্রে এড়ানো যায়
ক) অ্যাপ্লিকেশন ও ডাটাবেজ অ্যাডমিনের সাথে কথা বলে অ্যাপ্লিকেশনটির চরপশ এবং ঙভভ-ঢ়রপশ সময় নির্ধারণ করুন এবং Off-pick সময়ে ব্যাকআপ চালান।
খ) যদি আপনার অফিসে একই ল্যান অফিসের কাজে এবং ব্যাকআপের কাজে ব্যবহার হয়, তবে অফিসের পরে মধ্যরাতে ব্যাকআপগুলো Auto Schedule করে দিন।
গ) কোনো ফোল্ডারে অসংখ্য ছোট ফাইল থাকলে, সেগুলো সাব-ফোল্ডারে ভেঙে ব্যাকআপ নেয়ার চেষ্টা করুন।
ঘ) একই সার্ভারে একই সময় যেন একটির বেশি ব্যাকআপ না চলে তা লক্ষ রাখুন।
ঙ) অধিক দূরবর্তী জায়গা থেকে ব্যাকআপের সময় ফাইবার অপটিক মিডিয়াম ব্যবহার করার কথা চিন্তা করতে পারেন অথবা যদি সম্ভব হয় ব্যাকআপ সার্ভার লোকাল রাখার চেষ্টা করুন।
০৭. ব্যাকআপ অ্যাডমিন ও ডাটাবেজ অ্যাডমিনের কাজটি ডাটা রিকোভারির সময় আলাদা করা প্রয়োজন। বিপদের মুহূর্তে কে ডাটা রিকোভার করবে, কে ডাটাবেজ আপ করবে, কে অ্যাপ্লিকেশন আপ করবে ইত্যাদি বিষয় আগে থেকে নির্ধারণ করে রাখুন।
০৮. বছরে একবার অন্তত ক্রিটিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন, ডাটাবেজের উৎরষষ ঞবংঃ করুন এবং তার একটি SOP তৈরি করে রাখুন। ডাটা রিকোভারির বড় সাফল্য নির্ভর করে ড্রিল টেস্টের ওপর।
০৯. ব্যাকআপ যদি টেপে হয়, তবে টেপগুলো ডাটা পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর লাইব্রেরি থেকে বের করে ভল্টে রাখুন এবং ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনে সেটা আপডেট করুন। মনে রাখা প্রয়োজন, কোনো ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনই লাইব্রেরি থেকে বের করা টেপের Location auto আপডেট করতে পারে না। ভল্টে রাখা টেপের লোকেশন আপডেট না করলে আপনি পরে ডাটা রিকোভারির সময় বিপদে পড়বেন।
১০. টেপ ব্যাকআপ সাধারণত ডিস্ক ব্যাকআপের চেয়ে ধীরগতির হয়। সুতরাং, খুব জরুরি ডাটাগুলো ডিস্কে এবং যে ডাটা রিকোভারি করতে সময় পাবেন তা টেপে রাখুন। অবশ্যই প্রত্যেকটি ক্রিটিক্যাল ডাটাবেজ, অ্যাপ্লিকেশনের ফুল ব্যাকআপ ডিস্কে রাখার চেষ্টা করুন। লম্বা সময় যে ডাটাগুলো রাখতে হবে, প্রয়োজনে তা টেপে রাখুন।
১১. ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশন (ব্যাকআপ সার্ভার) সাধারণত দুই ধরনের লাইসেন্স ব্যবহার করতে পারে। একটি হলো ক্লায়েন্ট বেজ লাইসেন্স এবং অপরটি হলো ক্যাপাসিটি বেজ লাইসেন্স। ক্লায়েন্ট বেজ লাইসেন্স হলো প্রতিটি ক্লায়েন্টের জন্য একটি লাইসেন্স। আর ক্যাপাসিটি বেজ লাইসেন্স হলো ক্যাপাসিটি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত যত ইচ্ছা আপনি ক্লায়েন্টের ব্যাকআপ নিতে পারবেন।
১২. সাধারণত ব্যাকআপে যে সময় লাগে, রিস্টোর করতে তার দ্বিগুণ সময় সময় লাগবে ধরে নেয়া যায়। তবে আরো কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে, যে সার্ভার ও স্টোরেজের ডাটা ব্যাকআপ করা হয়েছে এবং যে সার্ভার ও স্টোরেজে রিস্টোর করা হচ্ছে তা একই ধরনের কিনা বা তার পারফরম্যান্স কাছাকাছি কিনা। অনেক সময় ডাটা একই সার্ভারে রিস্টোর করার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে দ্বিগুণ সময় লাগবে বলে আমরা ধরে নিতে পারি।
১৩. বেশিরভাগ ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনে পূর্বের ব্যাকআপের ডাটা রিটেনশন এখন নতুন করে বাড়ানো যায়। ধরা যাক, একটি ব্যাকআপ ডাটা ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে, কিন্তু অ্যাপ্লিকেশন অ্যাডমিন বা ডাটাবেজ অ্যাডমিন চাচ্ছেন আরো ৬ মাস ডাটা থাকুক। সেক্ষেত্রে ওই পুরনো ব্যাকআপের রিটেনশন আরো ৬ মাস বাড়ানো যাবে।
১৪. ব্যাকআপ প্ল্যান করার সময় দুটি কথা মাথায় রাখা প্রয়োজন। আপনি যে ব্যাকআপটি নিচ্ছেন তা কি ডিজাস্টার রিকোভারির প্রয়োজনে নাকি পড়সঢ়ষরধহপব ও Regulatory প্রয়োজনে। সাধারণত যদি ডাটাবেজ ও অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকআপ ছোট হয়, তবে প্রতিদিন ঋঁষষ ইধপশঁঢ় নিতে পারেন। যদি সেটা উরংধংঃবৎ জবপড়াবৎু প্রয়োজনে হয়। কেননা এতে WvUv restoreI রিকোভারির সময় প্রসেসগুলোকে অনেক সহজ করবে।
১৫. কোনো অ্যাপ্লিকেশন বা ডাটাবেজে মেজর চেঞ্জ রিকোয়েস্টের আগে অবশ্যই একটি ব্যাকআপ ডিস্কে রাখুন। অ্যাপ্লিকেশন, ডাটাবেজ ও ব্যাকআপ অ্যাডমিন একসাথে ডাটা ব্যাকআপ ও রিকোভারি প্ল্যান করা জরুরি।
১৬. ডাটা এনক্রিপশনে (Encryption) শব্দটি আপনি প্রায়ই শুনবেন, ব্যাকআপ ডাটাও ঊহপৎুঢ়ঃরড়হ করা প্রয়োজন হতে পারে, তবে মনে রাখতে হবে বেশিরভাগ ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশন এনক্রিপশনের জন্য লাইসেন্স কিনতে হয়। সাধারণত দুটি কারণে মূলত ডাটা Encryption-এর প্রয়োজন হয়, একটি হলো ডাটা মুভমেন্টের প্রয়োজন হলে এবং অন্যটি হলো নিরাপত্তা অডিট compliance-এর জন্য।
১৭. ব্যাকআপ Tape স্থানান্তরের জন্য “Turtle Case” ব্যবহার হয়, যা এর নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা হতে রক্ষা করে এবং এটি ব্যাকআপ compliance-এর একটি অংশ।
১৮. অনেক ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনে ডাটা ব্যাকআপ নেয়ার আগে Password Protected করে নেয়া যায়। এতে ব্যাকআপ ডাটা দেখার জন্য ও রিস্টোর করার জন্য ওই পাসওয়ার্ডটি প্রয়োজন। তবে এ পদ্ধতিতে ব্যাকআপ নেয়া নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি জটিলতা বাড়ায়। কেননা, তা রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য প্রত্যেকটি ব্যাকআপ ট্র্যাকিং করা প্রয়োজন।
১৯. প্রত্যেকটি ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনে নিজস্ব ডাটাবেজ আছে যাতে প্রত্যেকটি ব্যাকআপের বিস্তারিত সময়, ব্যাকআপ কনটেন্ট, ব্যাকআপ টাইপ, ব্যাকআপ মিডিয়া বলা থাকে, ফলে ডাটাবেজটি ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর নিরাপত্তাও জরুরি। বেশিরভাগ ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশন তার নিজের ডাটাবাজের ব্যাকআপ নিতে পারে না, তাই ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো অন্যত্র ব্যাকআপ রাখার দায়িত্ব ব্যাকআপ অ্যাডমিনের।
২০. ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারকারীদের অপপবংং ঈড়হঃৎড়ষ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনে অ্যাডমিন হিসেবে থাকবেন তারা ব্যাকআপ অ্যাপ্লিকেশনের সব Root Privilegeপাবে। User Privilege ব্যাকআপ অ্যাডমিনেরা ব্যাকআপ মনিটরিং এবং Start/Stop ধরনের কাজগুলো করতে পারবেন। মনিটরিং Privilege User mvaviYZ Audit Members/Senior Management-এ হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, ওরের টিপগুলো প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায় নীতিমালার ভিত্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে