লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মইন উদ্দীন মাহমুদ
মোট লেখা:২৭
লেখা সম্পর্কিত
তথ্যসূত্র:
প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ চালাবে আগামী দিনের প্রযুক্তি
ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ চালাবে আগামী দিনের প্রযুক্তি
মইন উদ্দীন মাহ্মুদ
যখনই আমরা শিল্প তথা ইন্ডাস্ট্রি শব্দটির কথা শুনি, তখন চিন্তা- ভাবনায় কারখানার কথা অথবা লম্বা চিমনিযুক্ত পাইপ তথা স্মোকস্ট্যাকের কথা আমাদের মাথায় চলে আসে। এমনকি প্রযুক্তি প্রতিদিনই খুব দ্রæততার সাথে বেড়ে উঠতে শুরু করার পরও এটি আমাদের মনে গেথে আছে। যে ম্যানুফেকচারেরা এই গেমে টিকে থাকতে চান, তাদেরকে অবশ্যই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর সে কারণেই বর্তমান ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনকে আঁকড়ে ধরে থাকতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব যা যা আমাদের সামনে নিয়ে আসবে, তার সবকিছুকে অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে হবে। সুতরাং, এখন আমাদের দরকার ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন প্রবণতায় চালিত ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এর ব্যাপারে মনোযোগ দেয়া।
ম্যানুফেকচারদের তথা বৃহদাকার উৎপাদকদের জন্য ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের গুরুত্ব কতটুকু? সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, ২০০০ বৃহদাকার উৎপাদকদের মধ্যে ৮৬ শতাংশই প্রত্যাশা করেন পণ্যের দাম কম দেখতে এবং তারা তাদের ডিজিটালায়নের প্রচেষ্টায় পরবর্তী পাঁচ বছরে বার্ষিক আয় বাড়াতে চান।
ইন্ডাস্ট্রি ৪.০
প্রস্তর যুগের অবসানের পর থেকে মানবসভ্যতার বিকাশ ঘটতে থাকে বেশ দ্রুত গতিতে। তবে মানবসভ্যতার চরম বিকাশ লাভ করে কয়েকটি শিল্পবিপ্লব বা ইন্ডাস্ট্রি শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে। প্রথম শিল্পবিপ্লবকে (অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগ থেকে শুরু করে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ পর্যন্ত) বলা হয় ইন্ডাস্ট্রি ১.০ বা প্রথম শিল্পবিপ্লব। ইন্ডাস্ট্রি ১.০ বা প্রথম শিল্পবিপ্লব যুগে বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে উৎপাদন ব্যবস্থায়। দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লব (বিংশ শতাব্দীর) বা ইন্ডাস্ট্রি ২.০-কে বলা হয় প্রাযুক্তিক বিপ্লব। এ সময়ের বেশিরভাগ আবিষ্কার ছিল প্রকৌশল ও বিজ্ঞানভিত্তিক। এ সময়ের উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারগুলো হচ্ছে রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিক পাখা, টাইপরাইটার, টেলিফোন, ডিজেল ইঞ্জিন, ওয়াশিং মেশিন, অ্যারোপ্লেন, মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য জিনিস। তৃতীয় শিল্পবিপ্লব (সত্তর দশকের শেষ ভাগ) বা ইন্ডাস্ট্রি ৩.০-এ আসে কমপিউটার এবং রোবোটিকস ব্যবহৃত অটোমেশনের হাত ধরে। এখন আমরা পৌঁছে গেছি পরবর্তী শিল্পবিপ্লব অর্থাৎ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মাইলফলক তথা ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এ। নতুন ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ হিসেবে পরিচিত। এটি একটি ট্রান্সফরমেশন, যা মেশিন জুড়ে ডাটা সংগ্রহ এবং অ্যানালাইজ করে, কম খরচে উঁচুমানের পণ্য উৎপাদনে সক্ষম করে দ্রুততর, অধিকতর নমনীয়, অধিকতর দক্ষ প্রক্রিয়ার ব্যবহার। এই চতুর্থ শিল্পবিপ্লব প্রচলিত বৃহদাকার উৎপাদন ও প্রাযুুক্তিক অনুশীলনকে একীভূত করে।
জার্মান সরকার হ্যানোভার ফেয়ারে ২০১১ সালে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ টার্মটি চালু করে।
অতি সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের অ্যানুয়াল মিটিংয়ে এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে নেবে কখন তাদের প্রয়োজনাতিরিক্ত যন্ত্রাংশ দরকার হবে, প্রোডাকশন সিস্টেম অপারেশনের সময় রান করবে তাদেব নিজস্ব কোয়ালিটি কন্ট্রোল। ফলে পর্যবেক্ষণের সময় কমাবে। রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করবে এবং কম্পোনেন্ট সরাবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশনে এ ধরনের দৃশ্যপট ধীরে ধীরে বাস্তবতায় রূপ নিচ্ছে।
এগুলো ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো, যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলেজেন্স (এআই) এবং এজ কমপিউটিং। এগুলো অসংলগ্ন বা ধারাবাহিকহীন ও প্রসেস ইন্ডাস্ট্রির জন্য অফার করে অপরিমেয় সুযোগ-সুুবিধা, কেননা, এগুলো উন্মুক্ত করে নতুন নতুন বিজনেস মডেল এবং সম্ভাব্য উৎপাদনশীলতা। আগামী বিশ্বে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এটি তাদেরকে অপরিহার্য করে তোলে।
নতুন টেকনোলজির জন্য ফাউন্ডেশন হিসেবে ডাটা
বিস্ময়কর হলেও সত্য, ডাটার পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে হবে আগামী দিনের টেকনোলজি। ওইসব ডাটা দিন দিন বেড়েই চলেছে ইন্ডাস্ট্রির ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের জন্য। ডিজিটাল সলিউশন্স যেমন সিমেন্স ডিজিটাল এন্টারপ্রাইজের পোর্টফলিও ইতোমধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশনের প্রতিটি ধাপ যেমন প্রোডাক্টের ডিজাইন থেকে শুরু করে উৎপাদন করা, ভার্চুয়াল ফর্মের ব্যবহার পর্র্যন্ত সব রিফ্লেক্ট করা শুরু করেছে, যা ডিজিটাল টুইন নামে পরিচিত।
এ ধাপগুলো একে অপরের সাথে দিন দিন ভালো থেকে ভালোভাবে ডিজিটালি ইন্টারলিঙ্কড হচ্ছে ব্যাপক বিস্তৃত ডাটা তহবিলের জন্য। ভবিষ্যৎ টেকনোলজি এখন এই বিশাল ডাটা তহবিলকে সম্পূর্ণরূপে নতুনভাবে কাজে লাগাতে সম্ভব করে তুলেছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলেজেন্সের উদাহরণে স্পষ্টত বুঝা যায় এটি কী। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলেজেন্স তথা এআই বিশেষভাবে নতুন কিছু নয়। উদাহরণস্বরূপ, সিমেন্স ১৯৯০ সালে স্টিল মিলে ইনস্টল করে নিউরাল নেটওয়ার্ক। এরপর থেকে টেকনোলজির ব্যাপক উন্নয়ন হতে থাকে।
কমপিউটিং শক্তি আগের চেয়ে অনেকগুণ বেড়ে গেছ। অ্যালগরিদম হয়েছে অনেক উন্নত। ফ্যাক্টরি হলে হার্ডওয়্যার পারফরম করে অনেক উন্নত। ডাটা ট্রান্সফার গতি অনেক দ্রুততর হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে অ্যাভেইলেভল ডাটার পরিমাণ বাড়ছে আগের চেয়ে অনেকগুণ বেশি দ্রুতগতিতে এবং অনেক ব্যাপকভাবে ডাটা সংগ্রহ ও অ্যানালাইজ করতে পারে। এর ফলে ডাটা অ্যানালাইসিস হবে অনেক বেশি অভিজাত ধরনের।
এখন আমাদের দরকার একটি প্লাটফরম, যেমন গরহফঝঢ়যবৎব। এটি সিমেন্সের ডেভেলপ করা ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) জন্য একটি ওপেন ক্লাউডভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম।
ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির উপযোগী শিল্প প্রস্তুত রাখা
এ ধরনের এক প্লাটফরমে ব্যবহারকারীরা ডাটা মজুদ এবং দেখার চেয়ে অনেক বেশি কিছু কাজ করতে পারেন। এগুলো এআই অ্যালগরিদম ব্যবহার করে অ্যানালাইসিস করতে পারে এবং এর ওপর ভিত্তি করে তাদের উৎপাদন প্রক্রিয়াকে আরো অনেক বেশি সমৃদ্ধ করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, সিমেন্সের অ্যামবার্গের শিল্পোৎপাদনের সরঞ্জাম বা যন্ত্রের এআই অ্যালগরিদম মিলিং মেশিন থেকে ডাটা ব্যবহার করে কখন মেশিনের স্পিন্ডাল তাদের সার্ভিস আয়ু শেষ প্রান্তে পৌঁছবে এবং কখন তা প্রতিস্থাপন করতে হবে বলার জন্য। এটি ন্যূনতম আনসিডিউল ডাউনটাইম ধারণ করে। এতে প্রতিটি মেশিনের পেছনে প্রতিবছর আনুমানিক ১০ হাজার ইউরো সাশ্রয় হয়।
লক্ষণীয়, এআই চালানোর জন্য একচেটিয়া ক্লাউডে আইওটি প্লাটফরমের দরকার নেই। এ জন্য ধন্যবাদ দেয়া যায় উচ্চতর ক্ষমতার কমপিউটার এবং উচ্চতর পারফরম্যান্সের হার্ডওয়্যারকে। এটি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকবে এবং কারখানা হলে চালু করতে পারবে।
এ টেকনোলজি এজ কমপিউটিং হিসেবে পরিচিত। এর সুবিধা হলোÑ ইন্টিলেজেন্ট অ্যাপ্লিকেশন অনসাইটে রান করতে পারে। সেই সাথে রয়েছে সংক্ষিপ্ত ট্রান্সফার পাথ এবং প্রায় রিয়েল-টাইমে ডাটা প্রসেসিংয়ের সুবিধা। এছাড়া অপারেশনের প্রাসঙ্গিক ডাটা লোকাল এনভায়রনমেন্টে থাকবে সুরক্ষিত। শুধু এআই অ্যাপ্লিকেশন আপডেট করার জন্য ব্যবহারকারীর দরকার হবে একটি ক্লাউড কানেকশন।
সিমেন্সের অ্যামবার্গ প্লান্টে ইতোমধ্যে এজ কমপিউটিংয়ের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, সার্কিট বোর্ডের কোয়ালিটি কন্ট্রোলের জন্য। কোন সার্কিট বোর্ড ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে, তা প্রোডাকশন ডাটা থেকে এআই অ্যালগরিদম বলতে পারে। সুতরাং শুধু শনাক্ত করা ত্রুটিপূর্ণ উপাদানের জন্য দরকার এক্সরেসহ বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। এর ফলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার খরচ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যাবে।
এআই অটোনোমাস হ্যান্ডলিং সিস্টেমের জন্য উন্মুক্ত করছে সম্পূর্ণ নতুন সম্ভাবনার এক দ্বার। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় অবজেক্ট দিয়ে রোবট প্রশিক্ষণ দেয়া এক সময়ক্ষেপী কাজ, প্রতিটি মুভমেন্ট যথাযথভাবে স্থির এবং এর খুঁটিনাটি ব্যাপারে খুব সতর্কভাবে প্রোগ্রাম করা দরকার।
তবে এআই এনাবলড হ্যান্ডলিং সিস্টেমকে হতে হবে অপরিচিত অবজেক্ট
শনাক্ত করতে সক্ষম এবং সেই সাথে থাকতে হবে তাদের জন্য সেরা গ্রিপিং পয়েন্ট ক্যালকুলেট করার সক্ষমতা। এর ফলে গাড়ির মতো জটিল প্রোডাক্টের পুরোপুরি অটোমেটেড অ্যাসেম্বলি লাইনে এ অ্যাপ্লিকেশনের সক্ষমতা দেখা যায়। এটি যতটুকু সম্ভব ফ্লেক্সিবল করা উচিত। এ কাজটি করার জন্য রোবটকে অবশ্যই বিভিন্ন কম্পোনেন্টকে লোকেট এবং মুভ করার ক্ষমতা থাকতে হবে।
ভবিষ্যতের এ প্রযুক্তিগুলো ইতোমধ্যে বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এ প্রযুক্তিগুলোর রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা, বিশেষ করে উৎপাদনকে অধিকতর কার্যকর, দক্ষ, আস্থাশীল করার ক্ষেত্রে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভবিষ্যতের এ প্রযুক্তিগুলো অনেক বেশি নমনীয়।
ভবিষ্যতে অনেক পারফরমারকে একসাথে কাজের সুযোগ দেবে
এই প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি সব সময় দাবি করে গবেষণা এবং উন্নয়নের নতুন পথ। এগুলো তখনই সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে, যখন সব সাইজের কোম্পানি এবং সব শিল্পে একসাথে কাজ হবে সমানতালে।
এখানে মূল বিষয় হলো ডিজিটাল এবং শিল্প বিশেষজ্ঞদের মিলিত করা। গত কয়েক দশক ধরে সুনির্দিষ্ট কিছু খাত তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপ্লিকেশন ব্যাপকভাবে ডেভেলপ করে এবং অর্জন করে গভীর জ্ঞান। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপ্লিকেশনে ডিজিটাল সলিউশন এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল এনভায়রনমেন্টে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, এজ কমপিউটিং ও অটোনোমাস হ্যান্ডলিং সিস্টেম প্রয়োগ করার জন্য জ্ঞান অপরিহার্য। এ জটিল টপিক দাবি করে ব্যবসায়, বিজ্ঞান এবং সরকারি পর্যায় থেকে শুরু করে ব্যাপক-বিস্তৃত বিভিন্ন রেঞ্জে দক্ষ লোকবল।
গবেষণা, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তা এবং শিক্ষায় সরকারকে অবশ্যই প্রেরণা দিতে হবে
এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সীমান্তজুড়ে সমন্বয় কাজে নিয়মিতভাবে প্রেরণা দেয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে চারটি ক্ষেত্র গুরুত্বপূর্ণ
* একটি ইকোসিস্টেম দরকার, যেখানে অ্যাপ্লিকেশন-সংশ্লিষ্ট গবেষণা এবং বিনিয়োগের জন্য সাপোর্টের মাধ্যমে উদ্ভাবনের দিকে অগ্রসর হতে পারে। ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি দ্রæতগতিতে ব্যবহারযোগ্য পণ্যে পরিণত করার জন্য এটি হলো একমাত্র উপায়।
* একটি বিস্তৃত-এলাকায় আইটি অবকাঠামো এবং দ্রæতগতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস হলো মূল প্রয়োজন। ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এর জন্য শুধু বেশি ব্যান্ডউইডথই দরকার তা নয়, বরং খুব দ্রæত ট্রান্সফার সময়ের সাথে সাথে সর্বোচ্চ ডাটাপ্রাপ্তও দরকার। এটি ভবিষ্যৎ ইন্ডাস্ট্রির জন্য অপরিহার্যও বটে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ছোট অথবা মাঝারি আকারের কোম্পানি ডিজিটাল ভবিষ্যতে কীভাবে অ্যাক্সেস পাবে যদি সে এলাকায় পর্যাপ্ত ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সুবিধা না থাকে। এ ধরনের ক্ষেত্রে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
* ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এর সফলতার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি সিকিউরিটি অপরিহার্য। ডিজিটালায়ন এবং সাইবার সিকিউরিটিকে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আর এ কারণে এ বছরের শুরুতে সিমেন্স এবং বেশ কিছু সহযোগী সাইবার সিকিউরিটির জন্য ঈযধৎঃবৎ ড়ভ ঞৎঁংঃ তৈরি করা। এর মূল উদ্দেশ্য সাইবার নিরাপত্তার জন্য ন্যূনতম সাধারণ মান প্রতিষ্ঠা করা, যা হবে স্টেট অব দ্য আর্ট। বর্তমানে ১৬টি কোম্পানি এবং অর্গানাইজেশন ঈযধৎঃবৎ ড়ভ ঞৎঁংঃ সাপোর্ট করে।
* এডুকেশনের সব লেভেলে নতুন ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট রি-ওরিয়েন্টেড করতে হবে। ভবিষ্যৎ ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপ্লিকেশনের জন্য সফটওয়্যার, প্রোগ্রামিং, কমিউনিকেশন টেকনোলজি, আইটি সিকিউরিটি এবং ডাটা অ্যানালাইসিসে সম্প্রসারিত আইটি দক্ষতা অপরিহার্য। এটি এমন কিছু নয় যে, এক রাতে ঘটানো যাবে। আমাদের দরকার এখন থেকে আজকের এবং আগামী দিনের কর্মী তৈরি করা। এটি একমাত্র উপায় বিশাল সুযোগের সুবিধা গ্রহণ করার, যা ভবিষ্যৎ টেকনোলজি অফার করবে।
ভবিষ্যৎ প্রযুক্তিকে অবশ্যই সামাজিক উদ্দেশ্য পূরণ করতে হবে
টেকনোলজিকে কখনো সব কিছুর মধ্য থেকে আলাদা কিছু হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না। আবার এ কথাও ঠিক, এদেরকে অবশ্যই কোম্পানির অর্থনীতির সফলতায় অবদান রাখতে হবে। সাথে সাথে এদেরকে অবশ্যই জনগণের জীবন-মান উন্নয়নে অবদান রেখে সামাজিক উদ্দেশ্যও পরিপূর্ণ করতে হবে।
জনগণের মনোযোগকে সব সময় গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন টেকনোলজি যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং এজ কমপিউটিং জনগণের কাজকে কম ত্রæটিপ্রবণ করে এবং সৃজনশীল কাজের জন্য তৈরি করে অনেক ক্ষেত্র। এ কথা সত্য, এগুলো কখনো জনগণের প্রতিস্থাপন হতে পারে না। বরং বলা যায় এগুলো সাধারণ টেকনোলজি, যেগুলো আমাদেরকে এনাবল করে সফল থাকতে বিশেষ করে বিটুবি খাতে এবং এভাবে আমাদের বিজনেস লোকেশনকে শক্তিশালী করে।
ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ : ম্যানুফেকচারিং ইন্ডাস্ট্রির উৎপাদনশীলতা ও ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি
ইতোমধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে আমরা আছি প্রাযুক্তিক উৎকর্ষের চরম অগ্রগতির চতুর্থ তরঙ্গের মাঝামাঝিতে। নতুন এই ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজির উত্থান ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ হিসেবে পরিচিত। এটি একটি ট্রান্সফরমেশন, যা প্রভাবিত হয় নয়টি ফাউন্ডেশনাল টেকনোলজির অগ্রগতির মাধ্যমে। এই ট্রান্সফরমেশনে সেন্সর, মেশিন, ওয়ার্কপিস এবং আইটি সিস্টেম একটি সিঙ্গেল এন্টারপ্রাইজকে ছাড়িয়ে ভ্যালু চেইনের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত কানেক্টেড হবে। এসব কানেক্টেড সিস্টেমকে সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেম হিসেবেও রেফার করা হয়। এগুলো স্ট্যান্ডার্ড ইন্টারনেটভিত্তিক প্রটোকল ব্যবহার করে একে অপরের সাথে ইন্টারেক্ট করতে পারে এবং ডাটা বিশ্øেষণ ব্যর্থতার ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য নিজেদেরকে কনফিগার করে এবং পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। মেশিন জুড়ে ডাটা সংগ্রহ এবং অ্যানালাইজ করা সম্ভব করে তুলেছে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ এবং অধিকতর দ্রুতগতিতে, অধিকতর নমনীয় এবং দক্ষতার সাথে কম খরচে উঁচুমানের পণ্য উৎপাদন মেশিনকে এনাবল করে তোলে। এর ফলে একের পর এক বৃহদাকার উৎপাদনশীলতা বাড়বে, অর্থনীতির পরিবর্তন ঘটবে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রবৃদ্ধি বড় করে তুলবে এবং শ্রমশক্তির পরিশোধন ঘটে। আসলে এর ফলে অঞ্চলে অঞ্চলে এবং কোম্পানিগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে।
এ লেখায় উল্লিখিত ৯ প্রযুক্তি প্রবণতা হলো চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিল্ডিং বøক। এখানে তুলে ধরা হয়েছে ম্যানুফেকচারার এবং প্রোডাকশন ইক্যুইপমেন্ট সরবরাহকারীদের সম্ভাব্য টেকনিক্যাল এবং অর্থনৈতিক সুবিধা। এ লেখায় চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা লাভের জন্য জার্মানির কেস স্টাডি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশনের জন্য ওয়ার্ল্ড লিডার হিসেবে স্বীকৃত।
প্রাযুক্তিক অগ্রগতির ৯ স্তম্ভ
প্রযুক্তি দিন দিন উন্নত থেকে উন্নতর হচ্ছে। উন্নততর এসব টেকনোলজির মধ্যে ৯ প্রাযুক্তিক অগ্রগতি গঠন করেছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে ফাউন্ডেশন তথা ভিত্তি, যেগুলো বৃহদাকার উৎপাদনে ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উৎপাদনকে রূপান্তরিত করবে, স্বতন্ত্র করবে, অপটিমাইজ করা সেল একসাথে সম্পূর্ণরূপে ইন্টিগ্রেটেড হবে, অটোমেটেড হবে, প্রোডাকশন ফ্লো অপটিমাইজ হবে, পরিচালিত হবে উচ্চতর দক্ষতার সাথে এবং সরবরাহকারী, উৎপাদক ও গ্রাহকদের সাথে গতানুগতিক সম্পর্কের যেমন পরিবর্তন ঘটবে, তেমনই পরিবর্তন ঘটবে মানুষ এবং যন্ত্রের সম্পর্কের মধ্যে।
বিগ ডাটা এবং অ্যানালাইটিকস
অতি সাম্প্রতিক বৃহদাকার উৎপাদন বিশ্বে আবির্ভূত হচ্ছে অ্যানালাইটিকভিত্তিক দীর্ঘ ডাটা সেট, যেখানে এটি বাড়ায় উৎপাদনের মান, জ্বালানি সাশ্রয় করে এবং উন্নত করে ইক্যুইপমেন্ট সার্ভিস। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে ভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ এবং ব্যাপক ডাটার মূল্যায়ন করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক ইনফিনিয়ন টেকনোলজি (ওহভরহবড়হ ঞবপযহড়ষড়মরবং) পণ্যের ব্যর্থতা কমিয়ে আনে উৎপাদন প্রক্রিয়া শেষে টেস্টিং ফেসে সিঙ্গেল-চিপ ডাটা ক্যাপচার পরস্পর সম্পর্কযুক্ত করার মাধ্যমে। এভাবে ইনফিনিয়ন প্যাটার্ন আইডেন্টিফাই করতে পারে, যা প্রোডাকশন প্রসেসের শুরুতে ত্রুটিপূর্ণ চিপ ডিসচার্জ করতে সহায়তা করে এবং প্রোডাকশনের মান উন্নত করে।
অটোনোমাস রোবট
জটিল কাজ মোকাবেলা করার জন্য অনেক শিল্পে রোবটের ব্যবহার দীর্ঘ, তবে রোবট বিকশিত হচ্ছে অনেক বেশি ইউটিলিটিতে। রোবট দিন দিন হয়ে উঠছে অনেক বেশি অটোনোমাস, অধিকতর নমনীয় ও কোঅপারেটিভ তথা সহযোগী। আসলে এগুলো একে অপরের সাথে মিথষ্ক্রিয়া করে, পাশাপাশি মানুষের সাথে নিরাপদে কাজ করতে পারে এবং তাদের কাছ থেকে শিখতে পারে। এ রোবটগুলোর দাম হবে কম এবং এর সক্ষমতা হবে বর্তমানে ম্যানুফেকচারিংয়ে ব্যবহৃত রোবটগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ব্যাপক-বিস্তৃত।
উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপিয়ান রোবটিক ইক্যুইপমেন্ট ম্যানুফেকচারার কুকা (কঁশধ) দেয় অটোনোমাস রোবট, যা একে অপরের সাথে মিথষ্ক্রিয়া করে। এই রোবটগুলো ইন্টারকানেক্টেড থাকে, যাতে তারা একত্রে কাজ করতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের অ্যাকশন সমন্বয় করতে পারে পরবর্তী অসম্পূর্ণ পণ্যের লাইনে ফিট তথা মানানসই হওয়ার জন্য। হাই-এন্ড সেন্সর এবং কন্ট্রোল ইউনিট মানুষের সাথে সহযোগীরূপে নিবিড়ভাবে কাজ করার জন্য এনাবল।
সিম্যুলেশন
ইঞ্জিনিয়ারিং ফেসে, পণ্যের থ্রিডি সিম্যুলেশন, মেটেরিয়াল এবং প্রোডাকশন প্রসেস ইতোমধ্যেই ব্যবহার হয়েছে, তবে ভবিষ্যতে সিম্যুলেশন শিল্পোৎপাদনের সরঞ্জাম অপারেশনে আরো ব্যাপকভাবে ব্যবহার হবে। এসব সিম্যুলেশন সম্পৃক্ত করতে পারে মেশিন, প্রোডাক্ট এবং মানুষ। এটি ভার্চ্যুয়াল বিশ্বে পরবর্তী প্রোডাক্ট লাইনের জন্য অপারেটরদেরকে টেস্ট এবং মেশিন সেটিং অপটিমাইজ করার জন্য অনুমোদন করে ফিজিক্যাল পরিবর্র্তনের আগে।
উদাহরণস্বরূপ, সিমেন্স এবং একটি জার্মান মেশিট-টুল ভেন্ডর ডেভেলপ করে একটি ভার্চ্যুয়াল মেশিন, যা ফিজিক্যাল মেশিনের ডাটা ব্যবহার করে মেশিন সিম্যুলেট করতে পারে। এতে মেশিনিং প্রসেসে সেটআপ টাইম ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে।
হরাইজন্টাল এবং ভার্টিক্যাল সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন
ইদানীং বেশিরভাগ আইটি সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে ইন্টিগ্রেটেড থাকে না। কোম্পানি, সাপ্লায়ার এবং কাস্টোমার কদাচিৎ নিবিড়ভাবে লিঙ্কড থাকে। ডিপার্টমেন্ট যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রোডাকশন এবং সার্ভিস ইত্যাদি লিঙ্ক থাকে না; তেমনি এন্টারপ্রাইজ থেকে শুরু করে শপ ফ্লোর লেভেল পর্যন্ত সবকিছুর ফাঙ্কশন পুরোপুরি ইন্টিগ্রেটেড থাকে না। এমনকি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রেও যেমন পণ্য থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের অটোমেশন পর্যন্ত সবকিছুতেই সম্পূর্ণরূপে অটোমেশনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। তবে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে কোম্পানি, ডিপার্টমেন্ট, ফাঙ্কশন এবং সক্ষমতা হবে আরো অনেক বেশি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত, যেহেতু ক্রশ-কোম্পানি, ইউনিভার্সাল ডাটা-ইন্টিগ্রেশন নেটওয়ার্ক বিকশিত হচ্ছে এবং এনাবল করে সত্যিকার অটোমেটেড ভ্যালু চেইন।
উদাহরণস্বরূপ, Dassault Systèmes Ges Boost Aero Space চালু করে ইউরোপিয়ান অ্যারোস্পেস এবং ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির জন্য সহযোগীরূপে এক প্লাটফরম। প্লাটফরম অরৎউবংরমহ কাজ করে ডিজাইন এবং ম্যানুফেকচারিংয়ের এক কমন ওয়ার্কপ্লেস হিসেবে সহযোগীরূপে। একটি সার্ভিস হিসেবে প্রাইভেট ক্লাউডে এটি পাওয়া যাবে। এটি মাল্টিপল পার্টনারদের মাঝে পণ্য বিনিময়ের জটিল টাস্ক এবং প্রোডাকশন ডাটা ম্যানেজ করতে পারে।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট অব থিংস
এ সময়ের কোনো কোনো ম্যানুফেকচারারের সেন্সর এবং মেশিন নেটওয়ার্ক হয় এবং তৈরি করে এমবেডেড কমপিউটিংয়ের ব্যবহার। এগুলো টিপিক্যালি অর্গানাইজ হয় ভার্টিকেল অটোমেশন পিরামিডে, যার সেন্সর এবং সীমিত ইন্টিলিজেন্সে ফিল্ড ডিভাইস এবং অটোমেশন কন্ট্রোলার জোগানো হয় বাড়তি চার্জে ম্যানুফেকচারিং-প্রসেস কন্ট্রোল সিস্টেমে। তবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট অব থিংসে অধিকতর ডিভাইস কখনো কখনো আনফিনিশড পণ্যও সমৃদ্ধ হয় এমবেডেড কমপিউটিং এবং কানেক্টেড স্ট্যান্ডার্ড টেকনোলজি ব্যবহার করে। এটি ফিল্ড ডিভাইসকে প্রয়োজন অনুযায়ী আরো বেশি সেন্ট্রালাইজ কন্ট্রোলারের সাথে একে অপরের কমিউনিকেট ও ইন্টারেক্ট করার অনুমোদন করে। এটি অ্যানালাইটিক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিকেন্দ্রী করে, এনাবল করে রিয়েল-টাইম রেসপন্স।
ড্রাইভ-অ্যান্ড-কন্ট্রোল-সিস্টেম ভেন্ডর ইড়ংপয জবীৎড়ঃয-এর ভাল্বের সাথে সেমিঅটোমেটেড উৎপাদন প্রসেস সুবিধাকে বিকেন্দ্রী করে। এক্ষেত্রে পণ্য শনাক্ত করা হয় রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন কোডের মাধ্যমে।
সাইবার সিকিউরিটি
অনেক কোম্পানি এখনো ম্যানেজমেন্ট এবং প্রোডাকশন সিস্টেমের ওপর আস্থা রাখে, যা সংযুক্ত অথবা বন্ধ। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে উদ্ভূত হওয়া কানেক্টিভিটি এবং স্ট্যান্ডার্ড কমিউনিকেশন প্রটোকলের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে জটিল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিস্টেম এবং ম্যানুফেকচারিং লাইনকে সাইবার সিকিউরিটি হুমকি থেকে রক্ষা করা দরকার, যা নাটকীয়ভাবে দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর ফলে নিরাপদ, বিশ্বস্ত, যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে; তেমনি সোফিস্টিকেডেট আইডেন্টিটি, মেশিনে অ্যাক্সেস ম্যানেজমেন্ট এবং ব্যবহারকারীও অপরিহার্য হয়ে গেছে।
ক্লাউড
অনেক কোম্পানি ইতোমধ্যে কোনো কোনো এন্টারপ্রাইজ এবং অ্যানালাইটিক্স অ্যাপ্লিকেশনে ক্লাউডভিত্তিক সফটওয়্যার ব্যবহার করা শুরু করেছে। তবে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এর সাথে পণ্যসংশ্লিষ্ট কাজে দরকার সাইট এবং কোম্পানির চৌহদ্দি জুড়ে বর্ধিত ডাটা শেয়ারিং। একই সাথে ক্লাউড টেকনোলজির পারফরম্যান্স উন্নত হবে, কয়েক মিলিসেকেন্ড পাওয়া যাবে প্রতিক্রিয়া। এর ফলে মেশিন ডাটা এবং ফাঙ্কশনালিটি অব্যাহতভাবে ক্লাউডে বিস্তৃত হবে, প্রোডাকশন সিস্টেমের জন্য এনাবল হবে অধিকতর ডাটাচালিত সার্ভিস। এমনকি যেসব সিস্টেম প্রসেস মনিটর এবং কন্ট্রোল করে সেগুলো ক্লাউডভিত্তিক হতে শুরু করবে।
অ্যাডিটিভ ম্যানুফেকচারিং
বিভিন্ন কোম্পানি ইতোমধ্যে অ্যাডিটিভ ম্যানুফেকচারিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, যেমন থ্রিডি প্রিন্টিংয়ে। এগুলো তারা প্রোটোটাইপ এবং স্বতন্ত্র কম্পোনেন্ট প্রডিউস করার জন্য ব্যবহার করে। ইন্ডাস্ট্রি ৪.০-এ এই অ্যাডিটিভ ম্যানুফেকচারিং প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ব্যবহার হবে কাস্টোমাইজ পণ্য প্রডিউস করার জন্য, যা অফার করবে কনস্ট্রাশনের সুবিধার জন্য যেমন জটিল-হালকা ডিজাইন। হাই পারফরম্যান্স, ডিসেন্ট্রালাইজড অ্যাডিটিভ ম্যানুফেকচারিং সিস্টেম ট্রান্সপোর্ট দূরত্ব কমাবে।
উদাহরণস্বরূপ, অ্যারোস্পেস কোম্পানি ইতোমধ্যে অ্যাডিটিভ ম্যানুফেকচারিং অ্যাপ্লাই করতে যাচ্ছে, যাতে নতুন ডিজাইন এয়ারক্রাফটের ওজন কমাবে, নতুন ম্যাটেরিয়ালের জন্য খরচ কমাবে, যেমন টাইটেনিয়াম।
অগমেন্টেড রিয়েলিটি
অগমেন্টেড রিয়েলিটিভিত্তিক সিস্টেম সাপোর্র্ট করে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস, যেমন একটি ওয়্যারহাউজের সিলেক্ট করা অংশ এবং মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে রিপেয়ার করার নির্দেশাবলী সেন্ড করা। এ সিস্টেমগুলো বর্তমানে প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কর্মীদেরকে রিয়েল-টাইম তথ্য দেয়ার জন্য অগমেন্টেড রিয়েলিটির ব্যবহার অনেক বাড়াবে, যাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ উন্নত হয় এবং প্রসিডিউর অনুযায়ী কাজ করা যায়।
উদাহরণস্বরূপ, একটি নির্দিষ্ট অংশ কীভাবে প্রতিস্থাপন করতে হবে, সে ব্যাপারে কর্মীরা রিপেয়ার করার নির্দেশাবলী পেতে পারেন, যেহেতু কর্মীদের দরকার প্রকৃত রিপেয়ার সিস্টেম। এ তথ্য অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস ডিভাইস ব্যবহার করে সরাসরি কর্মীদের ফিল্ডে ডিসপ্লে করবে।
আরেকটি অ্যাপ্লিকেশন ভার্চ্যুয়াল ট্রেনিং। সিমেন্সের কসমস সফটওয়্যারের জন্য ডেভেলপ করে একটি ভার্চ্যুয়াল প্লান্ট-অপারেটর ট্রেনিং মডিউল, যা ব্যবহার করে বাস্তবসম্মত ডাটাবেজড থ্রিডি এনভায়রনমেন্টের সাথে অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস, যা প্লান্ট পার্সোনালকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য জরুরি অবস্থা হ্যান্ডেল করতে পারে