• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > সোশ্যাল মিডিয়ার ১০ সুবিধা-অসুবিধা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: শামসুল আরেফিন
মোট লেখা:২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৯ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইনটারনেট
তথ্যসূত্র:
ইন্টারনেট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
সোশ্যাল মিডিয়ার ১০ সুবিধা-অসুবিধা
সোশ্যাল মিডিয়ার ১০ সুবিধা-অসুবিধা
শামসুল আলম রাজ

গত কয়েক বছরে সোশ্যাল মিডিয়া অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়ে চলেছে। ২০০৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত উন্নতির হার বেশ চড়া। বিশেষ করে ফেসবুক ও ইউটিউব খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। গুগল সূত্র মতে, ভুয়া ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশে ফেসবুক ইউজার ১৬,৬৩,৬৮,১৪৯ জন- যা এশিয়ার ৪ শতাংশের বেশি। দিন দিন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে উপকার পাচ্ছে। একটি সমাজ ব্যবস্থার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অনেক সুবিধা নিয়ে এসেছে। উন্নত দেশ থেকে শুরু করে স্বল্পোন্নত দেশ, সবাই সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতা কাজে লাগাচ্ছে। অপরদিকে সমাজে সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু নেতিবাচক দিকও আছে।

সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ইতিবাচক কিছু করা, যা একজন ব্যবহারকারীর হাতে সমর্পিত। কিন্তু ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব ব্যবহারকারীর ওপরে আসে। এ লেখায় সমাজ ব্যবস্থার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই শুরু করা যাক অসুবিধা দিয়ে। কারণ, সুবিধা অনেক। কেননা, সব কিছুরই একটা ইতিবাচক প্রভাব থাকে, যদি না তা নেতিবাচক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ার ১০ সুবিধা

০১. কানেক্টিভিটি : সোশ্যাল মিডিয়ার প্রথম এবং মূল সুবিধা হচ্ছে কানেক্টিভিটি। মানুষ যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারে। কোনো স্থান বা ধর্ম বাধা হতে পারে না। সোশ্যাল মিডিয়ার বিউটি হচ্ছে শেখার জন্য বা নিজের চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য যেকোনো মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারা যায়।

০২. শিক্ষা : ছাত্র এবং শিক্ষকের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে অভিজ্ঞ এবং পেশাদারদের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া অনেক সহজ।

০৩. সাহায্য : আপনার সমস্যা বর্ণনা করে সে ব্যাপারে সাহায্য এবং দিকনির্দেশনা পেতে পারেন এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এই সহযোগিতা টাকার জন্য বা উপদেশের জন্য হতে পারে, যা পেতে সাহায্য করবে আপনার সমাজ।

০৪. তথ্য এবং আপডেট : সোশ্যাল মিডিয়ার মূল সুবিধা হচ্ছে, আপনি সব সময় আপডেট থাকতে পারবেন। অনেক সময় প্রিন্ট মিডিয়া এবং টিভি চ্যানেল পক্ষপাতমূলক আচরণ করে থাকে। তাই আসল তথ্য পেতে সোশ্যাল মিডিয়া অনেক বড় ভ‚মিকা রাখে।

০৫. প্রমোশন : আপনার বিজনেস অফলাইন বা অনলাইন যাই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক বেশি সম্ভাব্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছতে পারেন। পুরো পৃথিবী আপনার জন্য খোলা, তাই সবার কাছে প্রমোশন করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া আপনার বিজনেসকে আরো বেশি লাভজনক এবং কম খরচ করতে সাহায্য করে থাকে।

০৬. কমিউনিটি : সোশ্যাল মিডিয়া কমিউনিটি গড়তে অনেক ভ‚মিকা রাখে। এনজিও, সমাজসেবা, দান ইত্যাদি কর্মকাÐ সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর প্রচারণা চালানো যায়। এছাড়া গরিবদের জন্য সহযোগিতা এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিনিময় করা যায়।

০৭. সচেতনতা : সোশ্যাল মিডিয়া সচেতনতা তৈরি করে এবং জীবন-মান উন্নত করে। মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাত্রার জন্য সৃজনশীল এবং নিত্যনতুন উপাদান যোগ করে।

০৮. সরকার এবং নিরাপত্তা এজেন্সিকে সাহায্য করে : সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সরকার এবং নিরাপত্তা এজেন্সি অপকর্মের ওপর নজর রাখতে পারে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়।

০৯. বিজনেসের খ্যাতি ছড়ানো : সোশ্যাল মিডিয়া একটি বিজনেসকে যেমন শেষ করে দিতে পারে, তেমনি আরেকটি ব্যবসায়ের বিক্রি বাড়াতে পারে- সাথে সাথে সুখ্যাতি অর্জন করতে পারে।

১০. গ্রুপ তৈরি : পৃথিবীতে যেহেতু নানান ধর্ম, নানান বিশ্বাস আছে, তাই সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের নিজস্ব ধর্ম এবং মতাদর্শে যোগ দিতে এবং শিখতে সাহায্য করে থাকে। ঠিক তেমনি ভিন্ন ভিন্ন দেশের ভিন্ন ভিন্ন মতের গ্রæপে যোগ দেয়া যায় এবং সেই সম্পর্কিত আলোচনায় অংশ নেয়া যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ার ১০ অসুবিধা

০১. সাইবার গুন্ডামি : চবঈিবহঃবৎ.ড়ৎম-এর রিপোর্ট বলে, অতীতে বেশিরভাগ বাচ্চা সাইবার গুন্ডামির শিকার। যেকেউ ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে এবং যা খুশি করতে পারে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে। ইন্টারনেটে গুন্ডামি করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। হুমকি, ধমকি, গুজব- যা সমাজকে অশান্ত করে তোলে।

০২. হ্যাকিং : ব্যক্তিগত তথ্য এবং গোপনীয়তা খুব সহজেই হ্যাক হতে পারে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে যেতে পারে মুহূর্তেই, যা অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ব্যক্তগত জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। ঠিক তেমনি কারো অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য বেহাত হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এসব হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার মারাত্মক অসুবিধা।

০৩. আসক্তি : সোশ্যাল মিডিয়ার নেশা খুব খারাপ হতে পারে এবং ব্যক্তিগত জীবন তার খেই হারাতে পারে। বিশেষ করে টিনএজারেরা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। তারা খুব বাজেভাবে জড়িয়ে পড়ে এবং সমাজ থেকে আলাদা হয়ে যায়।

০৪. প্রতারণা এবং স্ক্যাম : কয়েক ধরনের প্রতারণা লক্ষ করা যায়, যা বেশিরভাগ সময় ঘটে থাকে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।

০৫. নিরাপত্তাবিষয়ক : আজকাল নিরাপত্তাবিষয়ক এজেন্সির কাছে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস থাকে, ফলে গোপনীয়তা রক্ষা করার কাজটিকে অসম্ভব করে তোলে। কখনো ভুলে বা না জেনে আপনার অ্যাকাউন্টে কিছু আলোচনা করে থাকলে তা নিরাপত্তা এজেন্সির অফিসার দেখবেন, যা হয়তো টেরও পাবেন না।

০৬. খ্যাতি : সোশ্যাল মিডিয়া খুব সহজেই কারো খ্যাতি ধ্বংস করে দিতে পারে মিথ্যা গল্প বানিয়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে। ঠিক তেমনি কোনো বিজনেসও ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে এ ধরনের কর্মকান্ড

০৭. প্রতারণা এবং সম্পর্ক : অনেকেই প্রেমের প্রস্তাব বা বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে থাকে এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। ঠিক তেমনি একে অপরকে ভুয়া অনুভ‚তি বলে এবং ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করে থাকে।

০৮. স্বাস্থ্য : অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার স্বাস্থ্যবিষয়ক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ব্যায়াম করা শরীরের জন্য ভালো আর বসে বসে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে খুব বেশি সময় দেয়া অলস করে তোলে, যা প্রত্যেক দিনের রুটিনে বাজে প্রভাব ফেলে।

০৯. সোশ্যাল মিডিয়া মৃত্যুর কারণ হতে পারে : সোশ্যাল মিডিয়া শুধু ব্যবহারের কারণ নয় বরং ইন্টারনেটে যেসব পাগলামি কর্মকান্ড শেয়ার করা হয়, তা বাস্তবে করতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারেন।

১০. গ্ল্যামার ড্রাগ এবং মদ : সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে যে, অনেকে ইন্টারনেটে কিছু ধনী এবং নেশাগ্রস্তদের ফলো করে থাকে। ফলে তারা নেতিবাচক চিন্তাধারা এবং কর্মকান্ড উৎসাহী হয়ে থাকে
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৯ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস