লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
সম্পাদকীয়
প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে চলা
সময় ও প্রযুক্তি৷ এ দুয়ের সম্পর্ক অতি গভীর৷ প্রযুক্তির সাথে চলার সারকথা হচ্ছে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলা৷ নিজেদের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার উপযুক্ত করে তোলা৷ আর এজন্য প্রয়োজন যথাসময়ে যথাপ্রযুক্তিকে কাজে লাগানো নিশ্চিত করা এবং প্রযুক্তির পথ সুগম করা৷ আর এক্ষেত্রে সফটওয়্যারের প্যাটেন্ট একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের ধীর গতি রীতিমতো পীড়াদায়ক অনেকের কাছেই৷ সুদীর্ঘ ১৫ বছর রীতিমতো লড়াই করার পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭-এ বাংলাস্ক্রিপ্ট ইন্টারফেস নামে একটি প্যাটেন্টের প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর মিললো প্যাটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস নিবন্ধকের৷ ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই এই ব্যতিক্রমী প্যাটেন্টটির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল৷ তবে প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, ১৯৯২ সালের ২৯ জুলাই এই প্যাটেন্টটির জন্য আবেদন করা হলেও সে সময় প্যাটেন্ট অধিদফতর এ আবেদনটি গ্রহণ করেনি৷ এর অন্যতম কারণ ছিল, একটি সফটওয়্যার কিভাবে প্যাটেন্ট অনুমোদন পাবে, সেটি তখন নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি৷ যাই হোক ২০০৪ সালে করা আবেদনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গত ১০ মে ২০০৭-এ এ প্যাটেন্টের গেজেট প্রকাশ করা হয়৷ এর ১২০ দিনের মধ্যে কোনো আপত্তি না ওঠায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭-এ প্যাটেন্টটি অনুমোদন করা হয়৷ এটিই বাংলাদেশের প্রথম সফটওয়্যার প্যাটেন্ট৷ তাই এ দিনটি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতিতে একটি অবিস্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে৷
গত সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করে গেলেন ইন্টেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. ক্রেইগ ব্যারেট৷ তার এ সফরকে কেন্দ্র করে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্টজনরা তো বটেই, গণমাধ্যমেই মোটামুটি একটা হৈচৈ পড়ে যায়৷ গণমাধ্যমে প্রকাশিত লেখালেখিতে দেখা যায়, অনেকেই বড় মাপের আশা করে থাকেন যে, ইন্টেল চেয়ারম্যান বড় কিছু বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে আসবেন৷ কিন্তু আসলে বাংলাদেশে কোনো বড় অঙ্কের বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করার জন্য তিনি এ সফরে আসেননি৷ বাংলাদেশের আইসিটি খাতে সরাসরি অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণা না দিয়ে আইসিটিসংশ্লিষ্ট শিক্ষাখাতে সহযোগিতার অঙ্গীকার করে গেছেন তিনি৷ সে লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশে উদ্বোধন করে গেলেন ওয়ার্ল্ডঅ্যাহেড কর্মসূচি৷ বিশ্বের ৩৫টি দেশে ইটেলের ওয়ার্ল্ডঅ্যাহেড কর্মসূচি চালু আছে৷ এই উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন যোগ হলো বাংলাদেশ নামের আরেকটি দেশ৷ প্রাথমিক ধারণা মতে, এ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের ৪০-৪৫ লাখ লোককে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গ্রামীণ সলিউশনসের সহায়তায় ইন্টেল টিচ কর্মসূচির আওতায় ক্লাসরুমে প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে আধুনিক শিক্ষা ছাত্রদেরকে দেয়া যায়, সে ব্যাপারে শিক্ষকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ আবার ইন্টেল লার্নবিষয়ক কর্মসূচির আওতায় ৮-১৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহার, জটিল চিন্তা ও সমন্বিত শিক্ষা গ্রহণে দক্ষতার ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুলে ৩ বছরে ১ হাজার ল্যাপটপ দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন ইন্টেল চেয়ারম্যান৷ ৬৪ জেলায় স্থাপন করা হবে পিসি ল্যাবরেটরি৷ সাধারণ মানুষ কম দামে পিসি ওনারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় মাসিক কিস্তিতে পিসি কিনতে পারবে৷ গ্রামাঞ্চলে টেলিসেন্টার স্থাপনে সহজশর্তে ক্ষুদ্র ঋণও দেয়া হবে৷ বাংলাদেশে ইন্টেলের সরাসরি বিনিয়োগের কথা ইন্টেল চেয়ারম্যান ঘোষণা না করায় অনেকেই তার এ সফর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন৷ কিন্তু আমরা মনে করি এতে হতাশ হবার কিছু নেই৷ তার এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইন্টেলের আইসিটিসংশ্লিষ্ট কর্মসূচির সূচনা ঘটলো মাত্র৷ এসব কর্মসূচি সঠিকমতো এগিয়ে গেলে ভবিষ্যতে ইন্টেল নানা ধরনের বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে, সে আশাই আমরা করি৷ সেই সাথে আশা করি, ইন্টেলের নানা কর্মসূচিও সম্প্রসারিত রূপ নেবে৷
চলতি সংখ্যায় আমাদের প্রচ্ছদ কাহিনী রয়েছে প্রযুক্তির বিস্ময়কর অবদান স্মার্ট হোম নিয়ে৷ আধুনিক এ যুগে মানুষ এখন স্মার্ট হোমের ব্যাপারে ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠছে৷ স্মার্ট হোম আপনার সঠিক গতি বাড়িয়ে তোলে৷ হোম নেটওয়ার্কিংয়ের ফসল স্মার্ট হোম আজ শুধু উন্নত বিশ্বের জন্য নয়, বিশ্বের যেকোনো দেশের মানুষের নাগালের মধ্যে৷ এ সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছি এ প্রচ্ছদ কাহিনীতে৷ আশা করি পাঠক সাধারণের ভালো লাগবে৷
আর কটা দিন পরেই আসছে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর৷ ঈদ-উল-ফিতর আপনাদের সবার জীবনে আনুক অনাবিল আনন্দ৷ সে কামনায় আমাদের বিশেষ শুভেচ্ছা রইলো লেখক, পাঠক, এজেন্ট, বিজ্ঞাপনদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের প্রতি৷