• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল প্রতিযোগিতা : জাতীয় ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০০৯
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মর্তুজা আশীষ আহমেদ
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - এপ্রিল
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
প্রতিযোগিতা
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল প্রতিযোগিতা : জাতীয় ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০০৯

বাংলাদেশে স্কুল পর্যায়ে বা কলেজ পর্যায়ে যেকোনো ধরনের মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতা খুব কম হয়। কিন্তু এসব মেধাভিত্তিক প্রতিযোগিতার উপযোগিতা আছে।

দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের দেশে সরকারিভাবে এ ধরনের কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় না। যা কিছু হয় তা বেসরকারিভাবে এবং দেশের কয়েকজন খ্যাতনামা ব্যক্তিবর্গের কল্যাণে। ইদানিং গণিতের ওপর স্কুলভিত্তিক মেধা প্রতিযোগিতা ‘গণিত অলিম্পিয়াড’ বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। গণিত অলিম্পিয়াডের পাশাপাশি ‘ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড’ এখন বাংলাদেশে হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কলেজ পর্যায়ে গত ২৭ মার্চ আহছানুল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে হয়ে গেল ‘বাংলাদেশ জাতীয় ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০০৯’-এর ফাইনাল রাউন্ড।



১৯৮৯ সালে বুলগেরিয়ার প্রাভেটজে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড। এই অলিম্পিয়াড হচ্ছে একটি প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিযোগীদের মুখোমুখি হতে হবে গণিতভিত্তিক কমপিউটিং প্রোগ্রামিংয়ে। এখানে গণিতসংশ্লিষ্ট সমস্যা বেশি সমাধান করতে হয়। দেশভেদে এখানে প্রতিযোগীদের অংশ নিতে হয়। ২০০৪ সালে এখানে ৮৯ দেশের প্রতিযোগীরা অংশ নিয়েছিল। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবার জন্য বিভিন্ন দেশে সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ বছর এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে বুলগেরিয়াতে এবং আগামী বছর এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে কানাডায়।

এ বছর এ প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ের ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিযোগীদের মধ্যে একটি উৎসবমুখর ভাব দেখা গেছে। বিশেষত এদের মধ্যে অনেকেই প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে এ ধরনের কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। আয়োজকদের ব্যবস্থাপনাও ভালো ছিল। এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডে দূর-দূরান্ত থেকেও প্রতিযোগীরা অংশ নিয়েছে। এটা থেকে আয়োজনের সার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিযোগিতায় সহায়তা করেছে আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ডেইলি স্টার, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স এবং মাইক্রোসফট বাংলাদেশ।



বিভাগীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছে ১২টি কলেজের মোট ৮৪ জন। সিলেটের ৫টি কলেজ থেকে ৩২ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে ২৭ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। এদের মধ্য থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই করে ঢাকায় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।

এই প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডে যেসব সমস্যা দেয়া হয়েছে, তা বুয়েটের কয়েকজন মেধাবী প্রোগ্রামারের তৈরি। তারাই প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে সহযোগিতা করেছে। প্রতিযোগীদের যেসব সমস্যা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে গণিত বিভাগে ৬টি এবং প্রোগ্রামিং বিভাগে ৮টি সমস্যা ছিল। এদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিযোগী একাধিক সমস্যা সমাধান করতে পেরেছে।

ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, আজ বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য আগামী দিনের জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া। সবাই এক উন্নত ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের স্বপ্নে একমত। এজন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কোনো বিকল্প নেই। সবাই এই ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বললেও এর বাস্তবায়ন করতে তরুণ প্রজন্মকে গণিত ও বিজ্ঞানমনস্ক তথা কমপিউটারমনস্ক করে গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য এ ধরনের আরো প্রতিযোগিতার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আগামী ৮ থেকে ১৫ আগস্ট এর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। আশা করা যায়, এবারে ৮০-৯০টি দেশ অংশ নেবে। এর আগে বাংলাদেশ এই প্রতিযোগিতায় তিনবার অংশ নিয়েছে। এবারে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ অংশ নিতে যাচ্ছে।

আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ কে কামালউদ্দিন বলেন, প্রোগ্রামিং অনেকের কাছেই সহজ কোনো বিষয় নয়। আমাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই বিষয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাদ উল্লাহ বলেন, দেশের উন্নতির জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ছাড়া কোনো উপায় নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য এধরনের প্রতিযোগিতাকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা এধরনের ভালো কিছু করার জন্য সব সময়ই সচেষ্ট। এর ধারাবাহিকতায় জুন মাসে আমাদের নিজস্ব কমপিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সাথে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে জাতীয় পর্যায়ে এমন কোনো প্রতিযোগিতার আয়োজন করার।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কায়কোবাদ স্যার অনেকদিন আগে থেকেই এ ধরনের একটি প্রতিযোগিতা করা যায় কি-না, সে ব্যাপারে আমাদেরকে বলে আসছিলেন। কিন্তু আমাদের আগের ক্যাম্পাসের স্থান সঙ্কুলানের অভাবে আমরা এ ধরনের কিছু করতে পারিনি। এখন এসব সমস্যা দূর হয়েছে বলে আমরা এই প্রতিযোগিতার জন্য সবুজ সঙ্কেত দিতে পেরেছি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড কমিটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল না থাকলেও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সের ফেলো ড. এম আলী আসগর। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ড. এম আলী আসগর এবং বুয়েটের প্রোগ্রামিং কোচ যিনি আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডের ছাত্রদের গাইড ড. মামুন। এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ঢাকা সিটি কলেজের ছাত্র মো: আবিরুল ইসলাম। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে নটর ডেম কলেজের ছাত্র মেহেদি হাসান এবং ফাহিম জুবায়ের।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : mortuzacsepm@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস