• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ডিজিটাল ক্যামেরা কেনার আগে জেনে নিন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী
মোট লেখা:৪২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ডিজিটাল ক্যামেরা
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ডিজিটাল ক্যামেরা কেনার আগে জেনে নিন



আইসিটির সুবাদে প্রতিটা ক্ষেত্র এখন ডিজিটালাইজড৷ ক্যামেরায়ও লেগেছে তার ছোঁয়া৷ এখন আর কেউ সহজে ফিল্ম ক্যামেরা কিনতে চান না৷ ফিল্ম কেনা, ডেভেলপ করা ও ওয়াশের খরচ বাঁচিয়ে দিয়েছে ডিজিটাল ক্যামেরা৷ আজ থেকে কয়েক বছর আগেও ডিজিটাল ক্যামেরার দাম বেশি হওয়ার কারণে ক্রেতারা কিনতে আগ্রহী হতো না৷ কিন্তু এখন অনেক সুবিধাসম্পন্ন অত্যাধুনিক ক্যামেরা যথেষ্ট কম দামে পাওয়া যাচ্ছে৷ কেননা ডিজিটাল ক্যামেরার বাজার এখন অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে৷ তাই প্রতিদ্বদ্ধিতার পরিবেশে টিকে থাকার জন্য ক্যামেরা উত্পাদক কোম্পানিগুলো এ পণ্যের দাম যথেষ্ট কমিয়েছে৷ অবশ্য এই সুবাদে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে চোরাপথে ক্যামেরা নিয়ে আসছে এবং বাংলাদেশের বাজারে কম দামে বাজারজাত করছে৷ এ ক্যামেরাগুলো সঠিক মানসম্পন্ন নয়৷ এসব ক্যামেরার সাথে থাকে না আসল এক্সেসরিজ, যা ক্রেতাদের বঞ্চিত করছে সঠিক মানের ছবি তোলার ক্ষেত্রে৷ ক্যামেরা কেনার কিছুদিন পরেই অনেক সময় সেসব ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায়৷ কালোবাজার থেকে কেনা ক্যামেরার কোনো ওয়ারেন্টি থাকে না বলে ক্রেতাসাধারণ এসব ক্যামেরার বিক্রয়োত্তর সেবা থেকে বঞ্চিত হয়৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে মেরামতের অভাবে ক্রেতার কেনা ক্যামেরা অচল হয়ে যায়৷ তবে এ দেশে কিছু প্রতিষ্ঠান আসল এক্সেসরিজসহ সঠিক উপায়ে ক্যামেরা আমদানি করছে, যা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং এগুলোর সাথে বৈধ ওয়ারেন্টিও দেয়া হচ্ছে৷ ক্রেতারা পাচ্ছেন বিক্রয়োত্তর সেবা৷


চিত্র-১ : বৈধ ক্যামেরার সাথে থাকে নিখুঁত মোড়ক, ব্যাটারি চার্জার, মেমরি কার্ড, অডিও ভিডিও ক্যাবল, ডাটা ক্যাবল, সিডি এবং ম্যানুয়াল

বিদেশে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের মডেল পুরনো হয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে তা মেরামত করে কম দামে বাজারে বিক্রি করা হয়৷ সেখান থেকে স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী এসব ডিজিটাল ক্যামেরা কিনে এনে কিছু লাভ রেখে বাজারে কম দামে বিক্রি করে৷ এসব পণ্যের কোনো ওয়ারেন্টি থাকে না৷ ফলে ক্রেতারা কম দামের দিকে ঝুঁকে তুলনামূলক খারাপ পণ্য কিনছে৷ আবার কেউ কেউ বিদেশ থেকে ক্যামেরা নিয়ে এসে এদেশের বাজারে বিক্রি করে৷ এগুলোর জন্য কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না৷ তাই সাধারণ বাজারের তুলনায় দাম কম রাখা সম্ভব হয়৷ এ ক্ষেত্রে ক্যামেরার মান সঠিক থাকলেও এর মানসম্মত আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি যেমন মেমরি কার্ড, ডাটা ক্যাবল ব্যাটারি অথবা চার্জার বিক্রেতা দিতে পারে না৷ এসব পণ্যের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির অভাব পূরণ করতে হয় ভিন্ন কোনো ব্র্যান্ডের পণ্য দিয়ে বা নিম্নমানের যন্ত্রপাতি দিয়ে৷ নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে ক্যামেরার যথেষ্ট ক্ষতি হয় বা বেশি দিন সচল থাকে না৷ কিন্তু এ ক্যামেরা যদি অনুমোদিত ডিলার বা একমাত্র পরিবেশকের কাছ থেকে কেনা যেত, তাহলে ক্রেতাকে হয়তো এ সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে হতো না৷

একজন ডিলার অথবা একমাত্র পরিবেশক আইন অনুযায়ী সরকারকে কর পরিশোধ করে বাংলাদেশে ক্যামেরা আমদানি করেন৷ প্রতিটি ক্যামেরা প্রস্তুতকারী দেশ থেকে একেবারে নিখুঁত মোড়কে এ দেশে আসে৷ সঠিক অ্যাম্পিয়ার সম্বলিত ব্যাটারি চার্জার, আসল মেমরি কার্ড, অডিও ভিডিও ক্যাবল এবং ডাটা ক্যাবল প্যাকেটের ভেতরেই দেয়া থাকে৷ কমপিউটারে ইনস্টল করার জন্য ইনস্টলেশন সিডি এবং ম্যানুয়াল দেয়া থাকে৷ এতে করে ব্যবহারকারী সহজে ক্যামেরাটির সেরা পারফরমেন্সের সুবিধা পেতে পারেন৷ ডিলারদের কাছ থেকে ক্যামেরা কেনার সুবিধা হলো এর বিক্রয়োত্তর সেবা৷ ওয়ারেন্টি সময়ের মধ্যে ক্যামেরাটি নষ্ট হলে বদলে ফেলা যায় সহজেই৷ আর সেই সময়ের পর হলে সার্ভিসিং করাতে পারবেন ডিলারদের কাছ থেকেই৷ এতে করে আপনার শখের ক্যামেরাটি হয়ে উঠবে আগের মতোই কার্যকর৷


চিত্র-২ : অবৈধ ক্যামেরার সাথে থাকে ত্রুটিযুক্ত মোড়ক, খোলা ব্যাটারি চার্জার, ডাটা ক্যাবল এবং মেমরি কার্ড

জে.এ.এন. অ্যাসোসিয়েটস ক্যামেরার জগতে অন্যতম প্রতিষ্ঠান ক্যাননের বাংলাদেশে একমাত্র পরিবেশক নিয়োজিত হয়েছে৷ এদের কাছে ক্যাননের পয়েন্ট অ্যান্ড শূট ক্যামেরা থেকে শুরু করে প্রফেশনাল এসএলআর ক্যামেরাও পাওয়া যাচ্ছে৷ তাদের কাছে ক্যাননের আসল ক্যামেরার এক্সেসরিজ সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়৷ প্রতিটি পণ্যের জন্যই রয়েছে ওয়ারেন্টি এবং খুচরা যন্ত্র পাবার নিশ্চয়তা৷ বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ড নাইকন এবং অলিম্পাস ক্যামেরা এখন ফ্লোরা লিমিটেডে পাওয়া যাচ্ছে৷ এই দুই ব্র্যান্ডের এসএলআর এবং পয়েন্ট অ্যান্ড শূট ক্যামেরা ফ্লোরাতে পাওয়া যাবে৷ বেনকিউ ব্র্যান্ডের ডিজিটাল ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছে কম ভ্যালী লি:-এ৷ এছাড়াও বিশ্ববিখ্যাত সনি ব্র্যান্ডের ক্যামেরা সনি ৠাংগস-এর প্রতিটি শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে৷

ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে সম্প্রতি এই প্রতিবেদকের কথা হলো জে.এ.এন. অ্যাসোসিয়েটস-এর মহাব্যবস্থাপক কবির হোসেনের সাথে৷ তিনি বলেন, জে.এ.এন. অ্যাসোসিয়েটসকে ক্যানন ডিজিটাল ক্যামেরার ডিলার বললে ভুল হবে৷ জে.এ.এন. অ্যাসোসিয়েটস জানুয়ারি ২০০৮ থেকে বাংলাদেশে এ পণ্যের একমাত্র পরিবেশক৷

বর্তমানে ডিজিটাল ক্যামেরাতে বাংলাদেশে ক্যাননের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্যানন ডিজিটাল ক্যামেরার অবস্থান প্রথম সারিতে৷ কিন্তু বাংলাদেশে ক্যাননের অবস্থানে আমি সন্তুষ্ট নই৷ এর কারণ বিগত দিনগুলোতে ক্যানন নিয়ে জোরালোভাবে কাজ করা হয়নি৷ তবে আমরা চেষ্টা করছি এর অবস্থানের উন্নয়নের লক্ষ্যে৷ এর ফলে ইতোমধ্যে সারাদেশের মানুষ ক্যানন ক্যামেরা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পেরেছে৷

তিনি আরো বলেন, আমরা বাংলাদেশে ক্যানন ক্যামেরার বিক্রয়োত্তর সেবা নিয়ে বেশি ভাবছি৷ ক্যামেরা বিক্রি করা সহজ৷ ওয়ারেন্টি দেয়া খুব কঠিন৷ ক্যামেরা অন্য ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির মতো নয়৷ ক্যামেরা নামের যন্ত্রটি খুবই স্পর্শকাতর৷ এর জন্য দরকার ইকুইপমেন্ট, যা লোকাল মার্কেটে পাওয়া যায় না৷ প্রস্তুতকারক কোম্পানি শুধু পরিবেশককেই তা সরবরাহ করে থাকে৷ যেকেউ চাইলেই ইকুপমেন্ট সংগ্রহ করতে পারবে না৷

একজন সাধারণ ক্রেতাকে তার পক্ষ থেকে পরামর্শ হচ্ছে, একটি ক্যামেরা ঝামেলাহীনভাবে ব্যবহার করতে চাইলে চাই আসল পার্টস৷ তাকে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হলে একমাত্র পরিবেশকদের কাছ থেকেই ক্যামেরা কিনতে হবে৷ এর কোনো বিকল্প নেই৷ চোরাপথে আসা ক্যামেরা গ্রে মার্কেট থেকে কিনলে ঝামেলা তো হবেই৷ তাছাড়া ক্যামেরার কোনো সমস্যা দেখা দিলে, তা সমাধানের জন্য কারো কাছে যাওয়ার সুযোগও থাকবে না৷ কিন্তু পরিবেশকদের কাছ থেকে ক্যামেরা কিনলে ক্রেতার নির্ভরযোগ্য অবলম্বন হবে তাকে দেয়া ওয়ারেন্টি৷
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস