• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > রাজনীতিতে সাইবার এথিক্স
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আবীর হাসান
মোট লেখা:১৫০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
রাজনীতি
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি ধারা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
রাজনীতিতে সাইবার এথিক্স
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির দিগন্তরেখা যে ক্রমশ বিস্তৃত হচ্ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিস্তৃতি-গতি-ব্যাপকতা, এই শব্দগুলোর সার্থক প্রয়োগ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে এ যুগে। তবে মানবসভ্যতার অনেক বিষয়ই এখন পর্যন্ত প্রাচীন নানা ব্যবস্থা, মূল্যবোধ আর আদর্শ নিয়ে পড়ে আছে। আমরা সেগুলোকে বলছি প্রথাগত বিষয়, এর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, রাজনীতি এবং সামাজিক মূল্যবোধও। বাণিজ্যিক একচেটিয়া, রাজনীতির কর্তৃত্বপরায়ণতা আর সামাজিক বৈষম্য একবিংশ শতাব্দীর এক দশক যাওয়ার পর নতুন প্রজন্মকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এ বিক্ষোভ স্বাভাবিক, কারণ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি গত বিশ বছরে মানুষের আর কিছু না শেখাক-সমতার বিষয়টি ভালোভাবেই শিখিয়েছে। এই সমতার সাথে সংশ্লিষ্ট আবার অনেক কিছুই- সততা-ন্যায়-ন্যায্যতা যেমন আছে, তেমনি আছে ক্ষমতার দাপটের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার সুযোগও। পূর্বতন ধারার সংবাদপত্রের মাধ্যমে বাক্স্বাধীনতার প্রকাশ ঘটানোর প্রক্রিয়াটাও পাল্টে দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি।

সংবাদপত্রের মাধ্যমে মতপ্রকাশের বাক্স্বাধীনতার ধারণাটাও প্রথাগত বিষয়ই বটে। এক্ষেত্রে সমস্যা যেটা ঘটে সেটা হচ্ছে- সম্পাদকীয় মূল্যবোধের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের আদর্শিক বিষয়গুলো সাংঘর্ষিক হয়ে ওঠে। এখান থেকে মানুষ মুক্তি খুঁজছিল অনেক দিন ধরেই। সেই বিষয়গুলো অর্থাৎ না বলতে পারা কথাগুলো মানুষ বলতে শুরু করল ব্লগ সাইটগুলো চালু হওয়ার পর থেকেই। নানা বিড়ম্বনা এখনও এগুলোকে জড়িয়ে আছে। আছে বিভিন্ন দেশে কর্তৃত্বপরায়ণ শাসকের রক্তচক্ষুও, তারপরেও ব্লগ সাইটগুলো ক্রমশ হয়ে উঠেছে নতুন রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রচার-প্রসারের অভিনব মাধ্যম। ক’দিন আগেও যেগুলোকে সামাজিক ওয়েবসাইট বলে অভিহিত করা হতো, সেগুলোই এখন দেশে দেশে রাজনৈতিক মতাদর্শভিত্তিক সংগঠনের ভিত্তি হয়ে উঠেছে। এক সময়ে লিফলেট, দেয়াল লিখন, পোস্টার, সংবাদপত্রের কলাম যে কাজগুলো করেছিল সেগুলো এখন করছে ব্লগ সাইটগুলো। এমন নয় যে, এগুলোর বিকল্প হিসেবে নতুন প্রজন্ম ব্লগ সাইটের মাধ্যমে কাজ করছে। আসলে এর ধারণাটাই আলাদা। গতি এর একটা বৈশিষ্ট্য। আর নতুন যেটা, সেটা হচ্ছে নেতৃত্ব নিরপেক্ষ ঐকমত্যের কেন্দ্র হয়ে ওঠা। অর্থাৎ নেতা ছাড়াই নিজেদের সংগঠিত হয়ে ওঠা।

সম্প্রতি আরব বিশ্বে এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোয় নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির দিগন্ত বিস্তৃতি ও রাজনৈতিক মাত্রা আরোপের বিষয়টি লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তিউনিসিয়া, মিসর, বাহরাইন, জর্ডান, ইয়েমেন ও সর্বশেষ লিবিয়ার গণআন্দোলন থেকেই এটা প্রমাণিত যে, ব্লগ সাইটগুলো রাজনৈতিক আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। আধুনিক মানসিকতার, বেকার এবং রাজনৈতিক দমনপীড়নে অতিষ্ঠ নতুন প্রজন্ম নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তুলতে পেরেছে ব্লগের মাধ্যমে। তারা তোয়াক্কা করেনি কোনো গণমাধ্যমের সম্পাদকের বা বিশেষ প্রতিনিধির দয়ার উপরে, এমনকি কোনো রাজনৈতিক নেতার উপরেও নয়। অনেকেই সুযোগ নিতে চেয়েছেন- এদের মধ্যে যেমন আছেন পাশ্চাত্য ঘরানার তথাকথিত গণতান্ত্রিক সুযোগসন্ধানী, তেমনি আছেন কট্টর মৌলবাদী ধর্মধ্বজিত। এরা তো বটেই, এমনকি অনেক পশ্চিমা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক-রাজনীতিবিদ মনে করেছেন অষ্টাদশ শতকের বিপ্লবী ধারা যা রাজতন্ত্র উচ্ছেদে ইউরোপকে প্ররোচিত করেছিল কিংবা বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে যে বিপ্লব পুঁজিবাদকে চ্যালেঞ্জ করেছিল, সে ধরনের কিছু ঘটবে। কিন্তু না, এই একবিংশ শতাব্দীর নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারকারী নতুন প্রজন্ম বিশ্ব বৈপ্লবিক ধারায় নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। আসলে রাজনীতির অতীতের অনেক বৈশিষ্ট্যকেই উড়িয়ে দিয়েছে আরবের নতুন প্রজন্ম এবং তারা প্রমাণ করেছে, তাদের মধ্যেও রয়েছে পাশ্চাত্যের বা উন্নয়নশীল প্রাচ্যের শিক্ষিত তারুণ্যের মতোই মুক্তি ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার স্পৃহা। ঠিক তাদের আগের প্রজন্মের কূপমন্ডূকতা ও স্বাধীনতা থেকে তারা মুক্ত।

এরা আগে জাতিগতভাবেও আরবদের কিছু বদনাম ছিল- অনেকে যাকে বলতেন আরব বা ইসলামী বৈশিষ্ট্য, যার মোদ্দা কথা হচ্ছে গণতন্ত্রহীনতা, কর্তৃত্বপরায়ণ শাসকের মাধ্যমে শাসিত হওয়ার বিষয়টি মেনে নেয়া এবং ভোগবাদিতা। এই ধরাবাঁধা আরব বৈশিষ্ট্য থেকে যে বেরিয়ে এসেছে আরব বিশ্বের নতুন প্রজন্ম তা তাদের নতুন সংগ্রামী ধারার প্রবর্তনার মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে এবং তা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির মাধ্যমেই প্রথাগত সংবাদপত্র-টেলিভিশন-বেতার যারা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বা স্বরূপ চিনতে পারেনি এখন পর্যন্ত।

প্রথাগত প্রতিক্রিয়াশীলতার পাশাপাশি বিশ্ব এতদিন অবস্থান করছিল প্রথাগত প্রগতিশীলতার আবহের মধ্যেও। নয়া গণতন্ত্র বা সমাজতন্ত্র অথবা সামাজিক স্বৈরাচার বা একনায়কতন্ত্র এমন একটা ধারণা বদ্ধমূল হয়ে আছে আমাদের মধ্যে। কিন্তু আরব বিশ্বের নতুন প্রজন্মের এই অভিনব আন্দোলন কৌশল সেই প্রথাগত ধারণার মূলে কুঠারাঘাত করেছে। তারা দেখিয়েছে তাদের সহকর্মী হয়ে প্রথাগত ‘বিপ্লবী’ বা ‘প্রগতিশীল’রা ব্লগনির্ভর আন্দোলনে শামিল হতে পারে কিন্তু নেতৃত্ব ছিনতাই করতে পারে না। আসলে নেতৃত্ব ছিনতাই করতে পারেনি বলেই প্রথাগত প্রতিক্রিয়াশীলরা পরাজিত হয়েছে এবং প্রথাগত প্রগতিশীলরা সহযোগী হিসেবে রয়ে গেছে। এগিয়ে গেছে নতুন প্রজন্ম। তাদের হাতিয়ার কিন্তু এক ওই ইন্টারনেট এবং তা থেকেই লব্ধ নতুন আদর্শ ও মানসিকতা।

এ কারণেই আরব বিশ্বের স্বৈরাচারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এতদিন তারা তাদের বিরোধী বা বিপ্লবীদের দমন করে এসেছে রাজনৈতিক কেন্দ্র তথা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে। কিন্তু এবার এরা সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে পায়নি। ফেসবুক, টুইটার বা ইউটিউব হাতিয়ার হিসেবে কাজ করলেও এক্ষেত্রে কাজ করছে ‘সাইবার এথিক্স’, যার রাজনৈতিক প্রয়োগ এতদিন ছিল না। আগামী এক দশকের মধ্যে রাজনীতিতে সাইবার এথিক্সের প্রয়োগ মানবসভ্যতার ধারণাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। এটা ভাসা ভাসাভাবে বলা কোনো আপ্তবাক্য নয়। রাজনৈতিক ক্ষমতার সাফল্য বা ব্যর্থতার নিরিখেও তা মাপবার উপায় নেই। কারণ, এক্ষেত্রে লক্ষণীয়ভাবে মূর্ত হয়ে উঠেছে জীবনবিষয়ক সামাজিক দাবিদাওয়া, যা আসলে ঔচিত্যের নিরিখে রাজনৈতিক দাবিদাওয়া হওয়া উচিত ছিল। এতদিন তা হয়নি বা হতে পারেনি কর্তৃত্বপরায়ণ স্বৈরতান্ত্রিক শাসন আর তার বিপরীতে আপোসকামী রাজনীতির কারণে। আরব দেশগুলোর সংগ্রামী নতুন প্রজন্ম এবার দাবি তুলেছে অখন্ড সমগ্রের। অর্থাৎ উচ্ছিষ্টের মতো ছুড়ে দেয়া সুবিধা কিংবা অধিকারে তাদের সন্তুষ্টি নেই, সে কথা স্পষ্ট ভাষায় তারা বলেছে ব্লগে। রাজপথে তাদের ভাষা যাই হোক না কেন ওয়েবে তারা মন উজাড় করে তাদের দাবি আর যুক্তির কথা তুলে ধরেছে। আরব বিশ্বে এ বিষয়টা আগে ছিল একেবারেই অপরিচিত। তবে রাজপথের সংগ্রামশীলতাও বারবার জানান দিয়েছে তাদের দুর্মর আলোকছটার কথা।

অপেক্ষা বা অনুমোদন কোনোটারই তোয়াক্কা তারা করেনি। এই একবিংশ শতাব্দী নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের কাছে অতীতের অতি-আশাবাদী গণিতবিদেরা যা চেয়েছিল সেই যুক্তিচালিত ‘একক মানব’-সেটাই আমরা পেতে চলেছি এই একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে। আরব উপদ্বীপ আর উত্তর আফ্রিকায় যা ঘটছে, তা কেবল ওই অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকবে এমন প্রত্যয় হয় না। কেননা, নতুন প্রযুক্তিনির্ভর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া যেকোনো দেশের বঞ্চিত-নিপীড়িত তরুণদের উজ্জীবিত করার ক্ষমতা রাখে। সব জায়গায় এর প্রতিক্রিয়া একই রকম বা ধ্বংসাত্মক নাও হতে পারে, কিন্তু মেধা এবং জীবনবোধের বৈশিষ্ট্যগুলো থাকবেই।

আসলে মানবজাতির ইতিহাস নতুন একটা পর্যায়ে উন্নীত হতে যাচ্ছে নতুন প্রযুক্তির হাত ধরে। এরকম আগেও অনেকবার হয়েছে- সেই হোমো ইরেকটাস যখন আগুন আবিষ্কার করেছিল, কিংবা পাঁচ হাজার বছর আগে যখন চাকা আবিষ্কার হয়েছিল কিংবা ষোড়শ শতাব্দীতে ছাপাখানা আবিষ্কারের পর যেমন হয়েছিল। এসব আবিষ্কার কোনো না কোনোভাবে মানুষের অভ্যস্ততায় দৈনন্দিন কর্মে প্রভাব ফেলার সাথে সাথে রাজনীতিকেও প্রভাবিত করেছিল। এগুলোর প্রয়োগে বহুকালের প্রথাগত ব্যবস্থায় এসেছিল পরিবর্তন। এবারও তেমনটাই হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি যখন রাজনৈতিক সংগঠনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে, তখন অনেকটা ম্যাজিকের মতোই রাজনৈতিক প্রথাকে উড়িয়ে দিচ্ছে- কায়েমী স্বার্থ, রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কিত মূল্যবোধ, ভয়ঙ্কর স্বৈরতন্ত্র এই কথাগুলো ক্রমশ খেলো হয়ে যেতে শুরু করেছে। ভাবা যায়, এই একবিংশ শতাব্দীতে যখন গণতন্ত্র আর ন্যায্যতার বা সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চলছে দেশে দেশে, তখন একসময়ের সভ্যতার সূতিকাগার মিসরে ৩২ বছর ধরে জারি ছিল স্বৈরশাসন! আর বিগত পাঁচ হাজার বছরে কখনও গণতন্ত্র কী, তা বোঝেনি মিসরের জনগণ! লিবিয়ায় ৪২ বছর ধরে স্বৈরশাসন, আলজিরিয়ায় ৩০ বছর ধরে জরুরি অবস্থা, ইয়েমেনে ৩১ বছর ধরে কর্তৃত্ববাদী একনায়কতন্ত্র- এগুলো টিকে ছিল, সভ্যতার কোনো উপকরণ বা মারণাস্ত্রও এদের ঠেকাতে পারেনি এতদিন! বরং এরাই ওইসব মারণাস্ত্রের অপব্যবহার করেছে নিজ নিজ দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। মানুষকে ঐক্যবদ্ধই হতে দেয় স্বৈরশাসকরা। সেই জায়গাটাই পূরণ করেছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি। আপাত নিরীহ ফেসবুক-টুইটার তথ্যের শক্তিতে বলীয়ান করে তুলেছে মানুষকে, অজ্ঞ-অসচেতন মানুষকে করেছে সচেতন ও জ্ঞানী। তারা উপলব্ধি করতে পেরেছে মানবিক অবস্থার বদলে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে তারা। সবচেয়ে বড় সমস্যা ওই সব দেশের স্বৈরাচার ভয় দেখিয়ে মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল, সেই বিচ্ছিন্নতাও ঘুচিয়ে দিয়েছে সামাজিক যোগাযোগের নেটওয়ার্কগুলো।

তারপরও কিন্তু বলতেই হচ্ছে, এটা সবেমাত্র শুরু। অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি রাজনৈতিক প্রথাকে প্রভাবিত করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে, একে অবলম্বন করে যে ডিসকোর্সের পথে মানুষ চলতে শুরু করেছে তার প্রাথমিক একটা পদক্ষেপমাত্র আরব বিশ্বের ঘটনাবলী। এখন থেকে আমরা দেখতে এবং উপলব্ধি করতে পারব নতুন নতুন নানা মাত্রার পরিবর্তন। আমাদের অংশ নেয়া বা নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারও আটকে থাকবে না। কারণ আমরাও জানি, নতুন এই তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি ছাড়া আমরা চলতে পারব না, বিচ্ছিন্ন-বঞ্চিত-অসচেতন আর কেউই থাকতে পারবে না, প্রযুক্তিই সবাইকে একত্র করবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : abir59@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
পাঠকের মন্তব্য
১৫ এপ্রিল ২০১১, ৬:০৪ AM
ঠিক আছে
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস