• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষে বেইজিং অলিম্পিক
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: আবদুল ওয়াজেদ
মোট লেখা:২৮
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইটি
তথ্যসূত্র:
অলিম্পিক
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষে বেইজিং অলিম্পিক


গত ১৮ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছিলো এবারের বেইজিং অলিম্পিকে শুধু আইসিটি খাতে ব্যয় করা হয়েছে ৪০ কোটি ডলার৷ এটি বেইজিং অলিম্পিকের মোট ব্যয়ের প্রায় সাত ভাগের এক ভাগ৷ আগের অলিম্পিকে মোট বাজেট যা ছিল এবার শুধু আইসিটিতেই সেই পরিমাণ খরচ করেছে চীনারা৷ মজার ব্যপার হচ্ছে চীনারা খুব বেশিদিন আগে অলিম্পিকে অংশ নেয়নি৷ মাত্র ২৪ বছর আগে আমেরিকার লসঅ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে প্রথমবার চীন অংশ নিয়েছিল৷ এত বিশাল বাজেট নিয়ে আইসিটির কী কী নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে তারা তা একটু দেখা যাক৷

পাওয়ার মডিউল

অলিম্পিক ২০০৮ গেমসে ব্যবহার করা হয়েছে পৃথিবীর সেরা সব পাওয়ার মডিউল৷ ইনফিনিওন টেকনোলজিস (www.infineon.com) বিশ্বের শ্রেষ্ঠ অটোমোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে৷ এই প্রযুক্তির বিশেষত্ব হচ্ছে এর পাওয়ার কনজাম্পশন অনেক কম৷ এনার্জি সেভিং শুধু নয়, এগুলোতে প্রচণ্ড পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে৷ এই প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ ইতোমধ্যেই তারা করে দেখিয়েছে খেলোয়াড় এবং অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াত ব্যবস্থার মাধ্যমে৷ তারা এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নাম দিয়েছে হাইব্রিড প্যাক১ মডিউল৷ এর বিশেষত্ব হচ্ছে পাওয়ার মডিউলে এমন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর (ইলেক্ট্রনিকডিভাইস) ব্যবহার করা হয়েছে যাতে ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার ৩০% কম লাগে৷ সেই সঙ্গে উন্নততর ইনভার্টার প্রয়োগে ২০% কম জ্বালানিতেও বৃদ্ধি পেয়েছে গতি৷

ডিসপ্লে মনিটর

এবারের অলিম্পিকে ডিসপ্লে মনিটরের দায়িত্ব নিয়েছে জাপানের বিখ্যাত ইলেক্ট্রনিক্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্যানাসনিক (http://panasonic.net/olympic/)৷ বেইজিং ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ১৫৩ বর্গমিটারের দুটি মনোরম ডিসপ্লে মনিটরের মাধ্যমে পুরো স্টেডিয়াম কভার করার ব্যবস্থা করেছে প্যানাসনিক৷ সেই সঙ্গে বেইজিং ন্যাশনাল অ্যাকুয়াটিক্স সেন্টারে একটি ৫২ বর্গমিটারের এবং একটি ২৮ বর্গমিটারের ডিসপ্লের ব্যবস্থা করেছে তারা৷ তারা বেইজিং ওয়াকার্স স্টেডিয়ামেও স্থাপন করেছে একটি ১২০ বর্গমিটারের সুবিশাল ডিসপ্লে মনিটর৷



এই ডিসপ্লে মনিটরগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে এগুলো সবই লাইট এমিটিং ডায়োড (এলইডি)দিয়েতৈরি করা হয়েছে এবং ডিসপ্লে মনিটরের ব্রাইটনেসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা আলো দিয়ে৷ এগুলোতে যে এলইডি ব্যবহার করা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত ডিসপ্লে মনিটরে ব্যবহার করা সর্বোচ্চ রঙ পরিবর্তন করতে পারে (http://www.cree.com/press/press_detail.asp?i=1193317731202)৷

এলইডির আরো ব্যবহার

অলিম্পিকে এলইডির ব্যবহার এখানেই শেষ নয়৷ অলিম্পিকের বেশিরভাগ আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে এলইডি দিয়ে৷ আলোকসজ্জার জন্য থিনফিল্ম এলইডির পাশাপাশি অপ্টিক্যাল লেন্সের ব্যবহার করা হয়েছে৷ তবে এই এলইডির ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে শুধু একটি কারণেই৷ তা হচ্ছে বিদ্যুতের যথেচ্ছ ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং বেইজিংয়ের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর থেকে চাপ কমিয়ে আনা৷ এলইডি ডায়োড হিসেবে ব্যবহারের পাশাপাশি কম বিদ্যুতে বেশি আলো দিতে পারে অন্যান্য যেকোনো সাধারণ বৈদ্যুতিক বাতি থেকে৷

ই-টিকেট

এবারের অলিম্পিকে রাখা হয়েছে অত্যাধুনিক ই-টিকেটিং ব্যবস্থা৷ এই ই-টিকেট ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য অত্যাধুনিক আইআরডিএ (ইনফ্রারেড ডাটা ট্রান্সমিশন অ্যান্ড রিসিভিং সিস্টেম) সিস্টেম, ব্লুটুথ সিস্টেম, আরএফআইডি সিস্টেম (রেডিওফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফকেশন রিডার) এবং এলইডি সিস্টেমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে (http://www.altera.com/corporate/news_room/releases/products/nr-max_iiz_huayu.html) ৷

ধারণা করা হচ্ছে অলিম্পিকের মতো বিশাল আয়োজনে এবারই প্রথম এমন নিখুঁত এবং কড়া টিকেটিং ব্যবস্থা ছিলো৷

নিরাপত্তা ব্যবস্থা

এবারের অলিম্পিকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো বেশ চমকপ্রদ৷ আইসিটির সর্বোচ্চ প্রয়োগ রাখা হয়েছে এই অলিম্পিক মহাযজ্ঞে৷ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তো উন্নত ছিলই৷ প্রতিটি ইভেন্টে সর্বোচ্চ সংখ্যক সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে এবারে৷ রাখা হয়েছে আলাদা র্যাবপিড অ্যাকশন টিম৷ সেই সঙ্গে যারা অবৈধ ড্রাগ নিতে যাচ্ছেন তাদের জন্য রয়েছে দুঃসংবাদ৷ আর যারা দর্শনার্থী হিসেবে যাবেন তাদের নিরাপত্তার যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য মোতায়েন করা হয়েছে আলাদা বাহিনী৷ আরো আছে সর্বক্ষণিক মনিটরিং সিস্টেম৷

মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম

আর সব বিষয়ের মতো মাল্টিমিডিয়া সিস্টেমকেও ঢেলে সাজানো হয়েছে এবারের অলিম্পিক গেমসে৷ তথ্য আদানপ্রদানের জন্য বেইজিংয়ের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে৷ সাউন্ড সিস্টেমে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য৷ সাউন্ড সিস্টেমের উত্কর্ষ প্রমাণে ব্যবহার করা হয়েছে ডিটিএস সিস্টেমের (ডিজিটালথিয়েটারসিস্টেম)৷ সারাউন্ড সাউন্ড নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫.১ সাউন্ড সিস্টেম৷ এই সাউন্ড সিস্টেমগুলোর কভারেজ এরিয়াও অন্য যেকোনো ডিটিএস সিস্টেমের চেয়ে দশ গুণ বেশি৷ এবারই প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক UPMAX:neo আপমিক্সার টেকনোলজি (http://www.linearacoustic.com/pdf/UPMAX_NBC_Beijing.pdf) |



বেইজিং অলিম্পিক কভার করা ক্যামেরাগুলোর কথা না হয় বাদই দিলাম৷ এর ভিডিও সম্প্রসারণ ব্যবস্থাও খুব উন্নতমানের৷ এর হাইডেফিনেশন ভিডিও ট্রান্সমিটিং ব্যবস্থার কল্যাণে বিশ্বের মানুষ এবারের অলিম্পিকের বক্স অফিস চলচ্চিত্র মানের ভিডিও কোয়ালিটি দেখতে পেয়েছেন৷ এই মান নিশ্চিত করতে ব্যবহার করা হয়েছে নেক্সট জেনারেশন ক্যাবল, আইপি টিভি এবং এইচডি সেট-টপ বক্স (http://www.broadcom.com/press/release.php?id=1120879) ৷

ভিডিও কমপ্রেশন এবং এডিটিং করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে কিউপিক্সেল টেকনোলজি (www.qpixeltech.com)| GB সলিকন টেকনোলজি এবং সফটওয়্যার টেকনোলজি দুই মাধ্যমেই৷ এতে ব্যবহার করা হয়েছে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কিউরিপ্লে রেফারেন্স ডিজাইন৷ এর ফলে খুব কম খরচে এবং অনায়াসে যেকোনো ইভেন্টে যেকোনো মুহূর্তে দর্শকরা রিপ্লে দেখতে পারবেন৷

কজ ওয়েব

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস