• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > পরিবর্তনের ছোঁয়ায় এনভিডিয়ার জিফোর্স জিটিএক্স সিরিজ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: তৌহিদুল ইসলাম
মোট লেখা:২৬
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গ্রাফিক্স কার্ড
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
পরিবর্তনের ছোঁয়ায় এনভিডিয়ার জিফোর্স জিটিএক্স সিরিজ
যারা কমপিউটারে গ্রাফিক্স, মাল্টিমিডিয়া, গেম খেলার কাজ করছেন, তাদের কাছে গ্রাফিক্স কার্ডের গুরুত্ব অনেক। ব্যবহারকারীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গ্রাফিক্স কোম্পানিগুলো তাদের নিত্যনতুন কার্ডগুলোতে আনে নানা নতুনত্ব। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে গ্রাফিক্স চিপ ও কার্ড নির্মাতা কোম্পানি এনভিডিয়া দুই ডজনের বেশি বিভিন্ন মানের গ্রাফিক্স কার্ড বাজারে ছেড়েছে। বিশেষ করে গত দেড় বছরে এনভিডিয়া শুধু জিটিএক্স সিরিজেরই তিনটি কার্ড বাজারে ছেড়েছে। মজার ব্যাপার হলো, এ সিরিজের সব কার্ডই একই আর্কিটেকচার ফার্মিতে তৈরি করা হয়েছে। তারপরও প্রতিটি কার্ডই প্রতিটি কার্ড থেকে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে আলাদা। ২০১১ মে সংখ্যায় এনভিডিয়ার ফার্মি আর্কিটেকচার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছিল। তাই এ লেখায় প্রসেসরের অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা করা হয়নি।

২০০০ সালে প্রথম এনভিডিয়া জিফোর্স সিরিজ বাজারে আনে। তেমন একটি কার্ড ছিল জিফোর্স ফোর টিআই ৪৮০০। সেই থেকে জিফোর্স কার্ডের যাত্রা শুরু। প্রায় ১০ বছর পর আবার জিটিএক্স ৫৬০ টিআই বাজারে আসায় কৌতূহল থাকাটাই স্বাভাবিক। মূলত টিআই যুক্ত করা হয় টাইটেনিয়াম বুঝানোর জন্য। টাইটেনিয়াম ধাতু দিয়ে তৈরি বলে এ কার্ডের ওজন হয় হাল্কা ও তাপ ধারণক্ষমতা থাকে বেশি। এনভিডিয়া জিফোর্স জিটিএক্স সিরিজে আছে ৪৬০, ৪৭০, ৪৮০, ৫৬০ টিআই, ৫৭০, ৫৮০। যদিও অফিসিয়ালি এনভিডিয়া এই টিআই সিরিজের পুনর্জন্মের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। এনভিডিয়ার প্রোডাক্ট ম্যানেজার জাস্টিন ওয়াকারের মতে, নতুন এই কার্ড পুরনো টিআই কার্ড ধারণ করতে পারে, ফলে নতুন-পুরনো মিলে আপনি আরও বেশি পারফরমেন্স আপনার কার্ড থেকে পাবেন। আর এ নতুন অপশনকে এনভিডিয়া দেখছে নতুন মাইলফলক হিসেবে। জাস্টিন ওয়াকারের মতে, নতুন কার্ড ব্যবহার করতে হলে পুরনো কার্ডটি বাদ দিতে হতো, কিন্তু এ সুবিধার ফলে ব্যবহারকারীর টাকা সাশ্রয় হবে, আরও অধিক পারফরমেন্স পাবে, পুরনো কার্ডটি অকেজো থাকবে না।



জিটিএক্স ৫৬০ টিআই কার্ডের পেছনের বড় শক্তি হলো জিএফ ১১৪ জিপিইউ। ১০৪ জিপিইউর পর ২০১০ সালের জুলাই মাসে এনভিডিয়া ১১০ জিপিইউ প্রকাশ করে এবং পরে আরও নতুন নতুন কিছু সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করে ১১৪ জিপিইউতে উন্নীত করে। মজার ব্যাপার, এই সিরিজের ১০০, ১০৪, ১১০, ১১৪ সব জিপিইউ-ই ফার্মি স্ট্রাকচারে গড়া। যদিও জিএফ ১১৪ ও ১০৪ অনেক দিক থেকে একই রকম। জিএফ ১০৪ থেকে জিএফ ১১৪-তে শুধু ক্লকস্পিড বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি ১১৪ পুরোপুরি এসএম (স্ট্রিমিং মাল্টিপ্রসেসর) ধারণ করে, যা ১০৪ করত না। ১০৪-এ ছিল ৭টি মাল্টিপ্রসেসর, সেখানে ১১৪-তে আছে ৮টি প্রসেসর। জিএফ ১০৪ ও জিএফ ১১৪-তে একই সমান ১.৯৫ বিলিয়ন ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়েছে। একই সমান ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা সত্ত্বেও এসএম বেশি থাকায় জ্যামিতিক, সেডিং, স্ট্রাকচার ১০৪ থেকে ১১৪ বেশি প্রসেস করতে পারে।

গত জুলাইয়ে এনভিডিয়া জিটিএক্স ৪৬০ ভিডিও কার্ড বাজারে ছাড়ে। জিটিএক্স ৫৬০-এ ৪৬০ থেকে সামগ্রিক পারফরমেন্স লেভেল অনেক বাড়ানো হয়েছে। যেখানে ৫৬০ কার্ডের ক্লকস্পিড ৮২২ মেগাহার্টজ, সেখানে ৪৬০-এর ছিল ৬৭৫ মেগাহার্টজ। ওভারক্লক মোডে জিটিএক্স ৪৬০ সর্বোচ্চ ২০ ভাগ গতি বাড়াতে পারে এবং ৫৬০ বাড়াতে পারে প্রায় ৩০ ভাগ। ফলে ওভারক্লক মোডে ৫৬০ কার্ডের গতি অনায়াসে এক গিগাহার্টজ ছাড়িয়ে যায়। আবার ওভারক্লক মোডে ৫৬০ কার্ডের চিপ ৪৬০-এর তুলনায় ৬০ ভাগ কম গরম হয়। অন্যদিকে ওভারক্লক মোডে ৪৬০ কার্ডে অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন হতো, সেখানে ৫৬০ কার্ডে কোনো অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। ৪৬০ কার্ডের জন্য দরকার ১৬০ ওয়াট বিদ্যুৎ, ৫৬০ কার্ডের জন্য দরকার ১৭০ ওয়াট বিদ্যুৎ। সবদিক বিবেচনায় দেখা যায় ৪৬০ কার্ডের তুলনায় ৫৬০ কার্ডের পারফরমেন্স বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। মূলত এনভিডিয়ার লক্ষ্য থাকে কত ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে কত বেশি পারফরমেন্স কার্ড থেকে আদায় করা যায়। যদিও আকারের দিক থেকে ৪৬০ ও ৫৬০ প্রায় একই। শুধু ৪৬০ থেকে ৫৬০-এর হিটসিঙ্ক একটু বড়। অতিরিক্ত হিসেবে এতে তিনটি হিটসিঙ্ক পাইপ যুক্ত করা হয়েছে, যা পূর্বের ৪৬০ কার্ড থেকে ভালোভাবে হিট কন্ট্রোল করতে পারে।

এনভিডিয়ার জিফোর্স ৮৮০০ জিটি বাজারে আসে ২০০৭ সালে। ৮৮০০ কার্ডে ব্যবহার হয়েছিল ১১২টি কুডাকোর। আর পরবর্তী ৩ বছরে এ সংখ্যা ছাড়িয়ে ৫৬০ কার্ডে ব্যবহার হয়েছে ৩৮৪টি কুডাকোর। ৮৮০০-তে ফ্রেম বাফার ছিল ৫১২ মেগাবাইট জিডিডিআর ৩। আর ৫৬০-এ ফ্রেম বাফার ১০২৪ মেগাবাইট জিডিডিআর ৫। ৫৬০ কার্ড সাপোর্ট করে ডিরেক্ট এক্স১১। সব দিক বিচারে ৮৮০০-এর তুলনায় ৫৬০ কার্ডে প্রায় চার গুণ পারফরমেন্স বাড়ানো হয়েছে।

জিফোর্স জিটিএক্স ৫৬০ কার্ডের পর ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বাজারে আসে জিটিএক্স ৫৭০ ও ৫৮০ কার্ড। এ দুটি কার্ডই ১১০ জিএফ আর্কিটেকচারে তৈরি করা। এ দুটো কার্ডই অনেক দামী হাইএন্ড কার্ড ধরা যায়। এ দুটো কার্ডেই কুডাকোরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ৫৭০ ও ৫৮০ কার্ডে কুডাকোরের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৮০ ও ৫১২।

৫৭০ ও ৫৮০ কার্ডে স্ট্রিমিং প্রসেসরের সংখ্যা যথাক্রমে ১৫ ও ১৬। ৫৭০ ও ৫৮০ কার্ডের টোটাল গ্রাফিক্স প্রসেসিং ক্লকস্পিড যথাক্রমে ১.৪৬ ও ১.৫৪ মেগাহার্টজ। এ দুটো চিপে নতুন ধরনের পাওয়ার এফিশিয়েন্ট ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে কার্ডগুলোতে দ্রুত কাজ করে এমন ট্রানজিস্টর দিয়েই শুধু চিপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ৫৭০ ও ৫৮০-তে বিভিন্ন ধরনের আসেত্ম কাজ করে, দ্রুত কাজ করে এমন ট্রানজিস্টরের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। দ্রুত কাজ করে এমন ট্রানজিস্টর ব্যবহার করলে দ্রুত ফ্রিকুয়েন্সি বাড়ানো যায়, কিন্তু সাথে সাথে বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়তে থাকে এবং প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। সেখানে আসেত্ম কাজ করে এমন ট্রানজিস্টর ব্যবহার করার ফলে কম বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে ও কম তাপ উৎপন্ন হবে। আবার এ কার্ডগুলোতে এনভিডিয়া বিশেষ ধরনের ভেপুর চেম্বার কুলার ব্যবহার করায় কার্ডগুলো অন্যান্য কার্ডের তুলনায় অনেক কম গরম হবে। এ কার্ডগুলোতে যুক্ত হয়েছে রিয়েল টাইম টেম্পারেচার ও পাওয়ার ড্র মনিটরিং। ফলে কোনো কারণে তাপমাত্রা যদি হঠাৎ বাড়ার চেষ্টা করে কার্ডটি নিজ থেকেই কাজ কমিয়ে আনে। এছাড়াও এগুলোতে যুক্ত হয়েছে সারাউন্ড মাল্টিপ্লে ও থ্রিডি ভিশন। ফলে গেমারেরা রিয়েল থ্রিডির পাশাপাশি থ্রিডি সাউন্ড উপভোগ করতে পারবেন। পরিশেষে জিটিএক্স সিরিজের মূল স্পেসিফিকেশন দেওয়া হলো, যা কার্ড ব্যবহারকারীদের কাজে সাহায্য করবে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : minitohial@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস