• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > পরবর্তী উইন্ডোজের সম্ভাব্য নতুন ফিচার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: প্রকৌ. তাজুল ইসলাম
মোট লেখা:৭১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
উইণ্ডোজ
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি বাজার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
পরবর্তী উইন্ডোজের সম্ভাব্য নতুন ফিচার
মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ৭.০ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে সন্দেহ নেই। মূলত উইন্ডোজ ভিসতাকে কাটছাঁট ও পরিশীলিত করে উইন্ডোজ ৭.০ ছাড়া হয়েছে। বর্তমানে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৮.০-এর উন্নয়নের কাজ চলছে। উৎসাহী ও অনুসন্ধিৎসু মহল ইতোমধ্যে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে পরবর্তী উইন্ডোজে কী কী ফিচার থাকছে। এ ব্যাপারে তারা ভাবছে পরবর্তী উইন্ডোজ ভার্সন কিভাবে বর্তমানের চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করবে। এর মধ্যে একটি হলো ট্যাবলেট পিসির অসাধারণ জনপ্রিয়তা। উইন্ডোজ ৮.০-কে এমন হতে হবে যাতে করে এটি সফলভাবে ট্যাবলেট পিসির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে এবং উইন্ডোজ ৭.০ ব্যবহারকারীদের এমনভাবে আকৃষ্ট করে, যাতে তারা উইন্ডোজ ৮.০-তে আপগ্রেড করতে আগ্রহী হয়। এ দ্বিবিধ চাহিদা পূরণ মাইক্রোসফটের জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ বটে। তথ্য-ফাঁস এবং উচ্চ পর্যায়ের সূত্র থেকে যে তথ্যসমূহ আবিষ্কৃত হয়েছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞেরা ইতোমধ্যে ব্যাপক আভাস পেয়েছেন, যা নিচে বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।



প্রথমেই উইন্ডোজ ৮.০-এর অবমুক্তির ব্যাপারে উইন্ডোজের প্রেসিডেন্ট স্টিভেন সিনোফ স্কির মন্তব্য উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি ২০০৯ সালে উইন্ডোজ ৭.০-এর অবমুক্তির সময় ধারণা দিয়েছিলেন, এটি ২৪-৩৬ মাসের মধ্যে প্রকাশিত হবে। সে অনুযায়ী ২০১১ থেকে ২০১২ এর মধ্যে কোনো এক মাসে এটি অবমুক্ত হওয়ার কথা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১২ সালের বসন্তকালে এটি পূর্ণমাত্রায় প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মাইক্রোসফট নিচে উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় আনবে বলে তারা মনে করেন। এগুলো হলো- ০১. অসাধারণ ও ব্যাপক সংযোগ ক্ষমতা। ০২. লোকেশন সার্ভিস। ০৩. সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। ০৪. ক্লাউড। ০৫. কানেক্টের মতো স্বাভাবিক ইন্টারফেস। ০৬. অধিক স্ক্রিন। ০৭. নিয়ত বর্ধনশীল স্টোরেজ ক্ষমতা। ০৮. কমপিউটিং পাওয়ার অর্থাৎ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী থেকে শুরু করে শক্তিশালী প্রসেসর এবং জিপিইউর কমপিউটিংয়ের সমর্থন দান।

গত বছর উইন্ডোজ ইকোসিস্টেম ফোরামে তাদের স্লাইডে কিছু দিকনির্দেশনা প্রকাশ করেছে- এগুলো হচ্ছে নিম্নরূপ :

উইন্ডোজ ৮.০ আগের ভার্সনের চেয়ে স্টার্ট বুট করবে দ্রুততরভাবে :

উইন্ডোজের হাইবারনেশন স্মার্টফোন বা মোবাইলের চেয়ে শ্লথ গতির। এমনকি এসএসডি হার্ডড্রাইভ ব্যবহার করেও উইন্ডোজ ৭.০-এর ১৪ সেকেন্ড সময় লেগে যায়। উইন্ডোজ ৮.০ মুহূর্তে (১ সেকেন্ড বা কম) জাগ্রত হবে। উইন্ডোজ ৭.০-এ যে রেডিবুস্ট ক্যাশকে প্রতিবার ঝেড়ে ফেলা হয়, এবার তাকে পুরোপুরি ব্যবহারের জন্য রাখা হবে।

উইন্ডোজ ৮.০ আগের ভার্সনের চেয়ে শাটডাউন হবে দ্রুততরভাবে :

মাইক্রোসফট শাটডাউনের প্রাক্কালে যুগপৎ লগ-অফ এবং হাইবারনেট সমাধা করতে চায়, যা পিসি অন/অফের প্রাক্কালে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে কাজ করবে। গুজব রয়েছে, এটি ৩ থেকে ৬ সেকেন্ডের মধ্যে সফল খোলা ফাইল এবং প্রসেসকে সেভ করতে চায়। মেমরির সবকিছুকে সেভ করার পরিবর্তে একটি বিস্তৃত তালিকা সংরক্ষণ করে পরবর্তী নরমাল স্টার্টআপের সময় তালিকা অনুযায়ী যোগ করে বুটকে ত্বরান্বিত করার কথা ভাবছে।

সিস্টেম স্ট্যাটকে এমনভাবে ভেঙে ফেলা হবে যাতে উইন্ডোজ ড্রাইভার, সিস্টেম সার্ভিস, কোর উইন্ডোজ ফাইলসমূহ, ডিভাইসের তালিকা এবং খোলা ফাইল ও অ্যাপ্লিকেশনের বিস্তৃত তালিকাকে সেভ করতে পারে।

মুহূর্তেই বিনোদনের ঝুড়ি

বিনোদনপ্রেমী অর্থাৎ যারা গান, ভিডিও অথবা ফটোর ব্যাপারে আগ্রাহী, তারা যাতে মুহূর্তের মধ্যে বিনোদনের স্বাদ পেতে পারেন সেজন্য মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৮.০-এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছে। এরই মধ্যে মাইক্রোসফট ‘ডাইরেক্ট এক্সপেরিয়েন্স’ নামের একটি প্রযুক্তি প্যাটেন্টের জন্য জমা দিয়েছে। এটি ফাস্ট বুটিং অপারেটিং সিস্টেমের আদলে চালু হবে, যা উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার বা মিডিয়া সেন্টারের পূর্ণ স্ক্রিন পরিচালনা করবে। এটি উইন্ডোজ সিই হতে পারে যা সেটটপ বক্সে মিডিয়া সেন্টার চালু করার জন্য ব্যবহার হয়। এটি ভার্চুয়ালাইজড করা পদ্ধতিতে চলবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে, কারণ ‘ডাইরেক্ট এক্সপেরিয়েন্স’ হাইপার ভাইজর নামের ভার্চুয়াল মেশিনে রান/চালু হবে, এতে করে শুধু একটি উইন্ডোজ নয় বরং অনেকগুলো উইন্ডোজ একত্রে চালু করা যাবে।

মোবাইল পণ্যের দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ

আর্ম (ARM) প্রসেসরে উইন্ডোজ ব্যাপারটি চমকপ্রদ। উইন্ডোজকে আর্ম প্রসেসরে চালনার জন্য ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কারণ আর্ম প্রসেসর প্রচলিত X৮৬ প্রসেসরের (ইন্টেল/এএমডি) তুলনায় বেশ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী। ব্যাটারি লাইফকে দীর্ঘস্থায়ী করা X৮৬ প্রসেসরে বেশ দুরূহ ব্যাপার। তবে ইন্টেল ইতোমধ্যে ওকট্রেইল নামে একটি মোবাইল প্রসেসর বাজারে ছেড়েছে, যদিও এর বিস্তারিত এখনও পাওয়া যায়নি। উইন্ডোজকে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে আরো দক্ষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে মাইক্রোসফট। প্রসেসর অলসের সময় ডিস্ক রিড/রাইট বন্ধ রাখা, অব্যবহৃত মেমরিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা, অলস পিসিআই ডিভাইসকে বন্ধ রাখা (যদিও ড্রাইভার নির্মাতার ওপরও নির্ভর করে) ইত্যাদি।

নতুন ইউজার ইন্টারফেস

সম্ভবত উইন্ডোজ ৮.০ হবে প্রথম মাইক্রোসফট অপারেটিং সিস্টেম, যা ন্যাচারাল ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহার করবে। মাইক্রোফটএক্সবক্স ৩৬০-এর কাইনেক্ট প্রযুক্তি যেমন ন্যাচারাল ইন্টারেকশন দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তা দেখে বিল গেটস চিন্তাভাবনা করেছেন, কিভাবে তা পরবর্তী উইন্ডোজে বাস্তবায়ন করা যায়। ন্যাচারাল ইউজার ইন্টারফেসে যে বিষয়গুলো রয়েছে তা হলো- কণ্ঠস্বর স্বীকৃতি, মাল্টি-টাচ, ত্রিমাত্রিক অঙ্গভঙ্গি, ত্রিমাত্রিক দৃষ্টি ইত্যাদি। এর মাধ্যমে উইন্ডোজকে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এর ফলে কীবোর্ড শুধু নয় বরং ক্যামেরা, এক্সিলারোমিটার এবং অন্যান্য সেন্সরের মাধ্যমে কমপিউটার পরিচালনা সম্ভব হবে। বর্তমানে প্রচলিত কাইনেক্ট ডিভাইসকে পিসিতে সংযুক্ত করা হতে পারে। এর ফলে ওয়েব ক্যামের চেয়ে অনেক ভালো পরিচালনা সম্ভব হবে। তবে ওয়েব ক্যামকে চশমাবিহীন ত্রিমাত্রিক পর্যায়ে উন্নীত করতে সক্ষম হলে ভিন্ন কথা- যা এখনো সম্ভব হয়নি। অঙ্গভঙ্গি স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজন হবে নতুন হার্ডওয়্যারের, ফলে হাই-এন্ড পিসিতে এ ব্যবস্থা সংযোজিত হতে পারে। বাজেট পিসিতে আপাতত সম্ভাবনা ক্ষীণ। সম্প্রতি গুজব রটেছে, নতুন উইন্ডোজে দুটি ইন্টারফেস রাখার ব্যবস্থা থাকবে। একটি হবে ‘মস’ নামে খ্যাত টাইলভিত্তিক ইন্টারফেস, যা উইন্ডোজ ফোন ৭-এর অনুরূপ হবে। এ ছাড়া ত্রিমাত্রিক ইন্টারফেস (উইন্ড) রাখা হবে, যা ৬৪ বিট সিস্টেম এবং উন্নত জিপিইউ সমৃদ্ধ পিসিতে ব্যবহার করা যাবে। বর্তমানে প্রসেসর নির্মাতাদ্বয় এএমডি এবং ইন্টেল এ ধরনের পণ্য বাজারজাত শুরু করেছে।

মাল্টিমিডিয়ার নতুন মাত্রা

উইন্ডোজ মাল্টিমিডিয়া প্লাটফরম জানিয়েছে, তারা এমন মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করছে, যা হোম নেটওয়ার্কে অনায়াসে টিভি বা অডিও সিস্টেমে চালানো যাবে অর্থাৎ অডিও/ভিডিও শেয়ারিং সহজতর হবে। উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ারে ‘প্লেটু’ অপশনের মাধ্যমে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারসহ অন্যান্য সফটওয়্যার ব্যবহারের সুবিধা থাকবে। এতে করে ফোন বা পিসিতে আসা মিডিয়াকে (অডিও/ভিডিও) সহজে টিভি বা সাউন্ড সিস্টেমে স্থানান্তর করা যাবে, তবে এর জন্য প্রয়োজন হবে DLNA সমর্থন। বর্তমানে এ হোম নেটওয়ার্ক স্ট্যান্ডার্ড ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এবং DLNA সমর্থিত ডিভাইস পাওয়া যাচ্ছে। মাইক্রোসফট ইন্টারনেট টিভির ব্যাপারে ক্রমান্বয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে বলে জানা যায়। এতে ইন্টেলের উইডি (WiDi) ওয়্যারলেস ডিসপ্লে ব্যবহার হতে পারে। যাতে করে ডাইরেক্টএক্স ত্বরণের মাধ্যমে তারবিহীনভাবে এক পর্দা থেকে অন্য পর্দায় স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। এছাড়াও পরবর্তী উইন্ডোজে নতুন কিছু ভিডিও কোডেক যেমন- এভিসি এইচডি, থ্রিডিভিডিও এবং এমপেগ থাকবে বলে জানা গেছে।

উইন্ডোজে নির্ভরযোগ্যতা বাড়বে

উইনরট নামে খ্যাত দুর্নাম থেকে মাইক্রোসফট মুক্তি চায়। পিসি সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্রমাগত ধীর গতির হয়ে যায়। ফলে ব্যবহারকারীরা বাধ্য হয় নতুনভাবে উইন্ডোজ ইনস্টল করতে। জানা গেছে, ডিভাইসস্টেজ নামে একটি ডিফল্ট ইন্টারফেস থাকবে যা ‘হেল্প অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার’-এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী পর্যায়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে। এটি টাস্ক ম্যানেজারের সাথে যুক্ত হয়ে প্রদর্শন করবে কোন অ্যাপ্লিকেশন (এপ্স) নেটওয়ার্ক ব্যান্ডউইডথ বেশি নিচ্ছে বা কোন এপ্স পিসিকে স্লো করছে। এতে ‘ফ্যাক্টরি রিসেট’ বলে একটি টুলস/অপশন থাকবে, যাতে ভোক্তারা সহজে উইন্ডোজ ইনস্টল করে কাজে ফিরতে পারে।

ক্লাউড সার্ভিস

উইন্ডোজ ৮.০-তে ব্যবহারকারীর প্রোফাইল ক্লাউডে সংরক্ষিত হবে, যাতে করে ব্যবহারকারী ডেস্কটপ থেকে মোবাইল যেকোনো ডিভাইস থেকে লগইন করে একই ধরনের প্রোফাইল পেতে পারেন। গুগল ইতোমধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে গুনাল প্রোফাইলকে স্থানান্তরযোগ্য করে তুলেছে। অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ লাইভ মেশকে (Live Mesh) সমন্বিত করা হবে। বর্তমানে এটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে উইন্ডোজ কমপিউটারে ডাটা সিঙ্ক করে থাকে। ফলে দেখা যাচ্ছে, উইন্ডোজকে শুধু পিসি নয় বরং সব ধরনের ডিভাইসের উপযোগী করে বানানো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে তারা ‘উইন্ডোজ অ্যাপ স্টোর’ তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এতে করে ভোক্তারা অ্যাপল বা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ স্টোরের মতো অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে রান করতে পারবে। ফাঁস হয়ে যাওয়া স্লাইডে দেখা যাচ্ছে যুন (Zune) প্লেয়ার ওয়েব অ্যাপ ডাউনলোড করে জিউজিক প্লে করছে। এতে যুন সফটওয়্যার ইনস্টল করার প্রয়োজন হচ্ছে না। ক্লাউড কানেকশনের ফলে পিসি, ফোন এবং টিভিতে স্ট্রিমিং মিউজিক পাওয়া যাবে।



উইন্ডোজ প্রোগ্রামকে কিভাবে ওয়েব অ্যাপসের সাথে সমন্বিত করা যায়, তার একটি প্রক্রিয়া ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৯.০-এ বাস্তবায়ন করা হয়েছে; তবে উইন্ডোজে এমনভাবে আধুনিক ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনকে (এপ্স) চালাতে চাচ্ছে যাতে করে এটি সত্যিকার অর্থে গুগল এর ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমের সাথে পাল্লা দিতে পারে। অর্থাৎ ওয়েব এপসকে উইন্ডোজ ফিচারগুলো ব্যবহারের উন্নত সমর্থন দিতে হবে। যেহেতু পিসি থেকে পিসিতে ভোক্তার প্রোফাইল অনুবর্তী হবে, সুতরাং অ্যাপ স্টোরকে একটি তালিকা রাখতে হবে ভোক্তার জন্য যেখানে বিভিন্ন সূত্র থেকে ইনস্টলড (স্থাপিত) সফটওয়্যারের পূর্ণ তালিকা থাকবে।

বর্তমানে যুগপৎভাবে উইন্ডোজ এবং মেসেঞ্জারে লগইন করার জন্য লাইভ আইডিকে যোগ করা যায়। উইন্ডোজ ৮-এ লাইভ আইডি আইকন ক্লকের পাশে টাস্কবারে থাকবে। উইন্ডোজ লাইভ মেশের পরবর্তী ভার্সনে ক্লাউডের মাধ্যমে প্রিফারেন্স, ফাইল, অ্যাকাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড সিনক্রোনাইজড থাকবে।

উইন্ডোজ ৮.০-তে সিস্টেম চাহিদা বাড়বে না

মাইক্রোসফটের কর্মকর্তা যদিও জানিয়েছেন, এ মুহূর্তে তারা সিস্টেম তথা হার্ডওয়্যার চাহিদা বাড়বে কি না বলতে পারছেন না। তথাপি এটি ধারণা করা যাচ্ছে, উইন্ডোজ ৮.০ ১ গি.হা. অ্যাটম প্রসেসর এবং ১ গি.বা. মেমরিতে চলতে পারে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে। তা না হলে উইন্ডোজ ট্যাবলেট বা নেটবুক সস্তা এবং আকর্ষণীয় ট্যাবলেটের বন্যায় ভেসে যেতে পারে। আশার কথা তারা উইন্ডোজ ৭-এ এই ধরনের ফিচার রাখতে সমর্থ হয়েছে।

নিরাপত্তা বাড়ছে পরবর্তী উইন্ডোজে

হার্ডড্রাইভের নিজস্ব অ্যানক্রিপটিংকে কাজে লাগিয়ে বুটকরণের মাধ্যমে অধিকতর নিরাপত্তা দিতে যাচ্ছে। এতে ইন্টেল চিপের হার্ডওয়্যার সিকিউরিটি অপশনকে কাজে লাগানো যেতে পারে, যাতে করে ম্যালওয়্যার (Malware) অপারেটিং সিস্টেমকে পরিবর্তন করেছে কি না নির্ণয় করতে পারে এবং ব্যবস্থা নিতে পারে। প্যাচগার্ড সিস্টেমের মাধ্যমে ৬৪ বিট সিস্টেম ম্যালওয়্যার যাতে কোনোভাবে কার্নেলের অংশকে পরিবর্তন করতে না পারে, তার ব্যবস্থা রাখবে। এছাড়া আক্রান্ত পিসিকে প্যাচগার্ড কোয়ারান্টাইনে বন্দী করে রাখবে। নিরাপত্তা বাড়াবার জন্য মাইক্রোসফট ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৯.০-এর মাধ্যমে এটা আচঁ করা যায় যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ খানিকটা মজবুত করা হয়েছে। তবে ভার্চুয়ালাইজেশন নিরাপত্তার ব্যাপারে বেশ সহায়ক হবে বলে প্রতীয়মান হয়।

এক নজরে উইন্ডোজ ৮.০-এ সম্ভাব্য ফিচারগুলো

০১. ক্লাউড প্রযুক্তিধারণ।

০২. উইন্ডোজ ট্যাবলেটের জন্য টাচ অপটিমাইজেশন।

০৩. ওয়েব/এ স্টোর।

০৪. নতুন ইউজার ইন্টারফেস (এক বা একাধিক)।

০৫. তাৎক্ষণিক পাওয়ার অন।

০৬. নতুন উপযোগী সফটওয়্যার, যেমন পিডিএফ রিডার থেকে ই-বুক রিডার। আইএসওকে ড্রাইভ হিসেবে মাউন্ট করা।

০৭. ভোক্তা এবং পরিবেশের সাথে সম্পৃক্ততা ফেসিয়াল রিকগনিশন থেকে শুরু করে অন্যান্য সেন্সর ব্যবহার করে ভোক্তার চাহিদা পূরণ করা।

০৮. উইন্ডোজকে বহনযোগ্য করা- এতে করে পুরো উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন এবং ডাটাকে ইউএসবি চাবির মাধ্যমে অন্যত্র নিয়ে চালানো।

০৯. ইনস্টলেশন প্রক্রিয়াকে উন্নত করা- উইন্ডোজ ইনস্টল করে আপডেট নয় বরং আপডেটকে আগেই ডাউনলোড করে ইনস্টল করা যাবে।

১০. ওয়েবে নিরাপত্তা বাড়ানো।

উপসংহার

উপরে যে আলোচনা হয়েছে তাতে করে পরবর্তী উইন্ডোজের যথার্থ ও পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে, তা নয়। বিভিন্ন সমর্থিত এবং অসমর্থিত তথ্যসূত্র থেকে তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন, ফলে এ থেকে বলিষ্ঠ কোনো সিদ্ধান্তে আসা সমীচীন হবে না। তবে প্রযুক্তির গতি-প্রকৃতির দিকে লক্ষ রেখে মাইক্রোসফট যে এগুচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মাইক্রোসফট তার দখলকে বজায় রাখার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা চালাবে- এটাই স্বাভাবিক। শুধু তাই নয়, তারা একে আরো বিসত্মৃত করার প্রয়াস বরাবরের মতো অব্যাহত রাখবে এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। অ্যাপল এবং গুগল (বিশেষ করে গুগল) মাইক্রোসফটের একচেটিয়া আধিপত্য খর্ব করার জন্য যে প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে প্রতিহত করার জন্য মাইক্রোসফট যে মরিয়া হয়ে উঠেছে তা তাদের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে বুঝা যায়- এতে তাদের মোক্ষম অস্ত্র উইন্ডোজকে ব্যবহার করবে এতে সন্দেহ নেই। গুগলের চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে- এটাই বড় কথা।



কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : itajul@gmail.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস