• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > লিনআক্সে এলো কোরেল আফটারশট প্রো
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: আমিনুল ইসলাম সজীব
মোট লেখা:১৯
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
লিনআক্স
তথ্যসূত্র:
লিনআক্স
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
লিনআক্সে এলো কোরেল আফটারশট প্রো

একটা সময় ছিল যখন লিনআক্স বলতেই শুধু টার্মিনালে টেক্সটভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমকে বোঝানো হতো। লিনআক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রোর ক্রমাগত উন্নয়নের ফলে টার্মিনালে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে এমনটা বলা যাবে না, কেননা পাওয়ার ইউজার এবং লিনআক্সের সার্ভার অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাজ এখনো টার্মিনাল দিয়েই করা হয়। তবে সাধারণ ব্যবহারকারীর কাছে বিনামূল্যে কমপিউটিংয়ের সুবিধা দিতেই মূলত লিনআক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রোকে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস দেয়া হয়। ফলে আস্তে আস্তে লিনআক্স ব্যবহার ক্ষেত্রবিশেষে উইন্ডোজের চেয়েও সহজ হয়ে এসেছে। সার্বিক বিচারে লিনআক্স এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত, ব্যবহারবান্ধব ও সহজলভ্য।

বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানি লিনআক্সের দিকে ঝুঁকছে। অ্যাডোবির এয়ার চলে এসেছে লিনআক্সে, যার ফলে টুইটডেকের মতো বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো সম্ভব হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ক্রিয়েটিভ স্যুটও শিগগিরই চলে আসবে লিনআক্সের উপযোগী হয়ে।



মানুষের লিনআক্সমুখিতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্প্রতি যে ডেভেলপার কোম্পানি লিনআক্সে পদার্পণ করেছে তার নাম হচ্ছে কোরেল। গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের জগতে কোরেলের বিভিন্ন সফটওয়্যার বেশ সমাদৃত, যাদের রয়েছে কোরেল ড্র-সহ বিভিন্ন গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এবং ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। সম্প্রতি কোম্পানিটি লিনআক্সের উপযোগী করে কোরেল আফটারশট প্রো রিলিজ দিয়েছে, যা দিয়ে ছবি এডিটিংয়ের কাজ করা হয়। আরো সহজভাবে তুলনা করতে গেলে, অ্যাডোবি লাইটরুমের বিকল্প হিসেবেই ব্যবহার করা যাবে কোরেল আফটারশট প্রো।

অ্যাডোবি লাইটরুম

অ্যাডোবি লাইটরুম মূলত ফটোশপের মতোই কিন্তু ব্যতিক্রম ইন্টারফেসে তৈরি, যার মাধ্যমে ছবি তোলার পর পোস্ট-প্রসেসিংয়ের কাজ অত্যন্ত দ্রুত করা যায়। ফাইল সাইজের দিক দিয়েও এটি ফটোশপের চেয়ে অনেক হালকা এবং ব্যবহারের সময় অনেক কম রিসোর্স খরচ করে। পাশাপাশি ফটোশপে যেসব কাজ করা যায় তার প্রায় সব কাজই আরও সহজ ও দ্রুততর উপায়ে করতে অ্যাডোবি লাইটরুম বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। শুধু পেশাদার ফটোগ্রাফারদের জন্যই নয়, শখের ফটোগ্রাফাররাও অ্যাডোবি লাইটরুম ব্যবহার করে থাকেন খুব সহজেই ছবিতে বিভিন্ন ইফেক্ট যোগ করতে এবং ছবির কালার টোন, কালার কন্ট্রাস্ট, এক্সপোজার ইত্যাদি ঠিকঠাক করতে।

তবে লিনআক্স ব্যবহারকারীরা যেহেতু এখনই তাদের অপারেটিং সিস্টেমে লাইটরুম ব্যবহার করতে পারছেন না, সেহেতু কোরেলের আফটারশট প্রো হবে অত্যন্ত কার্যকর একটি বিকল্প সফটওয়্যার। আসুন জেনে নেয়া যাক কী কী সুবিধা রয়েছে কোরেল আফটারশট প্রোতে।

কোরেল আফটারশট প্রো

লাইটরুমের মতোই কোরেল আফটারশট প্রো দিয়ে ক্যামেরার র’ ফটো প্রসেস করা যায় অত্যন্ত দ্রুত ও কার্যকর উপায়ে। বহু ছবি সহজে প্রসেস করার জন্য এই সফটওয়্যারে রয়েছে একাধিক সার্চ সেটিং। এর মাধ্যমে ছবির মেটাডাটা, ক্যামেরা সেটিং, ট্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়া ব্যবহার করে ছবি বাছাই ও অর্গানাইজ করতে পারবেন। অ্যাডভান্সড ফটো এডিটিং টুলের পাশাপাশি রয়েছে পোস্ট প্রসেসিং শেষে বিভিন্নভাবে এক্সপোর্ট করার সুবিধা। আফটারশট প্রোর অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে :

কুইক রিভিউ

একই বিষয়ের একাধিক ছবির ক্ষেত্রে সবগুলোকে একসাথে রেখে তুলনা করার জন্য বিশেষ অপশন রয়েছে আফটারশট প্রোতে। এর মাধ্যমে সব ছবিকে একসাথে রেখে কুইক রিভিউ বা দ্রুত পুরো ছবির বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে কোন শটটি সেরা।

মাল্টিপল ভার্সন এডিটিং

একই ছবিতে একই সাথে আলাদা আলাদাভাবে একাধিক ইফেক্ট যোগ করার জন্য এই সুবিধাটি অত্যন্ত কার্যকর। এর মাধ্যমে একই সাথে একটি ছবিকে আলাদা আলাদাভাবে খুলে বিভিন্ন কারেকশন ও ইফেক্ট অ্যাপ্লাই করে দেখতে পারবেন। বিল্ট-ইন ইফেক্টের মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট, ক্রস প্রসেসিংসহ ব্যাপকভাবে ব্যবহার হওয়া সব ধরনের ইফেক্ট।

হিল অ্যান্ড ক্লোন

হিল অ্যান্ড ক্লোন টুলের মাধ্যমে ছবির নির্দিষ্ট অংশ থেকে অবাঞ্ছিত বা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো স্পট বা বস্ত্ত সম্পূর্ণ মুছে দেয়া যাবে। সাধারণত ছোটখাটো স্পট দূর করার জন্য হিল টুল ব্যবহার করা হয় যেখানে বড় আকারের কিছু মুছে ফেলতে হলে ক্লোন টুল অধিক কার্যকর।

পারফেক্টলি ক্লিয়ার

ছবির লাইটিং ঠিক করার জন্য কোরেল আফটারশট প্রোর পারফেক্টলি ক্লিয়ারে ব্যবহৃত প্রযুক্তি অ্যাথেনটেক টেকনোলজিস লিমিটেড থেকে অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত। এই টুল প্রতিটি পিক্সেলে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু লাইটিং যোগ করে পুরো ছবিকে দেয় এক ভিন্ন মাত্রা। কোনো কারণে ছবি বেশ অন্ধকার আসলে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তা একেবারে ঠিক করা সম্ভব।

ক্রিয়েটিভ অ্যানহ্যান্সমেন্ট

ছবিতে বিভিন্ন কারেকশন ও ইফেক্ট যোগ করার পরপর ফাইলকেও ওই অবস্থায় এক্সটেনসিভ এডিটিংয়ের জন্য কোরেল পেইন্টশপ প্রো অথবা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, ম্যাকিনটশ বা লিনআক্সের অন্য যেকোনো ফটো এডিটিং সফটওয়্যারে পাঠানোর সুবিধা রয়েছে আফটারশট প্রোতে। এর মাধ্যমে এক্সটেনসিভ এডিটিংয়ের কাজে একাধিক সফটওয়্যার ব্যবহারের সুবিধাও তৈরি হয়েছে।

নয়েজ নিনজা

ছবির অন্যতম সমস্যা হচ্ছে যখন এতে অনাকাঙ্ক্ষিত নয়েজ দেখা দেয়। এসব নয়েজ সাধারণত ফটো এডিটিং টুল দিয়ে দূর করতে গেলে পুরো ছবিই ঘোলাটে হয়ে ওঠে। আফটারশটের নয়েজ নিনজা প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবির মান ঠিক রেখে নয়েজ দূর করা যায়।

মাল্টিপল এক্সপোর্ট সুবিধা

তেমন কোনো এডিট ছাড়াও যদি শুধু খসড়া বা র’ ফাইলকে ফাইল সাইজ পরিবর্তন করে মেটাডাটা যোগ করে জেপিজি বা অন্য কোনো ফরমেটে এক্সপোর্ট করতে চান তাহলে আফটারশটের রয়েছে ব্যাচ আউটপুট সুবিধা।

এতদিন সাধারণত ফটোগ্রাফাররা এসব কাজ অ্যাডোবি লাইটরুমেই করতেন। লিনআক্সে ফটোশপের বিকল্প হিসেবে সাধারণত গিম্প ইমেজ ম্যানিপুলেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করা হলেও তা এক্সটেনসিভ ফটো এডিটিংয়ের জন্য ততটা কার্যকর নয়।

অ্যাডোবি ক্রিয়েটিভ স্যুটের মতোই কোরেল আফটারশট প্রোও বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় না। এর দাম ৯৯ ডলার। তবে কেনার আগে এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখার জন্য রয়েছে ৩০ দিনের ট্রায়াল সুবিধা। ফলে এখনই কোরেল আফটারশট প্রো ডাউনলোড করে ব্যবহার শুরু করতে পারেন ৩০ দিনের জন্য। পারফরম্যান্স দেখে সন্তুষ্ট হলেই তবে কিনে সবসময়ের জন্য প্রফেশনাল ফটো এডিটিং টুল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন লিনআক্স কমপিউটারে।

কোরেল আফটারশট প্রো উইন্ডোজ ও ম্যাকের পাশাপাশি লিনআক্সের জন্য আরপিএম এবং ডট ডেব ফরমেটে ৩২ ও ৬৪ বিট অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ডাউনলোড করা যাবে এই লিঙ্ক থেকে : http://apps.corel.com/lp/aftershot/download/index.html


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : sajib@aisjournal.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস