• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বায়োস নিয়ে মৌলিক কিছু কথা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: খাজা মো: আনাস খান
মোট লেখা:২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১২ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
বায়োস
তথ্যসূত্র:
হার্ডওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বায়োস নিয়ে মৌলিক কিছু কথা
বায়োস শব্দটি সম্পর্কে প্রত্যেক কমপিউটার ব্যবহারকারী অবগত। কিন্তু বায়োস শব্দটির বিস্তারিত বিষয়ে সাধারণ ব্যবহারকারীরা খুব কমই জানেন। বায়োস (BIOS) হচ্ছে বেসিক ইনপুট-আউটপুট সিস্টেম, যা একটি আইসি বা চিপ। এর ভেতরেই কমপিউটার চালু হওয়ার সব তথ্য বিস্তারিত থাকে। কমপিউটারের পাওয়ার অন করার পর তা কাজের উপযোগী হওয়া পর্যন্ত কমপিউটারের ইনপুট-আউটপুট ডিভাইস এবং সব অ্যাপি­কেশন সফটওয়্যার ঠিক আছে কি না এই চিপের মাধ্যমে পরীক্ষিত হয়। কমপিউটার কাজের উপযোগী হওয়ার আগ পর্যন্ত সেলফ পাওয়ার টেস্টের দায়িত্বটুকু পালন করে বায়োস। এর মধ্যে রয়েছে ভাইরাস আক্রমণ, ওভারক্রিকিং এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা।

বায়োস মূলত একটি পিসি বুট ফার্মওয়্যার প্রোগ্রাম। যখন একটি পিসি অন করা হয়, বায়োস তখন প্রথমে পিসিতে সংযুক্ত প্রধান বা মৌলিক হার্ডওয়্যারগুলো পরীক্ষা করে, যাকে বলে পাওয়ার অন সেলফ টেস্ট (POST) এবং এটি নির্ধারণ করে যে উপস্থিত হার্ডওয়্যারগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে। তারপর এটি কমপিউটারের র‌্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমরিতে (RAM) অপারেটিং সিস্টেম লোড করে।

বায়োস কমপিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের সংযুক্ত ডিভাইস। যেমন হার্ডডিস্ক, ভিডিও কার্ড, কিবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার ইত্যাদির মধ্যে তথ্য প্রবাহ পরিচালনা করে।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, কমপিউটার অন হওয়ার পর কি বায়োসের কাজ শেষ? পিসি অন হওয়ার পর বায়োস অপারেটিং সিস্টেমের ওপর সব দায়দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বসে থাকে না। এ পর্যায়ে বায়োস হার্ডওয়্যার এবং অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। প্রথমত, বায়োস চেক পোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অপারেটিং সিস্টেমের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করে এবং দ্বিতীয়ত, অপারেটিং সিস্টেম লোড হতে কোনো সমস্যা হলে তার সিগন্যাল সরবরাহ করে। তৃতীয়ত, সেই সিগন্যাল অনুসারে কাজ সম্পন্ন হয়।

বায়োসের কাজের ধরন

বায়োসের কাজের ধরনটা বোঝানোর জন্য একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। আমাদের শরীরের ওপর যখন কোনো পোকা বসে তখন আমাদের মস্তিষ্কের সুনির্দিষ্ট জায়গা থেকে সঙ্কেত আসে যে, ‘তোমার শরীরের ওই স্থানে একটি পোকা বসেছে। এরপর মস্তিষ্ক আমাদের এটাও সঙ্কেত দেয় যে, ওই পোকাটিকে সরাতে হলে আমাদের কোনো হাত ব্যবহার করতে হবে। এভাবেই মস্তিষ্কের নিশ্চিত সঙ্কেতের পর আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করি।’ গায়ের ওপর থেকে পোকা সরাতে গিয়ে যেমন পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা ভাবি না, ঠিক তেমনি কমপিউটার বায়োসের কাজগুলোও এত দ্রম্নতভাবে সম্পন্ন করে যে, এর পেছনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তেমন চিন্তা করে না।

বায়োসের ভেতরে যা যা থাকে

বায়োসের মধ্যে তারিখ, সময় এবং সিস্টেম কনফিগারেশন তথ্য সংরক্ষিত থাকে যা একটি ব্যাটারি পাওয়ার দিয়ে পরিচালিত এবং নন-ভোলাটাইল মেমরি চিপের মধ্যে থাকে, যাকে বলা হয় কমপি­মেন্টারি মেটাল অক্সাইড সেমিকন্ডাক্টর (CMOS)। প্রতিটি মাদারবোর্ড প্রস্ত্ততকারক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের বায়োস প্রস্ত্তত করে থাকে। কারণ বিভিন্ন মাদারবোর্ডের হার্ডওয়্যার আর্কিটেকচার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যখন কমপিউটারের কোনো হার্ডওয়্যার সমস্যা হয়, তখন বায়োস একটি ত্রম্নটি কোড প্রদর্শন করে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী বুঝতে পারেন নির্দিষ্ট কোনো হার্ডওয়্যারে সমস্যা হয়েছে। মাদারবোর্ডের ব্যবহার হওয়া কিছু জনপ্রিয় বায়োস হলো : AMI BIOS, AWARD BIOS, PHONEMIX BIOS।

বায়োসে অ্যাক্সেস করার জন্য কমপিউটার বুট করার সময় মাদারবোর্ডভেদে যেসব কীগুলো প্রেস করতে হয় সেগুলো হলো : F1, F2, F10, DEL, ESC। যেমন গিগাবাইট মাদারবোর্ডের বায়োসে অ্যাক্সেস করতে হলে কমপিউটার বুট করার সময় ডেল (DEL) চাপতে হয়। তেমনি ইন্টেল মাদারবোর্ডের জন্য F2 চাপতে হয় এবং এইচপির জন্য F10 চাপতে হয়।

বায়োসের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে যেভাবে কমপিউটার ওপেন করা যাবে

বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ই-মেইল সার্ভিসে বিভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকি। অনেক বেশি পাসওয়ার্ড বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করার কারণে পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। কমপিউটারের নিরাপত্তার জন্য উইন্ডোজ বা বায়োস পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকি। আর যদি কখনো এই পাসওয়ার্ড ভুলে যাই, তাহলে কীভাবে তা উদ্ধার করা যায়, তা হয়ত অনেকেই জানেন না। অনেকে এমতাবস্থায় নতুন করে উইন্ডোজ সেটআপ করার কথা চিন্তা করে থাকেন। নতুন করে উইন্ডোজ ইনস্টল করা মানেই নতুন ঝামেলা ও বিভিন্ন গুরম্নত্বপূর্ণ তথ্য হারানোর আশঙ্কা থাকে। তাই এমন অবস্থায় নতুন করে উইন্ডোজ না দিয়ে বায়োসের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা যায়। আগেই উলে­খ করা হয়েছে, প্রত্যেক মাদারবোর্ডেই বায়োসের একটি ব্যাটারি তথা কমপি­মেন্টারি মেটাল অক্সাইড সেমিকন্ডাক্টর (CMOS) থাকে। কমপিউটার বন্ধ থাকলেও এই ব্যাটারি সবসময় চলতে থাকে। ঘড়ি কিংবা মোবাইলের ব্যাটারি খুলে আবার লাগালে যেমন টাইম আবার রিসেট করতে হয়, ঠিক তেমনি কমপি­মেন্টারি মেটাল অক্সাইড সেমিকন্ডাক্টর (CMOS) খুলে আবার কিছুক্ষণ পর লাগালে বায়োসের পাসওয়ার্ড নষ্ট হয়ে যায় এবং নতুন পাসওয়ার্ড দেয়া যাবে।

ফিডব্যাক : anas@smartbd.net
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস