লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
হার্ডড্রাইভ এখন ইন্টারনেটে
ফাইল সংরক্ষণের জন্য সাধারণত কমপিউটারের হার্ডড্রাইভ ব্যবহার হয়। তবে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রা ও প্রয়োজনীয় ফাইলের পোর্টেবিলিটির জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন স্টোরেজ বা অনলাইন ড্রাইভ। যেখানে সহজেই প্রয়োজনীয় ফাইল, গান, মুভি রেখে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ব্যবহার, পরিবর্তন বা পরিবর্ধনের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। নিজের কমপিউটারের হার্ডড্রাইভের মতোই ব্যবহার হচ্ছে এসব অনলাইন স্টোরেজ। জনপ্রিয় এমন পাঁচ অনলাইন স্টোরেজ নিয়েই এই লেখা।
তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় কমপিউটিং সেবার পাশাপাশি ইন্টারনেট একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিত্যনতুন সেবার মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময়, গতিময় ও কর্মমুখর করে তুলেছে ইন্টারনেট। সেই সাথে অবাধে প্রয়োজনীয় ফাইল, গান বা ভিডিও পৃথিবীর যেকোনো প্রামত্ম থেকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে ইন্টারনেট। আর এই সেবা দিতে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো কমপিউটারের হার্ডড্রাইভের বিকল্প অনলাইন ড্রাইভ ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অনেকে পালস্না দিয়েই গ্রাহকদের বিনামূল্যে ও অর্থের বিনিময়ে সেবা দিচ্ছে। সংরক্ষিত তথ্য সহজে ব্যবহারের পাশাপাশি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করছে এসব সেবা। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের ‘গুগল ড্রাইভ’, মাইক্রোসফটের ‘স্কাইড্রাইভ’, অ্যাপলের ‘আইক্লাউড’, অনলাইনে পণ্য বেচাকেনার অন্যতম প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের ‘ক্লাউড ড্রাইভ’ ও ‘ড্রপবক্স’ এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। আধুনিক সব সেবা নিয়ে এসব অনলাইন ড্রাইভ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে।
গুগল ড্রাইভ
প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল বেশ আগেভাগেই অনলাইন স্টোরেজ নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে। অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অনলাইন স্টোরেজ সেবা আনলেও তাদেরকে একটু পরেই আনতে হয়েছে। তবে ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তাদের অনলাইন স্টোরেজ সেবা ‘গুগল ড্রাইভ’। কমপিউটারের হার্ডড্রাইভের মতো এই সেবা পাওয়া যাবে বলে এর নামকরণ করা হয় ‘গুগল ড্রাইভ’। http://drive.google.com ওয়েব অ্যাড্রেস থেকে এই সেবা পাওয়া যাচ্ছে। যেকোনো তথ্য সংরক্ষণ ও শেয়ার করার সুবিধা নিয়ে আসা এ ড্রাইভটির স্লোগান ‘কিপ এভরিথিং, ‘শেয়ার এভরিথিং’। গুগল ড্রাইভের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি মাল্টিপল অপারেটিং সিস্টেম, মাল্টিপল ডিভাইস, মাল্টিপল ব্রাউজার। অর্থাৎ যেকোনো অপারেটিং সিস্টেম, বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস পিসি, ল্যাপটপ, নেটবুক, নোটবুক, অ্যান্ড্রয়িড ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোন থেকে যেকেনো ব্রাউজারের মাধ্যমে এই সেবা পাওয়া যাচ্ছে। আপাতভাবে গ্রাহকদের গুগল ড্রাইভে পাঁচ গিগাবাইট অনলাইন স্পেস বিনামুল্যে দিচ্ছে গুগল। তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করে বাড়তি জায়গা বা অনলাইন স্পেস কেনার ও ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বিনামূল্যে পাঁচ গিগাবাইট জায়গার পর বাড়তি জায়গা ২৫ গিগাবাইটের জন্য মাসে ২.৪৯ ডলার, ১০০ গিগাবাইটের জন্য মাসে ৪.৯৯ ডলার এবং ১ টেরাবাইটের জন্য মাসে ৪৯.৯৯ ডলার দিয়ে পাওয়া যাবে বাড়তি জায়গা। এখানে ব্যবহারকারীরা নিজের প্রয়োজনীয় ফাইল রাখতে পারবেন। গুগল ড্রাইভে সংরক্ষিত এসব ফাইল থাকবে নিরাপদে। পাশাপাশি সংরক্ষিত ফাইলগুলোকে সহজে অন্যের সাথে শেয়ার করা যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট কোনো ফাইল বা ফোল্ডারকে নির্বাচিত এক বা একাধিক ব্যক্তির সাথে সুবিধামতো শেয়ার করে দিতে পারেন। একটি লিঙ্কের মাধ্যমেই কাঙি¶ত ব্যক্তির কাছে যেকোনো ধরনের বড় ফাইলও পাঠানো যাবে। গুগল ডকসের মতো গুগল ড্রাইভেও সংরক্ষিত বিভিন্ন ফাইলকে অনলাইনে একাধিক ব্যক্তি মিলে সম্পাদনা করা যায়। একাধিক ব্যক্তি একসাথে ওয়ার্ড, স্প্রেডশিট বা প্রেজেন্টশন ফাইল তৈরি বা সম্পাদনা করার সময় যেকেউ যেকোনো পরিবর্তন সেই ফাইলে করলে তা সাথে সাথেই দেখতে পারবে সংশ্লিষ্ট সবাই। একই সাথে গুগল ড্রাইভে সব ধরনের ফাইল সংরক্ষণ ও যেকোনো ফরম্যাটের ফাইলই ওপেন করা যায়। তবে সংশ্লিষ্ট ফাইলটি চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনটি ডিভাইসটিতে ইনস্টল করা থাকা লাগবে। গুগল ড্রাইভে অধিক পরিমাণ ফাইল সংরক্ষণ হলেও সমস্যা নেই। গুগলের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফাইলটি সহজেই খুঁজে বের করা যায়। গুগল ড্রাইভের সার্চ ইঞ্জিন অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন ব্যবহার করে স্ক্যান করা ডকুমেন্ট থেকেও টেক্সট খুঁজে বের করা যায়। ছবি সার্চ করার জন্যও রয়েছে বিশেষ সুবিধা। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকা হোক না কেনো, ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে অফিসিয়াল অনেক প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করা সম্ভভ গুগল ড্রাইভের মাধ্যমে।
আইক্লাউড
গুগলের মতোই ব্যবহারকারীদের ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস দিতে টেক জায়ান্ট অ্যাপলের রয়েছে ‘আইক্লাউড’। www.apple.com/icloud ঠিকানা থেকে আইক্লাউডের সেবা পাওয়া যাবে। তবে অন্যদের থেকে এই সেবার ভিন্নতা হলো সেবাটি পাওয়ার জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই অ্যাপলের কোনো ডিভাইসের ওপর নির্ভর হতে হবে। অর্থাৎ আইক্লাউড কাজ করবে শুধু অ্যাপল ডিভাইসের জন্যই। আইক্লাউডে অ্যাপল ডিভাইসগুলোর জন্য গান, ছবিসহ সব ধরনের ফাইল রাখা যায়। আইওএস ডিভাইসগুলোর জন্য ব্যাকআপও রাখার ব্যবস্থা রয়েছে আইক্লাউডে। এই সেবার মাধ্যমে আইফোন দিয়ে তোলা বা নেয়া যেকোনো ছবি বা ভিডিও, গান বা কোনো ফাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে একই গ্রাহকের আইপ্যাড, আইপড, অ্যাপল টিভি সেটআপ বক্স বা আইটিউন সেবা সংযুক্ত যেকোনো ব্যক্তিগত কমপিউটারে জমা হয়ে যাবে। এর ফলে কোনো নির্দিষ্ট পিসি বা ম্যাকিনটশের ওপর আর নির্ভর হতে হবে না। ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন যেকোনো কমপিউটারে আইক্লাউড ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবহারকারী তার ব্যক্তিগত কমপিউটারের পুরো অভিজ্ঞতা ফিরে পাবেন। একই সাথে আইফোনে ছবি তুলে কোনো ব্যবহারকারীকে সেই ছবি নিজের ব্যক্তিগত কমপিউটার বা ট্যাবে নিতে যে সময় ব্যয় করতেন, এ ক্ষেত্রে সে সময়টি লাগছে না। অ্যাপল আইডি ব্যবহারকারীরা আইক্লাউড.কমে লগইন করে এই সেবা উপভোগ করতে পারবেন। এরপর ব্যবহারকারী তাদের ব্যক্তিগত তথ্য, সিডিউলসহ প্রয়োজনীয় ফাইল রাখতে পারবেন। প্রয়োজন অনুসারে পরবর্তীতে মুছে দেয়া অথবা পরিবর্তনও করা যাবে। আর এই সেবাগুলো দেয়ার জন্য অ্যাপলের রয়েছে আইওয়ার্কস অ্যাপ্লিকেশন্স নামে একটি আলাদা প্লাটফর্ম। এখানেও বিনামূল্যে ৫ গিগাবাইট অনলাইন স্টোরেজ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত স্টোরেজের জন্য ব্যবহারকারীকে ১০ গিগাবাইটের জন্য ২০ ডলার, ২০ গিগাবাইটের জন্য ৪০ ডলার ও ৫০ গিগাবাইটের জন্য ১০০ ডলার খরচ করতে হবে। তবে আইক্লাউডে বেশ কয়েকটি বিনামূল্যের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ফটো স্ট্রিম। এ সেবাটির মাধ্যমে আইফোনে তোলা সর্বশেষ এক হাজার ছবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা করে ব্যবহারকারীর অন্যান্য অ্যাপল যন্ত্রে পাঠিয়ে দেয়। যারা অ্যাপলের পণ্য ব্যবহার করেন তাদের অনলাইন স্টোরেজ সেবার জন্য নিঃসন্দেহে এক অনন্য সেবা আইক্লাউড। তাই এটির জনপ্রিয়তায় প্রথম সারিতে ঠাঁই পেয়েছে।
স্কাইড্রাইভ
অনলাইন ক্লাউড স্টোরেজ হিসেবে প্রযুক্তি জায়ান্ট সম্প্রতি চালু করে ‘স্কাইড্রাইভ’ সার্ভিসটি। শুরুতে ২৫ গিগাবাইট বিনামূল্যের স্টোরেজ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে স্কাইড্রাইভে ৭ গিগাবাইট বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। গুগল ড্রাইভ বা আইড্রাইভের মতো
এখানেও যেকোনো ফাইল শেয়ার করার সুবিধা রয়েছে। যেকোনো ডিভাইস এবং অপারেটিং সিস্টেম সমর্থন করে স্কাইড্রাইভ। ফলে ব্যবহারকারী যেখানেই থাকুক না কেনো সহজেই যেকোনা ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়ে নিজের কমপিউটারের সেবা উপভোগ করতে পারবেন। গুগল ডকের মতো স্কাইড্রাইভে মাইক্রোসফট অফিস সংযুক্ত রয়েছে। ফলে অফিস ফাইলগুলো এতে ব্যবহার অনেক সুবিধাজনক। এছাড়া ইচ্ছে করলে দৈনন্দিন হিসাব, লেখালেখি, ছবি বা প্রয়োজনীয় ফাইল অনলাইনে রেখে সহজেই ব্যবহার করা যায়। www.skydrive.live.com ওয়েব ঠিকানা থেকে ব্যবহার করা যাবে এই সার্ভিস। সুবিধাটি পেতে মাইক্রোসফটের এমএসএন, হটমেইল বা লাইভমেইল অ্যাকাউন্ট ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। ফাইল সংরক্ষণ ছাড়াও বড় আকারের ফাইল ই-মেইলের জন্য আশীর্বাদ স্কাইড্রাইভ। www.skyrive.live.com ঠিকানায় গিয়ে প্রথমে যেকোনো লাইভ আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। লগইন করলে সাইটের বাম পাশে ফাইল, ডকুমেন্ট, ফটো, রিসেন্ট ডক ও শেয়ার করা ফাইল লিঙ্ক দেখাবে। অনলাইনে ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট বা ওয়াননোট নোটবুকের কাজ করতে চাইলে -এর পাশে থাকা সংশ্লিষ্ট আইকনে ক্লিক করতে হবে। এবার নতুন একটি পপআপ বক্সে ফাইলের নাম দিয়ে ওকে করলে মাইক্রোসফটের সর্বশেষ সংস্করণের অফিস প্রোগ্রামের মতো একটি পেজ আসবে। সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ করে সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। একাধিক ব্যক্তিকে ব্যবহার করতে দিতে চাইলে ফাইলটির নামের ওপর ক্লিক করতে হবে। এরপর ডান পাশের শেয়ার ফিচারটি থেকে নির্ধারণ করে দিতে হবে ফাইলটি কে দেখতে পাবে, পরিবর্তন করতে পারবে, নাকি এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ফাইলের ভার্সন বা হিস্টোরি দেখে মূল ব্যবহারকারী চাইলে অন্য কারও পরিবর্তন পাল্টে পুনরায় আগের মতো নিয়ে আসতে পারবেন। চাইলে যেকোনো ফাইলে ইউজার পাসওয়ার্ড সেট করে দেয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে শুধু পাসওয়ার্ড জানা লোকটিই ফাইলটি ডাউনলোড বা ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে ফাইল আপলোডের কোনো সময়সীমা নেই, যা অন্য অনলাইন ড্রাইভে থাকে। অর্থাৎ ব্যবহারকরীর এমএসএন/হটমেইল/লাইভ অ্যাকাউন্ট যতদিন থাকবে, ততদিন ফাইল সম্পূর্ণ নিরাপদে থাকবে। স্কাইড্রাইভে মিউজিক, ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্ট ইত্যাদি আপলোড করা যাবে। আপলোডের সুবিধার্থে একটি ফাইল সর্বোচ্চ ৫০ মেগাবাইটের হতে পারবে। ৫০ মেগাবাইটের চেয়ে বড় আকারের ফাইল আপলোড করতে হলে ওপরের সিনক্রোনাইজ স্টোরেজ ব্যবহার করতে হবে। আপলোড করা ফাইল ই-মেইলের পাশাপাশি ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ সাইটে শেয়ার করা যাবে। বিনামূল্যের ৭ গিগাবাইটের অতিরিক্ত স্পেস ব্যবহার করতে চাইলে কেনা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ২০ গিগাবাইট ১০ ডলার, ৫০ গিগাবাইট ২৫ ডলার ও ১০০ গিগাবাইটের জন্য ৫০ ডলার খরচ করতে হবে।
ক্লাউড ড্রাইভ
অনলাইন জায়ান্ট অ্যামাজনেরও ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস হিসেবে রয়েছে ‘ক্লাউড ড্রাইভ’। গত বছরের ২৯ মার্চ অ্যামাজনের ক্লাউড ড্রাইভের যাত্রা শুরু হয়। এর মাধ্যমে বিনামূল্যে ৫ গিগাবাইট অনলাইন ক্লাউড স্টোরেজ পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে একটি বড় সুবিধা হচ্ছে অ্যামাজন থেকে গান কিনলে তা এই ড্রাইভে সংরক্ষণ করা যাবে। তবে সেটি ফ্রিস্টোরেজের বাইরের হিসাব করা হবে। অর্থাৎ অ্যামাজন থেকে কেনা গান সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হবে না। অনলাইনে গান সংরক্ষণের জন্য এটি খুব ভালো একটি সার্ভিস। সংরক্ষণের পর ব্যবহারকারী সংরক্ষিত গানগুলো অ্যামাজন এমপিথ্রি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়িড ডিভাইসে অথবা অ্যামাজন এমপিথ্রি ডাউনলোডারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোনো কমপিউটারে ডাউনলোড করতে পারবেন। www.amazon.com/clouddrive ঠিকানা থেকে এই সেবা পাওয়া যায়। মোবাইল, কমপিউটার, ট্যাবলেট পিসিসহ ৮টি ডিভাইস বা ব্রাউজারে এই সেবা পাওয়া যায়। ক্লাউড ড্রাইভের সঙ্গে মিউজিক স্ট্রিমিংয়ের জন্য বিনামূল্যেই রয়েছে ক্লাউড প্লেয়ার। যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী ক্লাউড ড্রাইভে সংরক্ষিত গান কমপিউটার অথবা অ্যান্ড্রয়িড ডিভাইসে চালাতে পারবেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গান খোঁজার সুবিধা রয়েছে এই প্লেয়ারটিতে। শুধু গানেই শেষ নয়, ছবি, ভিডিও এবং বিভিন্ন ধরনের ফাইল সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা যাবে ক্লাউড ড্রাইভে। অনলাইননির্ভর হওয়ায় এসব ফাইল হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ব্যবহারকারীর ৫ গিগাবাইটের বেশি অনলাইন স্টোরেজের প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট চার্জ দিয়ে প্রতি এক বছরের জন্য স্টোরেজ কেনা যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি ২০ গিগাবাইট ২০ ডলার, ৫০ গিগাবাইট ৫০ ডলার, ১০০ গিগাবাইট ১০০ ডলার, ২০০ গিগাবাইট ২০০ ডলার, ৫০০ গিগাবাইট ৫০০ ডলার ও ১ হাজার গিগাবাইটের জন্য ১ হাজার ডলার পরিশোধ করতে হবে।
ড্রপবক্স
অনলাইন স্টোরেজ হিসেবে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশ আগেই যাত্রা শুরু করে ড্রপবক্স। ২০০৭ সালে ড্রিউ হস্টন ও অরশ ফেরদৌসী নামে দু’জন এমআইটি শিক্ষার্থী একাধিক কমপিউটার থেকে মেইল ব্যবহারের সুবিধা পেতে এই সেবাটি তৈরি করে। পরবর্তীতে ফাইল শেয়ারিংয়ের জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠে ড্রপবক্স। বর্তমানেও অনলাইন স্টোরেজের কথা বলতে গেলে ড্রপবক্সের নামটি আগে চলে আসে। এর মাধ্যমে পিসিতে রক্ষিত ফাইলকে অনলাইনে শেয়ার করা যায় এবং অনলাইনে ব্যাকআপ রাখা যায়। উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনআক্স, আইফোন, আইপ্যাড, অ্যান্ড্রয়িড এবং বস্ন্যাকবেরিতেও ব্যবহার করা যায় ‘ড্রপবক্স’। এতে অবশ্য বিনামূল্যে ২ গিগাবাইট স্টোরেজ পাওয়া যায়। তবে রেফারেল লিঙ্কের মাধ্যমে অন্য কাউকে এই সেবায় যুক্ত করতে পারলে ৫০০ মেগাবাইট করে স্টোরেজ বাড়ানো যায়। এভাবে বিনামূল্যে ১৮ গিগাবাইট পর্যমত্ম জায়গা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ পরিশোধের মাধ্যমে বাড়তি জায়গা কেনার সুযোগ রয়েছে। এই সেবা পেতে প্রথমে www.dropbox.com সাইটে নিবন্ধন ও ড্রপবক্স সফটওয়্যারটি ডিভাইসে ডাউনলোড করতে হবে। ডাইনলোড করা ফাইলটি ইনস্টল করলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে একটি ফোল্ডার তৈরি করবে। এখন ওই ব্যবহারকারী ওই ফোল্ডারে কোনো ফাইল রাখলে সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর ড্রপবক্স অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত হবে। এরপর পৃথিবীর যেকোনো প্রামত্ম থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফাইলগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। কোনো ফাইল ইন্টারনেটে আপলোড করা ছাড়াই শুধু ওই নির্দিষ্ট ফোল্ডারে কপি করে রেখে দিলেই সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিনক্রোনাইজড হয়ে অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত হবে। তাই অন্যান্য অনলাইন স্টোরেজের থেকে এটি ব্যবহার সহজ।
ফিডব্যাক : bmtuhin@gmail.com