লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
মোস্তাফা জব্বার
মোট লেখা:১৩৭
লেখা সম্পর্কিত
শাহবাগের ডিজিটাল সংযোগ
বিশ্বে যারা রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও রাজনীতি নিয়ে চর্চা করেন, তাদেরকে নতুন করে হিসাব-নিকাশ করতে হবে। তত্ত্ব ও তথ্য দিয়ে নতুন করে আলোচনা করতে হবে বাংলাদেশে শাহবাগ চত্বরে যা ঘটেছে তা নিয়ে। যদিও কারও কারও ধারণা, মিসরের তাহরির স্কয়ারে প্রথম ডিজিটাল প্রযুক্তির ডাকে রাজনৈতিক আন্দোলনের সূচনা হয় ও তিউনিসিয়ায় তার পরের ঘটনাটি ঘটে। তবুও শাহবাগ চত্বর ও তার আন্দোলনের ধারা একটি সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা নিয়ে উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশ তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়া বা উন্নত এশিয়া, উন্নত অস্ট্রেলিয়া কিংবা অতি উন্নত ইউরোপ বা আমেরিকা মহাদেশেও এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেনি। যারা দিন-রাত বালিশের নিচে ডিজিটাল হাতিয়ার নিয়ে ঘুমায়, তাদের রাজনৈতিক আন্দোলন সেই প্রযুক্তির স্পর্শ না পেয়ে, বাংলাদেশে সেই প্রযুক্তি শুধু প্রবেশ করতে যাচ্ছে, বিপ্লবটা হলো সেখানে। বিস্ময়কর ভাবনাটি এজন্য যে, একটি কৃষিপ্রধান অনুন্নত দেশে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের স্লোগান কার্যক্ষেত্রে এমন ভীষণভাবে ফলদায়ক হয়ে উঠবে সেটি কেউ চিন্তাও করতে পারেনি।
তবুও শাহবাগের আন্দোলন সম্পর্কে এখন আর কাউকে বলে দিতে হচ্ছে না যে, এর সূত্রপাত হয়েছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। আন্দোলনের চরিত্রটি নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই যে, এটি ডিজিটাল। যদিও এখন পর্যন্ত দেশের কোনো মিডিয়াতে এই আন্দোলনের সূচনা, উদ্ভব, বিকাশ ও বিস্তার নিয়ে অনুসন্ধানী কোনো প্রতিবেদন চোখে পড়েনি বা আন্দোলনের ডিজিটাল চরিত্র নিয়ে তেমন কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি, তবুও বিষয়টি এরই মাঝে স্পষ্ট হয়েছে অন্তত একটি কারণে। সবাই এরই মাঝে জেনে গেছেন, এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক নামে একটি সংগঠন। দেশের বহু মানুষ যদিও ব্লগিং ও অনলাইন অ্যাক্টিভিজম সম্পর্কে কোনো ধারণা রাখে না, তবুও এটি যে কমপিউটারবিষয়ক কিছু এবং পুরো বিষয়টি যে ডিজিটাল সে বিষয়ে অতি সাধারণ মানুষও সচেতন। একই সাথে এই বিষয়টিও স্পষ্ট করে উপলব্ধি করা দরকার, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এই আন্দোলনকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টাও করা হয়েছে এবং প্রতিপক্ষ সেই প্রযুক্তি দিয়েই এই আন্দোলনকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে। আরও একটু স্পষ্ট করে বলতে হবে, রাজপথের আন্দোলন যদি থেমেও যায় তবুও ডিজিটাল জগতে এই আন্দোলন থামবে না। এর পক্ষ-বিপক্ষর লড়াইটা ডিজিটাল মাধ্যমে অব্যাহত থাকবে। এমনকি যদি জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করাও হয় তবুও ডিজিটাল লড়াইটা চলবেই। শাহবাগ চত্বরের ছেলেমেয়েরা যাকে সাইবার যুদ্ধ বলছে সেটি শুধু সাইবার জগতেই সীমিত নেই। এর ডালপালা, লতাপাতা এখন বাংলাদেশের বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোর পাশাপাশি সারা বিশ্বেই একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
যারা টেলিভিশনে লাইভ শাহবাগের দৃশ্য দেখছেন তারা হিসাব কষছেন ওই চত্বরে কত মানুষ জমায়েত হয়ে থাকে। শত, হাজার বা লাখের হিসাব কষা হতে থাকে। আন্দোলন জোরদার হওয়ার পেছনে অনেক মানুষ সমবেত হওয়াও একটি বড় কারণ। অথচ সেই জমায়েত শুধু শাহবাগ চত্বরে হয়নি, হয়েছে অনলাইনেও। সেই চত্বরে অহোরাত্র বসে থাকা সাইবারযোদ্ধারা নিজেরাই প্রায় ৭৫ হাজার লোক ডিজিটালযুদ্ধে জড়িত আছে বলে শাহবাগের সাইবারযোদ্ধা শেখ আসমান আমাকে জানিয়েছেন। আমরা যারা সেই হিসাবের বাইরে তাদেরকে যুক্ত করলে এই হিসাব কত বড় হবে সেটি অনুমান করা যেতে পারে। বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিকের জন্য এই অঙ্কটি বিশ্বাস করা কঠিন হবে, যেমনটি এটি মনে করা খুবই কঠিন হবে যে ৩৪ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী আর ৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্য প্রতি সেকেন্ডের আপডেট এখন খুবই জরুরি।
পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার শুরুতে আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তির ইতিবাচক বিষয়গুলো আগে আলোচনা করি। প্রথমেই শুরুর কথা বলা যাক। ডিজিটাল শাহবাগের ডিজিটাল জাগরণের সূচনা হয় অতি ছোট আকারেই। গত ১ ফেব্রুয়ারি শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে নবগঠিত ‘ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক’ নামে একটি সংগঠন বাংলা ব্লগ দিবস পালন করে। যদিও এই সংগঠনটির কোনো রাজনৈতিক সংযুক্ততা নেই। তথাপি এরা এদের ঘোষণায় নিজেদেরকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল’ বলে দাবি করেছে। সেই অনুষ্ঠানে কলামিস্ট মহিউদ্দিন আহমেদ, অঞ্জন দত্ত, বীরেন অধিকারী এবং আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন। এরা সবাই প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার মানুষ। ওই অনুষ্ঠানে তাদের সেস্নাগান ছিল- ‘ও আলোর পথযাত্রী, এ যে রাত্রি, এখানে থেমো না’। এই দিবসটির আয়োজক ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক দেশের কোনো নিবন্ধিত সংগঠন নয়। কোনো পরিচিত সংগঠনও নয়। সম্ভবত শাহবাগের দাবানল যদি এত বড় না হতো, তবে এর নাম কারও জানাই হতো না। এই সংগঠনের আহবায়ক বা সমন্বয়ক ইমরান এইচ সরকার মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত এবং একজন অ্যাক্টিভিস্ট।
শাহবাগ আন্দোলনের ডিজিটাল জন্ম : আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ব্লগ দিবস উদযাপনের আগেই এরা অনলাইনে আত্মপ্রকাশ করে। এই সংগঠনটির নামে ফেসবুকে একটি পৃষ্ঠার জন্ম নেয় গত ২৯ জানুয়ারি। সেই মাসে এই পেজটিতে ২৮২টি লাইক হয় এবং ১১৮ জন এটি নিয়ে কথা বলে। তবে এটি স্পষ্ট করে বলা দরকার, নতুন সংগঠনটির জন্ম সাম্প্রতিক হলেও এর সাথে সংশ্লিষ্টরা অনলাইনে বহুদিন ধরেই কাজ করে আসছে। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে ওদের চিনি এবং ওদের কাজ সংগঠিত করার সাথে আমার নিজের গাঢ় সম্পর্ক রয়েছে। এই নেটওয়ার্কের আহবায়ক ইমরান এইচ সরকার পেশায় ডাক্তার এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও সংগঠক। ওয়াইপিডি নামে একটি সংগঠনও তার সংগঠিত করা। এর সাথে অমি রহমান পিয়াল, আসিফ রহমান, মারুফ রসুল ও অন্য অনেকেই বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে ব্লগিংয়ে যুক্ত। নানা বিষয় নিয়ে তাদের আলোচনা থাকলেও স্বাধীনতার সপক্ষে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলাদেশের মূল আদর্শে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তারা আপোসহীন। অমি রহমান পিয়াল নিজে ‘জন্মযুদ্ধ’ নামে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ক একটি অনলাইন উদ্যোগ পরিচালনা করে থাকে। এই কর্মকার সাথে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের সুফি আবু বকর ইবনে ফারুক, নাহিদ ইসলাম রোমেল প্রমুখরাও জড়িত। ওদের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। ওরা প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ বা প্রযুক্তিতে কুষ্টিয়া নামের সংগঠনগুলোর সাথে যুক্ত। এদের সবার সাথেই আমি সরাসরি সম্পৃক্ত। ওরাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনার সাথে আপোসহীন। শাহবাগে সাইবারযুদ্ধ যারা পরিচালনা করেন তাদের সাথে আমার নিজের তেমন সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও তারাও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে অনলাইনে কাজ করায় নিয়োজিত। যেসব ব্যক্তি এর সাথে যুক্ত রয়েছেন তারাও মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় বিশ্বাসী। প্রসঙ্গত, ওরা ছাড়াও প্রথম দিন থেকেই এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের বাম রাজনৈতিক দলগুলোর যুবা ও তরুণদের পাশাপাশি ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ ছাত্র সংগঠনগুলো যুক্ত হয়। সংগঠন বা রাজনীতির সাথে যুক্ত নয় এমন মানুষও এর সাথে ব্যাপকভাবে যুক্ত হয়ে আছে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ দেশের প্রগতিশীল ও বাম সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে ওঠে।
জানুয়ারির ৩০ তারিখে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের পাতাটির একটি কভার পেজ তৈরি হয় ইংরেজিতে। কভারটির পাশাপাশি সংগঠনটির পক্ষ থেকে একই দিনে যে পোস্টটি দেয়া হয় তাতে লেখা আছে ‘ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরাও হতে পারে সমাজ গড়ার হাতিয়ার।’ কভারটি মাত্র ১৩ জন পছন্দ করে (২৫ ফেব্রুয়ারি, ৪.১৬ মি:)। ৩৩ জন পছন্দ করে (২৫ ফেব্রুয়ারি, ৪.১৭ মি:)।
৩০ জানুয়ারিতে ওই পেজটিতে যে কয়টি পোস্ট রয়েছে তার সিংহভাগই মিসর ও আরব দেশে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা কী করেছে তার খবরে ভরা। বাংলা ব্লগের ইতিহাস ইত্যাদির পাশাপাশি তাতে ইমরান এইচ সরকারের দুটি পোস্ট আছে। একটিতে বলা হয়েছে ‘আশা করছি Blogger and Online Activist Network আয়োজিত বাংলা ব্লগ দিবস ১,৪১৯-এর অনুষ্ঠানে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের মিলন মেলায় পরিণত হবে। সব বাংলা খাবার ও আড্ডাবাজিসহ এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান আয়োজনের চেষ্টা চলছে।’ ইমরানের এই পোস্টটি মাত্র ৪৯ জন পছন্দ করে। পোস্টের মন্তব্যগুলো চটপটি, ফুচকা খাবার গল্পে ভরা। এক সময়ে ইমরান চিন্তা করেছিল তারিখটা পেছানো যায় কিনা। ৩১ জানুয়ারি পেজটির কভার পেজ বদলানো হয়। লক্ষণীয়ভাবে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে যে পৃষ্ঠাটি শুধু কয়েকশ’ মানুষের প্রিয় ছিল ফেব্রুয়ারিতে সেই পৃষ্ঠাটি ২৪,৮৬০ জনের পছন্দের বিষয় হয়ে যায়।
এই পৃষ্ঠাটি বস্ত্তত বাংলাদেশের রাজনীতির একটি গবেষণার বিষয়ে পরিণত হবে। এতে প্রথম যে পোস্টটি সবার নজরে পড়ে সেটি হলো- ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রসার, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিকে সুসংহত করার লক্ষ্য বাংলা ব্লগগুলো বহুদিন যাবত কাজ করছে।
আমরা সবাই জানি, গত ৫ ফেব্রম্নয়ারি আমত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার দ্বিতীয় বিচারের রায় ঘোষণা করে। সেই রায় প্রকাশের সাথে সাথেই ফেসবুকের এই পৃষ্ঠাটিতে একটি ইভেন্ট তৈরি করা হয়। বেলা ১টা ২৩ মিনিটে তৈরি করা এই ইভেন্টে বলা হয়, ‘ট্রাইব্যুনালে কাদের মোলস্নার প্রহসনের রায়ের বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ।’ এর সময় উল্লেখ করা হয় বিকেল সাড়ে ৩টা। স্থান লেখা হয় শাহবাগ মোড়। সময়সীমাটি ২৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বিসত্মৃত করা হয়। ইভেন্টের স্র্রষ্টা ছিলেন বাঁধন স্বপ্নকথক ও ইমরান এইচ সরকার। এতে বাঁধনের দুটি ও ইমরানের একটি মোবাইল নম্বর দেয়া হয় যোগাযোগের জন্য। ইভেন্টে বলা হয়, ‘কাদের মোলস্নার মতো একজন কুখ্যাত খুনি যদি যাবজ্জীবন পায় তাহলে এই রায়ের অর্থ কি? আমরা এই রায় মানি না। কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় যতদিন না হচ্ছে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’ ইভেন্টে ১৩,৯৫৯ জন যাওয়ার সম্মতি দেন। ১,৮৮১ জন হয়তো যেতে পারেন এবং ৯৭,৮২২ জন আমন্ত্রিত ছিলেন (২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট অনুসারে)।
শাহবাগের এই ডিজিটাল বিপ্লবের সময় এবং পরিপ্রেক্ষিতটিও প্রণিধানযোগ্য। এটি শুধু ২০১৩ সালেই ঘটা সম্ভব হয়েছে। ২০০৮ সালে সম্ভবত এমনভাবে আন্দোলন শুরু করা যেত না। কারণ, সে সময়ে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল মাত্র ১২ লাখ। সেই ১২ লাখ লোকের অতি সামান্য অংশই ফেসবুক বা ইন্টারনেট ব্যবহার করত। অন্যদিকে ২০১৩ সালে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৩ কোটি হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এমন ব্যাপকভাবে না বাড়লে এভাবে আন্দোলন শুরু করা যেত না। এমনটি না হলে ইন্টারনেট সামাজিক যোগাযোগের কেন্দ্রও হতে পারত না। ফেসবুককে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারারও কারণ হলো, দেশে এখন ৩৪ লাখের বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে। এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ছবি-ভিডিও-অডিও, বাংলা বর্ণসহ যোগাযোগের সব মাধ্যমকে ব্যবহার করতে পারে। বলা যায়, এটি মাল্টিমিডিয়া পস্নাটফরম। অন্যদিকে এটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ। ডিজিটাল যুগে গণমাধ্যমের যেসব চরিত্র থাকার কথা এটিতে সবই রয়েছে।
লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই আন্দোলনের ভেন্যুতে ওয়াইফাই হটস্পট তৈরি হয়েছে এবং আন্দোলনকারীরা গানে-স্লোগানে মুখরিত থাকার পাশাপাশি ইন্টারনেটকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। শাহবাগ থেকে প্রচারিত হচ্ছে একাধিক ইন্টারনেট রেডিও। ওয়েব কাস্ট বা ইন্টারনেট টিভির সুযোগও এখন রয়েছে। ওখানে বসে থেকেই অনলাইন নিউজ মিডিয়াগুলো তাদের নিউজ আপডেট করছে। ওখানে যারা যোগ দিয়েছে তাদের সিংহভাগই শুধু এসব ডিজিটাল প্রযুক্তির কারিশমা দেখে না তারা নিজেরা এসব ব্যবহার করে এবং এসব কর্মকানড-অংশ নেয়। যদিও বলা হয়েছে, এর নায়ক হলো ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, তবুও এটি ভালো করে বলার দরকার, ওখানে যারা যাচ্ছে তারা প্রত্যেকেই এমন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। একই সাথে এটিও বলা দরকার, আন্দোলন শুধু শাহবাগে হচ্ছে না। আন্দোলনের আসল যুদ্ধ ক্ষেত্র সাইবার জগৎ। দেশের প্রচলিত রাজনীতিক ও আমজনতা শাহবাগের লড়াই দেখলেও আমি মনে করি এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা যেখানে অব্যাহত থাকবে সেটি হচ্ছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট থেকে এই লড়াইয়ের সূচনা হয়েছে এবং ইন্টারনেটেও সেটি চলতে থাকবে।
বাংলাদেশে এর আগে আর কোনো রাজনৈতিক কর্মকা-- এমনটি ঘটেনি। লক্ষণীয়, এই আন্দোলন প্রচলিত গণমাধ্যমের জন্যও একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। প্রতিদিন এই আন্দোলনের পুরো ঘটনা সরাসরি সম্প্রচার, এই আন্দোলনকে ঘিরে বিশেষ সম্প্রচার ও কাগজের মাধ্যমের সর্বোচ্চ কভারেজ যেমনি নতুন মাত্রা, তেমনি শাহবাগ চত্বরে বসে থেকে ব্লগিং করা, ফেসবুক পরিচালনা করা ও রেডিও স্টেশন পরিচালনা করাও একটি নতুন ঘটনা। কেউ বোধহয় ভাবতেই পারেনি আন্দোলনকারীরা ইন্টারনেটের সহায়তায় রেডিও চালাবে এবং তার শ্রোতাসংখ্যা ১০/২০ হাজার হয়ে যাবে। এতদিন ধরে আমরা যে নিউ মিডিয়ার কথা বলে আসছি সেটি এখন সত্যিকারের রূপ নিয়েছে।
আমরা দেখেছি, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শাহবাগের মতো ঘটনা শুধু বাংলাদেশেই ঘটেনি। প্রথমে মিসরে আমরা একটি বিপ্লব দেখলাম। এরপর সেই বিপস্নবের প্রবাহ তিউনিসিয়ায় ঢেউ তুলল। এই দুই দেশেই বিপ্লবের যে চরিত্র ছিল বাংলাদেশে একই বাহনে বিপ্লবের সূচনা হলেও এর চরিত্র হলো ভিন্ন। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে কখনও এমনটি ঘটেনি যে সরকার যে প্রসঙ্গটি নিয়ে ইতিবাচক কাজ করছে সেই কাজের সপক্ষ তাকে শক্তিশালী করার জন্য গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছে। শাহবাগ রাজনীতির সেই নতুন মেরু করণও। এতদিন যেভাবে রাজনীতির নেতিবাচক ধারার বিজয় দেখে এসেছি এখন সেখানে রাজনীতির ইতিবাচক ধারার বিজয় দেখছি। জনগণের সামনে প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করা হলে তার ফলাফল কী হতে পারে সেটি শাহবাগ থেকে জেনে নেয়া যায়। দিনের পর দিন আওয়ামী লীগ তার দলীয় ও সরকারি কাগজপত্র প্রকাশ করে যে ইতিহাস তৈরি করতে পারেনি অনলাইনের অ্যাক্টিভিজম তাকে মহিমান্বিত করতে পেরেছে। ৪২ বছর স্লোগান দিয়েও যে দলটি জয়বাংলাকে জাতীয় স্লোগানে পরিণত করতে পারেনি সেই স্লোগান অনলাইনের জোয়ারে পুরো দেশের স্লোগানে পরিণত হয়েছে।
এই চত্বরটি যে শুধু ডিজিটাল বিপ্লবের সূচনা করেছে তাই নয়, শাহবাগের প্রথম শহীদ ডিজিটাল নায়ক আহমেদ রাজীব হায়দার। রাস্তায় মিছিল করার জন্য বা জনসভায় বক্তৃতা দেয়ার জন্য কিংবা কাগজের পাতায় লেখার জন্য নয়, রাজীবকে জীবন দিতে হয়েছে তার লেখা ডিজিটাল হরফমালার জন্য। ব্লগার এই তরুণ কোনো রাজনৈতিক দলের হিরো নয়। স্থপতির পেশার পাশাপাশি ইন্টারনেটে ব্লগিং করে যে তরুণ তার নিজের শক্তিকে প্রকাশ করত এবং যে শাহবাগের তারুণ্যের বিপ্লবে শরিক হয়েছিল তাকে তার ডিজিটাল কর্মকা--র জন্যই শহীদ হতে হয়েছে। বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক আন্দোলনে এমন দৃষ্টান্তও প্রথম। অন্যদিকে শাহবাগের প্রতিপক্ষ তাদের শত্রু হিসেবে যাদেরকে খুন করার তালিকা তৈরি করেছে তারাও ডিজিটাল বিপ্লবের নায়ক বা কর্মী।
ডিজিটাল রাজনীতি : শাহবাগের আন্দোলন দেশের রাজনীতির ধারাকেও ডিজিটাল করে দিচ্ছে। সামনের দিনে ইন্টারনেট বা ডিজিটাল সংযোগকে উপেক্ষা করে কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর পক্ষে বাংলাদেশে যথাযথভাবে রাজনীতি করা সম্ভব হবে না। যে লড়াইটি শুরু হয়েছে তার অনিবার্য পরিণতি হলো রাজনীতির ডিজিটাল রূপান্তর। আমি সবিনয়ে এটি বলতে পারি, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি যেমন করে মানুষের জীবনধারাকে বদলে দিয়েছে তেমনি করে বদলে দিয়েছে দেশের অর্থনীতি। এবার সেই পরিবর্তন এলো রাজনীতিতে। আগামীতে আমরা ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থার দিকে যাব। সেই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে যে সৈনিকেরা বেরিয়ে আসবে তারা কোনোভাবেই আর পুরনো দিনে ফিরে যাবে না।
আমি মনে করি, সামনের দিনগুলোতে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে তার অনলাইন কর্মকা- জোরদার করতে হবে। একটি ডিজিটাল সংসদ, ডিজিটাল জীবনধারায় অভ্যস্ত সংসদ সদস্য, জনগণের সামনে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা ও ইন্টারঅ্যাক্টিভ থাকার প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত রাজনীতিকেরা সামনের দিনে অগ্রগণ্য হতে থাকবেন। রাজনীতির অর্থ যেহেতু জনগণের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা, জনগণের সমর্থন আদায় করা, সেহেতু জনগণ যে উপায়ে তার জীবন চালাবে সেই উপায়েই রাজনীতিকে প্রবাহিত হতে হবে।
‘নূরানীচাপা সমগ্র’ রাজীবের নয় : বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস যারা জানেন তাদের কাছে এটি নতুন নয় যে এই আন্দোলনকে ‘ইসলাম গেল’ ও ‘ভারতের চক্রামত্ম’ বলে চিহ্নিত করা হবে। ১৯৪৮ সালে বাংলার মানুষ যখন প্রথমবারের মতো তার মাতৃভাষার দাবি তোলে তখনই বাংলাকে হিন্দুদের ভাষা এবং ভাষার দাবি ভারতের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত হয়। এরপর ’৫২, ’৬২, ’৬৬, ’৬৮, ’৬৯সহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মূল আক্রমণটাই ছিল ধর্ম ও ভারতকে কেন্দ্র করে। একাত্তরে সেই একই রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার হয়েছি আমরা। ’৭৫ পরবর্তীকালে বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসকে উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য সেই প্রচেষ্টা আরও প্রবল হয়। সেই থেকে ’৯৬ পর্যমত্ম ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশকে পাকিস্তানিকরণের চেষ্টা চলেছে। ১৯৯৬-২০০১ সময় পরিধিতে সাময়িক চাপে থাকলেও ২০০১ সালে পাকিস্তানের সহযোগী ঘাতক-দালাল জামায়াত ক্ষমতায় বসে। এবার যখন জামায়াত-শিবির প্রচ- চাপে পড়ে এবং শাহবাগে গণআন্দোলন প্রচ- বেগে জামায়াত-শিবির, বিএনপিসহ সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও পাকিস্তানপন্থীদেরকে চরম বেকায়দায় ফেলে তখন সেই পুরনো অস্ত্রটি তারা বের করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজীব নামের একজন ব্লগারকে তারা খুন করে এবং সে যে ইসলাম ধর্ম বিরোধী, নাস্তিক এবং সে যে পবিত্র কোরান, আলস্নাহ ও তার রসুলকে আক্রমণ ও অবমাননা করেছে তার অপপ্রচার শুরু করে। এর সূচনা হয় অনলাইনে। অনলাইনের অপপ্রচার ইনকিলাব পত্রিকায় ছাপা হয়। এরপর দৈনিক আমার দেশ এই প্রচেষ্টার অংশ হয়। সেই পত্রিকায় রাজীবের নামে সব অপপ্রচার ছাপা হয়। এসব অপচেষ্টার প্রধানতম লক্ষ্য ছিল দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদেরকে শাহবাগের বিপক্ষ দাঁড় করিয়ে দেয়া। অনলাইনে এমনকি রাজীবের জানাজার ইমামকে হত্যা করার হুমকি দেয়া হয়। রাজীবের উত্তরসূরি ব্লগারদের তালিকা করে তারাও নাসিত্মক এমন অপপ্রচার চালানো হতে থাকে। স্মরণ করা যেতে পারে, রাজীবের আগে আসিফ মহিউদ্দিন নামের আরও একজন ব্লগারকে এরা আক্রমণ করে। অনলাইনে এই যুদ্ধটি তীব্র আকার ধারণ করে।
রাজীবের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ২২ ফেব্রুয়ারিতে সেই ঘৃণ্য চক্রান্তটি বাসত্মবে রূপ নেয় এবং পুরো দেশে জামায়াত-শিবির নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াতে ইসলামী সমমনা দলগুলোর নামে হরতাল আহবান করে, যাতে বিএনপি সমর্থন জানায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জামায়াত-শিবিরের পুরো প্রচেষ্টাটি ছিল মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা। এরা সোনার বাংলা ও বাঁশের কেল্লা নামে ডজনেরও বেশি ফেসবুক পেজ ও ব্লগসাইট থেকে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাতে থাকে। রাজীব ও অন্যান্য ব্লগারের নামে মিথ্যা আইডি তৈরি করে অনলাইনে অপপ্রচার চালানো হতে থাকে। তারা ফেসবুকে অপপ্রচার চালায় ও ব্লগে মিথ্যা প্রচার চালায়।
মিডিয়ার খবরে বলা হয় রাজীব ‘থাবা বাবা’ নামে বিভিন্ন স্থানে ব্লগ লিখতেন। যে ব্লগটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় সেটি সম্পর্কে বিডিনিউজ জানায় যে, তাতে মোট ১৯টি পোস্ট ছিল। সেগুলো লেখার তারিখ ছিল ১৮ জুন থেকে ২ অক্টোবর। সেই লেখাগুলোর সবই ছিল ইসলাম ধর্মকে আঘাত করে। এই ব্লগটির নাম ছিল ‘নূরানীচাপা সমগ্র’, তার লিঙ্ক প্রথম প্রকাশিত হয় পাকিস্তান থেকে। সেখান থেকেই রাজীব যে এই ব্লগগুলোর লেখক সে বিষয়টিও প্রকাশ করা হয়। পাকিস্তানের পোস্টটি রাজীব হত্যার দুই ঘণ্টার মাঝেই পোস্ট করা হয়। বিডিনিউজ তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্লগগুলো সম্ভবত রাজীব হায়দারের নয়। আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষক কোয়ান্টকাস্টডটকম (quantcast.com) একই মত ব্যক্ত করে বলেও খবরে বলা হয়। এতে দেখা যায়, নূরানীচাপা নামের সাইটটিতে প্রথম ভিজিট হয় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজীব হত্যাকা--র দিন এবং লিঙ্ক ছড়িয়ে দেয়ার ফলে ওই দিন মোট ভিজিটর সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০ হাজারের বেশি। অথচ ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে সাইটটিতে কেউ ভিজিট করেছেন এমন তথ্য নেই কোয়ান্টকাস্টে। অনলাইন ট্রাফিক ও পর্যবেক্ষণ সাইট অ্যালেক্সায় ১৫ ফেব্রুয়ারির আগে এই সাইটটিতে ভিজিট করার তথ্য নেই। তবে গত ১০ দিনে বাংলাদেশে এই সাইটের ট্রাফিক সিরিয়াল ১৩৭, যদিও ব্লগটি এখন বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে আমার ব্লগ ডটকমের অন্যতম অ্যাডমিন সুশান্ত দাস গুপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ডপ্রেসে থাবা বাবা নামে যে নূরানীচাপা সমগ্র লেখা হয়েছে একটু ভালো করে দেখলে দেখবেন- ২০১২ সালের ১৮ জুন তিনটি, ২১ জুন একটি, ২৪ জুনের একটি লেখা রয়েছে। ২৬ জুনে মোট ৯টি লেখা পোস্ট করা হয়েছে, যা একজন ব্লগারের পক্ষ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এরপর জুলাই মাসে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। ২৬ আগস্টে চারটি এবং ২ অক্টোবর একটি। ২ অক্টোবরের লেখাটিই ছিল সর্বশেষ। এই লেখাগুলো রাজীবের ব্লগেও আসেনি। কেউ মন্তব্য করেনি। এটা কীভাবে সম্ভব? প্রকৌশলী সুশান্ত অ্যালেক্সা এবং কোয়ান্টকাস্টের তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি বলেন, ব্লগটি এক বছর আগের দেখানো হলেও ওয়েব আর্কাইভে (web.archive.org/web/*/http://nuranichapa.wordpress.com) এর কোনো হদিস নেই। ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরাও বলছেন, নূরানীচাপা সমগ্র ব্লগ রাজীবের খুনের পর খোলা হয়েছে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জামায়াত-শিবির এই অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও কয়েকজন ব্লগার অভিযোগ করেন। বিডিনিউজ২৪ আরও জানিয়েছে, বিটিআরসি ১২টি ব্লগ ও ফেসবুক পেজ বন্ধ করে দিয়েছে।
তবে আমাদের গর্ব করার মতো বিষয় এই, শাহবাগের ডিজিটালযোদ্ধারা শিবিরের এই আক্রমণকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করছে এবং তাদের ভুয়া পেজ ও সাইটগুলোকে বন্ধ করাতে সক্ষম হয়েছে। একই সাথে বিশ্বজুড়ে লাখ লাক মানুষ শাহবাগের ডিজিটালযুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। কথিত আছে, জামায়াত-শিবির অনলাইনে শত কোটি টাকা ব্যয় করে ডিজিটাল অপপ্রচারের পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নিয়েছিল। তারা তাদের লোকদেরকে অর্থের বিনিময়ে ডিজিটাল মাধ্যমে কাজ করার জন্য নিযুক্ত করেছে। কিন্তু তার বিপক্ষ স্বেচ্ছাসেবকভাবে কাজ করে শাহবাগের যোদ্ধারা বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ফিডব্যাক : www.bijoydigital.com