• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > দশদিগন্ত
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তুহিন মাহমুদ
মোট লেখা:২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
থ্রি জি
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
দশদিগন্ত

ছুঁয়ে দেখা যাবে
ডিজিটাল কনটেন্ট
তুহিন মাহমুদ
কমপিউটারে কাজ করার সময় মনিটরে দেখানো বস্ত্তটি অনেক সময় ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে জাগে। মনে হয় বস্ত্তটি যদি হাতের কাছে পেতাম, তাহলে নেড়েচেড়ে দেখতাম। তেমনিভাবে ধরুন আপনার মনিটরে একটি দৈনিক পত্রিকা পড়ছেন। এখন পত্রিকাটি হাতে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে পড়ার ইচ্ছে জাগতেই পারে। ইচ্ছে হতে পারে এক বা একাধিক পাতা উল্টে পত্রিকাটি পড়ার। আপাতভাবে সেটি সম্ভব না হলেও আগামীতে সে সুযোগ আসছে। কমপিউটারের মনিটরে হাত দিয়ে পত্রিকাটি যেভাবে খুশি পড়তে পারবেন। শুধু তাই নয়, হাতে আপনি প্রিন্টেড পত্রিকার স্পর্শও পাবেন। সেদিন আর বেশি দূরে নয়। কমপিউটারে দেখানো সব ডিজিটাল কনটেন্ট হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখা ও ব্যবহার করা যাবে।
সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত টিইডি সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন অভিনব এক স্বচ্ছ ত্রিমাত্রিক ডেস্কটপ কমপিউটার। স্পেসটপ থ্রিডি নামের এ ডেস্কটপ কমপিউটারটির ব্যবহারকারী চাইলেই হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখতে পারবেন ডিজিটাল সামগ্রীগুলো। শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সাথে যৌথভাবে এ কমপিউটারটি তৈরি করেছেন জিনহা লি। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে সণাতক ডিগ্রিধারী জিনহা লি বর্তমানে কোরিয়ায় স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সে কর্মরত। তিনি মূলত টেলিভিশন ইন্টারফেস নিয়ে কাজ করেন।
প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় কমপিউটারের ব্যবহার আরও সহজ করতে কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কমপিউটার সহজে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেকাংশে এগিয়ে নিয়ে আসবে জিনহা লি’র উদ্ভাবিত এই স্পেসটপ থ্রিডি কমপিউটার। টিইডি সম্মেলনে জানানো হয়, একজন মানুষ যেকোনো কঠিন বস্ত্ত ব্যবহার করার সময় যেভাবে অনুভব করেন, ঠিক সেভাবেই কাজ করা যাবে স্পেসটপ থ্রিডি কমপিউটারে। ধরুন, আপনি একটি ডকুমেন্ট নিয়ে কাজ করছেন। প্রয়োজনে ডকুমেন্টটি নিজের হাতে তুলে নিয়ে বইয়ের মতোই পাতা উল্টে পড়তে পারবেন। স্বচ্ছ থ্রিডি মনিটরের ভেতরে হাত প্রবেশ করিয়ে আপনি এই কাজটি করতে পারবেন। আর যেখানে হাত প্রবেশ করিয়ে কাজ করা সম্ভব হবে না সেখানে কাজ করার জন্য রয়েছে টাচপ্যাড। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, একজন প্রকৌশলী সহজেই হাত ও টাচপ্যাডের মাধ্যমে ইচ্ছেমতো থ্রিডি ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে পারবেন। উল্টে-পাল্টে, টেনে, চেপে ধরে ডিজাইনে পরিবর্তন আনতে পারবেন। ব্যবহারকারীর হাত ও চোখের নড়াচড়া অনুসরণ করার জন্য ডেস্কটপটিতে একাধিক বিল্টইন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে।
কোনো কিছু স্পর্শ করে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা যদি ডিজিটাল ডিভাইসগুলোতেও আনা যায় তাহলে এসব ডিভাইস ব্যবহার আরও সহজ হবে। সেই চাহিদাকে পূরণ করতেই নতুন এই প্রযুক্তি আনা হয়েছে। তবে অত্যাধুনিক এই কমপিউটারটি এখনও একটি প্রোটোটাইপ। হাতে ছুঁয়ে ডিজিটাল কনটেন্ট দেখার এই কমপিউটারটি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে প্রায় এক দশক লাগবে।
বাতাসে লেখা যাবে টেক্সট মেসেজ
কলম, আঙ্গুল বা কিবোর্ড নয়, এবার বাতাসে হাতের নড়াচড়ার মাধ্যমে লেখা যাবে টেক্সট মেসেজ কিংবা ই-মেইল। প্রয়োজন শুধু একটি এয়াররাইটিং নামের হাতমোজা। সম্প্রতি উদ্ভাবিত এমওয়াইও আর্মব্যান্ডের সাথে সংযুক্ত এয়াররাইটিং নামের এ হাতমোজা পরে যেকেউ ম্যাক কিংবা পিসিতে সহজেই তার মনের কথা লিখতে পারবেন। এটি তৈরি করেছেন জার্মানির কার্লশ্রম্নহার ইনস্টিটিউট ফর টেকনোলজির গবেষকেরা।
গবেষকেরা বলেন, বিশেষ এই হাতমোজা ব্যবহার করে বাতাসে কোনো অক্ষর লিখলে সেটি বৈদ্যুতিক সঙ্কেতে পরিণত হয়। আর এই সঙ্কেতই কমপিউটারে বা সেলফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেখা হয়ে যাবে। সাধারণ নড়াচড়ার সাথে লেখার ধরনের মধ্যকার পার্থক্য ধরতে সক্ষম এ প্রযুক্তি। আর এই প্রযুক্তি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে এক্সেলারোমিটার ও গাইরোস্কোপ, যা হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে।
যেকোনো কাজ করতে করতেই এ হাতমোজার মাধ্যমে মেসেজ লেখা সম্ভব হবে। প্রযুক্তিটির অন্যতম উদ্ভাবক ডক্টরেট শিক্ষার্থী ক্রিস্টোফ এমা বলেন, প্রযুক্তিটি দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে প্রয়োগোপযোগী করা হচ্ছে। হাত ছাড়া অন্যান্য নড়াচড়াকে বাদ দেয়ার ফলে কোনো সমস্যা ছাড়াই এটি কাজ করবে। তবে আপাতভাবে এখনো নিখুঁতভাবে হাতের নড়াচড়াকে ধরতে সক্ষম নয় এয়াররাইটিং প্রযুক্তি। বর্তমানে এটি বড় হাতের অক্ষর চিনতে সক্ষম ও আট হাজার শব্দ বুঝতে পারে। এর ভুলের মাত্রা বর্তমানে ১১ শতাংশ। তবে বারবার ব্যবহার করলে গ্রাহকের নড়াচড়ার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যাবে প্রযুক্তিটি। তাতে ভুলের মাত্রা ৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসতে পারে। বর্তমানে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে হাতমোজাটি। গবেষকেরা গুগল ফ্যাকাল্টি রিসার্চ অ্যাওয়ার্ডে ৮১ হাজার ডলার পুরস্কার পেয়েছেন। সেলফোনে এই প্রযুক্তি ডেভেলপ করার জন্য গুগল থেকে পাওয়া অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
ফিডব্যাক : bmtuhin@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস