• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ভিওআইপি লাইসেন্স এবং এমভ্যাস নীতিমালা প্রসঙ্গ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদনা
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ভিওআইপি লাইসেন্স এবং এমভ্যাস নীতিমালা প্রসঙ্গ


সরকার দেশের উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ৪৯৯ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পের লক্ষে তথ্যপ্রযুক্তিকে মানুষের দোরগোড়ায় এগিয়ে নেয়ার জন্য উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত করা। নিশ্চিতভাবেই এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং গ্রাম এলাকার তথ্যপ্রযুক্তিপ্রেমী মানুষের জন্য একটি শুভ সংবাদ। যেসব প্রকল্প বা কাজে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ অপরিহার্য, সেসব প্রকল্পও এর সাথে সংশিস্নষ্ট করার একটা সম্ভাবনা এর মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশের নগরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে আজ হাতে বহনযোগ্য যন্ত্রের ব্যবহারের এক বিস্ফোরণ চলছে। এসব যন্ত্র আজ ব্যবহার হচ্ছে গ্রামীণ ইন্টেল বা ব্র্যাকের মতো বিভিন্ন সংগঠনে বিভিন্ন গবেষণা কাজে গ্রামীণ সম্পদ ব্যবহার করে। উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার কানেকশন নিশ্চিত হলে এসব কাজে আরও গতি আসবে। গ্রামের মানুষের জন্য সহজে কম খরচে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগও নিশ্চয় বাড়বে।

তা সত্ত্বেও আমরা এমন বাসত্মবতাকে এড়িয়ে যেতে পারি না যে, এখনও সব উপজেলায় আমরা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ পাইনি। এছাড়া অপটিক্যাল ফাইবারের উপকার সার্বিকভাবে পেতে হলে এমনই ধরনের আরও অনেক বাধা অতিক্রম করতে হবে। যেমন, সাক্ষরতার নিচু ও শিক্ষার উঁচু মানের অভাব। আমরা এখনও গ্রামের সাধারণ মানুষকে প্রযুক্তি জ্ঞানে জ্ঞানবান করে তুলতে পারিনি। একটি বিষয় মনে রাখা দরকার, গ্রাম এলাকায় প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ও সম্পদের সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে সরকার উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক গড়ে তুললেও আমরা খুব বেশি লাভবান হতে পারব না। আমরা আধুনিক প্রযুক্তির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পারি, কিন্তু উপযুক্ত অবকাঠামোর অভাবে তা সাধারণ মানুষের উপকার বয়ে আনতে পারবে না। এক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক প্রকল্প অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তিসংশিস্নষ্ট প্রকল্পের মতোই একটি অর্ধসমাপ্ত লেজেগোবরে প্রকল্পে রূপ নেবে। তাই সরকারকে এ প্রকল্প বাসত্মবায়নের পাশাপাশি নজর দিতে হবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলায়।

সম্প্রতি জানা গেছে, নিজস্ব অরবিটাল স্লট বরাদ্দ না পাওয়া, অর্থ সংস্থানের উৎস নিয়ে অনিশ্চয়তা ও সামিটসংশিস্নষ্ট নানা জটিলতার কারণে বর্তমান সরকারের মেয়াদে বাংলাদেশের নিজস্ব উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নিয়ে এসব জটিলতা সৃষ্টি হওয়া সত্যিই দুঃখজনক। ফলে এ প্রকল্প বাসত্মবায়ন নিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে নানা ধরনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এটি আদৌ বাসত্মবায়ন হবে কি না তা নিয়েও সংশয় জেগেছে। আমরা জানতে পেরেছি, গত বছরের ২৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রতিষ্ঠান ‘স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল’কে (এসপিআই) ১ কোটি ডলারের বিনিময়ে তিন বছরের জন্য পরামর্শক নিযুক্ত করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মহাকাশে উপগ্রহ পাঠাবে বলে কথা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের নিজস্ব অরবিটাল স্লট না পাওয়া এবং স্পুটনিকের কাছ থেকে স্লট কেনার বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকায় এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, পরামর্শক ফি ১ কোটি ডলার, স্লট কেনার দাম সাড়ে ৩ কোটি ডলার এবং উপগ্রহ তৈরি, উৎক্ষেপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজন ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বিশাল অঙ্কের তহবিল জোগাড়ের মুখোমুখি বাংলাদেশ। এ অর্থ কোথা থেকে আসবে, সে ব্যাপারটি অনিশ্চিত।

জানা গেছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প পরামর্শক নিয়োগেই অনিয়ম করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআই গঠিত হয়েছে ২০০৯ সালে। কিন্তু পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত ছিল পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে কমপক্ষে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হবে, অথচ মাত্র ২ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক নিয়োগ করা হলো। সমালোচনার মুখে এসপিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ব্রম্নক বলেছেন, আরকেএফ তাদের কৌশলগত অংশীদার, যার ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যমতে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধনের বয়স ৯ বছর। কিন্তু একটি সূত্রমতে, এসপিআই এ কাজটি এককভাবেই করছে। এদিকে এসপিআইয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে বাংলাদেশী এক কর্মকর্তার নাম। শফিক এ চৌধুরী নামে ওই কর্মকর্তা এসপিআইয়ের ব্যবসায় উন্নয়ন বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি বাংলাদেশের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর ভায়রা ভাই। এসপিআইয়ের বাংলাদেশী অংশীদার হচ্ছে সামিট কমিউনিকেশন্স। তবে সামিট কমিউনিকেশন্স বলেছে, এসপিআই বাংলাদেশের অফিস ঠিকানা হিসেবে সামিট কমিউনিকেশন্সের নাম ব্যবহার করেছে। স্লট বরাদ্দ নিয়ে আছে নানা জটিলতা।

গোটা বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। শেষ পর্যমত্ম তা পদ্মা সেতু প্রকল্পের মতো জাতির জন্য নতুন করে কোনো কলঙ্কের জন্ম দেয় কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন। আমরা চাই যাবতীয় জটিলতা দূর করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে এ প্রকল্পে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হোক। বাসত্মবতা বিশেস্নষণ করে নেয়া পক্ষে এ সম্পর্কিত যাবতীয় পদক্ষেপ। সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কতা এখানে জরুরি।

কজ
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস