মাইক্রোপ্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস (এমডি) সম্প্রতি তাদের এপিইউ (Accelerated Processing Unit) লাইনআপে নতুন সংযোজন করেছে ‘রিচল্যান্ড’ তথা ৬০০০ সিরিজের বেশ কয়েকটি নতুন প্রসেসর। জুন মাসে তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত কমপিউটার এক্সপোতে এএমডি তাদের নতুন এ প্রসেসর সিরিজ অবমুক্ত করে। উল্লেখ্য, এর কয়েক দিন আগেই ইন্টেল তাদের চতুর্থ প্রজন্মের প্রসেসর ‘হ্যাসওয়েল’ অবমুক্ত ও বাজারজাত করেছে।
এমডি গত কয়েক বছর ধরে সিপিইউর বাজারে ইন্টেলের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রচ- সংগ্রাম করেছে। অনেকের মতে, এএমডি বুলডোজার প্রসেসর তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজার ধরতে পারেনি। ফলে এএমডি তাদের সুযোগ সীমিত করতে বাধ্য হয়েছে। তবে এএমডি নতুন নতুন প্রসেসর বাজারে আনতে শুরু করে, যাতে করে তারা ইন্টেলের সাথে প্রতিযোগিতা করে বাজারে টিকে থাকতে পারে।
এ কথা সত্য, অনেক পর এএমডি একটি নতুন নামে তার নতুন সিরিজের প্রসেসর বাজারে ছেড়েছে। এটি মূলত ইন্টেল কোর আই ৩-এর সাথে পালস্না দেয়ার জন্য বাজারে আসে।
আগের এএমডির ট্রিনিটি সিরিজের এ৮-৫৬০০ এপিইউ মডেলের নতুন প্রসেসর আসে বাজারে। এ প্রসেসরটিতে রয়েছে এফএম২ সিপিইউ সকেট। এর ফলে ট্রিনিটি ফিওশন এপিইউকে মাদারবোর্ডের সাথে সংযোগ সহজেই করা যায়। প্রসেসরটির স্পিড হচ্ছে ৩.৬/৩.৯ এবং ক্যাশ মেমরি ৪ মেগাবাইট, যা ১০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। এফএম২ সকেট অনেকটাই আগের এফএম১ সকেটের সমতুল্য, যা ৩১ বাই ৩১ গ্রিড পিনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যাতে রয়েছে ৫ বাই ৭ সেন্ট্রাল ভয়েড। এছাড়া রয়েছে এইচডি ৭৫৬০ডি মডেলের পৃথক কার্যক্ষমতার গ্রাফিক্সকার্ড।
রিচল্যান্ড প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে এএমডি প্রসেসর আগের প্রজন্মের ট্রিনিটি অংশ থেকে আলাদা হয়। চারটি কোর এবং ইন্টিগ্রেটেড রেডন গ্রাফিক্স এবং ট্রিনিটির মতোই ৩২ এনএম সিলিকোন। এটির জন্য ডেস্কটপ মাদারবোর্ডে সকেট এফএম২ থাকতে হবে।
রিচল্যান্ড প্রসেসরগুলোতে দ্বিতীয় প্রজন্মের এপিইউগুলোর তুলনায় ক্লকস্পিড কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া অন্তর্গত করা হয়েছে শক্তিশালী গ্রাফিক্স এবং উচ্চ বাসের মেমরি সাপোর্ট। এ সিরিজের সর্বমোট ৬টি প্রসেসর বাজারে ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি কোয়াড কোর এবং ২টি ডুয়াল কোর। প্রসেসরগুলো ৩২ ন্যানোমিটার নির্মাণ প্রযুক্তিতে তৈরি। সিরিজের সর্বোচ্চ মডেলের প্রসেসর এ১০-৬৮০০কে-এর ডিফল্ট ক্লকস্পিড ৪.১ গিগাহার্টজ এবং টার্বো কোর প্রযুক্তির সুবাদে এটি ৪.৪ গিগাহার্টজ পর্যন্ত গতি ছুঁতে পারবে। কোয়াড কোর এ প্রসেসরটিতে রয়েছে ৪ মেগাবাইট এলটু ক্যাশ মেমরি। এতে আরও রয়েছে এইট সিরিজের বিল্টইন গ্রাফিক্স এইচডি ৮৬৭০ডি। এছাড়া ১০০ ওয়াটের প্রসেসরটি নতুন রিচল্যান্ড এ১০-৬৮০০কে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিডিআর৩ ২১৩৩ মেমরির জন্য সমর্থন যোগ করা হয়েছে।
সিরিজের অন্য প্রসেসরগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে এইচডি ৮৫৭০ডি/এইচডি ৮৪৭০ডি বিল্ট-ইন গ্রাফিক্স এবং রয়েছে ১৮৬৬ মেগাহার্টজ বাসের র্যা্ম সাপোর্ট। আর ‘ক’ চিহ্নিত প্রসেসরগুলোতে থাকছে ওভারক্লকের সুবিধা।
রিচল্যান্ড কিছু ডেস্কটপে সিপিইউর বেস এবং টার্বো ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়েছে। টার্বো ফ্রিকোয়েন্সি ২০০-৩০০ মেগাহার্টজ বেড়েছে এবং আইজিপি উচ্চগতি, উভয়ের ক্ষমতা ৪০ এবং ৮৪ মেগাহার্টজের মধ্যে হয়েছে।
এএমডির এইচপি কী পরিমাণ ফ্রিকোয়েন্সি সহ্য করতে পারে এবং কত ভোল্টেজ পেলে এটি সবচেয়ে বেশি কাজ করবে, তা নির্ভর করে অপারেটিং পয়েন্টের ওপর। রিচল্যান্ডভিত্তিক পণ্যে তাদের বেস/টার্বোর গতির মধ্যে আরও কয়েকটি অপারেটিং পয়েন্ট আছে, যা দিয়ে এরা তাদের গতির পরিমাণ বাড়াবে।
এএমডি আগের মতো এবারও বেশ ভালো জিপিইউ ফ্রিকোয়েন্সি যুক্ত করেছে। এবার এরা তাদের ইন্টিগ্রেটেড রেডন গ্রাফিক্স যুক্ত করেছে, যাতে করে এদের প্রসেসর রেডন গ্রাফিক্স যুক্ত হয়ে আগের চেয়ে আর বেশি ক্ষমতা বেড়েছে।
এএমডি চিপে দুটি প্রধান উপাদান থাকে। একটি সিপিইউর ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স প্রসেসর (আইজিপি), অন্যটি সিপিইউর ফ্রিকোয়েন্সি। আইজিপিতে রেডন গ্রাফিক্স এইচ ডী ৮৬৭০সহ আর কিছু নতুন রেডন গ্রাফিক্স যুক্ত করেছে। সিপিইউর ফ্রিকোয়েন্সিতে আগের মতোই বেস ও টার্বো রয়েছে