লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
ইন্টারনেট হ্যাক হলে
যোগাযোগের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ইলেকট্রনিক মেইল বা ই-মেইল। নিউইয়র্কের আমস্টারডাম শহরে জন্ম নেয়া রে টমলিনসন সর্বপ্রথম কমপিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ই-মেইলকে দূরের অন্য আরেক কমপিউটারে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। যদিও তখন ইন্টারনেট তৈরি হয়নি। তবুও বলা চলে তিনিই প্রথম ইন্টারনেট তৈরির গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ সম্পন্ন করেছিলেন। ১৯৭১ সালে প্রথম ই-মেইলটি পাঠান রে টমলিনসন। শুধু তাই নয়, তিনি ই-মেইল ঠিকানায় ব্যবহারকারীদের নামকে কমপিউটারের নাম থেকে আলাদা করার জন্য বহুল পরিচিত @ (অ্যাট) চিহ্নটি চালু করেন।
১৯৭০ সালের প্রথম দিকে তিনি ছোট একটি দল নিয়ে ট্যানেক্স অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়নের কাজ করেছিলেন। আর রে টমলিনসনের দায়িত্ব ছিল লোকাল ই-মেইল প্রোগ্রাম। এ বছরের শেষ দিকে টমলিনসন প্রথম আরপানেট ই-মেইল অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়ন করেছিলেন, যার মাধ্যমে এ পদ্ধতির হালনাগাদ করা হয়। এতে ই-মেইল অ্যাড্রেস অ্যাট (@) হোস্ট ব্যবহার করা হয়। ১৯৪১ সালে নিউইয়র্কের আমস্টারডাম শহরে তার জন্ম। পুরো নাম রেমন্ড স্যামুয়েল টমলিনসন। জন্মের কিছুদিন পরই তার পরিবার পাশের ভেইল মিলস গ্রামে চলে যায়। সেখানে ব্রডালবিন সেন্ট্রাল স্কুলে ভর্তি হন। এরপর রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৬৩ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি নেন।
১৯৬৫ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে মাস্টার ডিগ্রি পান। এর দুই বছর পর তিনি বিবিএন টেকনোলজিতে চাকরি নেন, যেখানে টেনেস্ক অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পান। এখানে তিনি এক কমপিউটার থেকে অন্য কমপিউটারে বার্তা পাঠানো সহজ করার জন্য কাজ করছিলেন। তিনি সিপিওয়াইনেট থেকে এসএনডিএসএসজিতে বার্তা পাঠানোর জন্য একটি নতুন কোড তৈরি করেন, যা পৃথিবীর প্রথম ই-মেইল হিসেবে পরিচিত এবং তা ইন্টারনেটে যোগাযোগের মাধ্যমকে ক্রমান্বয়ে করে তুলেছে আরও সহজতর।
ইন্টারনেটে যোগাযোগ মাধ্যমকে সবচেয়ে বদলে দিতে ই-মেইল তৈরির জন্য তিনি পেয়েছেন বেশ কয়েকটি পুরস্কার। এসব পুরস্কারের মধ্যে ছিল ২০০০ সালে আমেরিকান কমপিউটার মিউজিয়াম থেকে ‘জর্জ স্ট্রিবিজ কমপিউটার পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’। ২০০১ সালে ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ডিজিটাল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স থেকে ‘ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড’। ২০০৪ সালে ‘আইইই ইন্টারনেট অ্যাওয়ার্ড’। ২০০৯ সালে ‘প্রিন্স অব অস্ট্রিরিয়াস’ অ্যাওয়ার্ড। ২০১১ সালে এমআইটির শীর্ষ ১৫০ আবিষ্কারক এবং আইডিয়াদাতার মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন এবং ২০১২ সালে ইন্টারনেট সোসাইটির পক্ষ থেকে ‘ইন্টারনেট হল অব ফেমে’ জায়গা করে নেন।
আজকের দিনে গুরম্নত্বপূর্ণ এ ই-মেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড চুরি বা হ্যাকড হওয়া অনেকটা স্বাভাবিক এবং সাধারণ একটি ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কেউ শখের বশেই করছে এই হ্যাক। কেউবা দলগতভাবে প্রফেশনালি হ্যাক করছে। যার বা যাদের ই-মেইল আইডেন্টিটি হ্যাকড হচ্ছে তাদেরকে পোহাতে হচ্ছে বর্ণনাতীত দুর্ভোগ। হারাতে হয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, ফাইল এবং
যোগাযোগের ঠিকানা।
তবে কিছু সহজ কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আপনার ই-মেইল আইডিটি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন। এখানে বেশি প্রচলিত দুটি (ইয়াহু মেইল এবং জি-মেইল) মেইল পুনরুদ্ধারের নিয়ম জানানো হলো :
ইয়াহুর ক্ষেত্রে
ইয়াহু মেইলে প্রবেশ করার সময় ঠিক আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেয়ার পরও লগ-ইন করতে না পারলে লগ-ইনের নিচে can’t access my account-এ ক্লিক করম্নন। (চিত্র-১)
ফলে তিনটি অপশন পাওয়া যাবে- ০১. I have a problem with my password, ০২. I Forget My Yahoo ID, ০৩. My account may have been compromised। এখন এই পেজ থেকে আপনার ই-মেইল আইডির পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে অথবা কাজ না করলে অর্থাৎ হ্যাকড হলে প্রথমটি নির্বাচন করে Next-এ ক্লিক করুন। এরপর My Yahoo! ওউ-তে ই-মেইল ঠিকানা (আইডি) লিখে Enter the code shown বক্সে নিচে দেয়া সঙ্কেতগুলো লিখে Next -এ ক্লিক করুন। নতুন পেজে My alternate email-এ আপনার বিকল্প ই- মেইল ঠিকানাটি লিখে Next-এ ক্লিক করুন। বিকল্প ঠিকানাটি হলো যে ই-মেইল ব্যবহার করে আপনার ই-মেইল ঠিকানা খুলেছিলেন এবং ভেরিফাই করেছিলেন সেটি। আপনার বিকল্প ঠিকানায় একটি ই-মেইল যাবে এবং সেই মেইলে একটি লিঙ্ক থাকবে। ওই লিঙ্কে ক্লিক করলে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে (চিত্র-২)। তখন নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে ই-মেইল ঠিকানা উদ্ধার করতে পারবেন। খেয়াল রাখবেন, আপনার দেয়া পাসওয়ার্ডটি যেন ন্যূনতম ৮ অক্ষরের বেশি হয়। আপারকেস-লোয়ারকেস এবং ডিজিট মিলিয়ে পাসওয়ার্ড নির্বাচন করলে পাসওয়ার্ডটি সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হবে।
আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্টে যদি বিকল্প ই-মেইল না দেয়া থাকে বা আপনার alternate ই-মেইল আইডিও যদি হ্যাক হয়ে যায় অথবা ওই বিকল্প ই-মেইল ঠিকানা মনে না থাকে, তাহলে My alternate email-এর নিচের অপশনে can’t access any of the above নির্বাচন করে Next-এ ক্লিক করুন (যে প্রশ্নগুলো ই-মেইল ঠিকানা তৈরি করার সময় নির্বাচন করে দিয়েছিলেন)। প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিলেই তখন একইভাবে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে। নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার ই-মেইল ঠিকানা পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।
অথবা আপনার ইয়াহু আইডি ভুলে গেলে দ্বিতীয় অপশন সিলেক্ট করলে যে ই-মেইল আইডি দিয়ে এ মেইলটি খুলেছেন সেই মেইল অ্যাড্রেস, ডেথ অব বার্থ, কান্ট্রি এবং পোস্টাল কোড ওই বক্সে (চিত্র-৩) পূরণ করে Next বাটনে ক্লিক করুন। প্রত্যেকটির সঠিক উত্তর দিলে আপনার অলটারনেট আইডিতে একটি মেইল যাবে, যেখান থেকে আপনার ভুলে যাওয়া মেইল আইডি ফিরে পাবেন।
জি-মেইলের ক্ষেত্রে
জি-মেইলে পাসওয়ার্ড এবং ইউজারনেম সঠিক দেয়া সত্ত্বেও যখন লগ-ইন করতে পারবেন না, তখন লগ-ইনের নিচে can’t access your account?-এ ক্লিক করুন। Having trouble in signing in প্রদর্শিত নতুন পেজে (চিত্র-৪) তিনটি অপশনের মধ্যে প্রথম অপশনটি অর্থাৎ ও don’t know my password সিলেক্ট করে Continue বাটনে প্রেস করুন।
পরবর্তী পেজে আপনার E-mail addresswU লিখে Continue করুন। পরবর্তী উইন্ডোতেও একইভাবে ণবং, Continue বাটনে প্রেস করুন। নতুন পেজ এলে আপনার বিকল্প ই-মেইল ঠিকানা লিখে দিন তার নিচের বক্সে। আবার একই ই-মেইল ঠিকানা হুবহু লিখে দিয়ে Continue-এ ক্লিক করম্নন। পরবর্তী উইন্ডোতে তিনটি প্রশ্ন করা হবে আপনাকে (চিত্র-৫)।
প্রথমত, আপনার পাসওয়ার্ডটির কতটুকু মনে আছে তা বক্সে লিখুন। দ্বিতীয়ত, আপনি শেষ কবে আপনার জি-মেইল অ্যাকাউন্ট ওপেন করেছিলেন তার মাস, দিন, তারিখ টাইপ করম্নন। তৃতীয়ত, আপনি কবে আপনার এ মেইল অ্যাকাউন্টটি নতুন খুলেছিলেন করেছিলেন তার মাস এবং সাল উলেস্নখ করে Continue বাটনে প্রেস করুন। তার পরবর্তী উইন্ডোতেও (চিত্র-৬) একইভাবে কয়েকটি প্রশ্ন আসবে। প্রথমত, এ ঠিকানা থেকে বহুল ব্যবহৃত পাঁচটি ই-মেইল আইডির কয়েকটি লিখতে হবে এবং সর্বশেষ প্রশ্নটি হচ্ছে, আপনি আপনার জি-মেইল থেকে সর্বপ্রথম কোন ই-মেইল আইডিটি ব্যবহার করেছেন তা টাইপ করে Continue বাটনে প্রেস করুন। উল্লেখ্য, এ পেজের প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে আপনি তা না দিয়ে Skip these question বাটনে প্রেস করতে পারেন।
পরবর্তী উইন্ডোতে আপনি এ পিসি থেকে গুগলের চারটি সেবার যে কয়টি সেবা ব্যবহার করেছেন (চিত্র-৭) তার তালিকাতে সঠিকভাবে মাস এবং সাল উলেস্নখ করে Submit বাটনে ক্লিক করুন। আপনি যদি সবগুলোর সঠিক উত্তর দিয়ে থাকেন, তাহলে alternate ই-মেইল আইডিতে একটি মেইল যাবে এবং সেখানে একটি লিঙ্ক থাকবে।
ওই লিঙ্কে ক্লিক করলে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে। তখন নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার ই-মেইল ঠিকানা উদ্ধার করতে পারবেন। এছাড়া https://support.google.com/accounts/troubleshooter/2402620 ঠিকানায় গুগল ট্রাবলশুটিং পেজে (চিত্র-৮) গিয়ে আপনার সমস্যাটি পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করে গেলেও সমাধান পেতে পারেন।
কিছুদিন আগেও নিম্নোক্ত লিঙ্কে সরাসরি https://www.google.com/support/accounts/bin/request.py?hl=en&contact_type=acc_reco&ara=2&ctx=acc_reco&source=no_ts&rd=l ভিজিট করলে এখানে একটি ফরম পাওয়া যেত যে ফরমটি পূরণ করে Next-এ ক্লিক করলে এবং ফরম পূরণ করার সময় সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে থাকলে ২৪ ঘণ্টা পর অন্য ই-মেইল ঠিকানায় (যেটি ফরম পূরণ করার সময় দিয়েছেন) একটি মেইল পাওয়া যেত। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে। তখন নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে হ্যাকড হওয়া বা হারানো ই-মেইল আইডি ফিরে পাওয়া যেত। যেখানে মেইল আইডি ক্রিয়েট করার সময় দেয়া সিক্রেট প্রশ্ন এবং তার উত্তর ভুলে গেলেও সমস্যা হতো না। কিন্তু সম্প্রতি গুগলের এ সেবাটি বন্ধ অর্থাৎ এ পেজটি বন্ধ।
তবে আপনার আইডিতে যদি কোনো অলটারনেট ই-মেইল আইডি না দেয়া থাকে তবে অ্যাকাউন্টের সেটিংস অপশন থেকে অলটারনেট ই-মেইল আইডি যোগ করে নিলে আপনার আইডি ভবিষ্যতে কখনও হ্যাকড হলেও তা ফিরে পেতে সহজ হবে এবং নতুন ইউজারদের জন্যও আইডি ভুলে গেলেও তা ফিরে পেতে এ অলটারনেট ই-মেইল আইডি অনেকটা সহায়ক ভূমিকা রাখে
ফিডব্যাক : যোগাযোগের অন্যতম একটি গুরম্নত্বপূর্ণ মাধ্যম ইলেকট্রনিক মেইল বা ই-মেইল। নিউইয়র্কের আমস্টারডাম শহরে জন্ম নেয়া রে টমলিনসন সর্বপ্রথম কমপিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ই-মেইলকে দূরের অন্য আরেক কমপিউটারে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। যদিও তখন ইন্টারনেট তৈরি হয়নি। তবুও বলা চলে তিনিই প্রথম ইন্টারনেট তৈরির গুরম্নত্বপূর্ণ একটি ধাপ সম্পন্ন করেছিলেন। ১৯৭১ সালে প্রথম ই-মেইলটি পাঠান রে টমলিনসন। শুধু তাই নয়, তিনি ই-মেইল ঠিকানায় ব্যবহারকারীদের নামকে কমপিউটারের নাম থেকে আলাদা করার জন্য বহুল পরিচিত @ (অ্যাট) চিহ্নটি চালু করেন।
১৯৭০ সালের প্রথম দিকে তিনি ছোট একটি দল নিয়ে ট্যানেক্স অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়নের কাজ করেছিলেন। আর রে টমলিনসনের দায়িত্ব ছিল লোকাল ই-মেইল প্রোগ্রাম। এ বছরের শেষ দিকে টমলিনসন প্রথম আরপানেট ই-মেইল অ্যাপিস্নকেশন উন্নয়ন করেছিলেন, যার মাধ্যমে এ পদ্ধতির হালনাগাদ করা হয়। এতে ই-মেইল অ্যাড্রেস অ্যাট (@) হোস্ট ব্যবহার করা হয়। ১৯৪১ সালে নিউইয়র্কের আমস্টারডাম শহরে তার জন্ম। পুরো নাম রেমন্ড স্যামুয়েল টমলিনসন। জন্মের কিছুদিন পরই তার পরিবার পাশের ভেইল মিলস গ্রামে চলে যায়। সেখানে ব্রডালবিন সেন্ট্রাল স্কুলে ভর্তি হন। এরপর রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৬৩ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি নেন।
১৯৬৫ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে মাস্টার ডিগ্রি পান। এর দুই বছর পর তিনি বিবিএন টেকনোলজিতে চাকরি নেন, যেখানে টেনেস্ক অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়ন কাজের দায়িত্ব পান। এখানে তিনি এক কমপিউটার থেকে অন্য কমপিউটারে বার্তা পাঠানো সহজ করার জন্য কাজ করছিলেন। তিনি সিপিওয়াইনেট থেকে এসএনডিএসএসজিতে বার্তা পাঠানোর জন্য একটি নতুন কোড তৈরি করেন, যা পৃথিবীর প্রথম ই-মেইল হিসেবে পরিচিত এবং তা ইন্টারনেটে যোগাযোগের মাধ্যমকে ক্রমান্বয়ে করে তুলেছে আরও সহজতর।
ইন্টারনেটে যোগাযোগ মাধ্যমকে সবচেয়ে বদলে দিতে ই-মেইল তৈরির জন্য তিনি পেয়েছেন বেশ কয়েকটি পুরস্কার। এসব পুরস্কারের মধ্যে ছিল ২০০০ সালে আমেরিকান কমপিউটার মিউজিয়াম থেকে ‘জর্জ স্ট্রিবিজ কমপিউটার পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ড’। ২০০১ সালে ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ডিজিটাল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স থেকে ‘ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড’। ২০০৪ সালে ‘আইইই ইন্টারনেট অ্যাওয়ার্ড’। ২০০৯ সালে ‘প্রিন্স অব অস্ট্রিরিয়াস’ অ্যাওয়ার্ড। ২০১১ সালে এমআইটির শীর্ষ ১৫০ আবিষ্কারক এবং আইডিয়াদাতার মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন এবং ২০১২ সালে ইন্টারনেট সোসাইটির পক্ষ থেকে ‘ইন্টারনেট হল অব ফেমে’ জায়গা করে নেন।
আজকের দিনে গুরম্নত্বপূর্ণ এ ই-মেইল ঠিকানা এবং পাসওয়ার্ড চুরি বা হ্যাকড হওয়া অনেকটা স্বাভাবিক এবং সাধারণ একটি ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কেউ শখের বশেই করছে এই হ্যাক। কেউবা দলগতভাবে প্রফেশনালি হ্যাক করছে। যার বা যাদের ই-মেইল আইডেন্টিটি হ্যাকড হচ্ছে তাদেরকে পোহাতে হচ্ছে বর্ণনাতীত দুর্ভোগ। হারাতে হয় অনেক গুরম্নত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট, ফাইল এবং যোগাযোগের ঠিকানা।
তবে কিছু সহজ কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে আপনার ই-মেইল আইডিটি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন। এখানে বেশি প্রচলিত দুটি (ইয়াহু মেইল এবং জি-মেইল) মেইল পুনরুদ্ধারের নিয়ম জানানো হলো :
ইয়াহুর ক্ষেত্রে
ইয়াহু মেইলে প্রবেশ করার সময় ঠিক আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেয়ার পরও লগ-ইন করতে না পারলে লগ-ইনের নিচে can’t access my account-এ ক্লিক করম্নন। (চিত্র-১)
ফলে তিনটি অপশন পাওয়া যাবে- ০১. I have a problem with my password, ০২. ও Forget My Yahoo ID, ০৩. My account may have been compromised। এখন এই পেজ থেকে আপনার ই-মেইল আইডির পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে অথবা কাজ না করলে অর্থাৎ হ্যাকড হলে প্রথমটি নির্বাচন করে Next-এ ক্লিক করুন। এরপর My Yahoo! ওউ-তে ই-মেইল ঠিকানা (আইডি) লিখে Enter the code shown বক্সে নিচে দেয়া সঙ্কেতগুলো লিখে Next -এ ক্লিক করম্নন। নতুন পেজে My alternate email-এ আপনার বিকল্প ই-মেইল ঠিকানাটি লিখে Next-এ ক্লিক করুন। বিকল্প ঠিকানাটি হলো যে ই-মেইল ব্যবহার করে আপনার ই-মেইল ঠিকানা খুলেছিলেন এবং ভেরিফাই করেছিলেন সেটি। আপনার বিকল্প ঠিকানায় একটি ই-মেইল যাবে এবং সেই মেইলে একটি লিঙ্ক থাকবে। ওই লিঙ্কে ক্লিক করলে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে (চিত্র-২)। তখন নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে ই-মেইল ঠিকানা উদ্ধার করতে পারবেন। খেয়াল রাখবেন, আপনার দেয়া পাসওয়ার্ডটি যেন ন্যূনতম ৮ অক্ষরের বেশি হয়। আপারকেস-লোয়ারকেস এবং ডিজিট মিলিয়ে পাসওয়ার্ড নির্বাচন করলে পাসওয়ার্ডটি সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হবে।
আপনার ই-মেইল অ্যাকাউন্টে যদি বিকল্প ই-মেইল না দেয়া থাকে বা আপনার alternate ই-মেইল আইডিও যদি হ্যাক হয়ে যায় অথবা ওই বিকল্প ই-মেইল ঠিকানা মনে না থাকে, তাহলে My alternate email-এর নিচের অপশনে can’t access any of the above নির্বাচন করে Next-এ ক্লিক করুন (যে প্রশ্নগুলো ই-মেইল ঠিকানা তৈরি করার সময় নির্বাচন করে দিয়েছিলেন)। প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দিলেই তখন একইভাবে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে। নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার ই-মেইল ঠিকানা পুনরম্নদ্ধার করতে পারবেন।
অথবা আপনার ইয়াহু আইডি ভুলে গেলে দ্বিতীয় অপশন সিলেক্ট করলে যে ই-মেইল আইডি দিয়ে এ মেইলটি খুলেছেন সেই মেইল অ্যাড্রেস, ডেথ অব বার্থ, কান্ট্রি এবং পোস্টাল কোড ওই বক্সে (চিত্র-৩) পূরণ করে Next বাটনে ক্লিক করুন। প্রত্যেকটির সঠিক উত্তর দিলে আপনার অলটারনেট আইডিতে একটি মেইল যাবে, যেখান থেকে আপনার ভুলে যাওয়া মেইল আইডি ফিরে পাবেন।
জি-মেইলের ক্ষেত্রে
জি-মেইলে পাসওয়ার্ড এবং ইউজারনেম সঠিক দেয়া সত্ত্বেও যখন লগ-ইন করতে পারবেন না, তখন লগ-ইনের নিচে can’t access your account?-এ ক্লিক করুন। Havin trouble in signing in প্রদর্শিত নতুন পেজে (চিত্র-৪) তিনটি অপশনের মধ্যে প্রথম অপশনটি অর্থাৎ ও don’t know my password সিলেক্ট করে Continue বাটনে প্রেস করুন।
পরবর্তী পেজে আপনার E-mail addresswU লিখে Continue করম্নন। পরবর্তী উইন্ডোতেও একইভাবে Yes, Continue বাটনে প্রেস করম্নন। নতুন পেজ এলে আপনার বিকল্প ই-মেইল ঠিকানা লিখে দিন তার নিচের বক্সে। আবার একই ই-মেইল ঠিকানা হুবহু লিখে দিয়ে Continue-এ ক্লিক করুন। পরবর্তী উইন্ডোতে তিনটি প্রশ্ন করা হবে আপনাকে (চিত্র-৫)।
প্রথমত, আপনার পাসওয়ার্ডটির কতটুকু মনে আছে তা বক্সে লিখুন। দ্বিতীয়ত, আপনি শেষ কবে আপনার জি-মেইল অ্যাকাউন্ট ওপেন করেছিলেন তার মাস, দিন, তারিখ টাইপ করম্নন। তৃতীয়ত, আপনি কবে আপনার এ মেইল অ্যাকাউন্টটি নতুন খুলেছিলেন বা ঈৎবধঃব করেছিলেন তার মাস এবং সাল উলেস্নখ করে Continue বাটনে প্রেস করুন। তার পরবর্তী উইন্ডোতেও (চিত্র-৬) একইভাবে কয়েকটি প্রশ্ন আসবে। প্রথমত, এ ঠিকানা থেকে বহুল ব্যবহৃত পাঁচটি ই-মেইল আইডির কয়েকটি লিখতে হবে এবং সর্বশেষ প্রশ্নটি হচ্ছে, আপনি আপনার জি-মেইল থেকে সর্বপ্রথম কোন ই-মেইল আইডিটি ব্যবহার করেছেন তা টাইপ করে Continue বাটনে প্রেস করুন। উল্লেখ্য, এ পেজের প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে আপনি তা না দিয়ে Skip these question বাটনে প্রেস করতে পারেন।
পরবর্তী উইন্ডোতে আপনি এ পিসি থেকে গুগলের চারটি সেবার যে কয়টি সেবা ব্যবহার করেছেন (চিত্র-৭) তার তালিকাতে সঠিকভাবে মাস এবং সাল উলেস্নখ করে Submit বাটনে ক্লিক করম্নন। আপনি যদি সবগুলোর সঠিক উত্তর দিয়ে থাকেন, তাহলে alternate ই-মেইল আইডিতে একটি মেইল যাবে এবং সেখানে একটি লিঙ্ক থাকবে।
ওই লিঙ্কে ক্লিক করলে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে। তখন নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার ই-মেইল ঠিকানা উদ্ধার করতে পারবেন। এছাড়া https://support.google.com/accounts/troubleshooter/2402620 ঠিকানায় গুগল ট্রাবলশুটিং পেজে (চিত্র-৮)
গিয়ে আপনার সমস্যাটি পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করে গেলেও সমাধান পেতে পারেন।
কিছুদিন আগেও নিম্নোক্ত লিঙ্কে সরাসরি https://www.google.com/support/accounts/bin/request.py?hl=en&contact_type=acc_reco&ara=2&ctx=acc_reco&source=no_ts&rd=l ভিজিট করলে এখানে একটি ফরম পাওয়া যেত যে ফরমটি পূরণ করে Next-এ ক্লিক করলে এবং ফরম পূরণ করার সময় সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে থাকলে ২৪ ঘণ্টা পর অন্য ই-মেইল ঠিকানায় (যেটি ফরম পূরণ করার সময় দিয়েছেন) একটি মেইল পাওয়া যেত। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলে নতুন পাসওয়ার্ড চাইবে। তখন নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে হ্যাকড হওয়া বা হারানো ই-মেইল আইডি ফিরে পাওয়া যেত। যেখানে মেইল আইডি ক্রিয়েট করার সময় দেয়া সিক্রেট প্রশ্ন এবং তার উত্তর ভুলে গেলেও সমস্যা হতো না। কিন্তু সম্প্রতি গুগলের এ সেবাটি বন্ধ অর্থাৎ এ পেজটি বন্ধ।
তবে আপনার আইডিতে যদি কোনো অলটারনেট ই-মেইল আইডি না দেয়া থাকে তবে অ্যাকাউন্টের সেটিংস অপশন থেকে অলটারনেট ই-মেইল আইডি যোগ করে নিলে আপনার আইডি ভবিষ্যতে কখনও হ্যাকড হলেও তা ফিরে পেতে সহজ হবে এবং
নতুন ইউজারদের জন্যও আইডি ভুলে গেলেও তা ফিরে পেতে এ অলটারনেট ই-মেইল আইডি অনেকটা সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ফিডব্যাক : kdsubho@gmail.com