• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > পিসি বা ম্যাক পরিচ্ছন্ন রাখার কৌশল
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তাসনীম মাহ্‌মুদ
মোট লেখা:১২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৩ - নভেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
পিসি
তথ্যসূত্র:
ব্যবহারকারীর পাতা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
পিসি বা ম্যাক পরিচ্ছন্ন রাখার কৌশল
একটি গাড়ির মালিকের মতো কমপিউটার মালিককেও নিয়মিতভাবে কমপিউটারের পরিচর্যা তথা মেইনটেনেন্সের কাজ হিসেবে কমপিউটারের কিছু সেটিং টিঙ্কার করতে হয়, যাতে সিস্টেমটি দ্রুতগতিতে রান করে। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার, আমাদের দেশে বেশিরভাগ ব্যবহারকারীকেও এ কাজটি করতে দেখা যায় না। এক কথা বলা যায়, সিস্টেম পরিচর্যার ব্যাপারে ব্যবহারকারীরা সম্পূর্ণ উদাসীন যতক্ষণ পর্যন্ত না সমস্যায় পড়ছেন, ততক্ষণ পর্যমত্ম। আর এ বিষয়টি উপলব্ধি করেই গত দুই সংখ্যা ধরে ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে পিসি বা ম্যাক পরিচ্ছন্ন রাখার কৌশল ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা। কেননা এটি একটি অব্যাহত চলমান প্রসেস, যা শুধু হার্ডওয়্যারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অপারেটিং সিস্টেম এবং ড্রাইভারসহ অন্যান্য অ্যাপিস্নকেশনের জন্যও প্রযোজ্য।

বৈদ্যুতিক সমস্যার পূর্বলক্ষণ
এ সমস্যাটি তুলনামূলকভাবে কম হতে দেখা যায়। কখনও কখনও ইলেক্ট্রনিক কম্পোনেন্ট যেমন চিপ, ক্যাপাসিটর ইত্যাদি নয়েজ সৃষ্টি করতে পারে। যখন এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়, তখন হার্ডডিস্কের যন্ত্রণায় আর্তনাদ করার মতো অবস্থা অর্থাৎ হাইপিচ স্কুইলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এমন অবস্থা যখন সৃষ্টি হলে তখন কী করবেন? এ অবস্থায় আপনি শুধু একটি জিনিসই করতে পারেন, তা হলো এমন কাউকে খুঁজে বের করম্নন যে কি না মেশিনের দিকে খেয়াল রাখবে এবং নিশ্চিত করতে পারবে কোথা থেকে এ শব্দ আসছে, যার ভিত্তিতে ওই পার্টসকে রিপেস্নস করতে পারেন। বিকল্প হিসেবে বলা যায়, এমন অবস্থায় কমপিউটারে যদি কোনো বৈরী আচরণ দেখা না যায়, তাহলে আপনি ইচ্ছে করলে এ সমস্যাকে এড়িয়ে যেতে পারেন। লক্ষণীয়, নয়েজি কম্পোনেন্ট দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া যেতে পাবে দীর্ঘদিন, তবে কখনও কখনও এ নয়েজ আপনার জন্য এক বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পাওয়ার অন বিপের ধরন
কমপিউটারের সুইচ অন করার পরপরই আপনি কয়েকটি উচ্চস্বরে বিপ শব্দ শুনতে পেতে পারেন স্ক্রিনে কোনো কিছু ডিসপেস্ন না করেই। অবশ্যই মনে রাখা উচিত, এটি কোনো ভালো লক্ষণ নয়। কমপিউটারের অপারেশনে জটিল কিছু ফেন করলে এমনটি ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রে পিসির রিপেয়ারের কাজ করা উচিত। আপনার কাছে যদি মাদারবোর্ডের ম্যানুয়াল থাকে, তাহলে এ বিপের ডায়াগনস্টিক কোড পেতে পারেন, যা কমপিউটার অন করার সাথে সাথে উদ্ভব হয়েছিল। এ বিপ যেকোনো বিষয় উপস্থাপন করতে পারে, যেমন ‘Your CPU is dead’ থেকে শুরম্ন করে ‘the graphics card isnt plugged all the way in’ ইত্যাদি। যতক্ষণ পর্যন্ত না মারাত্মক ও অসম্ভব কিছু ঘটছে, ততক্ষণ পর্যমত্ম হার্ডড্রাইভের ডাটা ভালোই থাকবে। এমনকি অন্যান্য কম্পোনেন্ট ফেল করলে বা প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হলেও।

সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
আপনি কোন ধরনের অপারেটিং সিস্টেম- উইন্ডোজ, ম্যাক বা লিনআক্স ব্যবহার করছেন তা বিবেচ্য বিষয় নয়। মনে রাখবেন, কমবেশি সব কমপিউটারই নয়েজ সৃষ্টি করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ নয়েজ সৃষ্টির বিষয়টিকে খুব সাধারণভাবে নেয়া হয়। তবে যখন বিষয়টি স্বাভাবিক বলে মনে না হবে, তখনই তা গুরম্নত্ব সহকারে দেখা উচিত।

কমপিউটার আমাদের দেশে এখনও বেশ ব্যয়বহুল। আমাদের জানা থাকা দরকার, কমপিউটারের সব কম্পোনেন্ট কখনই একসাথে নষ্ট হয় না। যদি কমপিউটারে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়, তখন খেয়াল করে দেখুন কোন কম্পোনেন্ট এ সমস্যার জন্য দায়ী। এরপরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। মনে রাখা দরকার, কোনো বিশেষ কম্পোনেন্ট যেমন হার্ডড্রাইভ বা অভ্যন্তরীণ অন্য কোনো কম্পোনেন্ট কাজ না করলে শুধু সেই কম্পোনেন্টের ব্যাপারে মাথা ঘামানো দরকার। এ ক্ষেত্রে পুরো কমপিউটার বদলানোর কোনো দরকার নেই, যদি না তা সম্পূর্নরূপে আপগেডের কথা চিন্তা করেন।

কমপিউটার ড্রাইভার সম্পর্কে যা জানা দরকার
ড্রাইভার সম্পর্কে সাধারণ ব্যবহারকারীদের ধারণা না থাকলেও অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীরা ভালোই ধারণা রাখেন। ড্রাইভার টার্মটি ব্যবহার হতে দেখা যায় সাধারণত কমপিউটারের সাথে কানেকশন তথা যুক্ত হওয়ার আগে। আপনার কমপিউটারে ভিডিও গেম রান করানোর জন্য যদি অনেক সময় ব্যয় করতে হয়, যদি আপনি একটি নতুন কিবোর্ড কিনে আনেন, যার সাথে থাকে সহজ ইনস্টলেশন ডিস্ক বা কমপিউটারের কন্ট্রোল প্যানেলের দিকে খেয়াল করেন, তখন ড্রাইভার প্রসঙ্গটি ওঠে আসে। কিন্তু এই ছোট কোডটি দিয়ে কি বোঝাচ্ছে তার কোনো ব্যাখ্যা দেখা যায় না। লক্ষণীয়, কমপিউটার কীভাবে কাজ করছে তা বোঝার জন্য ড্রাইভার কী তা জানতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে এগুলো প্রদান করে গুরুত্বপূর্ণ ফাংশন। ড্রাইভারগুলো কীভাবে কাজ করে তা জানতে পারলে আপনি কমপিউটারে উদ্ভূত যেকোনো সমস্যা শনাক্ত করতে পারবেন। বস্ত্তত ড্রাইভার আপনার সিস্টেমের জন্য কী ধরনের কাজ করে তা জানার পরই উদ্ভূত যেকোনো সমস্যা সমাধানের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া যায়। সুতরাং ড্রাইভার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা দরকার সব ব্যবহারকারী।

ড্রাইভার কী?
ড্রাইভ আপনার কমপিউটারে কীভাবে কাজ করে তা সহজে বুঝা যায় অ্যানালোজির মাধ্যমে। ধরুন, আপনার একটি টুল বক্স আছে। আপনি জানেন যে বক্সের সব টুলের ইউনিক ফাংশন এবং ট্রিক্স রয়েছে। তবে এসব ফাংশন সম্পর্কে আপনার সাধারণ কোনো ধারণা নেই। প্রাথমিক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে বুঝতে পারবেন কিছু টুল প্রায় একই ধরনের, যেমন স্ক্রু ড্রাইভার ও পস্নায়ারস। অন্যান্য টুল সম্পূর্ণ ভিন্ন হওয়ায় আপনি সেগুলো মোটেই ব্যবহার করতে পারছেন। সুতরাং ব্যাপকভাবে বলা যায়, উইন্ডোজ বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস শনাক্ত করতে পারে, তবে প্রতিটি ডিভাইস কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে বিসত্মারিত তথ্য না জানতে পারলে ডিভাইসগুলোর বাড়তি ফাংশনগুলো ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। কমপিউটারে আমরা যা কাজ করি, তার সবই ড্রাইভারের সাথে সংশ্লিষ্ট।

ড্রাইভারের কোন ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে?
বেশিরভাগ ড্রাইভারের ক্ষেত্রে সাধারণ ব্যবহারকারীদের তেমন কিছুই করার থাকে না ডিভাইস ব্যবহার করা ছাড়া। বেশ কিছু ড্রাইভার আছে, যেগুলো শুধু ইন্টারনাল ডিভাইসের জন্য কাজ করে, সেগুলোর জন্য কদাচিৎ গুরুত্বপূর্ণ আপডেটের প্রয়োজন হয়। আবার কিছু কিছু ড্রাইভার কাজ করে অন্যান্য ডিভাইসের জন্য, যেমন কিবোর্ড বা মাউসের জন্য সেমি-রেগুলার আপডেটের প্রয়োজন হয়। সবচেয়ে নিয়মিত আপডেটের প্রয়োজন হয় এমন ড্রাইভার হলো গ্রাফিক্স কার্ড। গ্রাফিক্স কার্ডের জন্য প্রায় দরকার হয় ফ্রেশ ড্রাইভার ইনস্টলেশন, যাতে নিশ্চিত থাকা যায় কমপিউটার সর্বাধুনিক গেমগুলো সর্বোচ্চ মাত্রায় পারফর্ম করতে পারে।
সুনির্দিষ্ট হার্ডওয়্যার ড্রাইভারের দিকে খেয়াল করার জন্য কন্ট্রোল প্যানেল ওপেন করে ডিভাইস ম্যানেজার আইকনে ডাবল ক্লিক করম্নন। ডিভাইস ম্যানেজারের লিস্ট দেখার জন্য আপনি সিস্টেম আইকন ওপেন করতে পারেন। এজন্য হার্ডওয়্যার ট্যাবে ক্লিক করে বাটন সিলেক্ট করুন। এর ফলে আপনার কমপিউটারের সাথে যুক্ত সব ডিভাইসের লিস্ট প্রদান করবে, যা লুজ ক্যাটাগরির মাধ্যমে গ্রুপ তৈরি হবে। একটি ক্যাটাগরিতে ক্লিক করম্নন যাতে তা সম্প্রসারিত হয় এবং ওই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে এমন সব ডিভাইস ডিসপ্লে করবে।

কোনো ডিভাইস সম্পর্কে আরও বিসত্মারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে ওই ডিভাইসে ডাবল ক্লিক করম্নন প্রোপার্টিজ ওপেন করার জন্য। ড্রাইভার ট্যাবে ক্লিক করলে যেমন ড্রাইভার সংশিস্নষ্ট বেশ কিছু অপশন ডিসপ্লে করবে, তেমনি করবে বর্তমানে ইনস্টল হওয়া ড্রাইভার, প্রোভাইডার, ডেট ও ভার্সন। একই উদ্দেশ্যবিশিষ্ট অন্যদের জন্য এ স্ক্রিন ওপেন রাখার দরকার নেই, যদি না নির্দিষ্ট কোনো ডিভাইসে সমস্যা থাকে। তবে এ সম্পর্কে ভালোভাবে তথ্য নেয়া দরকার আগে।

যেভাবে ড্রাইভার আপডেট করবেন
আগেই উলেস্নখ করা হয়েছে, গ্রাফিক্স কার্ডের ড্রাইভারকে সব সময় আপডেট রাখা দরকার, অর্থাৎ গ্রাফিক্স কার্ডের ড্রাইভ নিয়মিতভাবে আপডেট রাখতে হয়। তবে অন্যান্য ডিভাইসের ক্ষেত্রে আপডেট করার প্রসঙ্গটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় যখনই কমপিউটারের কোনো ডিভাইস কোনো নোটিস ইস্যু করে, তখনই ড্রাইভার আপডেটের জন্য চেক করা দরকার। যেমন একটি প্রিন্টার যথাযথভাবে রেসপন্স না করলে বা একটি মাউস যার বাটন মাঝেমধ্যে নন-রেসপন্সসিভ হলে। ড্রাইভার হলো অন্য যেকোনো সফটওয়্যারের মতো মাঝেমধ্যে একে অপরের সাথে কনকিক্ট করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় ড্রাইভার আপডেট করলে আপনার ইস্যু সমাধান হতে পারে।

প্রত্যেক প্রস্ত্ততকারীরই রয়েছে আলাদা সুনির্দিষ্ট পার্টসের জন্য ওয়েবসাইট, যা ড্রাইভার আপডেট করে এবং পণ্যের জন্য সফটওয়্যার প্রদান করে। যদি হার্ডওয়্যারের প্রস্ত্ততকারীর ওয়েবসাইট জানা থাকে, তাহলে ড্রাইভার আপডেটের জন্য মনোনিবেশ করম্নন। এর মাধ্যমে নতুন ড্রাইভার দিয়ে ফিক্সড করার জন্য যেকোনো ইস্যু সম্পর্কে পর্যালোচনা করতে পারবেন যেমনি, তেমনি ড্রাইভারের রিলিজ ডেট জানতে পারবেন। ডিভাইস ম্যানেজার এ ক্ষেত্রে বেশ সহায়তা দিতে পারে, যেহেতু এখানে ড্রাইভারের ডেটের লিস্ট পাবেন। এ ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে অবশ্যই সর্বশেষ ড্রাইভাই ইনস্টল করতে হবে অপটিমাল এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করার জন্য।
নতুন ড্রাইভার ইনস্টল করার কারণে নতুন সমস্যা উদ্ভব হবার সম্ভাবনা খুব কম। নতুন ড্রাইভার ইনস্টল করার পর সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এমন অভিযোগ ইতোপূর্বে কেউ কখনও করেনি। কেননা এমন সমস্যা সমাধানের জন্য ডিভাইস ম্যানেজারে এক টুল সম্পৃক্ত করা হয়েছে। Update Driver বাটনের নিচে সম্পৃক্ত করা হয়েছে Roll Back Driver লেবেল করা এক বাটন, যা ডিভাইসকে আগের ইনস্টল করা ড্রাইভারে ফিরিয়ে আনতে পারে এবং বর্তমান ড্রাইভার সফটওয়্যারকে রিমুভ করতে পারে। এ অপশনটি শুধু তখনই ব্যবহার করবেন যখন নতুন ড্রাইভার ইনস্টল করার পরপরই আপনার মেশিনে এক নোটিস আবির্ভূত হয়, যা ইতোপূর্বে কখনই ছিল না।
ড্রাইভার অপারেটিং সিস্টেমের বিশেষ কোনো গস্নামারাস অংশ না হলেও এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা নিশ্চিত করে আপনার কমপিউটার হার্ডওয়্যারগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহারসহ সর্বোত্তম এক্সপেরিয়েন্স দিতে

ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৩ - নভেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস