• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > আগামীর ক্যামেরার কেরামতি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: তুহিন মাহমুদ
মোট লেখা:২৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ক্যামেরা
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি পণ্য
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
আগামীর ক্যামেরার কেরামতি
প্রতিমুহূর্তই হয়ে যাচ্ছে অতীত বা স্মৃতি। আর এ অতীতকে ধরে রাখতে অনন্য উপায় ছবি। ক্যামেরার মাধ্যমেই এ ছবি তুলে রাখা সম্ভব হচ্ছে। আর ক্যামেরার ইতিহাস বলতে গেলে চলে আসে ‘ক্যামেরা অবসকুরা’ নামটি। আগে ক্যামেরা আবিষ্কৃত হলেও এর মাধ্যমে ছবি তুলতে সময় লেগেছে অষ্টদশ শতাব্দী পর্যন্ত । ১৮১৪ সালে লুইস দাগুয়েরে, জোসেফ নাইপসি ও থমাস ওয়েডউড সর্বপ্রথম ‘ক্যামেরা অবসকুরা’ দিয়ে আলোকচিত্র তুলতে সÿম হন। প্রায় দু’শ’ বছর পর আমরা আবারও ক্যামেরার কথা বলছি। তবে এখন শুধু ছবি তোলা নয়, জীবনের একটি সুন্দর প্রতিচ্ছবির কথা বলা হচ্ছে। জীবনযাত্রার চাহিদায় গত এক দশকে ক্যামেরার ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। প্রথম দিকে ডিজিটাল ক্যামেরার জন্য ঘাড়ে একটি পাওয়ার প্যাক ও স্টোরেজ ঝোলানো লাগত। আর এখন এটি পকেটেই থাকে ও মুহূর্তেই হাজার হাজার ছবি তোলা ও সংরÿণ করে রাখা যায়। আমরা এখন দ্রুতগতির রেসিং কারের গাড়ির ছবি তুলতে পারছি, এমনকি যেসব বস্ত্ত খালি চোখে দেখা যায় না তার ছবিও তোলা সম্ভব হচ্ছে। এরপরও বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন ক্যামেরাকে আরও উন্নত করতে। আগামীতে ক্যামেরা প্রযুক্তিতে কী ধরনের কেরামতি আসছে সেটিই এখানে জানানো হয়েছে।
ফোকাসকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো
ছবিটি তোলা হয়ে গেছে। যে মুহূর্তটা বন্দী হয়েছে ক্যামেরায় সেটিও শেষ। কিন্তু মনটা ভরেনি আপনার। ক্যামেরার মনিটরে, কমপিউটারের স্ক্রিনে ছবিটিকে যতবার দেখছেন, ততবারই মনে হচ্ছে, আহা! ছবিটিকে একটু যদি পাল্টে দেয়া যেত! হ্যাঁ, এবার সে বাসনা পূরণ হবে আপনার। ছবিটি আগে তুলে তারপর কমপিউটার স্ক্রিনে নিজের ইচ্ছেমতো পাল্টে দেয়া যাবে এর ফোকাস। ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর যখন লিট্রোর ডেমো দেখানো হয়, তখন বিশ্ব দীর্ঘশ্বাস ফেলেছিল যে তারা কী দেখছে। ক্যামেরাটি শুট নেয়ার পর আবার ফোকাস করে। ফলে সঠিকভাবে শুট দেয়া সম্ভব ও ফোকাস মিস করার কোনো চিমত্মা থাকে না। এটি সাংবাদিকদের জন্য যথাযথভাবে কার্যকর। যেকোনো বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে এর মাধ্যমে পুরস্কার পাওয়ার মতো ছবিও তোলা সম্ভব। তবে প্রথমে সবাই যেটি ভেবেছিল ঠিক সেভাবে এগোতে পারেনি লিট্রো। কারণ ক্যামেরাটি দিয়ে তোলা ছবির রেজ্যুলেশন মাত্র এক পিক্সেলের মতো ছিল। আকারে খুবই ছোট আর দেখতে টেলিস্কোপের মতো এ ক্যামেরায় রয়েছে অত্যমত্ম শক্তিশালী কিছু সেন্সর। এ সেন্সরগুলো প্রচলিত ক্যামেরার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে আলো ধরতে পারে। আর এ ‘লাইট ফিল্ড টেকনোলজি’কে কাজে লাগিয়েই ছবির ফোকাল পয়েন্ট পাল্টানোর কাজটি করা হয়।
ভবিষ্যতের চাহিদাকে সামনে রেখে পেরিক্যান ইমাজিং অনেকটা লিট্রোর মতোই একটি প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন। তবে লিট্রো ও এ ধরনের অ্যারোভিত্তিক অথবা কথিত পিস্ননোপটিক ক্যামেরার বিপরীতে এ প্রযুক্তিতে গতানুগতিক ইমাজিং এলিমেন্টের ছোট অ্যারে ব্যবহার করা হয়েছে। এসব এলিমেন্ট একটি সিঙ্গেল কালার শনাক্ত করতে পারে। এর সেন্সর মডিউল স্বনিয়ন্ত্রিত, বাড়তি কোনো লেন্সের প্রয়োজন নেই। সেন্সরটি শুধু আলোই ক্যাচপার করবে না, এটি আলোর গতিবিধিও ক্যাপচার করতে পারে। এটি ক্যামেরার সব ইমাজিং সারফেসকে ‘মিনি ক্যামেরা’তে পরিণত করে, যা একটি কালারই ধারণ করে। আর এসব মিনি ক্যামেরার শটগুলো একত্রে ১৬.৭ মেগাপিক্সেলের ছবি ধারণ করে। আরও আশ্চর্য়ের বিষয়, ক্যামেরাটি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে শুরম্ন করে ছবির প্রতিটি অবজেক্ট সুন্দরভাবে ফোকাস করে বা ফুটিয়ে তোলে। তাই নতুন করে ফোকাস করার কোনো প্রয়োজন নেই।
এখন ক্যামেরা ফোনগুলোতেই এ নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে। গুজব রয়েছে অ্যাপল, এইচটিসি এমনকি নোকিয়া এ প্রযুক্তি তাদের পরবর্তী ডিভাইসগুলোতে আনবে। সুতরাং ফোকাসকে এখন বিদায় জানালেও সমস্যা নেই।
সুপার সেন্সরের কল্যাণ
লেন্স একটি ম্যাজিক পার্ট, তবে সবকিছুই ক্যামেরার সেন্সরের মতার ওপর নির্ভর করে। এটি শুধু সিলিকনের বিষয় নয়, প্রত্যেকটি ফটোসাইট কীভাবে সজ্জিত হয় (বেয়ার প্যাটার্ন সেন্সর বনাম ফুজির এক্স-ট্রান্স সেন্সর), ম্যাট্রিক্স ডিজাইন (রেগুলার প্যাটার্ন সেন্সর বনাম ব্যাক সাইট ইলুমিনেটেড সিমস সেসন্স) ও মাইক্রো লেন্সের ফিল্টারের মাধ্যমে কীভাবে লাইট আসছে, এর ওপর নির্ভর করে। এগুলোর প্রতিটি বিষয় আরও নতুনভাবে উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন সংশিস্নষ্টরা। এ ক্ষেত্রে প্যানাসনিক সব ধরনের বড় পরিবর্তন এনেছে।
এখন মাইক্রো লেন্সের মাধ্যমে লাল, নীল অথবা সবুজের সমন্বয়ে অসাধারণ ফটোসাইট তৈরি হচ্ছে। ফলে প্রতিটি কালারই আলাদা ও দারম্নণভাবে ফুটে উঠছে। প্যানাসনিকের নতুন ‘মাইক্রো কালার স্পিস্নন্টার’-এর মাইক্রো লেন্স তিনটি প্রাইমারি কালার আলাদা করে তুলে ফটোসাইটসে ডিডাইরেক্ট করে। তবে এটি এখনও ল্যাবরেটরি পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এগুলো উন্নত প্রযুক্তিতে ক্যামেরায় যুক্ত করা হবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ প্রযুক্তি ক্যামেরায় এলে বিস্ময়ের কিছু নেই। একইভাবে এনভিডিয়াও নিজেদের স্বতন্ত্র আর্কিটেকচার তৈরি করছে। প্রতিষ্ঠানটি মনে করছে টেগরা ফোর প্রসেসরে এ প্রযুক্তি স্মার্টফোনগুলোতে আনা হবে, যা সিমেরা আর্কিটেকচার বলে পরিচিত। এর মাধ্যমে এইচডিআর ফটো ও ভিডিও রিয়েল টাইম জেনারেট করা যাবে। এটি সিপিইউ ও জিপিইউ ক্যাপাসিটিও বাড়িয়ে তুলবে।
অপটিকসের খেলা
সেন্সর সম্পর্কে অনেক কথা হয়েছে, কিন্তু অপটিকস সম্পর্কে না বললেই নয়! নোকিয়া তাদের লুমিয়া ৯২০ স্মার্টফোনেই সর্বপ্রথম অপটিক্যালি স্ট্যাবিলাইজড লেন্স যুক্ত করেছে। এটিই এ ধরনের প্রথম উদ্ভাবন। ডিএসএলআরের মতো ক্যামেরা ফোনে লেন্স পরিবর্তন কি সম্ভব? আপনি যদি এটা ভেবে থাকেন, তাহলে সেটির বাসত্মবতা দূরে নয়। বর্তমানে ক্যামেরা ফোনগুলো সিস্নম করার জন্য ফিক্সড লেন্স ব্যবহার করে। সেন্সরকে আরও উপযুক্ত করে তৈরি করলে এ ফোনগুলোতেই বিভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহার করা যাবে। ইতোমধ্যেই এ ধরনের লেন্স তৈরির প্রক্রিয়া চলছে, যেটি বিভিন্ন স্মার্টফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরায় যুক্ত করা যাবে। তবে তা করা হলে ফোনটি দেখতে অনেকটা সুন্দর হবে বলে মনে করা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে স্টক লেন্সটি ‘টেলিফটো’ বস্নক অথবা ‘ফিশ-আই’ দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা যাবে।

সীমাহীন সম্ভাবনা

বর্তমানে আমরা প্রকৃত সেন্সরের বাসত্মব ডেভেলপমেন্ট দেখতে পাচ্ছি, যেগুলোতে লাইট ফিল্ড আর্কিটেকচারসহ ফোকাসের মেইন পয়েন্ট রয়েছে, যেখানে এনভিডিয়া আরও সামনে কীভাবে এগিয়ে যাবে। চিমত্মা করে দেখুন, ক্যামেরা ফোনেই যদি লাইট ফিল্ড সেন্সর ব্যবহার হয়, যার মাধ্যমে এইচডিআর ভিডিও এবং এইচডিআর শুট একই সাথে সম্ভব! স্টক লেন্সের পরিবর্তে স্পেশাল ম্যাক্রো লেন্স অথবা টেলিফটো লেন্স সেলফোন ফটোগ্রাফিকে আরও উন্নত সত্মরে নিয়ে যাবে। আর এ কাজটি করার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন প্রতীÿv আরও কী আসছে সামনে
ফিডব্যাক : bmtuhin@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস