হোম > বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্লাউড কমপিউটিং
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
এম. মিজানুর রহমান সোহেল
মোট লেখা:১০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - জানুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ক্লাউড কমপিউটিং
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি ধারা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্লাউড কমপিউটিং
খেলনা নয়, বাস্তবেই পাইলট ছাড়া আকাশে উড়েছে কপ্টার। নির্দিষ্ট গমত্মব্যে সফর শেষে স্বয়ক্রিয়ভাবে ফিরে আসছে। এককথায়, দেশেই তৈরি হচ্ছে ড্রোন! চমকে যাওয়ার মতো কথা। তবে কল্পনার পাখা ঘুরে ইতোমধ্যে পরীকক্ষা মূলকভাবে খুলনা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি তথা কুয়েটের আকাশে উড়েছে ‘বাংলার ড্রোন-কুয়েট’। সময়টা ছিল ১০ জুলাই ২০১৩। তখন এটি চালাতে রিমোট কন্ট্রোলার প্রয়োজন হতো। এখন আর দরকার হয় না। জিপিএসের মাধ্যমে নির্ধারিত রম্নটে পরিভ্রমণ করে আবদুলস্নাহ আল মামুন খান দীপের উদ্ভাবিত ড্রোনটি। এরপর থেকে ড্রোন তৈরির দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন আমাদের তরুন উদ্ভাবকেরা। সেই পথ বেয়ে এগিয়ে আসেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রেজওয়ানুল হক নাবিল। তার সাথে এ কাজে সহায়তা করছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রবি কর্মকার ও মারুফ হোসেন রাহাত। এই তিন তরুন এবার উপহার দিতে যাচ্ছেন ‘বিডি-শাস্ট-০১’।
দীপের ‘বাংলার ড্রোন-কুয়েট’
আবদুলস্নাহ আল মামুন খান দীপ জানালেন, কুয়েটে সণাতক করার সময় ড্রোনটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল টানা এক বছর এক মাস। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল রোবট গট ট্যালেন্ট’ প্রতিযোগিতায় গিয়ে ড্রোন তৈরিতে উৎসাহিত হন দীপ। প্রতিযোগিতায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশলী বিভাগের ছাত্র কাওছার জাহানের কোয়াডকপ্টার দেখে সাত মাস আগে শুরু করা গবেষণার পালে বাতাস লাগে। এরপর শুধুই পাখা মেলে উড়াল দেয়ার গল্প।
আবদুলস্নাহ আল মামুন খান দীপ বলেন, তখন আমি চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারে পড়ি। আমার থিসিস সুপারভাইজার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাহজাহানের পরামর্শে একটি কপ্টার তৈরিতে মনোনিবেশ করি। এরপর যখন চারদিকে পাইলটবিহীন বিমান নিয়ে নানা খবর প্রকাশ পায়, তখন থেকেই স্বপ্ন দেখি একটি ড্রোন বানানোর। আমি চেয়েছি, ড্রোনটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখা ও অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নজরদারির কাজ করবে। একই সাথে জরম্নরি প্রয়োজনে ওষুধ পরিবহন, দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তায় ব্যবহার হবে।
দীপ আরও বলেন, এভাবেই নিরন্তর গবেষণার পর প্রথম কপ্টারটি আকাশে ওড়ানোর সময়ই সেটি ভূপতিত হয়। মনটা দারুণ বিষণ্ণতায় পেয়ে বসে। কিন্তু আমি আমার স্বপ্নে অনড় ছিলাম। আমি আবার নতুন করে ড্রোন তৈরির কাজে মনোনিবেশ করি। টানা সাড়ে তিন মাস কাজ করার পর অবশেষে রিমোট দিয়ে ড্রোনটি ওড়াতে সক্ষম হই। এরপর বিষয়টি আমার থিসিস সুপারভাইজার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাহজাহানকে দেখাই। তিনি ড্রোনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাকে আরও এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। বর্তমানে আমার ড্রোনটি গুগল আর্থের ম্যাপ থেকে আগে থেকেই নির্ধারিত পজিশনে উড়তে পারে। পরিভ্রমণ শেষে এটি আবার ফিরে আসে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই রিমোট ছাড়া।
দীপের তৈরি বর্গাকৃতির (২ বাই ২ ফুট) এ ড্রোনটিতে রয়েছে চারটি প্রপেলার। এর ভারকেন্দ্র বরাবর বসানো হয়েছে ইনারশিয়াল মেজারমেন্ট ইউনিট (আইএমআই) বোর্ড। এখান থেকে প্রয়োজনীয় ডাটা সংগ্রহ করে প্রসেসরের মাধ্যমে মোটরের গতি নিয়ন্ত্রণ করে পুরো কপ্টারটিরকে নিয়ন্ত্রণ এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেয়ার কাজটি করা হয়। কপ্টারটির ওজন ১৮০০ গ্রাম। এটি দেড় কেজি ওজনের যেকোনো কিছু নিয়ে উড়তে সÿম। তবে যদি কেউ এর চেয়ে ওজনের বস্ত্ত বহন করতে চায় তাহলে এর মোটর আর প্রপ্রেলর চেঞ্জ করলেই চলবে বলে জানালেন দীপ। স্বয়ক্রিয়ভাবে ড্রোনটি পরিচালনের জন্য এতে ব্যবহার করা হয়েছে জিপিএস ও ম্যাগনোটো মিটার। সংযুক্ত আছে ওয়্যারলেস টান্সিভার। উড়মত্ম অবস্থায় এর মাধ্যমে ড্রোনের ব্যাটারি ভোল্টেজ, অবস্থান, উচ্চতা ও আবহাওয়া মনিটর করা যায়। একই সাথে এই ড্রোন থেকে লাইভ ভিডিও পাঠানো যাবে, যা কমপিউটারে স্বয়ক্রিয়ভাবে স্টোর হয়।
এ বিষয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাহজাহান জানান, গত বছরেই বাংলাদেশে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোয়াড কপ্টার পরিচলনা করে দীপ। এরপর থেকে দেশের বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এনে সে এটিকে সফল ড্রোনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। ইতোমধ্যেই ৯০ শতাংশের বেশি সফলতা পেয়েছে। পরিপূর্ণ ড্রোন হতে হলে ওকে এখন এটিতে ‘ইমেজ প্রসেসিং কার্ড’ ব্যবহার করতে হবে, যা বেশ ব্যয় সাপেক্ষ এবং এটা সিভিল উজের জন্য সচরাচর বিক্রি করা হয় না। তাই বাণিজ্যিকভাবে না হলেও দীপের চারটি ফ্যান দিয়ে কপ্টারটিকে আমরা নির্ধিদ্ধায় মিনিয়েচার ড্রোন বলতে পারি