লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৪ - সেপ্টেম্বর
মুলিন চিপ : ট্যাবলেট জগতে এএমডির প্রচেষ্টা
ট্যাবলেটের বাজারকে ধরার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তি নির্মাতা কোম্পানি প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইন্টেল ট্যাবলেট/স্মার্টফোনের বাজার দখল করার জন্য যারপরনাই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে তারা বে-ট্রেইল নামে অ্যাটমের এক নতুন সংস্করণ বাজারে ছেড়েছে। ট্যাবলেটে/স্মাটফোনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চাহিদা হচ্ছে : ০১. পারফরম্যান্স, ০২. অত্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী পিসি জগতে প্রাধান্য বিস্তারকারী ইন্টেল এবং এএমডিকে হটিয়ে আর্ম প্রসেসর তাদের উপযুক্ত স্থান করে নিয়েছে। এদিকে ইন্টেলের পাশাপাশি এমএমডিও বাজারের কিছু অংশ নিজেদের দখলে নেয়ার জন্য এপ্রিল মাসে বাজারে ছেড়েছে মুলিন চিপ। এ ছাড়া ল্যাপটপের জন্য ছেড়েছে ‘বীমা’ চিপ। পিসির মতো ট্যাবলেট/স্মার্টফোনের গঠনশৈীল এক নয়। পিসিতে যেমন প্রসেসর, র্যা ম এবং গ্রাফিক্স ভিন্ন ভিন্ন চিপের সমন্বয়ে গঠিত, ট্যাবলেট/স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে তা নয়। এখানে ‘সিস্টেম অন এ চিপ’ নামে একটি চিপে তাবৎ প্রসেসর, র্যা ম, গ্রাফিক্স এবং ইনপুট/আউটপুট কন্ট্রোলার একীভূত করা হয়। স্থান সঙ্কুলান একটি বড় ব্যাপার এ ক্ষেত্রে। ইতোপূর্বে বছরখানেক আগে এএমডি ‘টেমাশ’ নামে একটি চিপ বাজারে ছাড়লেও তা তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি।
মুলিন চিপ
এএমডির মুলিন চিপ ‘টেমাশ’ থেকে বড় ধরনের উন্নয়ন নিয়ে বাজারে হাজির হয়েছে। আগের স্থাপত্যের তুলনায় বড় ধরনের পরিবর্তন না হলেও এর কতিপয় দিক এমনভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে যে এটি বেশ চোখে পড়ার মতো। যেমন- ক্যাশ গঠনশৈলী, ব্রাঞ্চ প্রিডিকশন ইত্যাদি ব্যাপারগুলো টেমাশের মতো একই আছে। নতুন যে ফিচারগুলো যোগ করা হয়েছে তা হলো : ০১. টাটো কোর : এতে টাটো মোড কৌশল যোগ করা হয়েছে ২.২ গিগাহার্টজ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে ওয়ার্কলোড অনুযায়ী। অন্যদিকে ‘বীমা’ ২.৪ গিগাহার্টজ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। ০২. আর্ম ট্রাস্ট জোন : করটেক্স-এ৫ সমন্বিত করে একই ছাঁচে আনা হয়েছে, যাতে বাড়তি নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনা দেয়া যায়। ইন্টেলেও ‘ট্রাস্টেড কমপিউটিং টেকনোলজি’ নামে একটি ফিচার রয়েছে, যা এর অনুরূপ। আর্ম ওয়েবসাইটে এটি স্বীকার করা হয়েছে। মূলত কর্পোরেট বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে এটি ব্যবহার হতে পারে। সাধারণ ব্যবহারকারীর ওপর তেমন প্রভাব হয়তো পড়বে না। ০৩. ফুটো হ্রাস (Reduced Leakage) : এএমডি দাবি করেছে পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় এটি ৩৮ শতাংশ বিদ্যুৎ খরচ কমাবে। যদিও এটি পূর্ণ বিদ্যুৎ খরচের মতো এক নয়, তবে এটিও চিপের দক্ষতা মাপার ক্ষেত্রে একটি সূচক। অন-বোর্ড জিপিইউ (গ্রাফিক্স) বেশ উন্নত হয়েছে।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আরও কিছু দিক উন্নত করা হয়েছে। যেমন- ডিসপ্লে-পোর্ট ব্যবহারের সময় কন্ট্রোলার কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে। তদ্রূপ মেমরি কন্ট্রোলারও কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে ডিডিআর অপটিমাইজেশনের জন্য। ০৪. নতুন বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা : এটি যদিও টাটো কোর ফিচারের সাথে যুক্ত, তথাপি এতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এএমডি দাবি করেছে মুলিন (এবং বীমা) চিপে এমন বৈশিষ্ট্য প্রদান করা হয়েছে যে, এটি ট্যাবলেটের (ল্যাপটপ) চেসিস তাপমাত্রাকে মাপতে পারবে এবং তৎঅনুযায়ী ফ্রিকোয়েন্সিকে সমন্বয় করতে পারবে। যেহেতু তাপ চেসিসে ধীরে ধীরে সঞ্চালিত হয়, তাই এএমডি ধারণা করছে দীর্ঘক্ষণ ধরে কোরসমূহ উচ্চ ফ্রিকোয়োন্সিতে চলতে পারবে।
ইন্টেলের সাথে পেরে উঠবে কি?
এ কথা সত্য, ইন্টেলের অ্যাটমের তুলনায় মুলিন এবং বীমা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। কিন্তু এএমডি ৪.৫ ওয়াট স্পেসকে ধরার জন্য চিপকে ক্রমান্বয়ে ঠেলে নেয়ার লক্ষে্য দৃষ্টিকে আবদ্ধ রেখেছে। ল্যাপটপে মোটামুটি উপস্থিতি থাকলেও ট্যাবলেট অঙ্গনে যেন এএমডির ঠাঁই নেই। শুধু একটি এমএসআই (MSI) ট্যাবলেট বাজারে রয়েছে, যা এ৪-১২০০ দিয়ে তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে ইন্টেলের রয়েছে ২২৯টি।
এদিকে ইন্টেল প্রকাশ্যেই প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে, তারা নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে কম মূল্যে ট্যাবলেটের জন্য অ্যাটম বিক্রি করছে বাজার দখলের লক্ষে। ফলে এএমডির জন্য এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে বলা যায়।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার ঐতিহাসিক উন্নয়নের তালিকা (চার্ট) নিমেণ প্রদত্ত হলো। এতে ভবিষ্যতে কী ধরনের প্রত্যাশা পূরণের আশ্বাস রয়েছে তার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
ইন্টেল যেমন হ্যাসওয়েলে ভোল্টেজ রেগুলেটর সমন্বিত করেছে, এএমডিও তাই করতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এ কথা নিশ্চিত বলা যায়, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে যে কোম্পানি অগ্রণী হবে, তার জন্য স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপের বিশাল বাজারের হাতছানি রয়েছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যাপারটি বেশ দুরূহ ব্যাপার সন্দেহ নেই, কিন্তু ইতোমধ্যে বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে নজরে পড়ার মতো। মূলত ব্যাটারির দক্ষতায় আশানুরূপ অগ্রগতি সাধিত হয়নি বলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যাপারটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে পোর্টেবল ডিভাইস/যন্ত্রের ক্ষেত্রে। দেখা যাক, কী হয়!
ফিডব্যাক : itajul@hotmail.com
সূত্র : ইন্টারনেট