• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বাংলা কমপিউটিং
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সম্পাদক
মোট লেখা:৩১৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
সম্পাদকীয়
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বাংলা কমপিউটিং
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। এ মাসে বাংলা কমপিউটিংয়ের কথা তুলনামূলকভাবে একটু বেশি জোর দিয়ে ভাবব এটাই স্বাভাবিক। বাংলা কমপিউটিংয়ে আমরা অনেকটা এগিয়েছি। তবে এ এগিয়ে যাওয়া প্রত্যাশিত পর্যায়ে নয়। কমপিউটারে বাংলা লেখার সূচনা হয় ১৯৮৬ সালের ২৫ জানুয়ারি। আর তাই এই দিনটিকে কমপিউটারে বাংলা প্রচলন দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এর শুরুটা ম্যাকিনটোশ কমপিউটারের হাত ধরে। সে সময় শহীদ লিপির মাধ্যমে ম্যাকিনটোশ কমপিউটারে বাংলা লেখা শুরু হয়। প্রথম বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ছিলেন ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ। তবে তিনি বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারেননি। শহীদ লিপি নামে বাংলা সফটওয়্যারের অবস্থান দখল করে নেয় বিজয়। ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ পেশায় যন্ত্রকৌশলী হলেও বেক্সিমকোতে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৮৩ সালের দিকে এর কমপিউটার সিস্টেমের দায়িত্বে ছিলেন। তখন থেকেই তিনি বাংলা কমপিউটিংয়ের ওপর কাজ শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং খানিকটা ম্যাকিনটোশ কর্পোরেশনের টেকনিক্যাল সহায়তায় ম্যাক কমপিউটারের জন্য বাংলা ফন্ট যশোর, কিবোর্ড লেআউট শহীদ লিপি এবং বাংলা ইন্টারফেসে ম্যাকসিস্টেম ডেভেলাপ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি এই সিস্টেম ব্যবহার করে কমপিউটারে প্রথম বাংলা চিঠি লেখেন তার মাকে। এরপর ইউএনডিপিসহ প্রায় একশ’র মতো প্রতিষ্ঠান তার এই সিস্টেম কিনে ব্যবহার শুরু করে। বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু হয় ১৯৮৭ সালের ১৬ মে এবং কিবোর্ড উদ্ভাবিত হয় ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনন্দ কমপিউটার্সের মাধ্যমে। আনন্দ কমপিউটার্সের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী মোস্তাফা জববার। কমপিউটারে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে আরেকটি বাংলা সফটওয়্যার অভ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এর উন্নয়ন করা হয় ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ এবং এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রন ল্যাব। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মেহেদী হাসান খান। মোটামুটি এই হলো বাংলা কমপিউটিংয়ের শুরুর পর্ব। এরপর বাংলা কমপিউটিং আরও এগিয়েছে। এরই প্রতিফলন রয়েছে আমাদের চলতি সংখ্যার প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে। বাংলা কমপিউটিংকে আরও এগিয়ে নেয়ার তাগিদ রইল ভাষার মাস এই ফেব্রুয়ারিতে। সেই সাথে শুভেচ্ছা রইল তাদের সবার প্রতি, যারা বাংলা কমপিউটিংয়ে নানাভাবে অবদান রেখেছেন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর খাতের উন্নয়নে ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ রূপকল্প হাতে নিয়ে এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে চলেছে। সম্প্রতি রাজধানীতে আয়োজিত ‘ওয়ান বাংলাদেশ : ইউনিটিং ভিশন’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এই রূপকল্প বাস্তবায়নের সার্বিক দিক তুলে ধরা হয়। এই রূপকল্প বাস্তবায়নে বেসিসের সাথে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল (বিসিস), লেভারাইজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এলআইসিটি) প্রকল্প। প্রকল্পের সহযোগিতায় রয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান থোলনস এবং ওন হেইট। আমরা মনে করি, এসব উদ্যোগ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। তবে মনে রাখতে হবে, আমরা শুধু তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য আমদানি এবং এর ব্যবহারের ওপরই বেশি মনোযোগ দিয়ে যেন দেশকে কার্যত একটি ভেন্ডর জাতিতে পরিণত না করি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশকে একটি উদ্ভাবক জাতিতে পরিণত করা। এজন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গবেষণার ওপর জোর দেয়া। অভিজ্ঞতা বলে, যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আবিষ্কার উদ্ভাবনে এগিয়ে গেছে, শুধু সেসব জাতিই তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কার্যকর নলেজ ইকোনমির জন্ম দিতে পেরেছে। আর এই নলেজ ইকোনমির সূত্রে এরা নিজেদের পরিণত করতে পেরেছে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ জাতি। একটি বিষয় ভুললে চলবে না, আমাদের তরুণ প্রজন্ম মেধায়-মননে কোনো মতেই পিছিয়ে নেই। দেশের বাইরের অনেক নামী-দামী প্রতিষ্ঠানে আমাদের তরুণেরা সাফল্যের সাথে কাজ করছে। উপযুক্ত সুযোগ পেলে দেশেও এরা তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভাবনে উৎকর্ষের পরিচয় দিতে পারে। এর নানা উদাহরণই দেয়া যায়। এর বিস্তারিত যাওয়ার অবকাশ এখানে নেই। তবে এ ক্ষেত্রের সর্ব সাম্প্রতিক একটি উদাহরণ এখানে উল্লেখ করতে চাই। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী উদ্ভাবন করলেন বাংলাভাষা নিয়ন্ত্রিত বাইপেডাল। এটি এমন একটি রোবট, যা দূর থেকে বাংলাভাষার মাধ্যমে তারবিহীনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই রোবটের মাধ্যমে দুর্গম কোনো স্থান বা মানুষের জন্য নিরাপদ নয়, যেমন তেজস্ক্রিয় এলাকা, বোমা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এমন জায়গা কিংবা রানা প্লাজার মতো ধ্বংসযজ্ঞের ভেতরে খবর জানার জন্য রয়েছে মুঠোফোনে বাংলাভাষার মাধ্যমে দূর থেকে তারবিহীনভাবে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। ব্যতিক্রমী এ রোবটটি উদ্ভাবন করেন চুয়েটের ত্বরিৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মো: শামসুল আলম সম্রাট ও রাকেশ ঘোষ। গবেষণা তত্ত্বাবধানে ছিলেন এ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন।
এমন আরও অনেক উদ্ভাবনের উদাহরণের কথাই মাঝেমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে দেখি, যার জন্য কৃতিত্বের দাবিদার আমাদের তরুণ প্রজন্ম। বেসিসের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ রূপকল্পে গবেষণার ব্যবহারে অধিকতর মনোযোগী হওয়ার জন্য আমাদের তাগিদ রইল। বাংলা কমপিউটিংসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অন্যান্য গবেষণার প্রতি ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ রূপকল্পের সংশ্লিষ্টদের সচেতন থাকতে হবে। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যেকোনো উদ্যোগকে বরাবর স্বাগত জানিয়ে এসেছি। একই ধারাবাহিকতায় বেসিসের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ উদ্যোগকেও আমরা স্বাগত জানাই এবং এর সফল বাস্তবায়নও কামনা করি।

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস