• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ক্যারিয়ার গড়ুন ইন্টারনেটে লেখা লিখে
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: জিনিয়া সওদাগর
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৫ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইনটারনেট
তথ্যসূত্র:
ক্যারিয়ার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ক্যারিয়ার গড়ুন ইন্টারনেটে লেখা লিখে
‘ক্যারিয়ার’ বলতে সাধারণত আমরা মনে করি, মেডিক্যাল সায়েন্স কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে ক্যারিয়ার গড়তে হবে? ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হতে ব্যর্থ হলে জীবনে আর তেমন কিছুই করা সম্ভব নয়- এই ধারণা ইন্টারনেটের যুগে কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। ইন্টারনেটের এই যুগে আমরা গোটা পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় যখন আনতে পেরেছি, তখন আমাদের যেকোনো প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে সফলভাবে ক্যারিয়ার গড়তে পারব। প্রতিভাবানেরা ইন্টারনেট লেখালেখি করে হতে পারেন কর্মজীবনে সফল। ইন্টারনেটে আর্টিকল রাইটিংও হতে পারে একটি ভালো ক্যারিয়ার।
ক্যারিয়ার হিসেবে আর্টিকল রাইটিং
আজকের দিনে বেশিরভাগ কাজই অনলাইনভিত্তিক। বললে ভুল হবে না, অনলাইন মার্কেটিং জগৎ এখন আর্টিকল রাইটিংয়ের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। সুতরাং, এটি নিঃসন্দেহে বলা যায়, একজন ভালো মানের আর্টিকল রাইটারের গুরুত্ব অনেক বেশি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, চাইলেই কি ভালো মানের রাইটার হওয়া সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব।
আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে যেকেউ অবশ্যই সফল হতে পারবেন। শুধু প্রয়োজন বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষতা।
প্রফেশনাল রাইটার হতে হলে যেসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে
প্রথমত, ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করতে হবে; দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে; তৃতীয়ত, রিসার্চে দক্ষ হতে হবে এবং সেই সাথে প্রয়োজন ধৈর্য; চতুর্থত, প্রচুর পরিমাণে লেখার চর্চা করতে হবে; পঞ্চমত, সময় এবং নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।
এখন আপনি যদি আর্টিকল রাইটিংয়ে সত্যিসত্যিই উৎসাহী হন, তবে দেখে নেয়া যাক একটি ভালো মানের আর্টিকল লিখতে হলে যেসব অংশে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
আর্টিকলের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো
টাইটেল : প্রথমেই একটি আর্টিকলের টাইটেল আমাদের নজরে আসে। টাইটেলের ওপর ভিত্তি করেই পাঠক সেটি পড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। সুতরাং, ভালো মানের আর্টিকল লিখতে হলে অবশ্যই একটি নজরকাড়া টাইটেল নির্বাচন করতে হবে এবং আর্টিকলের বিষয়টি যেন তাতে সম্পূর্ণই প্রতিফলিত হয়।
সূচনা : আর্টিকলটি শুরু করুন এমনভাবে যেন এর বিষয় সম্পর্কে পাঠকেরা স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারেন এবং তা পড়ার আগ্রহ ধরে রাখতে পারেন।
মূল বিষয় : আর্টিকলের মূল বিষয়টি কয়েকটি অনুচ্ছেদের মাধ্যমে বিস্তারিত বর্ণনা করুন। তবে অপ্রাসঙ্গিক অথবা অপ্রয়োজনীয় কথা দিয়ে আর্টিকলটি অযথাই বড় করবেন না। এতে পাঠক তার পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। পাঠকের আরও বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অনুচ্ছেদগুলোরও উপযুক্ত নাম বা উপনাম (সাব টাইটেল) দিন।
ছবি : আর্টিকলে ছবি সংযোজন করার মাধ্যমে সেটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলুন। যেকোনো বিষয় বোঝার ক্ষেত্রে এটি অনেকাংশে সাহায্য করে। এতে পাঠকেরা লেখাটি পড়তে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
সংযোগ স্থাপন : আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- আর্টিকেলের এক অংশের সাথে আরেক অংশের কিছু সংযোগমূলক কথা লিখুন, যাতে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা যায়।
সর্বশেষ অংশ : আর্টিকলের সর্বশেষ অংশে একটি চূড়ান্ত মতামত, মন্তব্য, পরামর্শ অথবা সম্পূর্ণ বিষয়টিকে সংক্ষিপ্তাকারে উপস্থাপন করুন। এসব বিষয়ে সতর্ক থাকলে আপনি আর্টিকল রাইটিংয়ে সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারবেন। তবে লেখা শুরু করার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
মনে রাখুন
* আপনার লেখাটি কোথায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে- পত্রিকা, ম্যাগাজিন, ব্লগ অথবা কর্পোরেট ওয়েবসাইট?
* কাদের উদ্দেশে লিখছেন- শিক্ষার্থী, কিশোর-কিশোরী নাকি সাধারণ মানুষের জন্য?
* আপনার লেখার উদ্দেশ্য কী- উপদেশ, পরামর্শ, কোনো বিষয় অবগত, বর্ণনা নাকি তুলনা করা?
* শুরুতেই আপনার আর্টিকলের আলোচ্য বিষয়গুলোর একটা খসড়া তৈরি করুন। এরপর সেগুলো আর্টিকলে ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত তুলে ধরুন।
* এসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল রেখে আর্টিকলের ভাষা এবং ধরন ঠিক করুন।
* আপনার আর্টিকলের ভাষা হতে পারে ফরমাল, সেমি-ফরমাল অথবা ইনফরমাল; যা নির্ভর করে পাঠকের ওপর এবং সেটি কোথায় প্রকাশিত হতে যাচ্ছে তার ওপর।
* আর্টিকলে কখনই অতি-ব্যক্তিগত অথবা অতিরিক্ত ইমোশনাল আলোচনা করবেন না।
* সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- লেখা শুরুর আগে অবশ্যই খুঁটিনাটি বিষয়ের ওপর গবেষণা করুন।
আর্টিকলটি এমনভাবে লিখুন যেন আপনি পাঠকের সাথে সরাসরি কথা বলছেন। একজন লেখক নয়, পাঠকের দৃষ্টিকোণ বিচার-বিশ্লেষণ করে তবেই লিখুন।
যেকোনো কাজে সফল হতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। আর্টিকল রাইটিং খুব সহজেই শুরু করা গেলেও এর মানোন্নয়নের জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তাহলে দেখা যাক লেখার মানোন্নয়নের জন্য কী কী করা যেতে পারে :
লেখার মানোন্নয়নে করণীয় বিষয়
* উন্নতমানের ব্লগপোস্টগুলো পড়ুন এবং লেখার ধরন অনুসরণ করুন। কিন্তু কখনও কারও লেখা হুবহু কপি করবেন না। লেখাগুলো পড়বেন শুধু আইডিয়া পাওয়ার জন্য।
* প্রচুর পরিমাণে আর্টিকল লেখার চর্চা করুন। লেখার মানোন্নয়নে এটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
* সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকটিভ থাকুন। উন্নত মানের ব্লগের পেজে এবং গ্রুপগুলোতে দৃষ্টি রাখুন। এতে বিভিন্ন ব্লগের আপডেট জানতে পারবেন।
* প্রফেশনাল রাইটারদের সাথে কানেকটেড থাকুন। প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ ও টুকিটাকি তথ্য জেনে নিন।
* সবসময় নিজেকে কমপিউটারের পেছনে আড়াল করে রাখবেন না। পেশাজীবীদের নিয়ে আয়োজিত বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নিন। এতে সরাসরি তাদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন। রাইটিংয়ে দক্ষতা বাড়াতে বিভিন ওয়েবসাইটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ টিপ শেয়ার করা হয়। এমন একটি সাইট হলো- http://writing-world.com/। এ ছাড়া ইউটিউবে রাইটিং সম্পর্কিত ভিডিও টিউটোরিয়ালগুলোও দক্ষতা বাড়াতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
‘ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাই, কীভাবে শিখব?’- এমন প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, ফ্রিল্যান্সিং শেখার কিছু নেই। এটি শুধু কাজের একটি মাধ্যম। এখানে প্রয়োজন কাজে দক্ষতা অর্জন করা। যেমন- লেখালেখিতে আপনার প্রতিভা থাকলে, সেটিতে আরও দক্ষতা বাড়িয়ে তারপরই কাজের মাধ্যমে তা প্রয়োগ করুন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে আমরা আর্টিকল রাইটিংয়ের কাজ পেতে পারি?
আর্টিকল রাইটিংয়ের কাজের ক্ষেত্র
আপনি দক্ষতা অর্জন করলে এবং মানসম্মত আর্টিকল লিখলে অবশ্যই তার উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাবেন। কিন্তু সেজন্য আপনাকে সঠিক জায়গায় শ্রম দিতে হবে।
আর্টিকল রাইটিংয়ের কাজ পেতে পারেন এমন বহুল পরিচিত কিছু মার্কেটপ্লেস হলো- ওডেস্ক, ইল্যান্স, ফ্রিল্যান্সার এবং এ ধরনের আরও কিছু সাইট। কিন্তু এসব ছাড়াও আরও কিছু মার্কেটপ্লেস আছে যেখানে আর্টিকলের চাহিদা আরও বেশি। এমন কিছু সাইট হলো :
JOBS.PROBLOGGER (http://jobs. problogger.net/)
এই মার্কেটপ্লেটি আমাদের দেশের বিডিজবসের মতো। এখানে ক্লায়েন্ট রাইটারের খোঁজে জব পোস্ট করে এবং ফ্রিল্যান্সার খোঁজে নিজের জন্য উপযুক্ত কাজ।
Writer Gazette (http://www. writergazette.com/)
এই সাইট শুধু জব পোস্টিং করেই থেমে থাকেনি, এখানে রাইটারদের জন্য প্রয়োজনীয় টিপও শেয়ার করা হয় এবং আরও একটি মজার বিষয় হলো, এখানে রাইটিং কনটেস্টের লিস্টিংও করা হয়।
WRITING JOB SOURCE (http://www. writingjobsource.com/)
এই সাইটটিতেও প্রতিদিন অনেক রাইটিং জব পোস্ট হয়, যেগুলোতে রাইটারদের চাহিদা অনেক বেশি।
আরও কিছু ওয়েবসাইট আছে, যেখানে আর্টিকল লিখে প্রতিটি আর্টিকলের জন্য ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। এমন কিছু সাইট হলো-
Writers weekly (writersweekly.com)
Make a living writing (makealivingwriting.com)
The dollar stretcher.com (stretcher.com)
Be a freelance blogger (beafreelanceblogger.com)
Smithsonian.com (smithsonianmag.com)
এসব মার্কেটপ্লেস ছাড়াও একজন রাইটার Blogging, Adsence এবং Affiliation-এর মাধ্যমে অনেক বেশি আয় করতে পারেন। তবে সেজন্য পাশাপাশি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরি।
আর্টিকল রাইটিংয়ে দক্ষ হওয়া সত্ত্বেও পারিবারিক সম্মতি না থাকায় অনেকে এটি ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন না। এর একমাত্র কারণ, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ এমনকি শিক্ষিত সমাজও আর্টিকল রাইটিং এবং ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রাখেন না। অনেকে অনলাইনে কাজ করা বলতে বোঝেন ডোল্যান্সার ও স্কাইল্যান্সারের মতো কিছু লোকঠকানো কাজকে। সে জন্য প্রয়োজন সাধারণ মানুষকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সচেতন করা। আর যথাসাধ্য চেষ্টা করলে অবশ্যই আপনি সফল হবেন
সৌজন্যে : ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট
যোগাযোগ : ০১১৯৩০৯৪৫৪৫, ০১৬২৪৮৮৮৪৪৪
ই-মেইল : info@creativeit-inst.com
ওয়েবসাইট : www.creativeit-inst.com

পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৫ - ফেব্রুয়ারী সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস