লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
গেমের জগৎ
এম্পায়ার্স অব ক্রিয়েশন
নাম শুনে নিশ্চয়ই আন্দাজ করে নিয়েছেন যে গেমটি একটি স্যান্ডবক্স, স্ট্র্যাটেজি গেম। গেমটিতে আছে ইচ্ছেমতো তৈরির স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা আর সম্ভাব্য অদ্ভুতুড়ে সব স্ট্র্যাটেজিক কৌশল, যা যেকাউকে গেমটির ফ্যান হতে বাধ্য করবে। গেমে গেমারকে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট করতে হবে, করতে হবে সব ধরনের নির্মাণকাজ এবং সাম্রাজ্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গেমারকে নিতে হবে। জয় করতে হবে ক্রিয়েশনের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি ও এর ভরবেগ পরিচালনা করার ক্ষমতা। খেলার শুরুতে কিছু মৌলিক কৌশল মেনে চলতে হবে। জোগাড় করতে হবে যথেষ্ট সম্পদ। সাথে সাথে সাম্রাজ্যের আর সামরিক বাহিনীর দায়িত্ব নিতে হবে। শুরু করতে হবে বিজ্ঞান গবেষণা, টেক ল্যাবস আপগ্রেড, বাড়াতে হবে নৌসীমা।
অনলাইন গেমিংয়ের শুরু হয়েছিল স্টারক্রাফট আর ওয়ারক্রাফট দিয়ে আর আজ এসে তা এম্পায়ার্স অব ক্রিয়েশন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে। পৌঁছেছে গ্রাফিক্স, এআই গেমিংয়ের সবচেয়ে চূড়ান্ত পর্যায়। অসম্ভব পর্যায়ের পরিশোধন এবং অভিগম্যতা একটি স্তর দেয়ার পর এম্পায়ার্স অব ক্রিয়েশন অবিসংবাদিতভাবেই এই বছরের অন্যতম সেরা গেমে পরিণত হয়েছে। এটি একটি অত্যন্ত মায়াময় কৌশলী এরিনাকে দেখায়, যা গেমারকে কল্পনাপ্রসূত, কিংবদন্তি লিগের এক প্রামেত্ম নিয়ে যাবে। আগের ভার্সনগুলো থেকে গেমটির ব্যাটল প্লানও মারাত্মক উন্নত।
ব্যাটল ট্যাকটিক দিনে দিনে পাজল সলভিংয়ের কাছাকাছি চলে যাবে। যখন ধীরে ধীরে গেমের প্রতিটি ট্যাকটিক গেমারের আয়ত্তে এসে পড়বে, তখন সত্যি বলতে বেশি কিছু করার থাকবে না। কারণ একটু হিসেব করলেই তখন দেখা যাবে গেমটি খেলার মাত্র দুটি পথ আছে- একটি সঠিক, অপরটি ভুল। আর যথেষ্ট অভিজ্ঞ হয়ে গেলে ভুলভাবে খেলে চেষ্টা করাটাকে রীতিমতো হাস্যকর মনে হবে। কিন্তু সেই সঠিক পথটা খুঁজে বের করে ফেলার আগ পর্যন্ত গেমপ্লে গেমারকে দেবে সর্বোচ্চ আনন্দ।
ঘটনাপ্রবাহ কখনও হয়ে উঠতে পারে ভয়াবহ, কখনও শিক্ষণীয়, কখনও অদ্ভুতুড়ে কিংবা কখনও ভয়ঙ্কর যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। দখল করে নিতে হবে বা নিজের কর্তব্যে হতে হবে ইস্পাতদৃঢ়। জন্ম দিতে হবে নতুন ধারণার, নিতে হবে নতুন পন্থা, যুজতে হবে নতুন কৌশলে। তাই সব মিলিয়ে এর বিসত্মৃতিও কাউকে নিরাশ করবে না। শুধু একটি ভুল দরজায় কড়া নাড়াও তৈরি করতে পারে নতুন শত্রম্ন। প্রতিটি পদক্ষেপ নিখুঁত হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কারণ, আচমকা এসে হতভম্ব করে দেয়ার ঘটনা না ঘটলে গেমের আর বিনোদন কোথায়। গেমারকে সবসময় লক্ষ রাখতে হবে কার সাথে রয়ে যাওয়া ক্ষয়িষ্ণু জীবনের বাকি পথটুকু চলা সহজ হবে। গেমটিতে তুলে আনা হয়েছে রিয়ালিজম বা বাস্তববাদ এবং অসম্ভব সুন্দর ক্যারিকেচার, যা দিয়ে চরিত্রগুলোকে জীবন্ত করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
তবে সবকিছুই পুরনো কচকচানি, নতুন যা তা হলো গেমের অত্যাধুনিক টেক্সচার এবং থ্রিডি গ্রাফিক্স, যা গেমটির অরিজিনাল স্পিন এনে দিয়েছে আর স্যান্ডবক্স নিয়ে টার্ন বেজড স্ট্র্যাটেজি গেমের মধ্যে বোধহয় এটিই সবচেয়ে বেশি খ্যাতি পেয়েছে। সব মিলিয়ে গেমটির স্টোরিলাইন সম্পর্কে যা বলার আছে তা সব গেমারের জন্যই তোলা থাক। কারণ, এত মজাদার স্টোরিলাইন গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে খুব কমই পাওয়া যায়। তাই স্ট্র্যাটেজিস্ট আর একই সাথে স্যান্ডবক্সপ্রেমীদের জন্য এরচেয়ে ভালো পছন্দ আর হতেই পারে না। তাই গেমার আর দেরি না করে নিজের চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে গরম কিছু নিয়ে বসে পড়ুন এম্পায়ার্স অব ক্রিয়েশন খেলতে আর উপভোগ করুন শীতের সোনালি রোদ।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭/১০, সিপিইউ : কোরআই৩/এএমডি, র্যাম : ৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিসতা/৪ গিগাবাইট উইন্ডোজ ৭, ভিডিও কার্ড : জি ফোর্স ৬০০০ সিরিজ জিটিএস/রাডেওন (সমতুল্য), ৫১২ মেগাবাইট উইথ পিক্সেল শেডার টেকনোলজি, হার্ডডিস্ক : ৪.৫ গিগাবাইট
জিওমেট্রি ওয়ারস ৩ : ডাইমেনশন্স
প্রতিবারের মতো এবারের পর্বে যে রেট্রো গেমটি থাকছে, সেটি যতখানি না উত্তেজনাপূর্ণ, তারচেয়েও বেশি আসক্তিকর। বর্তমানের বেশিরভাগ রেট্রো হাই অ্যান্ড গেম উন্নত আর গেমিং কন্সোলগুলো সহজেই এগুলোকে বাস্তব করে তুলেছে। তবে পিসি গেমিং ইন্ডাস্ট্রিও হাত গুটিয়ে বসে থাকছে না। তাই জিওমেট্রি ওয়ারস সিরিজের তৃতীয় গেমটি রিলিজ পেয়েছে পিএস৪ থেকে পিসি পর্যন্ত সব প্লাটফর্মে। আইজিএনের মতে, স্টেট অব দ্য আর্ট গেমটি বিশ্বব্যাপী শুধু সমাদৃতই হয়নি, মুগ্ধতায় আপন করে নিয়েছে সব গেমারের হৃদয়।
না পাজল, না বুদ্ধির খেলা, না বোকামো- জিওমেট্রি ওয়ারস ৩ : ডাইমেনশন্স এমন একটি গেম যেটি খেলতে হবে পিউর গেমিং স্কিল আর রিফ্লেক্স দিয়ে। গেমটির গ্রাফিক চলবে টুডি সাইডস্ক্রলিংয়ের মাধ্যমে। গেমটি গেমারকে নিয়ে আসবে তার নিজস্ব কমফোর্ট জোনের বাইরে, যা তাকে দেবে অন্যসব গেম থেকে ভিন্নতর অভিজ্ঞতা। জ্যামিতিক প্রতিটি আকৃতি, প্রতিটি ডাইমেনশনের দিকে লক্ষ রাখতে হবে গেমারকে, কোনোভাবেই চোখ ফস্কালে চলবে না। আছে নানারকম উপাদান, ইচ্ছেমতো ফিজিক্স, ইচ্ছে করার স্বাধীনতা- সবকিছু মিলিয়ে গেমটি ছাড়িয়ে গেছে লিম্বো আর মেকানিট্রিয়ামকেও। বাস্তবতা-কল্পনা, ধাঁধা, সেগুলোর সমাধান- সব মিলিয়ে কখন কোথায় কী গিয়ে যে ঠেকছে হয়তো গেমার নিজেই ঠাহর করতে পারবেন না। তাই প্রতিটি মুভমেন্টে হতে হবে প্রখর এবং দ্রুত। আর গেমারদের জন্য সবচেয়ে সুবিধার হবে এবার কিবোর্ড ছেড়ে গেমিং কন্সোল নিয়ে খেলা শুরু করা। বাস্তবে হয়তো পাইলট হয়ে ওঠা হয়নি, কিন্তু জিওমেট্রি ওয়ারস ৩ : ডাইমেনশন্সের বদৌলতে যুদ্ধক্ষেত্রে রিফ্লেক্স যাচাই করে নেয়ার ইচ্ছে অপূর্ণ থাকবে না।
গেম রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ : এক্সপি/ভিসতা/৭/১০, সিপিইউ : কোরআই৩/এএমডি, র্যাম : ২ গিগাবাইট উইন্ডোজ ভিসতা/২ গিগাবাইট উইন্ডোজ ৭, ভিডিও কার্ড : জি ফোর্স ৬০০০ সিরিজ জিটিএস/রাডেওন (সমতুল্য), ৫১২ মেগাবাইট উইথ পিক্সেল শেডার টেকনোলজি, হার্ডডিস্ক : ২ গিগাবাইট।