• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > গ্র্যান্ড থেফট অটো-৪
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
কমপিউটার গেমগেম, গেমস, 
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
গ্র্যান্ড থেফট অটো-৪



গ্রান্ড থেফট অটো গেমটি সাধারণত জিটিএ নামেই বেশি পরিচিত। রকস্টার গেম কোম্পানির সবচেয়ে জনপ্রিয় গেমের তালিকায় জিটিএ গেমটি সবসময় এক নাম্বারে থাকে। বিশ্বজুড়ে জিটিএ গেমটির লাখ লাখ ভক্ত বিদ্যমান। এজন্যই গেমটির চতুর্থ সিকুয়্যাল জিটিএ-৪ অবমুক্ত হওয়ার প্রথম দিনই ৩.৬ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে, যা গেম বিক্রির আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। জিটিএ গেমটি মূলত অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার ধরনের।

গ্রান্ড থেফট অটো ৪ গেমের প্রধান চরিত্রটি হচ্ছে নিকো বেল্লিক। নিকো নিজের সৌভাগ্যের অন্বেষণ করতে সুদূর ইউরোপ থেকে আমেরিকার লিবার্টি সিটি নামের এক কাল্পনিক শহরে আসে। নিকো তার ভাই রোমানের কাছে শুনতে পায় যে লিবার্টি সিটি একটি স্বপ্নের শহর। এখানে যে আসে সে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায়। এখানে টাকা কামানো বেশ সহজ, আকাশে বাতাসে শুধু টাকাই টাকা। রোমানের গালগপ্প শুনে নিকো লোভে পড়ে যায় এবং নিজের দেশ ছেড়ে টাকা কামানোর উদ্দেশ্যে লিবার্টি শহরে এসে পৌঁছায়। কিন্তু সেখানে এসে দেখে সবই ছিলো নিছক গল্প, তার ভাই তাকে মিথ্যা বলেছে। রোমান বলেছিলো সে নিজে বাস করে বিশাল ম্যানশনে, তার ১৫টি স্পোর্টসকার রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে অগণিত গালফ্রেন্ড আর কাড়ি কাড়ি টাকা। কিন্তু সে আসলে ট্যাক্সির ব্যবসা করে এবং থাকে পুরনো নোংরা এক বাড়িতে। নিকো এসব দেখে খুব রেগে যায় এবং তার ভাইকে প্রশ্ন করে কেন সে তাকে মিথ্যা বলেছে। রোমান তখন জানায়, সে ট্যাক্সির ব্যবসা করতে করতে কিছু মাফিয়া পাওনাদারদের সাথে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। তার পরিচিত কেউ নেই যে তাকে সাহায্য করবে, তাই সে মিথ্যা কথা বলে শক্ত-সামর্থ্য নিকোকে নিয়ে এসেছে নিজেকে বাঁচানোর জন্য। নিকো তার ভাইকে ছেড়ে চলে যেতে পারে না, কারণ সে নতুন শহরে কাউকে চেনে না। তাই সে তার ভাইয়ের সাথে থেকে তার কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ মনে করে। এরপর আস্তে আস্তে আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়াদের সাথে তারা দু’ভাই জড়িয়ে পড়বে এবং এই নিয়েই গেমের কাহিনী এগিয়ে যাবে।



গেমটিতে সিরিজের অন্যান্য গেমের মতোই গেমপ্লে রাখা হয়েছে। পুরনো গেমগুলোর মতো বিশাল আকারের ওপেন ওয়ার্ল্ড দেয়া হয়েছে, যেখানে ইচ্ছে করলে প্লেয়ার যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াতে পারবে। গেমার ইচ্ছে করলে নিকোকে নিয়ে শহরে হাঁটাহাঁটি, দৌড়াদৌড়ি, সাঁতার কাটা ও লাফালাফি করে বেড়াতে পারবেন। পোশাকের দোকানে গিয়ে কিনতে পারবেন নানারকমের পোশাক। মজার ব্যাপার হচ্ছে দোকানের যেকোনো পোশাক পরে ট্রায়াল দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা ছাড়াও খালি হাতে মারামারি করা যাবে। গেম সিরিজের অন্য গেমগুলোর মতোই এই গেমেও প্লেয়ার ইচ্ছে করলে রাস্তাঘাটে চলতে থাকা ও থেমে থাকা বিভিন্ন যানবাহন, যেমন-মোটরসাইকেল, ট্রাক, ভ্যানগাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, কার, জীপ, বোট, এমনকি হেলিকপ্টার পর্যন্ত ছিনতাই করে শহরময় ঘুরে বেড়াতে পারবেন। এই গেমে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়িগুলো লক করা থাকে, তবে নিকো গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙ্গে লক খুলে গাড়ি নিতে পারবে। এছাড়া যেসব গাড়িতে দু’জন যাত্রী থাকবে সেসব গাড়ি ছিনতাই না করাই ভালো, কারণ নিকো চালকের আসনে বসা ব্যক্তিকে টেনে বের করে দিয়ে সেখানে বসবে কিন্তু অপর যাত্রী নিকোকে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে পারে। প্লেয়ার ইচ্ছে করলে মিশনভিত্তিক গেম খেলতে পারেন, এতে করে গেমের কাহিনী এগিয়ে যাবে এবং সেই সাথে শহরের বিভিন্ন অংশ প্লেয়ারের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।

গেমে পুলিশ আশপাশে থাকা অবস্থায় কাউকে মারলে বা গাড়ি ছিনতাই করলে পুলিশ ধাওয়া করবে। কোনো কারণে লাইফ বা জীবনীশক্তি কমে গেলে নিকো ফাস্টফুডের দোকান থেকে কিছু কিনে খেয়ে, সোডা কিনে পান করে, মেডিক্যাল সেন্টারে গিয়ে আবার লাইফ ফিরে পেতে পারবে। গেমে নিকো ফোন থেকে যার সাথে দরকার তার সাথে ফোনে কথা বলতে পারবে। গেমার ইচ্ছে করলে নিকোর কাছে থাকা মোবাইলের রিংটোনও বদলাতে পারবেন।

এবার আসা যাক গেমের গ্রাফিক্সের কথায়। গেমের এই চতুর্থ সিক্যুয়ালের গ্রাফিক্স আগের গেমগুলোর তুলনায় অনেক সুন্দর, গেমে পুরো শহরকে একেবারে বাস্তবের মতো গ্রাফিক্স করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সারা শহরের রাস্তাঘাটে লোকজনদের আনাগোনা রয়েছে এবং তাদের একেকজনের চেহারা ও পোশাকআশাক অন্যজনের চেয়ে ভিন্ন। গাড়ির ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে দারুণ বৈচিত্র্যতা। অনেক ধরনের সুন্দর মডেলের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে গেমটিতে। গেমের সাউন্ড কোয়ালিটিও বেশ ভালো। গাড়িতে ওঠার পর রেডিওতে গান শোনার ব্যবস্থা আছে, প্লেয়ার ইচ্ছে করলে রেডিও স্টেশন পরিবর্তন করে শুনতে পারবেন।

গেমটি খেলতে ভিসতা সার্ভিস প্যাক ওয়ান বা এক্সপি সার্ভিস প্যাক থ্রি অপারেটিং সিস্টেম, ইন্টেল কোর টু ডুয়ো ২.৪ গিগাহার্টজ বা সমমানের এমডি এথলন এক্স-২ প্রসেসর, কমপক্ষে ১ গিগাবাইট র্যারম, ২৫৬ মেগাবাইট মেমরিযুক্ত এনভিডিয়া ৭৯০০ অথবা এটিআই এক্স ১৯০০ মডেলের গ্রাফিক্স কার্ড, ১৬ গিগাবাইট খালি হার্ডডিস্ক স্পেস ও ডিরেক্ট এক্স ৯.০ সি সাপোর্টেড সাউন্ড কার্ড দরকার পড়বে। গেমটি খেলার জন্য গেমস ফর উইন্ডোজ লাইভ নামের সফটওয়্যারটি ও রকস্টার গেম সোসিয়াল ক্লাব নামের সফটওয়্যার দুটি ইনস্টল করা থাকতে হবে এবং অফলাইন প্রোফাইল বানিয়ে গেম খেলতে হবে। অনলাইনে খেলার জন্য অনলাইনে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৯ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস