• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > পুরনো গেম : রবিনহুড: দ্য লিজেন্ড অব শেরেউড
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
কমপিউটার গেমগেম, গেমস, 
তথ্যসূত্র:
গেমের জগৎ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
পুরনো গেম : রবিনহুড: দ্য লিজেন্ড অব শেরেউড



রবিন হুড নামটি শুনলেই সবুজ কাপড় পরিহিত এক চৌকস দস্যু ও দক্ষ তীরন্দাজের ছবি মনের পর্দায় ভেসে ওঠে। রবিন হুড মধ্যযুগের ইংরেজি উপকথার বেশ জনপ্রিয় একটি চরিত্র। ছোট বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাই একনামে এই দস্যু রবিনকে চেনে। ইংল্যান্ডের রাজা সিংহ হৃদয় রিচার্ড ত্রুসেডে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার আগে রাজ্যের ক্ষমতা প্রিন্স জনের হাতে তুলে দিয়ে যান, কিন্তু প্রিন্স জন উদারমনা কোনো শাসক ছিলেন না, সে এবং তার দোসর নটিংহ্যামের শেরিফ মিলে প্রজাদের থেকে বেশি পরিমাণে কর আদায় করতো ও কর না দিলে সৈন্যদের দিয়ে তাদের উপর অত্যাচার করাতো। রবিন হুড প্রিন্স জনের সৈন্যদের অত্যাচারের হাত থেকে গরিবদের রক্ষা করতো এবং বড়লোকের ধনসম্পদ লুট করে গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিত, তাই তাকে প্রজারা গরিবের বন্ধু নামে ডাকতো। রবিনের সাথে তার কাজে সহায়তাকারী হিসেবে লিটল জন, মেইড ম্যারিয়ান, পাদ্রী ফ্রায়ার টাক ও রবিনের ভাগ্নে উইল স্কারলেটসহ আরো অনেকে থাকতো। রবিনের সাথে থাকা সহযোদ্ধাদের বলা হতো মেরী মেন। মধ্যযুগের ইংল্যান্ডের নটিংহ্যামশায়ারের শেরউড বনে রবিন ও তার সহকারীরা ঘাঁটি গেড়েছিলো এবং বনপথে যাওয়া বড়লোকদের ধনসম্পদ লুট করে তা গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিত। রবিন হুডকে নিয়ে বানানো হয়েছে অনেক সিনেমা, টিভি সিরিজ, কমিকস, অ্যাডভেঞ্চার বই, নাটক ও গেম। আজকে রবিন হুডকে নিয়ে বানানো একটি গেম নিয়ে আলোচনা করা হবে।



রবিন হুড- দ্য লিজেন্ড অব শেরউড গেমটি একটি রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি ধাঁচের গেম এবং ২০০২ সালে এটি তৈরি করেছিলো স্পেলবাউন্ড স্টুডিও নামের প্রসিদ্ধ গেম কোম্পানি। ২০০২ সালের আগে স্পেলবাউন্ডের তৈরি ডেসপারাডো- ওয়ান্টেড ডেড অর অ্যালাইভ নামের জনপ্রিয় ওয়েস্টার্ন স্ট্র্যাটেজি গেমের খেলার ধরনের সাথে মিল রেখেই দ্য লিজেন্ড অব শেরউড গেমটি তৈরি করা হয়েছে। গেমে বনের মধ্যে ফাঁদ পেতে মালামাল ও স্বর্ণমুদ্রা বহনকারী ঘোড়ারগাড়ি থামিয়ে ও গাড়ির সাথে পাহারাদার হিসেবে আসা সৈনিকদের পরাজিত করে স্বর্ণমুদ্রা লুট করতে হবে। মাঝে মাঝে রবিন ও তার দলবল নিয়ে শহরেও হানা দিতে হবে সৈনিকদের হাতে ধরা পড়া তার দলের লোকদের কয়েদখানা থেকে বাঁচানোর জন্য। এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রাসাদের রাজসভার গোপন আলাপচারিতা শোনার জন্য লুকিয়ে প্রাসাদে যেতে হবে। গেমে রবিন হুড, মেইড ম্যারিয়ান, লিটল জন, উইল স্কারলেট, ফ্রায়ার টাক, উইল স্টুয়াটলি ও অন্যান্য মেরী মেনদের নিয়ে খেলা যাবে।



চরিত্রগুলোয় মজার ব্যাপার হলো এক একজন একেক কাজে পারদর্শী। রবিন হুডের স্পেশাল এবিলিটির মধ্যে সবার কাছে প্রথমেই আসে তার তীরন্দাজিতে অসাধারণ দক্ষতা। এছাড়াও রবিন ঘুষি দিয়ে শত্রুপক্ষের সৈন্যকে ধরাশায়ী করতে পারে এবং স্বর্ণমুদ্রার থলে ছুরে মেরে সৈনিকদের মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরাতে পারে। উইল স্টুয়াটলি পচা আপেল ছুড়ে সৈন্যদের মনোযোগ নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে। এছাড়া জাল ছুড়ে সৈন্যদের কিছুক্ষণের জন্য আটকে রাখতে পারে, তালা খুলতে পারে এবং হঠাৎ সৈন্যদের সামনে পরে গেলে ভিক্ষুকের বেশ ধরে তাদের চোখ ফাঁকি দিতে পারে। ফ্রায়ার টাকও স্টুয়াটলির মতো শত্রুর উপর জাল ছুড়তে পারে, অজ্ঞান সদস্যদের জাগাতে পারে এবং নিজের জীবনীশক্তি কমে গেলে সাথে রাখা মাংস খেয়ে জীবনীশক্তি ফিরে পেতে পারে। উইল স্কারলেট তার শক্তিশালী আঘাতে একসাথে একাধিক সৈন্যকে ধরাশায়ী করতে পারে, গুলতি দিয়ে পাথর ছুড়তে পারে এবং নিজের ঢাল দিয়ে শত্রুপক্ষের তীরন্দাজদের ছোড়া তীর থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে। এছাড়া তার সাথে থাকা অন্য মেরী মেনদেরও ঢালের আড়ালে রাখতে পারে। লিটল জনকে দিয়েও আঘাত করে রবিনের মতো শত্রুদের ধরাশায়ী করতে পারে এবং রবিনকে উঁচু স্থানে উঠতে সহায়তা করতে পারে। মেইড ম্যারিয়ানও বেশ ভালো তীর ছুড়তে পারে। এছাড়া শত্রুপক্ষের কথা আড়ি পেতে শুনতে পারে এবং নিজের দলের কেউ আহত হলে তাদের ভেষজ ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তুলতে পারে। এছাড়া দলের অন্যান্য মেরী মেনদের কেউ কেউ তীরন্দাজিতে পারদর্শী, কেউ ম্যারিয়ানের মতো আহতদের সারিয়ে তুলতে পারে, কেউ আহত সদস্যদের ও শত্রুদের বহন করতে পারে। এজন্য প্রতি মিশনে যাওয়ার আগে কোন কোন প্লেয়ার সাথে নিতে হবে তা ঠিক করে নিতে হবে এবং মিশনে যাওয়ার সময় ঘাঁটিতে রেখে যাওয়া লোকদের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করে যেতে হবে। যেমন কাউকে তীর বানানোর কাজ, কাউকে পাথর সংগ্রহের কাজ, কাউকে জাল বুননের কাজ, কাউকে ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহের কাজ, কাউকে গাছ থেকে আপেল পাড়ার কাজ, কাউকে তীর মারার কৌশল ও তরোয়াল যুদ্ধ রপ্ত করার কাজ, কাউকে খাবার পরিবেশন ও পানীয় সংগ্রহ করার কাজ ইত্যাদি। তাহলে মিশন শেষে আবার ঘাঁটিতে ফেরত আসলে অনেক তীর, ছুড়ে মারার জন্য পাথর, জাল, আপেল ইত্যাদি পাওয়া যাবে। এছাড়া যাদের যুদ্ধকৌশল রপ্ত করতে দেয়া হয়েছিল তাদের এক্সপেরিয়েন্স লেভেল বৃদ্ধি পাবে। পরবর্তী মিশনে পারদর্শী বা এক্সপেরিয়েন্স লেভেল যাদের বেশি তাদের নিয়ে যাওয়ার পর সৈন্যদের সাথে তরোয়াল যুদ্ধে অবতীর্ণ হলে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী মেরী মেনরা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিপরীত পক্ষকে হারাতে পারবে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
২০০৯ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস