লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
লেখার ধরণ:
ক্লাউড কমপিউটিং
ক্লাউড কমপিউটিং: নীতিনির্ধারকদের সামনে চ্যালেঞ্জ
জ্বালানির মতো যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্য কমপিউটিং হয়ে উঠেছে অপরিহার্য এক উপাদান। ক্লাউড কমপিউটিং হচ্ছে আরেকটি বিশেষার্থক পরিভাষা, যা আমাদের অনেকের পক্ষে বোঝা মুশকিল। সবচেয়ে সরল ধারণায় এর অর্থ, সবার বাড়িতে আলাদা আলাদা জেনারেটর থাকার বদলে একটি কেন্দ্রায়িত জেনারেটর থাকা, যার সাথে আগের চেয়ে সহজ উপায়ে কম খরচে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য প্রতিটি বাড়ির জেনারেটরের সংযোগ রয়েছে। এ ধরনের কেন্দ্রায়িত বিদ্যুৎ সরবরাহের অর্থনীতি প্রাথমিকভাবে নির্ভর করে ইউটিলাইজেশন ফ্যাক্টর (একটি জেনারেটর বা জেনারেটিং সেন্টারের সর্বোচ্চ চাহিদা ও জেনারেটরের ক্যাপাসিটির অনুপাত) এবং ইকোনমিজ অব স্কেলের (উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে গড় ব্যয় কমানো) ওপর।
বিদ্যুৎ শিল্পের মতোই আলাদা স্টোরেজ ও সার্ভার না থেকে আলাদাএকটি সেন্ট্রালাইজড ফ্যাসিলিটি থাকবে, যা স্বতন্ত্র ব্যবহারকারীরা শেয়ার করবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। অন্যান্য উপায়েরিসোর্স ইউটিলাইজেশন ফ্যাক্টর এবং ইকোনমিজ অব স্কেল হচ্ছে কম খরচে গ্রাহকদের কাছে উন্নততর কমপিউটিং সুবিধা জোগান দিয়ে মুনাফা করার প্রধান সুযোগ। উদাহরণ টেনে বলা যায়, গড়ে ডিস্ক ও থাম্ব ড্রাইভের অর্ধেক ক্যাপাসিটি এর জীবনকালে অব্যবহৃত থেকে যায়। যদিওপুরো ক্যাপাসিটির মূল্য আগেই পরিশোধ করতে হয়। ব্যবসায়ের প্রস্তাব হচ্ছে, মূলত অব্যবহৃত ক্যাপাসিটি অন্য কারও কাছে লিজ দিয়ে নতুন রাজস্ব সৃষ্টি করা, যার ভাগ পাবে ভোক্তা ও এধরনের শেয়ারড ডিভাইসের প্রোভাইডার তথা ক্লাউড প্রোভাইডার। আইটি অবকাঠামো ও ডাটা সেন্টারের সবচেয়ে দামী উপাদান কমপিউটার সার্ভারের বেলায় সঞ্চয় এমনকি স্টোরেজের চেয়েও বেশি হতে পারে, যখন ব্যক্তিমালিকানায় ইউটিলাইজেশন ১০ শতাংশের মতো কম।
ক্লাউড সুযোগ দেয় লার্জ ডাটা সেন্টারে কোরআইটি অবকাঠামো নিয়ে আসার, যা ইকোনমিজ অব স্কেলের উল্লেখযোগ্য সুবিধা কাজে লাগায় তিনটি ক্ষেত্রে: ০১.সাপ্লাই,সাইড সেভিংস, লার্জ স্কেল ডাটা সেন্টারসার্ভারপ্রতি খরচ কমায়, ০২. ডিমান্ড-সাইড অ্যাগ্রেগেশন, কমপিউটিং স্মোথ ওভারঅল ভ্যারিয়েবিলিটির জন্য চাহিদা সমগ্রীভূত করে সার্ভার ইউটিলাইজেশন রেট বাড়ানোর সুযোগ করে দেয়, এবং ০৩. মাল্টি টেন্যান্সি ইফিসিয়েন্সি, মাল্টিটেন্যান্ট অ্যাপ্লিকেশন মডেলে পরিবর্তনের সময় কমায় টেন্যান্টপ্রতি অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজমেন্ট ও সার্ভার কস্ট।
সাপ্লাই সাইড ইকোনমিজ অব স্কেল: সাপ্লাই সাইডে ইকোনমিজ অব স্কেল বয়ে আসে চারটি ক্ষেত্র থেকে। প্রথমটি হচ্ছে- কস্ট অব পাওয়ার বা বিদ্যুৎ খরচ। বিদ্যুৎ খরচ দ্রুত বেড়ে তা হয়ে উঠছে টিসিও (টোটাল কস্ট অব ওনারশিপ)। এর সবচেয়ে বড় উপাদান, এই সময়ে যা ১৫-২০ শতাংশ। পিইউই (পাওয়ার ইউজেস এফেকটিভনেস) অপেক্ষাকৃত ছোট ফ্যাসিলিটির চেয়ে বড় ফ্যাসিলিটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। দ্বিতীয়টি হচ্ছে- ইনফ্রাস্ট্রাকচার লেবার কস্ট। অনেক রিপিটিটিভ ম্যানেজমেন্ট টাস্ক স্বয়ংক্রিয় করার মাধ্যমে যেকোনো মাত্রার ক্লাউড কমপিউটিংয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনে লেবার কস্ট। এই কমে যাওয়ার হার অপেক্ষাকৃত বড় ফ্যাসিলিটিতে ছোট ফ্যাসিলিটির চেয়ে বেশি। একটি সিঙ্গল সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্র্যাটর একটি প্রচলিত এন্টারপ্রাইজে ১৪০টি সার্ভারে সার্ভিস দিতে পারে। একটি ক্লাউড সেন্টারে একই অ্যাডমিনিস্ট্র্যাটর সার্ভিস দিতে পারে কয়েক হাজার সার্ভারে। তৃতীয় ক্ষেত্রটি হচ্ছে- সিকিউরিটি ও রিলায়েবিলিটি। পাবলিক ক্লাউড অ্যাডপশনে এটিকে সম্ভাব্য বাধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সিকিউরিটি ও রিলায়েবিলিটির ক্রমবর্ধমান চাহিদা ইকোনমিজ অব স্কেলের প্রয়োজন ডেকে আনে। এর প্রধান কারণ, স্থায়ী বিনিয়োগের পর্যায়ে প্রয়োজন অপারেশনাল সিকিউরিটি ও রিলায়েবিলিটি অর্জন। এ সমস্যা মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞ সুযোগ জোগানোর ব্যাপারেপ্রায়ই বড় ধরনের কমার্শিয়াল ক্লাউড প্রোভাইডারেরা কর্পোরেট আইটি ডিপার্টমেন্টের চেয়ে বেশি সক্ষম। এভাবে আসলে ক্লাউড সিস্টেমকে করে তোলে অধিকতর নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য। এ ক্ষেত্রে উপকার পেতে চতুর্থ ক্ষেত্রটি হচ্ছে- বায়িং পাওয়ার। বড় ডাটা সেন্টারের অপারেটরেরা ছোট ক্রেতাদের তুলনায় হার্ডওয়্যার কেনায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় পেতে পারেন।
ডিমান্ড-সাইড ইকোনমিজ অব স্কেল: কোনো মাত্রার দক্ষতার সাথে ক্যাপাসিটিব্যবহার করা হলে তার উল্লেখযোগ্য প্রভাব থাকে ইউনিটপ্রতি ব্যয়ের ওপর। ইউটিলাইজেশন ভ্যারিয়েবিলিটির বিভিন্ন উৎসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্লাউড ভিন্নতা আনতে পারে ডিমান্ডে। আর এভাবে প্রতি গ্রাহকের সার্ভিস খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে ডিমান্ড-সাইড ইকোনমিজ অব স্কেলের ওপর প্রভাব সৃষ্টিকরে প্রধান প্রধান ভ্যারিয়েবিলিটির তিনটি সোর্স বা উৎসরয়েছে- ০১. র্যা ন্ডমনেস: এন্ড-ইউজারের অ্যাক্সেসের প্যাটার্নে রয়েছে নির্দিষ্ট ডিগ্রির রেন্ডমনেস। বিভিন্ন ক্যাটাগরির গ্রাহকদের একত্র করে ডিমান্ডে উচ্চ ভিন্নতা এনে ক্যাপাসিটি বাফারগড়ে তুলে সার্ভিস লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট কমানো যেতে পারে। ০২. টাইম-অব-ডে-প্যাটার্ন : প্রতিদিনের মানুষের আচরণে রয়েছে রিকারিং সাইকল: কনজ্যুমার সার্ভিস সন্ধ্যায় সর্বোচ্চে পৌঁছে। অপরদিকে কর্মক্ষেত্রে সার্ভিস সর্বোচ্চে পৌঁছে ওয়ার্কডের সময়। বিশ্বের বিভিন্ন টাইম জোনের গ্রাহকদের একসাথে করে ব্যয় কমাতে এই সুযোগ নেয়া যেতে পারে। ০৩. ইন্ডাস্ট্রি-স্পেসিফিক ভ্যারিয়েবিলিটি: কিছু ভ্যারিয়েবিলিটি তাড়িত হয় ইন্ডাস্ট্রি ডায়নামিকসের মাধ্যমে। রিটেইল ফার্মগুলো হলিডে শপিং সিজনে ভালো ফলন দেখে। অপরদিকে ইউএস ট্যাক্স ফার্মগুলো একটি পিক দেখতে পায় ১৫ এপ্রিলের আগের সময়টায়। এই ভ্যারিয়েবিলিটি সুযোগ এনে দেয় মাল্টিপল ইন্ডাস্ট্রির গ্রাহকদের একসাথে এনেব্যয় কমানোর।
এ ধরনের ইকোনমিজ অব স্কেলে সুযোগ রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ব্যয় কমানোয়। ফর্বস পত্রিকা মতে, যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে ক্লাউড কমপিউটিং ইকোনমিক মডেল আইটি অবকাঠামোতে ব্যাপকভাবে পরিচালনাগত ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমিয়ে আনতে পারে। একটি Booz Allen Hamilton (BAH)সমীক্ষার উপসংহার হচ্ছে, একটি ক্লাউড কমপিউটিং উদ্যোগ ১০০০ সার্ভার ডেপ্লয়মেন্টে লাইফসাইকল কস্ট ৫০-৬৭ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। এই সাশ্রয় সম্ভাবনা এমনকি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ক্লাউড কমপিউটিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে পারে কমপিউটার হার্ডওয়্যার ও পেরিফেরাল ডিভাইসের আমদানি খরচ, যার পরিমাণ এরই মধ্যে পৌঁছেছে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারে, যাতে দেখা যাচ্ছে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি-প্রবণতা ১০-১৫ শতাংশ।
দেখা গেছে, এ ধরনের ইকোনমিজ অব স্কেল, ডিমান্ড ও সাপ্লাই সাইড উভয় ক্ষেত্রে কাস্টমার ও ডিমান্ড ডাইভার্সিটির গ্রোথ বাড়ানোসহইউনিটপ্রতি খরচ কমানোর সুযোগ করে দেয় কোনো সীমা ছাড়াই। এর অর্থ, ক্লাউডভিত্তিক কমপিউটিং সার্ভিস ডেলিভারির মিনিমাম কস্ট অব প্রোডাকশন পয়েন্ট শুধু দেশে মোট চাহিদার চেয়েই বড় নয়, বরং সামগ্রিকভাবে গোটা পৃথিবীর চাহিদার চেয়েও বড়। ইন্টারন্যাশনাল কানেকটিভিটির দাম দ্রুত কমে যাওয়া- যা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে- এবং গ্লোবাল ইন্টারনেট ব্যাকবোনের চরম নিচু মাত্রার ল্যাটেন্সির কারণে, সিঙ্গল ক্লাউড প্লাটফরম হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় ধরনের সমাধান। অধিকন্তু, ডিমান্ড-সাইডের পজিটিভ নেটওয়ার্ক এক্সটার্নিলিটির প্রভাব ইউজারদের উৎসাহিত করে একই ক্লাউড প্লাটফরমের গ্রাহক হতে। যেহেতু কুলিং কস্ট মোট খরচে ২০ শতাংশ অবদান রাখে, বিশ্বের শীতলতর এলাকায় ক্লাউড ইনফ্রাস্ট্রাকচারই হবে সস্তাতর।এটি চরম মাত্রার একচেটিয়া বাজারকে অযথাযথ করে তোলে। এর ফলে গ্লোবাল ক্লাউড মার্কেটএরই মধ্যে হয়ে উঠেছে একটি ওলিগোপলি (অল্প কয়েকজন নিয়ন্ত্রিত) মার্কেট, যেখানে রয়েছে পাঁচটি প্রধান খেলোয়াড়: অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, আইবিএম, গুগল, এবং সেলসফোর্স। বৈশ্বিক পর্যায়ে ইতোমধ্যেই তুমুল আলোচনা হচ্ছিল এই বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে।
গ্রাহকভিত্তিক গ্লোবাল প্রোভাইডারের বেশিরভাগই এখন সুযোগ দিচ্ছে ইনিশিয়াল ফ্রি ক্যাপাসিটি। বাংলাদেশে দেখা গেছে, বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া ছাত্র ও পেশাজীবী ইতোমধ্যেই এসব প্রোভাইডারের প্রধানত ফ্রি গ্রাহক হয়ে গেছে (এ তথ্য সংগৃহীত হয়েছে ইনফরমেন্ট ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে)। গ্লোবাল প্লেয়ারদের এই ব্যয় সুবিধার কারণে আসলে কোনো লোকাল ক্লাউড প্রোভাইডার উঠে আসেনি।
যদিও সরকারের রয়েছে একটি ছোট্ট ডাটা সেন্টার এবং এগিয়ে চলছে অধিকতর বড় একটি ডাটা সেন্টার গড়ে তোলার কাজ, কিন্তু মনে হচ্ছে- এ ধরনের ফ্যাসিলিটি প্রথমত গড়ে তোলা হয় সরকারের জন্য ও ব্যাংকের মতো বড় বড় করপোরেশনের জন্য। স্থানীয় প্রতিযোগী প্রোভাইডারের অভাবে মূলত গ্লোবাল প্রোভাইডারেরা অাঁকড়ে ধরছে বাংলাদেশী স্বতন্ত্র ও ছোট এন্টারপ্রাইজগুলোকে, প্রধানত এদের প্রলুব্ধ করছে ফ্রি বেসিকের মাধ্যমে। অনেকপরিস্থিতিতে, এমনকি ব্যক্তিবর্গই এসব ক্লাউডভিত্তিক ফ্রি স্টোরেজে পার্সোনাল ইনফরমেশন স্টোর করছে। এ ব্যাপারে আমাদের কি উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার আছে?
দেখা গেছে, ক্লাউড ফার্মগুলোও ইন্টারকানেকটেড সার্ভিস, সফটওয়্যার ও ডিভাইসের একটি জগৎ তৈরি করে, যা সহজ, কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না আপনি তাদের বিশ্বের বাইরে যান। একটিমাত্র প্রোভাইডারে আটকে থাকায় ঝুঁকি আছে। ফ্রি অফারের মাধ্যমে কাস্টমার অাঁকড়ে রাখার পর ফার্মগুলো দাম বাড়িয়ে স্ক্রু টাইট করা শুরু করে দিতে পারে। একটি ক্লাউড প্রোভাইডার যদি কপর্দকশূন্য হয়ে পড়ে, গ্রাহকেরা তাদের ডাটা পুনরুদ্ধারে সমস্যায় পড়তে পারেন। সবচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে এ ধরনের ডাটায় প্রবেশ ও ব্যবহার চলতে পারে গ্রাহকদের ক্ষতি করে। এ ধরনের ঝুঁকি এরই মধ্যে জন্ম দিয়েছে একটি বিতর্কের- ক্লাউডের জন্য কি প্রয়োজন হবে কঠোরতর নিয়ন্ত্রণের? দ্য ইকোনমিস্ট পত্রিকার মতে, ইউরোপীয় রাজনীতিকেরা ক্লাউড প্রোভাইডারদের এমনটি বাধ্য করতে চান, ডাটা চালাচালি চলবে তাদের নিজেদের মধ্যে।
মনে হচ্ছে, দুটি প্রধান ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ আছে : ০১. স্থানীয় ক্লাউডভিত্তিক প্লাটফরম উদ্ভবের জন্য লাভজনক ব্যবসায়ের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং ০২. নাগরিক সাধারণ ও ছোট ছোট এন্টারপ্রাইজ বাংলাদেশের জুরিকডিকশনের বাইরের যেসব ফরেন প্লাটফরমে যেসব ডাটা স্টোর করে তা সংরক্ষণের জন্য সেফগার্ড সৃষ্টি করা। প্রথমটি সমাধানের জন্য প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে ফ্রি অফারের প্রভাবের ফল নির্ণয় করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে এটি যদি ভোক্তাদের জন্য উপকারী না হয়, এ ধরনের ফ্রি অফারে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। অধিকন্তু, যেহেতু বিদেশি বড় ক্লাউড অপারেটরেরা উল্লেখযোগ্যভাবে সাধারণ সুবিধা ভোগ করে, তাই কর-শুল্কের মাধ্যমে লোকাল ক্লাউডভিত্তিকসার্ভিস ডেলিভারি মার্কেটের প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা দিতে হবে। দ্বিতীয়টি মোকাবেলায় ব্যক্তিখাতের ও ছোট ছোট এন্টারপ্রাইজের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য লিগ্যাল ক্যাপাসিটি গড়ে তুলতে হবে, যাতে বিদেশি বড় বড় কোম্পানির সাথে সৃষ্ট বিরোধ আইনি ব্যবস্থায় নিষ্পত্তি করা যায়।
যেহেতু এসব গ্লোবাল প্রোভাইডারে স্থানীয় গ্রাহকদের সম্পর্কে আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো ডাটা নেই এবং এসব প্লাটফরমে স্টোর হওয়া ডাটার টাইপ সম্পর্কেও আমাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নাগরিকদের স্বার্থ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টির ওপর নজর রাখতে হবে। সেই সাথে সহায়তা দিতে হবে, যাতে স্থানীয় ক্লাউড মার্কেট সৃষ্টি হতে পারে। অন্যথায় ক্লাউড কমপিউটিংয়ের অর্থনীতির মাধ্যমে জাতি বঞ্চিত হতে পারে অথবা ক্লাউড ভয়াবহ সমস্যায় পড়তে পারে।
ফিডব্যাক : zaman.rokon.bd@gmail.com