লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
প্রকাশ কুমার দাস
মোট লেখা:৫৫
লেখা সম্পর্কিত
এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের কয়েকটি সৃজনশীল প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা
প্রকাশ কুমার দাস
বিভাগীয় প্রধান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ
মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
দ্বাদশ শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে তৃতীয় অধ্যায় : সংখ্যা পদ্ধতি ও ডিজিটাল ডিভাইস থেকে কয়েকটি অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করা হলো। এ ধরনের প্রশ্নে ২ নম্বর বরাদ্দ থাকে।
০১. পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতিতে কোনো একটি সংখ্যার মান বের করার জন্য কী কী প্রয়োজন হয়?
উত্তর : সংখ্যা পদ্ধতিতে কোনো একটি সংখ্যার মান বের করার জন্য তিনটি ডাটা দরকার হয়। যথা- ০১. সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর নিজস্ব মান। ০২. সংখ্যাটিতে ব্যবহৃত অঙ্কগুলোর অবস্থান বা স্থানীয় মান। ০৩. সংখ্যা পদ্ধতির বেজ।
০২. কমপিউটারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল সিগন্যাল উপযোগী কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কমপিউটারের সব অভ্যন্তরীণ কাজ একমাত্র বাইনারি পদ্ধতিতে সংঘটিত হয় এবং অভ্যন্তরীণ কাজের ব্যাখ্যার জন্য দরকার হয় অসংখ্য ০ এবং ১ বিটের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার বর্ণনা। ০ এবং ১ দিয়ে এ ধরনের বর্ণনা লেখা খুবই কষ্টসাধ্য, বিরক্তিকর এবং তাতে ভুলের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। সেজন্য অকটাল ও হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতি দুটিকে সাধারণত বাইনারি সংখ্যার সংক্ষিপ্ত সঙ্কেত হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
০৩. (২৫)১০ সংখ্যাকে কমপিউটার সরাসরি গ্রহণ করে না- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : (২৫)১০ সংখ্যাটি একটি দশমিক সংখ্যা। দশমিক সংখ্যা কমপিউটার সরাসরি গ্রহণ করে না। দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯। মোট ১০টি মৌলিক চিহ্ন বা অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। কমপিউটার ডিজাইনে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বাইনারি সংখ্যায় ব্যবহার হওয়া অঙ্ক ০ ও ১ সহজেই ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। বৈদ্যুতিক সিগন্যাল চালু থাকলে অন এবং বন্ধ থাকলে অফের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। বাইনারি সিস্টেমে দুটি অবস্থা থাকার কারণে ইলেকট্রনিক সার্কিট ডিজাইন করা সহজ হয়। তবে দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি রূপান্তর করে কমপিউটারে ব্যবহার করানো যায়।
০৪. ৭ + ১ = ১০ কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : এটি একটি অকটাল সংখ্যা পদ্ধতির যোগ। দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে ৭ + ১ = ৮ হয়, কিন্তু অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে যোগ করলে ১০ হয়। অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৭-এর পরবর্তী সংখ্যা ১০, যা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির সমতুল্য মান ৮।
০৫. (১৮)৮ সংখ্যাটি সঠিক নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : (১৮)৮ সংখ্যাটি সঠিক নয়। কারণ অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে অঙ্কগুলো হলো ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭। মোট ৮টি অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। অকটাল সংখ্যার বেজ ৮। অকটাল পদ্ধতিতে যেকোনো সংখ্যা লিখতে গেলে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত অঙ্ক ব্যবহার করে লিখতে হয়। কিন্তু (১৮)৮ সংখ্যাটিতে ৮ ব্যবহার করা হয়েছে।
০৬. সংখ্যা পদ্ধতিতে ৯অ কী ধরনের সংখ্যা? বর্ণনা কর।
উত্তর : ৯অ সংখ্যাটি একটি হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা। কারণ হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে অঙ্কগুলো হলো ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, A, B, C, D, E ও F। মোট ১৬টি অঙ্ক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার বেজ ১৬। হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতিতে যেকোনো সংখ্যা লিখতে গেলে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত অঙ্ক এবং অ থেকে ঋ ব্যবহার করে লিখতে হয়। এজন্য (9A)১৬ হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা।
০৭. বিট ও বাইট এক নয়- কেন?
উত্তর : বিট ও বাইট এক নয়। কারণ বাইনারি অঙ্কের সংক্ষিপ্ত রূপ হলো বিট। বিট হলো ০ ও ১।
অপরদিকে ৮টি বিট নিয়ে গঠিত অক্ষর বা শব্দ হলো বাইট। বাইট হলো A = ০১০০০০০১
০৮. (১৫)১০-এর সমকক্ষ ইঈউ কোড এবং বাইনারি সংখ্যার মধ্যে কোনোটিতে বেশি বিট লাগে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৫-এর ইঈউ কোডে ৪ + ৪ = ৮ বিট লাগবে। কারণ এতে দুটি ডিজিট রয়েছে।
আমরা জানি, ১৫-এর বাইনারি মান ১১১১, যা ৪ বিট। \ BCD কোডে বেশি বিট লাগবে।
০৯. পৃথিবীর সব ভাষাকে কোন কোডের মাধ্যমে কোডভুক্ত করা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পৃথিবীর সব ভাষাকে কমপিউটারে কোডভুক্ত করার জন্য বড় কোম্পানিগুলো একটি মান তৈরি করেছে, যাকে ইউনিকোড বলা হয়। কমপিউটারের সাহায্যে কোনো তথ্যকে লিখিত আকারে প্রকাশের জন্য ব্যবহার হওয়া বিভিন্ন অ্যানকোডিং পদ্ধতির মধ্যে ইউনিকোডকে আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউনিকোড হচ্ছে ১৬ বিট কোড। বিভিন্ন ধরনের ক্যারেক্টার ও টেক্সটকে প্রকাশ করার জন্য ইউনিকোড ব্যবহার হয়। এ কোডের মাধ্যমে ২১৬ = ৬৫৫৩৬টি অদ্বিতীয় চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায়।
১০. ‘বিয়োগের কাজ যোগের মাধ্যমে করা সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ২-এর পরিপূরক গঠনে বিয়োগের কাজ যোগের মাধ্যমে করা হয়। ২-এর পরিপূরক গঠনে যোগ ও বিয়োগের জন্য একই বর্তনি ব্যবহার করা যায়। তাই আধুনিক কমপিউটারে ২-এর পরিপূরক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
১১. ‘বাইনারি যোগ ও বুলিয়ান যোগ এক নয়’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাইনারি যোগের নিয়ম :
০ + ০ = ০ ০ + ০ = ০
০ + ১ = ১ ০ + ১ = ১
১ + ০ = ১ ১ + ০ = ১
১ + ১ = ১০ ১ + ১ = ১
অর্থাৎ বাইনারি যোগে ১ + ১ = ১০ কিন্তু বুলিয়ান যোগে ১ + ১ = ১ হয়। এজন্যই বলা হয় বাইনারি যোগ ও বুলিয়ান যোগ এক নয়।
১২. ১ + ১ = ১ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১ + ১ = ১ এটি একটি লজিক্যাল বা যৌক্তিক যোগ, যা OR (+) গেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়। OR (+) গেট ইনপুটগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি ইনপুটের মান ১ হলেই আউটপুট ১ হয়।
১৩. AND গেটে যেকোনো একটি ইনপুট মিথ্যা হলে আউটপুট মিথ্যা হয়- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : AND গেটে যেকোনো একটি ইনপুট মিথ্যা (০) হলে আউটপুট মিথ্যা (০) হয়।
অঘউ গেটের সত্যক সারণি নিমণরূপ :
A B Y = AB
০ ০ ০
০ ১ ০
১ ০ ০
১ ১ ১
এখানে ইনপুট
A = 0, B = 0 হলে আউটপুট ০ হবে।
A = 0, B = 1 হলে আউটপুট ০ হবে।
A = 1, B = 0 হলে আউটপুট ০ হবে।
A = 1, B = 1 হলে আউটপুট ১ হবে।
১৪. NAND গেট কীভাবে OR গেটের মতো কাজ করে দেখাও।
উত্তর : চিত্রে NAND গেট দিয়ে OR গেটের বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বামের ঘঅঘউ গেট দুটি NOT গেট হিসেবে কাজ করে।
এখানে,
সুতরাং চিত্রের সার্কিটটি একটি OR গেট হিসেবে কাজ করে।
১৫. XOR গেটটি কেন একটি সমন্বিত বর্তনী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : XOR গেট একটি সমন্বিত বর্তনী। এই গেটে ইনপুট X ও Y হলে যার সমীকরণ । এটি একাধিক গেটের সংযোগে তৈরি। এজন্য XOR গেট একটি সমন্বিত বর্তনী
ফিডব্যাক : prokashkumar08@yahoo.com