• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > বিল গেটস জানালেন: আমরা তিনটি বিস্ময়কর প্রাযুক্তিক অগ্রগতির কিনারায় দাঁড়িয়ে
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: সাজাদ রহমান
মোট লেখা:১
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১৬ - সেপ্টেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইসিটি
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
বিল গেটস জানালেন: আমরা তিনটি বিস্ময়কর প্রাযুক্তিক অগ্রগতির কিনারায় দাঁড়িয়ে
আসলে বিল গেটস রবার্ট গর্ডনের সাম্প্রতিক বই ‘দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অব অ্যামেরিকান গ্রোথ’-এর আলোচনা করতে গিয়ে শিরোনামে উল্লিখিত এই সম্ভাবনার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, এই সময়ে আমরা তিনটি বিস্ময়কর প্রাযুক্তিক অগ্রগতির কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছি।
মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস গত ২৬ জুলাই ২০১৬ রবার্ট গর্ডনের নতুন বই ‘দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অব অ্যামেরিকান গ্রোথ’-এর ওপর একটি পর্যালোচনা প্রকাশ করেন। এই বছরের প্রথম দিকে ‘ফরচুন’ সাময়িকী একটি লেখার মাধ্যমে বইটির বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছিল। এই পর্যালোচনা প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে বিল গেটস সম্ভবত নিজেই একটি বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়লেন।
আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য, গর্ডন লিখেছেন- আমরা প্রবেশ করছি ধীরপ্রবৃদ্ধির একটি সম্প্রসারিত কালে। কারণ, অবিশ্বাস্যভাবে প্রাযুক্তিক অগ্রগতিগুলো গত দেড়শ’ বছর যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এনে দিয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
যদিও বিল গেটস বইটিকে ‘এনগেইজিং’ অভিহিত করে প্রশংসা করেন এবং বলেন, ‘১৮৭০ সালের জীবন থেকে ১৯৭০ সালের জীবন কতটুকু আলাদা ছিল, তার ব্যাখ্যা তুলে ধরে গর্ডন একটি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন।’ বিল গেটস অবশেষে ও প্রবলভাবে ভিন্নমত প্রকাশ করেন গর্ডনের বইটির কেন্দ্রীয় উপসংহার সম্পর্কে। এতে গর্ডনের অভিমত হচ্ছে, ১৯৯০-এর দশকে যে ডিজিটাল বিপ্লব শুরু হয়েছিল, তা ব্যাপকভাবে ১৯৯০-এর দশকে অঙ্গীভূত করা হয় আমেরিকান অর্থনীতির একটি ছোট্ট অংশে, যার নাম বিনোদন ও যোগাযোগ খাত। বিল গেটস এর সাথে ভিন্নমত পোষণ করে লেখেন- ‘ডিজিটাল বিপ্লব প্রভাবিত করেছে মার্কেটপ্লেসের প্রতিটি মেকানিজমে। কীভাবে ক্রেতা-বিক্রেতা পরস্পরকে খুঁজে পায়, কী করে আমরা তথ্য জমা করি, কোনো কিছু গড়ে তোলার আগে তাকে উজ্জীবিত করার জন্য আমরা কী করে মডেল তৈরি করি, কী করে মহাদেশ থেকে মহাদেশে বিজ্ঞানীরা সহযোগিতা গড়ে তোলেন, কী করে আমরা নতুন কিছু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করি- এসব কিছুতেই নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে ডিজিটাল উদ্ভাবনের সুবাধে।’
গেটস বিশ্বাস করেন, এসব পরিবর্তন সহায়তা করবে কিছু বিস্ময়কর প্রাযুক্তিক অগ্রগতিতে। আর এসব প্রাযুক্তিক অগ্রগতি আগামী বছরগুলোতে সহায়তা করবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও মানবজাতির উন্নয়নে।
বিল গেটস গর্ডনের বই নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে যে তিনটি বিস্ময়কর প্রাযুক্তিক উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেছেন, তা এখানে উপস্থাপিত হলো।
অগ্রসর রোবটিকস
হোন্ডা মোটরস ২০১৪ সালের ‘নিউইয়র্ক ইন্টারন্যাশনাল অটো শো’-তে এর ‘অ্যাসিমো রোবট’ গণমাধ্যমে প্রদর্শন করে। গর্ডনের একটি কেন্দ্রীয় অভিমত হচ্ছে- গুরুত্বপূর্ণ প্রাযুক্তিক অগ্রগতি ঘটতে পারে শুধু একটি বারের জন্য। অতএব কারণে আমরা এমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা করতে পারি না, যা টেকনোলজি ধরে রাখতে পারে চিরদিনের জন্য। বিল গেটস লেখেন- ‘এটি সত্য, কিন্তু এটি সত্য ভবিষ্যতের বিষয়ের জন্যও। গর্ডনের সংজ্ঞামতে, দেখতে সুন্দর ও মানুষের চেয়ে ভালোভাবে কাজ করতে সক্ষম একটি রোবট হতে পারে শুধু একটিবারের জন্য।’
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৩ থকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়ে তৈরি রোবটের ব্যবহার সম্পর্কিত এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রোবটের ব্যবহার এই সময় পরিধিতে মোট প্রবৃদ্ধিতে ১০ শতাংশ অবদান রেখেছে। এর চেয়ে অধিক উন্নত রোবট প্রবৃদ্ধিতে আরও গতি আনতে পারত। যদিও এ নিয়ে উদ্বেগ ছিল, এই অর্জন কী করে শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করা যায়।
সুপার সিমেন্ট
বিল গেটস চলতি বছরের প্রথম দিকে গর্ডনের বই নিয়ে আলোচনা করেছিলেন Vox.com-এর এজরা ক্লিনকে একটি সাক্ষাৎকার দেয়ার সময়। সেখানে বিল গেটসের অভিমত ছিল- গর্ডনের বই এক নির্মম পরিস্থিতির জন্ম দেবে। কারণ, তার বিশ্বাস আমরা বাস্তবে বস্ত্তবিজ্ঞানের তথা ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির কাছাকাছি এসে পৌঁছেছি। হতে পারে, এই একটি ক্ষেত্র বিশ্ব অর্থনীতিতে সবচেয়ে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
গেটস বলেন- ‘বিগত ২০ বছরে বৈজ্ঞানিক বোঝাপড়ার সবচেয়ে বড় উপকারিতাটুকু পাওয়া গেছে জিন এডিটিং, জীববিজ্ঞান, মেশিন লার্নিং, অ্যান্টিবডি ডিজাইন ও বস্ত্তগত বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে। আগামী ২০ বছরে এসব ক্ষেত্রে নাটকীয় প্রভাব-পরিবর্তন দেখতে পাব। আমি এ কথা বলছি অবিশ্বাস্য ধরনের আস্থার সাথে।’
বস্ত্তগত বিজ্ঞানের অর্থ হচ্ছে, আপনি কীভাবে নতুন বস্ত্ত গড়বেন, এটি টিকে থাকবে কত সময়। সবাই এখন কথা বলছেন রি-মেইনটেনিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিয়ে। আপনি জানেন, আমরা এখন এমন অবকাঠামো নির্মাণে সক্ষম, যা সিমেন্ট রিবার দিয়ে এ পর্যন্ত আমাদের তৈরি অবকাঠামোর তুলনায় ১০ গুণ বেশি সময় টিকে থাকবে।
সব অর্থনৈতিক আশাবাদ নিয়ে আমরা সবশেষে শুনছি, বিল গেটসের মতো প্রাযুক্তিক কুলীন লোক তথা টেকনোলজিক্যাল প্রেডিগ্রি অভিমত দিচ্ছেন, ‘সর্বোত্তমটি এখনও আসার বাকি’

আলঝেইমারস রোগ নিরাময়ে
বিল গেটস লিখেছেন- ‘আলঝেইমারস রোগের কথা ভাবুন। এ রোগের পেছনে আমেরিকার বছরে খরচ হয় ২৩,৬০০ কোটি ডলার। এর বেশিরভাগই খরচ হয় মেডিকেয়ার ও মেডিকেইডের পেছনে। এ রোগের অবসান ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে তা আমেরিকার প্রতিটি স্টেটের বাজেটের চিত্রটা ব্যাপক পাল্টে দেবে, লাখ লাখ মানুষের প্রাণরক্ষার কথাটা না হয় বাদই দিলাম।’
যদিও মনে হয় বিজ্ঞানীরা এই রোগ দমনের ব্যাপারে এখনও সাফল্যের কাছাকাছি যেতে পারেননি, তবুও বিল গেটস ঠিকই বলেছেন, এ ধরনের রোগের চিকিৎসার বেলায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটার বিষয়টি এখন দোরগোড়ায়। বস্নুমবার্গ সম্প্রতি এই রোগটিকে অভিহিত করেছেন ‘one of the [Big Pharma’s] last big untapped markets’ হিসেবে, যা আহরণ করতে পারে ব্যাপক রাজস্ব। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন এই রোগ সম্পর্কিত গবেষণার পেছনে অর্থ বিনিয়োগে।


পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০১৬ - সেপ্টেম্বর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস