• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > তথ্যবৈষম্য এবং সিইসি
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মানিক মাহমুদ
মোট লেখা:২৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - জুলাই
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
আইটি
তথ্যসূত্র:
উদ্যোগ
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
তথ্যবৈষম্য এবং সিইসি

ইউএনডিপি-বাংলাদেশ কমিউনিটিভিত্তিক ই-সেন্টার তথা সিইসি নামে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেয় ২০০৭-এ৷ এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় তথ্য পৌঁছাবার একটি পথ খুঁজে বের করা, যা হবে টেকসই ও স্থানীয় নেতৃত্বে৷ শুরুতেই মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দেয়ার জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করছে অর্থাৎ টেলিসেন্টারের ওপর একটি হরাইজন স্ক্যানিং পরিচালনা করছে৷ এটা করা হয় ২০০৭-এর মাঝামাঝি সময়ে৷ এর লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশে টেলিসেন্টারের অবস্থা পর্যালোচনা করা, খুঁজে দেখা, এরা কোন প্রক্রিয়ায় মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে এবং তা কতখানি কার্যকর৷ হরাইজন স্ক্যানিং রিপোর্ট থেকে তিনটি তাত্পর্যপূর্ণ বিষয় বেরিয়ে আসে৷ এগুলো হলো- এক. বিদ্যমান টেলিসেন্টারগুলোতে সচেতনতা সৃষ্টির প্রক্রিয়া নেই বললেই চলে৷ অথচ, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছে তথ্য সহজলভ্য করে তুলতে হলে তথ্যসচেতনতা এবং টেলিসেন্টারগুলোর ওপর তাদের এক ধরনের মালিকানাবোধ জরুরি৷ তথ্যসচেতনতা ও মালিকানাবোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মবিলাইজেশনই হলো সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার৷ দুই. টেলিসেন্টারে যে তথ্যভাণ্ডার রয়েছে, তাকে আরো কমিউনিকেটিভ করে তোলা জরুরি৷ অন্যথায় তথ্যভাণ্ডার অর্থহীন হয়ে পড়বে৷ তিন. টেলিসেন্টারগুলোর অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এখনো বহুদূর৷ টেলিসেন্টারগুলো এ জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ এ এক বিরাট চ্যালেঞ্জ৷



ইউএনডিপি বাংলাদেশের মাত্র দুটি ইউনিয়নে সিইসি পাইলট প্রকল্প শুরু করে৷ ইউনিয়ন দুটির একটি দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ উপজেলার মুশিদহাট ইউনিয়ন এবং অন্যটি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়ন৷ প্রথম থেকেই এ ধারণা স্পষ্ট করা হয়, সিইসি পরিচালিত হবে ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্বে এবং এটি হয়ে উঠবে কমিউনিটির একটি জ্ঞানভাণ্ডার৷ সিইসিসংশ্লিষ্ট সবাইকে সেভাবেই তৈরি করার কাজ শুরু হয়৷ জুন ২০০৭-এ দুই সিইসিতে তথ্যভাণ্ডার তৈরির জন্য ভিত্তিমূলে জরিপ এবং এর পরপরেই সেখানে চাহিদা নিরূপণ করা হয়৷ এই চাহিদা নির্ধারণ করার সময়ই উপরে বর্ণিত হরাইজন স্ক্যানিংয়ের দুই নম্বর বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়৷ চাহিদা নিরূপণের ভিত্তিতে সব কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু তৈরি করা হয় সেগুলো হলো- এনিমেশন, ভিডিও, অডিও ও টেক্সট৷ এর বাইরে আরো কনটেন্ট আছে যেগুলো অতিরিক্ত আরো প্রয়োজনের ভিত্তিতে সংগ্রহ করা হয়, এখনো সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ এসবের মধ্যে একটি বড় অংশ ছাপা লেখা বা প্রিন্টিং মেটেরিয়াল৷ কয়েক মাস এই তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের পর এখন আমরা দেখার চেষ্টা করছি, মানুষ তার চাহিদা মতো তথ্য পেয়েছে কি-না, কিংবা তা যাচাই করতে৷ আমরা আরো খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, বিদ্যমান তথ্যভাণ্ডার স্থানীয় মানুষের কাছে প্রাসঙ্গিক কি-না, সহজবোধ্য কি-না, যথাযথ হয়েছে কি-না?

তথ্য মূলত সিইসির শুরুর সময়ে স্থানীয় মানুষের তথ্যচাহিদা জানতে গেলে এরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এবং তার মধ্য দিয়ে যে চিত্র উঠে আসে, তা খুবই তাত্পর্যপূর্ণ মনে হয়েছে৷

তথ্য ব্যবধানের বিভিন্ন চিত্রটা পাওয়া যায় স্থানীয় মানুষের সাথে সংলাপের মাধ্যমে৷ এর কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে৷ আমাদের সংলাপে অংশ নেয় স্থানীয় কৃষক ও বিভিন্ন পেশাজীবী৷ এটি পরিচালিত হয় পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন, রিসার্চের পদ্ধতিতে৷ সংলাপে অংশ নেয়া সবাই প্রশ্ন করে আবার সবাই উত্তরও খুঁজে বের করে৷ সেখানে একজন সহায়তাকারী থাকেন, যার কাজ প্রশ্ন আর উত্তরের মাঝে সমন্বয় ঘটানো৷ কখনো কখনো সহায়তাকারীও প্রশ্ন করেন৷

মুশিদহাটের একটি সংলাপের বিষয় ছিল- ধানের ফলন আরো বাড়ানো যায় কিভাবে? শুরুইে একজন প্রবীণ কৃষক বললেন, ফলন আর বাড়বে না৷ সহায়তাকারীর প্রশ্ন ছিল- কেনো আর বাড়বে না? জনৈক আব্দুল মতিন বললেন, বেশি সার পাওয়া যায় না, পোকা লাগলে কীটনাশক পাওয়া যায় না, ফলন বাড়বে কিভাবে৷ আবানো প্রশ্ন- এক বিঘা জমিতে কত সার, কত কীটনাশক লাগে? আব্দুল মতিনের জবাব, পরিমাণ জানি না৷ যে কয় কেজি সার পাই, ততটুকুই দেই৷ আবার প্রশ্ন করা হয়, নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ নেই? জনৈক হালিম বললেন, যত সার দেবেন তত ভালো৷ সুধীর চন্দ্র রায় বলনে, একবিঘায়ঠিক কী পরিমাণ সার দিতে হয়, আমরা আসলে সঠিক তথ্য জানি না৷ তাই অনুমান করেই আমরা জমিতে সার, কীটনাশক দিই৷ সুধীর বলনে, সার বেশি দিলে তো বেশি ধান হবেই৷ তবে আমরা পরীক্ষা করে দেখিনি৷ ধানে পোকা লাগলে কী করেন? সুধির চন্দ্র রায় বলেন, কোনবিষে অর্থাৎ কোন কীটনাশকে যে কোন পোকা মরে তা আমরা সঠিক জানি না৷ আমরা দোকানদারকে গিয়ে বলি, ভাই এক নম্বর বিষ দেন, যাতে একবারে সব পোকা মরে যায়৷ দোকানদার যেটা ভালো মনে করে দেন, যতটুকু দেন, সেটাই ধানে দিই৷ আব্দুল মতিন বলনে, দোকানদার অনেক সময় আমাদের বিষ দিয়ে বলেন, এটা দুইবার দিতে হবে, এটা বেশি করে দিতে হবে, আমরা তাই করি৷

কী ভয়ানক তথ্য! দিনাজপুরে কৃষক জানেন না কতখানি জামিতে কতটুকু সার, কীটনাশক দিতে হয়? তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির এ যুগেও দিনাজপুরের এই কৃষকরা ফলন বাড়াবার চেষ্টা করছেন অনুমাননির্ভর হবে। দিনাজপুর হলো কৃষিতে অগ্রসর একটি এলাকা, সে এলাকারই চিত্র যদি হয় এমন, তবে যেখানে মানুষ আরো বেশি অসচেতন, আরো বেশি অনগ্রসর- সেখানে কী ঘটে?

কৃষক আব্দুল মতিন আবার বলা শুরু করলেন, ধানের ভালো ফলনের জন্য দরকার ভালো বীজ৷ আমরা ভালো বীজ পাই না৷ আপনারা কী বীজ পান, কোথায় পান, কিভাবে পান? আব্দুল মতিন বললেন, আমরানিজেরাযে বীজ রাখি সেটাই৷ কিভাবে বীজ রাখেন? উত্তরে আব্দুল মতিন বলেন, আমরা বীজ তৈরি করি চটের বস্তায় রেখে৷ আর কোনো নিয়ম জানি না৷ যে জমিতে ভালো ফলন হয়, সেই জমির বীজ দিয়েই বীজ তৈরি করি- সবাই তার কথায় সায় দেন৷ অর্থাৎ বীজ কিভাবে সংরক্ষণ করা যায়, তার কোনো উন্নত পদ্ধতি তাদের জানা নেই৷ এ ধারণাও নেই যে কোথায় সহজে ও কম দামে উন্নত বীজ পাওয়া যায়৷ একজন বলে ওঠেন, বাপ-দাদারা যেভাবে করে গেছেন, আমরাও তাই করছি৷

কৃষ্ণপুরের এই সংলাপেই স্বাস্থ্য বিষয়ে হতাশ হবার মতো আর একটি খবর পাই৷ সার, কীটনাশক, বীজ এসব নিয়ে আলোচনা যখন তুঙ্গে তখন কৃষক শহীদুল ইসলাম প্রশ্ন করেন- সিইসিতেকি জনসংখ্যা কমানো নিয়ে কোন তথ্য থাকবে? প্রশ্নটি সরল, কিন্তু থমবে যাবার মতো৷ জনসংখ্যা কমানো নিয়ে দেশব্যাপী এতো প্রচার- সেখানে শহীদুলের এই প্রশ্ন-এর মানে কী? জানতে চাই, জনসংখ্যা কমানো বিষয়ে তথ্য থাকা কি খুব দরকার? শহীদুল ইসলাম বললেন, হ্যাঁ, দরকার৷ কেন? শহীদুল বনে, ভাই, আমি আর বাচ্চা নিতে চাই না, কিন্তু আটকে যায়, আমি এখন কি করি!

শহীদুরে প্রশ্নে হাসাহাসি শুরু হলো৷ আমি সত্যিই থমকে যাই- খুঁজতে শুরু করি এর পেছনের কারণ কী? ফ্যামিলি প্লানিং কর্মীদের কাছেও শহীদুলের প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি- তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন- এমন কথা বলেছে না-কি! তাহলে জানে কে? আসলে গ্যাপটা কোথায়? এতো প্রচারের পরেও কৃষক শহীদুল ইসলাম তথ্য বুঝতে পারেননি, না-কি তথ্য বোধগম্য ছিলো না, না-কি তথ্য আদৌ তার কাছে পৌঁছায়ইনি? এ প্রশ্ন সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সুধীর চন্দ্র রায় মন্তব্য করেন- স্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রামে আসে, প্রচার করে, মহিলাদের বুঝায়- কিন্তু লোকে বুঝলো কি বুঝলো না- তা আর যাচাই করে না৷ সে তাগিদ আমরা কখনো তাদের মধ্যে দেখিনি৷

জালগার একদল নারী যারা কৃষক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন- আমরা হাসপাতালে ওষুধ চাইলে ডাক্তার আমাদের ধমক দিয়ে বলে ওষুধ নাই, আমাদের কী অসুবিধা তা ভালো করে শোনেও না৷ কিন্তু ওষুধ পাওয়া তো আপনারে অধিকার? এক মহিলা বলেন, সেজন্যেসিইসি হলে, সেখান থেকে খোঁজ নিয়ে যাবো, কী কী ওষুধ আমাদের জন্য বরাদ্দ আছে৷ আমরা দলবেঁধে যাবো, গিয়ে বলবো - আমাদের ওষুধ দেন৷ যদি বলে ওষুধ নাই, তবে জানতে চাইবো কোথায় গেল আমাদের জন্য বরাদ্দ করা ওষুধ? ... এ ওষুধ পাওয়া আমাদের অধিকার৷

মুশিদহাট ইউনিয়বে ২০টি পাল পরিবার বাস করে৷ তথ্য ব্যবধানের কারণে তাদের বংশানুক্রমিক পাল পেশা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে৷ তাদের প্রধান আয়ের উত্স মাটির পণ্য তৈরি করে হাটে বিক্রি করা৷ মাটি দিয়ে তারা ব্যাংক, ধূপদানি, কলকি, কলস, দইপাত্র, বৈয়াম, বদনা, তেলের পাত্র প্রভৃতি তৈরি করে৷ এসব পণ্য এরা সেতাবগঞ্জে হাটবার সোমবারে বিক্রি করে৷ কুমার সুশান চন্দ্র পাল বলেন, হাটে চাহিদা আছে৷ যা বানাই সব বিক্রি হয়, আরো বানালে আরো বিক্রি হবে৷ এক হাটে ১,০০০-১,২০০ টাকার পণ্য বিক্রি করি, এতে লাভ হয় ৩০০-৪০০ টাকা৷ তারে পণ্য বানাবার মূল হাতিয়ার হলো কাঠের চাকা- যা খুবই সনাতনী - পরিশ্রমসাধ্য ও সময়ক্ষেপণকারী একটি হাতিয়ার৷ পালদের নিয়ে এক সংলাপে জানতে চাই, চাকায় তো অনেক সময় ব্যয় হয়, অন্য কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করেন না কেনো? তিনি জবাব দেন, জানি না তো৷ পরিবারে সবাই এ কাজ করেন? সবাই বললো, নারীরা কাজ করে, সব পুরুষ নয়৷ তবে এ পেশায় আমাদের চলবে না৷ অথচ, এই কারে চাকার পরিবর্তে যদি এরা স্টিলের হুইল ব্যবহার করার সুযোগ পায়, তবে তাদের উত্পাদন ক্ষমতা কমপক্ষে পাঁচ গুণ বাড়ানো সম্ভব৷ একই সাথে এরা যদি ডাইস প্রযুক্তি ব্যবহার করতেই পারেন এবং তাদের মধ্যে যদি সামান্য আধুনিক শিল্পজ্ঞান দেয়া যায়, তাহলে অনায়াসে পণ্যের দাম বাড়ানো সম্ভব হবে৷ অন্যথায় এই পাল পরিবার খুব শিগগিরই হারিয়ে যাবে৷

ধরুন, উল্লি¬খিত সব তথ্য সিইসি থেকে পাল পরিবার পেল, তাতে কি তাদের সমস্যার সমাধান হবে? না, খুব একটা পরিবর্তন এতে আসবে না সেখানে৷ কারণ একটি স্টিলের হুইল বানাতে ব্যয় পড়বে কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা৷ এই ব্যয় বহনের সামর্থ্য তাদের আপাতত নেই বলে তারা মনে করেন৷ কিন্তু সবাই এই প্রযুক্তি চায়৷ যদিও তা কিভাবে অর্জন করা সম্ভব, সে সম্পর্কে তাদের স্পষ্ট ধারণা নেই৷ কী করে নতুন প্রযুক্তি আনা যায়-সবাই মিলে ‍আলোচনার এ বিষয়ে উত্তর খোঁজা শুরু করলে সহজে উত্তর বেরিয়ে আসে, এককভাবে না করে আমরা সবাই মিলে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিলে এর সমাধান কঠিন নয়৷ এ সিদ্ধান্তেও এরা উপনীত হন, এটাই সবচেয়ে সম্মানজনক সমাধান৷ এ অভিজ্ঞতা থেকে বুঝা যায় মানুষের মধ্যে যৌথচিন্তার সহায়ক পরিবেশ নতুন শক্তি ও সম্ভাবনা তৈরি করে এবং তা খুবই জরুরি৷ অর্থাৎ কমিউনিটিভিশন অনিবার্য- যা তারে মধ্যে কদিন আওে এখনকার মতো প্রবল ছিল না৷ অথচ দেখা যাচ্ছে যৌথচিন্তার ধারাবাহিক অনুশীলন ঘটিয়ে এই ভিশন নির্মাণ সম্ভব৷ সিইসির তথ্যচাহিদা জানতে গিয়ে এই শিক্ষাই হলো, সিইসিতে কেবল জীবিকাভিত্তিক তথ্য রাখাই যথেষ্ট নয়৷ সেখানে মানুষ যাতে করে চিন্তা করতে পারে এবং প্রাথমিক চিন্তার পর যাতে করে অন্য ধাপে যাবার জন্য আরো অগ্রসর চিন্তা করতে পারে, তার রসদ থাকাও জরুরি৷ তা না হলে তথ্য মানুষের জীবনে কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারবে না৷

তথ্যঘাটতির কারণে আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সমাজের এ বৈষম্য বুঝতেই পারে না৷ অথচ তাদের উদ্বুদ্ধ ও সংগঠিত করে এসব দূরত্ব কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগানো সম্ভব৷ বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে সেতাবগঞ্জ পাইলট হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম- তোমরা কী করতে পারো এক্ষেত্রে? আমার প্রশ্ন শেষ না হতেই এরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলতে শুরু করে- আমরাও গ্রামে যাবো ... গ্রামে যাবো সবাই মিলে ... গিয়ে খুঁজে বের করবো- গ্রামের মানুষের কী সমস্যা, তাদের আসলে কী তথ্য দরকার৷ ... তাছাড়া আমরা নিজেরাও তো তথ্যবৈষম্যের শিকার৷ ছাত্রছাত্রীরে মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতাবোধের এই তাগিদ তৈরি হয়- যখন তাদের সাথে এই আলোচনা হয়, প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার ব্যয় বহনের পেছনে দেশের সব মানুষের, এমনকি সবচেয়ে হতদরিদ্র মানুষটিরও করের অর্থ যুক্ত আছে৷ এ তথ্য তাদের মনে, এমন এক যন্ত্রণা সৃষ্টি করে, যার ফলে এরা সিদ্ধান্ত নেয়- এই সামাজিক ঋণ শোধ করতেই হবে৷

কজ ওয়েব


ফিডব্যাক : manikswapna@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - জুলাই সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস