লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির জন্য চাই সুষ্ঠু নজরদারি
সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির জন্য চাই সুষ্ঠু নজরদারি
২০০৬ সালের মে মাসে বাংলাদেশ ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সাথে যুক্ত হয়। এ ফাইবার অপটিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা হয় অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে। ’৯৫-৯৬ সালে প্রায় বিনা পয়সায় ফাইবার অপটিক সংযোগের সুযোগ আমরা হাতছাড়া করি নিজেদের অদূরদর্শিতা, মূর্খতা কিংবা কমিশনভোগীদের স্বার্থের কারণে। তবে যাই হোক, এ কথা নির্দিবধায় বলা যায়, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড তথা বিএসসিসিএল এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত ঝামেলামুক্ত ও নিরবচ্ছিন্ন ছিল না কখনও।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড তথা বিএসসিসিএল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। এ কোম্পানির সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো দুর্নীতি, অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা- যা এ সংশিস্নষ্ট সব সমস্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে চলা দুর্নীতি, অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা পিছুই ছাড়ছে না বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের তথা বিএসসিসিএলের। এ ক্ষেত্রের দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা এমন চরম পর্যায়ে চলছে, যা দেশের যেকোনো নাগরিককে উদ্বিগ্ন করার মতো।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক ‘গভীর জলের দুর্নীতি ঠেকানো যাচ্ছে না’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে- কোনো কিছুই নিয়মের মধ্যে হচ্ছে না বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পনি লিমিটেডের। এমডি নিয়োগ, কর্মকর্তা নিয়োগ, ব্যান্ডউইডথ বিতরণ, নির্মাণ কাজের বিল পরিশোধ, বিদেশ ভ্রমণ- সব কিছুতেই অনিয়ম হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। এসব অনুসন্ধানে একাধিক তদন্ত কমিশনও হয়েছে। তদন্ত কমিশনগুলোর অগ্রগতি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে, কার্যত সেসব তদন্ত কমিশন অসফল হয়েছে। একটি তদন্ত কমিশনের সুপারিশ গত ১০ মাসেও বাসত্মবায়ন করা হয়নি। বরং সুপারিশ অগ্রাহ্য করে আবারও অনিয়ম করে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। অন্য একটি তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ শুরু করেনি। আইন অনুযায়ী পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনো কাজ সম্পাদনের বিধান না থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনিয়মের মাধ্যমে কাজ সম্পাদনের পর পরিচালনা পরিষদের অনুমোদন নেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ বিদেশ ভ্রমণে জিও জালিয়াতির আলোচিত ঘটনায় প্রায় দেড় মাস আগে তুলে নেয়া বিল গত ৭ জানুয়ারির বোর্ডসভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সরকারের একটি বিধিবদ্ধ কোম্পানিতে এ ধরনের অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলার খবর দেখে আমরা বিস্মিত। কেননা, কোম্পানিতে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কখনই জবাবদিহিতার আওতার বাইরে নন। অথচ এ ধরনের খোলাখুলি অনিয়ম করে বছরের পর বছর ধরে বহাল তবিয়তে থেকে চাকরি করে যাচ্ছে এবং শীর্ষ এক কর্মকর্তা নির্লজ্জের মতো দাবি করে জানায়- ‘কোনো কিছুই নিয়মের বাইরে করা হয়নি। সবকিছুই বিধি ও নিয়ম মেনেই করা হয়েছে।’ বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দাবি, ‘বোর্ডের সিদ্ধান্ত ও অনুমতি অনুযায়ীই কোম্পানির সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’
আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেডের অনিয়মের বিরুদ্ধে ঝুলে থাকা তদন্ত কমিটির বিভিন্ন সুপারিশ গ্রহণ করা হোক। কোম্পানির বিভিন্ন নিয়োগে যে অনিয়মগুলো আছে সেগুলো দূর করা হোক। এ ছাড়া অন্য যেসব অভিযোগ আছে, সেগুলো দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়। কারণ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় এ কোম্পানির রয়েছে বড় ধরনের ভূমিকা। সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে সমধিক সচেতন হতে হবে বৈ কি।
মেজবাহ উদ্দিন
জিন্দাবাজার, সিলেট
জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা
বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তি যুগ। আর তাই বলা হয়- তথ্যপ্রযুক্তিতে যে দেশ যত উন্নত, সে দেশ তত সভ্য ও উন্নত। তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চাইলে দরকার প্রচুর পরিমাণে কমপিউটার কোডিংয়ে দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরি করা। কমপিউটার কোডিং হলো সারা বিশ্বে এক সার্বজনীন ল্যাঙ্গুয়েজ। যারা কোড করতে জানেন, তারা সবাই সারা বিশ্বের দেশ ও কৃষ্টির সাথে কমিউনিকেট করতে পারবেন, হতে পারবেন উদ্ভাবক, কমপিউটিং সংশিস্নষ্ট সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারবেন অধিকতর দক্ষতার সাথে। কমপিউটিং বিশ্বে কোনো বাধাই তাদের সফলতাকে ব্যাহত করতে পারবে না। এ বিষয়টি যথার্থ উপলব্ধি করে যেসব দেশ প্রোগ্রামার তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে, সেসব দেশ আজ তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
লক্ষণীয়, কমপিউটার প্রোগ্রামার তৈরি করার কথা বলা যত সহজ, কার্যত তত সহজ নয়। কেননা কমপিউটার প্রোগ্রামার হতে হলে চাই মেধা-মননশীলতা, প্রচ- ধৈর্য ও কঠিন অধ্যবসার সাথে সাথে চাই সুদীর্ঘ নিয়মিত চর্চা। সুতরাং, প্রোগ্রামার তৈরির কার্যক্রমটি শুরু করা উচিত স্কুল বয়স থেকেই।
অল্প বয়সে অর্থাৎ স্কুল বয়স থেকে কমপিউটার প্রোগ্রামিং শেখানো হলে শিশুরা তাদের প্রতিদিনের সমস্যাগুলোর যেমন সমাধান করতে পারবে, তেমনিই নিজেদেরকে সেটআপ করতে পারবে লাইফটাইম সুযোগ-সুবিধার জন্য।
গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে পর্যাপ্তসংখ্যক প্রোগ্রামার তৈরি করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। লক্ষণীয়, আমি কমপিউটার জগৎ-এর অনেক পুরনো পাঠক। তাই আমার মনে আছে, বাংলাদেশের প্রথম কমপিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিলেন কমপিউটার জগৎ-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মরহুম আবদুল কাদের। এবারের আয়োজনে যুক্ত হয়েছে শিশুদের জন্য প্রোগ্রামিং উৎসব এবং ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের এই আয়োজন বাসত্মবায়নে সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক। আইসিটি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজন ছাড়াও ৩টি উপজেলায় এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া এবারই প্রথম জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ীরা বাংলাদেশ ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে সরাসরি অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে।
আমরা আশা করব, আগামীতেও জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা দেশের প্রতিটি বিভাগ ও জেলা শহরে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ প্রোগ্রামার তৈরির লক্ষে্য কাজ করবে।
আবদুস সাত্তার
লালবাগ, ঢাকা