• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > কোভিড-১৯ পাল্টে দিয়েছে দেশের সরবরাহ ব্যবস্থা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: নিজস্ব প্রতিবেদক
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০২১ - মে
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
টেকনোলজি প্রতিষ্ঠান
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি পণ্য
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
কোভিড-১৯ পাল্টে দিয়েছে দেশের সরবরাহ ব্যবস্থা
কোভিড-১৯ পাল্টে দিয়েছে দেশের সরবরাহ ব্যবস্থা

এম. তৌসিফ

কোভিড-১৯। এক অভ‚তপূর্ব ও 
ভয়াবহ মহামারীর নাম, আতঙ্কের 
নাম। এর দাপুটে তাÐবের কাছে গোটা 
মানবসমাজ যেন আজ অসহায়। ২০১৯ 
সালের নভেম্বরে এর সূচনা হলেও এখনো এই 
মহামারী বিশ্বজুড়ে এর সদর্প প্রভাব বিস্তার 
করে চলেছে; বরং সময়ের সাথে অধিকতর 
তেজোদ্দীপ্ত হয়ে। সাম্প্রতিক ভারত এর 
জায়মান উদাহরণ। গোটা ভারতেকে যেন 
করোনা তছনছ করার দায়িত্ব নিয়ে মাঠে 
নেমেছে। সে যা-ই হোক বিশ্বজুড়ে করোনার 
নেতিবাচক প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি 
কমে গেছে মোটামুটি সাড়ে ৪ শতাংশ। 
যদিও সব দেশে এর আর্থনীতিক প্রভাব 
সমান নয়, নানা মাত্রার। তবে আর্থনীতিক 
কর্মকাÐের ধারা-প্রবাহে এই মহামারী এরই 
মধ্যে ঘটিয়েছে নানামাত্রিক পরিবর্তন। এই 
পরিবর্তন আমাদের বাংলাদেশেও নানা ক্ষেত্রে 
সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অর্থনীতির এমন কোনো 
খাত নেই যেখানে করোনা মহামরীর প্রভাব 
পড়েনি। সবখাতের এই পরিবর্তনের ওপর 
আলোকপাতের সুযোগ এখানে নেই। বক্ষ্যমাণ 
প্রতিবেদনে আলোকপাত করার প্রয়াস পাব 
দেশের ডেলিভারি বিজনেসের ওপর করোনা 
মহামারীর প্রভাব বিস্তারের বিষয়টির ওপর। 
এর মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব আমাদের 
ডেলিভারি ব্যবস্থায় করোনা মহামারী যে 
আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে সে বিষয়টি।
এটি আজ আমাদের কাছে স্পষ্ট 
হয়ে গেছেÑ করোনা মহামারী আমাদের 
দেশের ডেলিভারি সিস্টেমতথা সরবরাহ 
ব্যবস্থাকে চিরদিনের জন্য ব্যাপক পাল্টে 
দিয়েছে। ২০২০ সালে আমরা দেখেছি 
বেশিরভাগ লজিস্টিক ডেলিভারি কোম্পানি, 
ফুড ডেলিভারি কোম্পানি, চেইন গ্রোসারি 
স্টোরের অর্ডারের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়ে 
যেতে। এর ফলে এসব কোম্পানিকে তাদের 
অর্ডার ডেলিভারি দিতে রীতিমতো হিমশিম 
খেতে হয়েছে। সেই সাথে তাদের নতুন করে 
ভাবতে হয়েছে কীভাবে সরবরাহের ক্ষেত্রে 
এই বাড়তি চাপ মোকাবেলা করা যায়। কারণ, 
বর্ধিত অর্ডারের কারণে অনেক গ্রাহককে 
অনেক অনাকাক্সিক্ষত দুর্ভোগের শিকার হতে 
হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ডেলিভারি কোম্পানির 
জন্যও বিষয়টি ছিল রীতিমতো বিব্রতকর। 
ফলে এসব কোম্পানিকে বাধ্য হয়ে তাদের 
সরবরাহ ব্যবস্থায় আনতে হয়েছে প্রয়োজনীয় 
পরিবর্তন এবং সেই সাথে সম্প্রসারণ ঘটাতে 
হয়েছে তাদের সরবরাহ ব্যবস্থারও। কারণ, 
কোম্পানিগুলো উপলব্ধি করতে সক্ষম 
হয়েছেÑ এদের নিজেদের ব্যবসায় টিকে 
থাকতে হলে ডেলিভারি ব্যবস্থার খোলনলচে 
পাল্টে এর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ছাড়া আর 
কোনো উপায় নেই। 
‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকার এক 
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়Ñ জনৈকা আনিতা 
পরিচালনা করেন একটি অনলাইন বিজনেস। 
বিক্রি করেন প্রসাধনী আর পোশাক-আশাক। 
তার ব্যবসায়ের শুরু ২০১৯ সালের মাঝামাঝি 
সময়ে। তিনি দ্রæত জনপ্রিয়তা পান। প্রথম
দিকে তার কোম্পানি ভালোভাবেই চলছিল, 
গ্রাহকদের চাহিদামতোসরবরাহও করে 
যাচ্ছিলেন। কিন্তু করোনা মহামারী শুরু 
হওয়ার পর থেকেই তার পণ্য গ্রাহকদের 
কাছে পৌঁছানোর বিষয়টি নিয়ে সমস্যায় 
পড়েন। তার কাছে এমন অর্থও ছিল না যে 
তিনি সরবরাহের কাজে নিজস্ব জনবল নিয়োগ 
দিতে পারেন। ফলে তাকে বাধ্য হয়ে নির্ভর 
করতে হয় কোনো সুপরিচিত ডেলিভারি 
কোম্পানির ওপর।করলেনও তাই। কিন্তু শুরু 
হলো নতুন ঝামেলাÑ সারাক্ষণ গ্রাহকেরা 
ফোন করে নানা অভিযোগ করতে শুরু 
করেন : কোনো গ্রাহক পেয়েছেন বিনষ্ট 
পণ্য, কোনো পণ্য পৌঁছেছে দেরিতে, আবার 
কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডেলিভারিম্যান খারাপ 
আচরণ করেছে ইত্যাদি। এসব ব্যাপার নিয়ে 
তিনি কথা বলেন ডেলিভারি কোম্পানির 
সাথে। তারা তাকে এ জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ 
দেয়নি, নিষ্ফল প্রতিশ্রæতি ছাড়া। 
এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আরেক 
নারী ই-কমার্স উদ্যোক্তা রেশমা বেগমের। 
তিনি নিজের বাসা থেকেই পরিচালনা করেন 
ফেসবুকভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘রেশমা 
কিচেন’। ২০২০ সালে করোনা চলাকালেই 
তিনি তার এই কিচেন চালু করেন। এখান 
থেকে সরবরাহ করেন গ্রাহকদের অর্ডার 
অনুযায়ী হোমমেড খাবার। সেই সাথে 
সরবরাহ করেন নিজস্ব খামারের খাঁটি গরুর 
দুধ। আগে থেকে পাওয়া অর্ডার অনুযায়ী 
ঘরোয়া খাবার সরবরাহে রেশমা কিচেন বেশ 
জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ২০২০ সালে করোনার 
লকডাউনের সময় অর্ডার বেড়ে গেলে তিনি 
খাবার সরবরাহের কাজটি কোনো ডেলিভারি 
কোম্পানিকে দিতে উদ্যোগী হন। কিন্তু তার 
এক শুভাকাক্সক্ষীর পরামর্শে এর পরিবর্তে 
তিনি নিজস্ব ডেলিভারিম্যান নিয়োগ দেন। 
এখন পর্যন্ত তিনি নিজস্ব ডেলিভারিম্যান 
দিয়েই সুনামের সাথে তার পণ্য সরবরাহ 
করে চলেছেন। 

ডেলিভারি নিয়ে সমস্যা রয়েই গেছে

ডেলিভারি কোম্পানির মাধ্যমেই হোক 
আর নিজস্ব ডেলিভারিম্যানের মাধ্যমেই হোক, 
পণ্য ডেলিভারি নিয়ে গ্রাহকদেরঅভিযোগের 
শেষ নেই। অভিযোগের ধরন-ধারণ 
ভিন্ন। পণ্য বিনষ্ট হওয়া একটি সাধারণ 
অভিযোগ। অনেক পচনশীল পণ্য, যেমন 
ফলমূল গ্রাহকদের কাছে যখন পৌঁছে তখন 
তা আর ব্যবহারের উপযোগী থাকেনা। 
এর কারণে দেরিতে পৌঁছানো অথবা যথার্থ 
প্যাকেজিংয়ের অভাবে বিনষ্ট হয়ে যাওয়া। 
তাই সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনদের পরামর্শ হচ্ছে 
পণ্য ডেলিভারির ক্ষেত্রে প্যাকেজিংয়ের 
মানোন্নয়ন অপরিহার্য। আছে ডেলিভারিম্যান 
অথবা তাদের কোম্পানির গাফিলতির 
অভিযোগ। এ জন্য ডেলিভারির সাথে 
সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। 
সেই সাথে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ডেলিভারি 
কোম্পানিগুলোর উচিত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি 
কার্যকর করা। এ ছাড়া ই-কমার্সের ওপর 
জনআস্থা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। আর 
জনআস্থা ছাড়া এ-কমার্স ব্যবসায়ের 
সস্প্রসারণও সম্ভব নয়। এখানে উল্লেখ করা 
দরকার, বিগত ২০২০ সাল থেকে আমরা 
অভাবনীয় মাত্রায় বর্ধিত চাহিদার সরবরাহ 
লক্ষ করে আসছি। সময়ের সাথে তা আরো 
বাড়বে। মানুষ ক্রমবর্ধমান হারে ই-কমার্সে 
অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। তাই ডেলিভারি ব্যাপারে 
আমাদের সবাইকে সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে কাজ 
করতে হবে। নইলে ই-কমার্সের প্রতি মানুষ 
আস্থা হারিয়ে ফেলবে। এ ক্ষেত্রে ই-কমার্স 
প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 
সময় মতো গ্রাহকদের কাছে পণ্য পৌঁছানো 
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ এখনো আমরা 
সে বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারিনি। 
অভিযোগ আছেÑ অনলাইনে মুদিপণ্যের অর্ডার 
দিয়েও পণ্য পেতে ভোক্তাদের কয়েকদিন 
অপেক্ষা করতে হয়। আবার দেখা যায়, অনেক 
সময় সরবরাহ করা হয়েছে ভুল পণ্য কিংবা 
বিনষ্ট পণ্য। আবার কোনো পণ্যই সরবরাহ 
হয়নি। গণমাধ্যমে এমন খবরও প্রকাশিত 
হয়েছে, কাক্সিক্ষত পণ্যের বদলে গ্রাহকের কাছে 
পাঠানো হয়েছে সুদৃশ্য মোড়কে ইট। 
আমরা এখন করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় 
ঢেউ মোকাবেলা করছি। সরকার ঘোষণা 
করছে একের পর এক লকডাউন। ঘোষিত 
লকডাউনের সম্প্রসারণে ঘোষণা আসছে 
যখন-তখন। আশঙ্কা আছে গত বছরের চেয়ে 
এবার তা আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করার। 
ফলে অনলাইন স্টোর ও ডেলিভারি কোম্পানি 
তাদের ডেলিভারি ব্যবস্থায় আরো পরিবর্তন 
আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। এই 
করোনাকালে এরই মধ্যে অনেক অনলাইন 
শপ ও ডেলিভারি কোম্পানি তাদের সক্ষমতা 
বাড়িয়ে তুলেছে। এ জন্য বাড়াতে হয়েছে 
তাদের জনবল। হোম সার্ভিসে গ্রাহকসন্তষ্টি 
নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এদের কাছে এ ছাড়া 
আর কোনো উপায় নেই।
পরিবর্তনের ছোঁয়া সবখানে
অতি সম্প্রতি আমরা আমাদের 
সরবরাহ ব্যবস্থায় যে পরিবর্তন লক্ষ 
করছি, এর বিজারক হিসেবে কাজ করেছে 
করোনা মহামারী। এ পরিবর্তন লক্ষ করা 
গেছেলজিস্টিক ডেলিভারি কোম্পানি থেকে 
শুরু করে ফুড ডেলিভারি কোম্পানি, মুদি 
দোকান ও অন্যান্য ওয়েব সাইটভিত্তিক 
এমনকি ফেসবুকভিত্তিক অনলাইন শপে। 
এসব প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার 
সম্প্রসারণ যেমন ঘটিয়েছে, তেমনি পরিবর্তন 
এনেছে তাদের কর্ম কৌশলও। 
খবরে প্রকাশ, সুপরিচিত চাহিদাভিত্তিক 
ডিজিটাল প্ল্যাটফরমগুলোÑ যেমন ‘ফুডপান্ডা’ 
ও ‘পাঠাও’ তাদের ডেলিভারি ব্যবস্থায় 
পরিবর্তন ঘটিয়ে নয়া কৌশল কার্যকর 
করেছে। এরা চালু করেছে মুদিপণ্য ও 
প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় অন্যান্য পণ্য ঘরেঘরে পৌঁছে দেয়ার সেবাব্যবস্থা অর্থাৎ 
ডোর-টু-ডোর ডেলিভারি সার্ভিস। একই 
সাথে আগোরার মতো সুপারশপ ও মুদি 
দোকানগুলোও গ্রাকদের চাহিদার কথা 
ভেবে চালু করেছে হোম ডেলিভারি সার্ভিস। 
লজিস্টিক কোম্পানিগুলোর মালিকানাধীন 
ডেলিভারি সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের
সেবা সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া অব্যাহত 
রেখেছে। এগুলো এখন গত বছরের তুলনায় 
দ্বিগুণ পরিমাণ পণ্য সরবরাহ করছে। এ জন্য 
তাদের নিয়োগ করতে হয়েছে অধিকসংখ্যক 
ডেলিভারি এজেন্ট। কিনতে হয়েছে আরো 
যানবাহন ও ভাড়া করতে হয়েছে অধিক 
পরিমাণ গুদামঘর। 
ই-কমার্স ব্যবসায়ীদেরশীর্ষ সংগঠন 
ই-ক্যাব সূত্রে জানা যায়Ñ গত বছর 
ই-কমার্স ব্যবসায়ের প্রবৃদ্ধিরপরিমাণ ছিল 
৮০ শতাংশ।করোনা মহামারীর সময়েও 
দেশে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে ৭০ থেকে 
৮০ শতাংশ। লেনদেনের পরিমাণ ছিল 
১৬ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে 
৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে 
ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যবস্থার আওতায়। 
তিনি আরো জানানÑ মহামারীর সময়ে 
প্রতিদিন সরবরাহের সক্ষমতা ১ লাখ ৬০ 
হাজারটিতে গিয়ে পৌঁছেছে। 
ইকুরিয়ার লিমিটেডের সিইও বিপ্লব ঘোষ 
বলেন, ‘অনলাইন অর্ডারের ধরন ও সংখ্যায় 
দ্রæত পরিবর্তন ঘটেছে। এখন মানুষ সবকিছুই 
কিনছে অনলাইনে। অনলাইনঅর্ডারের সংখ্যা 
আরো বেড়ে গেছে, এখন গ্রামের মানুষও 
অনলাইন শপিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এক 
বছর আগেও গ্রামের মানুষকে অনলাইনে 
কিছু কিনতে দেখা যেত না।’
বর্তমানে ই-কুরিয়ার গত বছরের তুলনায় 
মোটামুটি দ্বিগুণ অর্ডার পাচ্ছে। গ্রাহকদের 
চাহিদা মেটাতে প্রতিষ্ঠানটি পরিবর্তন এনেছে 
এর সরবরাহ ব্যবস্থায়। এখন কোম্পানিটি 
এর সরবরাহ পরিচালনা করছে পিকআপ 
ভ্যানে করে, আগে যেখানে তা করা হতো 
সাধারণ সাইকেল ও মোটরসাইকেলের 
মাধ্যমে। ই-কুরিয়ারের সাথে এখন যুক্ত 
রয়েছে ৬০০ ডেলিভারি এজেন্ট। সময়ের 
সাথে এরূপ সংযুক্তি আরো বাড়ছে। 
প্রতিদিন এই কোম্পানি ২৪ হাজার অর্ডার 
ও ২০ হাজার পার্সেল প্রক্রিয়াজাত করে। 
কখনো কখনো মানুষ গুদাম থেকে তাদের 
পণ্য সংগ্রহ করেন। গুদামগুলো সপ্তাহের ৭ 
দিনই ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। সঙ্কট সময়ে 
প্রতিষ্ঠানটি এর নিজস্ব লোকদের সরবরাহের 
কাজে লাগায়। 
বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনা 
সংক্রমণের কারণেই আমাদের ডেলিভারি 
সিস্টেমে অনেকটা হঠাৎ করেই এই 
পরিবর্তন ঘটেছে। হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিত 
কোনো পরিবর্তন মোকাবেলা কোনো সহজ 
কাজ নয়। এমনকি আগোরা, মীনাবাজার, 
স্বপ্ন ও বড় মাপের ই-কমার্স প্ল্যাটফরম 
চালডালের পক্ষেও তা সহজ কোনো কাজ 
নয়। সুপারশপের প্রতিটি শাখা প্রতিদিন ১৫ 
থেকে ২০ বস্তা মুদিপণ্য সরবরাহ করে। এই 
সংখ্যা এখন প্রতিদিনই বাড়ছে। সে কারণেই 
সুপারশপগুলোর প্রয়োজন হয় ডেলিভারি 
এজেন্ট নিয়োগের।

বর্ধিত চাহিদা মোকাবেলা 

করোনা মহামারীর আগের সময়টায় 
গত বছরে অনলাইন মুদি দোকান ‘চালডাল’ 
প্রতিদিন ৩০০০ অর্ডারের পণ্য সরবরাহ 
করত। ঢাকার ৯টি গুদাম থেকে চলত এসব 
পণ্য সরবরাহ। করোনাকালে রাতারাতি এই 
অর্ডারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ হাজার। 
অবিশ্বাস্য মাত্রায় এই অর্ডার বেড়ে যাওয়ার 
জন্য চালডাল একদম প্রস্তুত ছিল না। চাহিদার 
কথা ভেবে চালডালকে আরো ৯টি গুদামের 
ব্যবস্থা করতে হয় দেশের অন্যান্য শহরেও। 
কিছুদিন আগেও চালডাল প্রতিদিন 
৬ হাজার অর্ডারের পণ্য সরবরাহ করে 
আসছিল। কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ 
শুরু হওয়ার পর এর অর্ডারের সংখ্যা বেড়ে 
দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজারে। এই 
ক্রমবর্ধমান অর্ডারের প্রেক্ষাপটে চালডালের 
ডেলিভারি ক্যাপাসিটি প্রতিদিন ২৩ হাজার 
অর্ডারে উন্নীত করেছে। এজন্য এর ডেলিভারি 
টিমের জনবল দ্বিগুণ করতে হয়েছে।বর্তমানে 
চালডালে কাজ করছেন ২০০০ লোক। এর 
জনবলের ৬০ শতাংশই ডেলিভারিম্যান।
ই-ফুডের বিজনেস ডেভেলপমেন্টের 
প্রধান শাহনেওয়াজ জানিয়েছেন, তাদের ফুড 
ডেলিভারি পরিমাণ এই সময়ে বেড়েছে ১৫-২০ 
শতাংশ। ২০২০ সাল শেষে ফুডপান্ডার কার্যক্রম 
দেশের ৬৪টি জেলায় সম্প্রসারিত করেছে।
অপর ই-কমার্স প্ল্যাটফরম ‘পাঠাও’এর প্রেসিডেন্ট ও সিএফও ফাহিম আহমেদ 
বলেছেন,‘আমরা দেশজুড়ে আমাদের 
সরবরাহ সেবা সম্প্রসারিত করেছি। নিয়োগ 
দিয়েছি অতিরিক্ত ডেলিভারি এজেন্ট 
আসন্ন ঈদের সময়ের সম্ভাব্য বর্ধিত চাহিদা 
মোকাবেলার জন্য। বর্তমানে ৩ লাখ অপরিহার্য 
কর্মী (ড্রাইভার, ফুড ডেলিভারিম্যান, কুরিয়ার 
এজেন্ট) পাঠাওয়ের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। 
এরা প্রতি মাসে সেবা সরবরাহ করছে প্রায় 
২০ লাখ গ্রাহককে।’

শেষকথা

এভাবে করোনা মহামারী পাল্টে চলেছে 
আমাদেরপুরো সরবরাহ ব্যবস্থাকে। সংশ্লিষ্টরা 
চেষ্টাসাধ্যি চালিয়ে যাচ্ছেন গ্রাহক-চাহিদা 
সন্তুষ্টির সাথে মেটানোর। এরপরও গ্রাহকদের 
অভিযোগের শেষ নেই।গ্রাহকদের সুপরামর্শ 
ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিক 
পদক্ষেপে শিগগিরই আমাদের সরবরাহ 
ব্যবস্থা সুষ্ঠুতর অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে এমন 
প্রত্যাশা স্বাভাবিক
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
২০২১ - মে সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস