• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > অ্যাডোবি ফটোশপে সিএসফোর
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী
মোট লেখা:৪২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - মার্চ
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
অ্যাডোবি ফটোশপ
তথ্যসূত্র:
সফটওয়্যার
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
অ্যাডোবি ফটোশপে সিএসফোর

গ্রাফিক্সের জগতে অ্যাডোবি একটি সুপরিচিত নাম। এর পণ্যসমূহ গ্রাফিক্স কারুকাজে রেখেছে অনবদ্য অবদান। স্থির বা চলমান সব ছবির এডিটিংয়ের ক্ষেত্রে অ্যাডোবির পণ্য বিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে।

প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে দিন দিন গ্রাফিক্সের কারুকাজ আরো সহজ ও উন্নত হচ্ছে। আর এ ধারাবাহিকতায় এসেছে অ্যাডোবি ক্রিয়েটিভ সুইট ফোর বা CS4। এর একটি প্রোডাক্ট ফটোশপ যা গ্রাফিক্স এডিটিংয়ের জগতে স্বনামধন্য। এর সর্বশেষ ভার্সন ১১ যা অ্যাডোবি ফটোশপ সিএসফোর নামে পরিচিত। এটি প্রফেশনাল ও শৌখিন ফটোগ্রাফারদের উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে। আগের ভার্সন সিএসথ্রির তুলনায় এ ভার্সনটি যথেষ্ট আপগ্রেড করা হয়েছে। এতে পাবেন ফটোশপের নতুন স্বাদ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। অত্যাধুনিক সুযোগসুবিধা ও নতুন নতুন ফিচার সংযোজন একে নতুন করে সুপরিচিত করে তুলবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর নতুন ফিচারসমূহ নিয়ে এ সংখ্যায় আলোচনা করা হলো।

অ্যাডোবি ফটোশপ সিএসফোরের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসে এসেছে নতুনত্ব। শুধু নতুন কালার কম্বিনেশন নয়, এর স্ট্যান্ডার্ড বাটনেও এসেছে নতুনত্ব। ইমেজ সজ্জা অথবা জুম লেভেল এবারের মতো নতুন যোগ হয়েছে, যা ইমেজের ৬০০% পর্যন্ত জুম করার সুযোগ দিচ্ছে এবং হ্যান্ড টুলের মাধ্যমে ছবিটি ঘুরিয়ে নিতে পারবেন। গ্রাফিক্সের অ্যানিমেশন করা আরো সহজ ও সুবিধাজনক করে দিয়েছে সিএসফোর। এবার নতুন হিসেবে যোগ হয়েছে এর ফ্লোটিং ফিচার। এখন একই সাথে বিভিন্ন টেক্সটবার নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছে এই ফ্লোটিং সুবিধা। এখন সব কাজ একই সাথে ট্যাব আকারে দেখা যায়, সেই সময় সেগুলো ড্র্যাগ করে এনে ছেড়ে দিলে তা ভাসমান অবস্থায় থাকবে, যা পূর্ববর্তী ভার্সনে সম্ভব হতো না। নতুন অপশন হিসেবে যোগ হয়েছে ইমেজ ভিউইং। এর সাহায্যে ছবি ফ্লিমস্ট্রিপ মোডে, থাম্বলাইন মোড দেখতে পারবেন। এ ছাড়াও রয়েছে স্লাইড শো করে দেখার সুবিধা। এর অ্যাডভান্স প্রোপার্টিজ দিচ্ছে অনেক কিছু বেছে নেয়ার সুবিধা। ধরুন, একটি নতুন ক্যানভাস তৈরি করছেন। এর প্রোপার্টিজ থেকে কালার মডেল, রেজ্যুলেশন রাস্টার ইফেক্ট বেছে নেবার সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে প্রিভিউ মোড, যা কোনো ইফেক্ট ফেলার আগেই ইফেক্ট কেমন পড়বে তা দেখার সুযোগ করে দেয়।



অনেকেই হয়তো রাস্টার ইফেক্ট সম্পর্কে জানেন না। তাদের বলছি, এটি গ্র্যাডিয়েন্টের রেজ্যুলেশন বাড়ায়। এছাড়াও কোনো ছবির ছায়াযুক্ত অংশ কতখানি ডেপথ হবে তাও রাস্টার নাম্বর দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

একটি ছবির সর্বোচ্চ এরিয়া বাড়িয়ে এখন ২০০x২০০ ইঞ্চি করা হয়েছে, যা অনেক ডেপথ-এ কাজ করার সুযোগ দেয়। প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের এত দিনের স্বপ্ন সফল করেছে অ্যাডোবি ফটোশপের Open Glider-এর সুবিধা নিয়ে এসে। যাকে সংক্ষেপে আমরা Open GL বলে চিনি। এর সাহায্যে এখন থ্রিডি কাজগুলো অনায়াসে করা সম্ভব হবে। জুমিং অপশনেও এসেছে নতুন চমক। এখন প্রায় আলোর গতিতে জুম ইন জুম আউট করার সুযোগ রেখেছে। তবে এ ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স কার্ড-এর মেমরি পর্যাপ্ত হতে হবে। এখন আপনার তৈরি যেকোনো অবজেক্ট ব্যবহার করতে বেগ পেতে হবে না। শুধু ড্র্যাগ করে ড্রপ করার সুবিধা এনেছে সিএসফোর। প্রথমে গ্রাফিক্স স্টাইল প্যানেলে নিয়ে এসে তারপর স্টাইলটি অবজেক্টে নিয়ে আসুন এবং কাজটি আরো সহজ করতে ড্র্যাগ করার সময় Ctrl key চেপে রাখলে স্টাইলটির ইফেক্ট ছবির ওপর কেমন হবে তাও দেখাবে। সিএসফোরের আরেকটি চমকপ্রদ অপশন হলো স্প্রিং আউট। ফলে কষ্ট করে আর কিছুতে ক্লিক করতে হবে না। কার্সর কোনো অপশনের ওপরে নিয়ে গেলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সিলেক্ট হবে, যা আপনার কাজকে আরো গতিময় করবে।

প্রথমবারের মতো সিএসফোর ভার্সনে যুক্ত হয়েছে স্মার্ট গাইড সুবিধা, যা কোনো কিছু এলিমেন্ট করে বসানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। এখন আর রুলারের প্রয়োজন পড়বে না। ধরুন, কোনো একটি বস্ত্ত কপি করছেন, যা একই সারিতে বার বার বসাতে চাইছেন। এ সময় Ctrl key চেপে ড্র্যাগ করুন। একটি পপআপ মেনু তৎক্ষণাৎ হাজির হবে, যা ডিসট্যান্ট ঠিক করতে বলবে। অর্থাৎ কতটুকু দূরত্বে সে এলিমেন্ট বসবে তা নির্দিষ্ট করে দিলে আপনা থেকেই সে ছবিটি নির্দিষ্ট দূরত্বে পেস্ট হয়ে যাবে, যা রুলারের নীল দাগ দিয়ে দিয়ে করতে হতো। এটি প্রকৃতপক্ষে কাজকে অনেক সংক্ষিপ্ত, সহজ ও দ্রুত করে দিয়েছে। এছাড়াও ছবি রোটেট-এর ক্ষেত্রেও এসেছে অনেক সহজ প্রক্রিয়া। ছবি রোটেট করার সময় শিফট কী চেপে ধরলেই ছবিটি কত ডিগ্রি রোটেট হচ্ছে তা দেখাবে এবং ৪৫ ডিগ্রি রোটেট হয়ে যাবে, যা আগে অনেক কষ্টসাধ্য ছিল।

অ্যাডোবি সিএসফোর অনেক ইউজার ফ্রেন্ডলি হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। যার ছাপ ব্রাশ সাইজ ও সফটনেসের ক্ষেত্রেও রয়েছে। এখন Ctrl+Shift চেপে কাজের মাঝেই ব্রাশের সাইজ নির্ধারণ করতে পারবেন। অ্যাডোবি ফটোশপ সিএসফোর এক্সটেন্ডেড এডিশনে রয়েছে থ্রিডি টুল, যা থ্রিডি কোনো বস্ত্তকে রোটেট করতে সাহায্য করবে অর্থাৎ এর ওপেন জিএল-এর সাহায্যে থ্রিডি কোনো অবজেক্টকে সহজেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে পারেন এবং অবজেক্ট এডিট করতেও অনেক সহজ হবে। কিছু স্ট্যান্ডার্ড টুল যেমন স্প্রে ব্রাশ দিয়ে কাজ করা সম্ভব।

সিএসফোর-এ প্রথমবারের মতো যুক্ত হলো Gradiant Opasity ফিচারটি। এখন গ্র্যাডিয়ান্টের ভেতর দিয়েও কোনো অবজেক্টকে ফুটিয়ে তোলা যাবে প্রাণবন্তভাবে। Dodge এবং Burn tool এবার একটু নতুনভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এর নতুন feature হলো Protect Tones। এর সাহায্যে ছবিটির টেক্সচার অবিকৃত অবস্থায় থাকে। কোনো অবস্থাতেই ছবিটি বার্ন অথবা ডার্কড করে দেবে না।

প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের জন্য একটি সুসংবাদ যে অ্যাডোবি ফটোশপ তাদের এ ভার্সনে Mounting technique ব্যবহার করেছে। এ প্রক্রিয়ায় একটি ইমেজের Depth of Field বা DOF উন্নত করা যায়। এটি ক্লোজআপ শটের ক্ষেত্রে যেমন কার্যকর তেমনি প্যানোরমিক শূটের ক্ষেত্রেও ভালো ফল দেয়। ফটোগ্রাফাররা কখনো কখনো একটি বস্ত্তর অনেকগুলো শট নেন একই অ্যাঙ্গেল থেকে বিভিন্ন স্থানে ফোকাস করে। তারপর সব ছবি ফটোশপে এনে প্রতিটি আলাদা আলাদা লেয়ারে একত্রীভূত করে প্রতিটি স্থান সমান ফোকাসে রাখেন। সিএসফোর সব ছবি এমনভাবে প্রসেসিং করে যাতে ফাইনাল ছবিটি একদম ডিটেইল শার্প আসে।

প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের আরো একটি সুসংবাদ হলো, ফটোশপ লাইটরুম ২-এ RAW ফরমেট তোলা ছবি এডিট করার অপশন রাখা হয়েছে। এটি প্রতিটি ইমেজের কন্ট্রাস্ট নিয়ন্ত্রণে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

অ্যাডোবি ফটোশপ সিএসফোর নিঃসন্দেহে গ্রাফিক্স এডিটের জগতে আলোড়ন তুলবে। এর নতুন নতুন ফিচার প্রতি পদক্ষেপে সহায়তা করবে ভালোভাবে ছবি এডিট এবং অ্যানিমেশন করতে। আশা করছি পাঠকরা এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে উৎসুক হয়ে থাকবেন। অ্যাডোবির নিজস্ব সাইট থেকে Trailটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারেন। ডাউনলোড করুন www.adobe.com/cfusion/ tdre/index.cfm?loc=en&Product= Photoshop আর উপভোগ করুন অ্যাডোবির অপূর্ব সৃষ্টি।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : ashraf.icab@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
২০০৯ - মার্চ সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস