• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > লিনআক্সে সেমি ফনেটিক কী-বোর্ড দিয়ে বাংলা লেখা
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মর্তুজা আশীষ আহমেদ
মোট লেখা:৭৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৮ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
লিনআক্স
তথ্যসূত্র:
লিনআক্স
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
লিনআক্সে সেমি ফনেটিক কী-বোর্ড দিয়ে বাংলা লেখা

লিনআক্সে ইন্টারনেট কনফিগার করার ফলে সাধারণত সব ধরনের সমস্যারই সমাধান হয়ে যায়৷ তার পরও একথা সবাইকে স্বীকার করতে হবে, বেশিরভাগ কমপিউটার ব্যবহারকারী ফ্রি-তে উইন্ডোজ ব্যবহার করে উইন্ডোজের ওপর প্রচণ্ড নির্ভরশীল হয়ে গেছে৷ তাই উইন্ডোজ ছাড়া অন্য কোনো অপারেটিং সিস্টেমে ভরসা রাখতে পারি না৷ একথা ঠিক যে বেশিরভাগ তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার নির্মাতা তাদের সফটওয়্যারসমূহ উইন্ডোজ কমপ্যাটিবল করে তৈরি করে থাকে৷ এর কারণ একটাই, উইন্ডোজ গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস নিয়ে যতটা ভেবেছে, অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমগুলো নিয়ে কেউ তা ভাবেনি৷



লিনআক্সের কথা বলতে গেলে বলতে হয় লিনআক্সের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস নিয়ে শুরুতে তেমন কেউ মাথা ঘামায়নি৷ তাই ফ্রি থাকলেও ইউজার ইন্টারফেস সহজ না হওয়াতে এর ব্যবহারকারী বেশি বাড়েনি৷ এই অবস্থার এখন পরিবর্তন হয়েছে৷ এখন এর ইন্টারফেস গ্রাফিক্যালই শুধু নয় বরং অনেক ইউজার ফ্রেন্ডলি৷ লিনআক্সের কিছু ডিস্ট্রিবিউশন তো পুরোপুরি উইন্ডোজের মতো করে (দেখতে একই রকম) অপারেটিং সিস্টেম বানিয়েছে যাতে উইন্ডোজের ইউজারদের আকর্ষণ করা যায়৷ এসব নানা কারণে লিনআক্সের ব্যবহারকারী দিন দিন বেড়ে চলেছে৷ এর ব্যবহারকারী বাড়াতে একটা কাজ হয়েছে তা হচ্ছে বিভিন্ন তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার নির্মাতারা তাদের সফটওয়্যারগুলোর লিনআক্স ভার্সন বের করছেন৷ এর একটি উদাহরণ হচ্ছে সাইবারলিঙ্ক পাওয়ার ডিভিডির লিনআক্স ভার্সন৷ আশা করা যায় ভবিষ্যতে আরো অনেক তৃতীয় পক্ষে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এভাবে উইন্ডোজের পাশাপাশি লিনআক্সের জন্যও বিভিন্ন ইউটিলিটি সফটওয়্যার বানাবে৷ এই ইউটিলিটি সফটওয়্যার কম থাকার কারণে অনেকেই ইচ্ছে করলেও উইন্ডোজের বদলে লিনআক্স ব্যবহার করতে পারছেন না৷ এরকম একটি সমস্যা হয় লিনআক্সে বাংলা লেখা নিয়ে৷ লিনআক্সে শুধু বাংলা লেখাই যায় তা নয়, পুরো অপারেটিং সিস্টেমের ইন্টারফেসও বাংলায় পরিবর্তন করা যায়৷

ইদানীং বাংলা লেখার জন্য কিছু ইউনিকোডভিত্তিক ফনেটিক কী-বোর্ড বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ এ ধরনের ফনেটিক কী-বোর্ডের জনপ্রিয়তা পাবার অন্যতম কারণ হচ্ছে বাংলা লেখার জন্য কী-বোর্ড শেখার বা মুখস্থ করার কোনো প্রয়োজন নেই এতে৷ উচ্চারণের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের কী-বোর্ড দিয়ে লেখা যায়৷ ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে আপনি ইংরেজি কী-বোর্ড দিয়ে লিখলেন amar আর তা বাংলায় আমার হয়ে যাবে৷ উইন্ডোজভিত্তিক এরকম অনেক কী-বোর্ড পাওয়া যায়৷ কিন্তু সমস্যা হয় অন্য কোনো অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করলে৷ লিনআক্সে এই সমস্যার সমাধান আছে৷ লিনআক্সে বাংলা কী-বোর্ড হিসেবে প্রভাত ব্যবহার করা হয়৷ এই প্রভাত পুরোপুরি ফনেটিক কী-বোর্ড নয়৷ তবে সেমি ফনেটিক বলা যেতে পারে৷ অল্প কিছু পরিবর্তন ছাড়া একে ফনেটিক কী-বোর্ড হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে৷

আপনারা অনেকেই ওপেন অফিসের সাথে পরিচিত৷ ওপেন অফিসের উইন্ডোজ ভার্সনে অনেকে হয়তো কাজও করেছেন৷ উইন্ডোজ ভার্সনে যেকোনো বাংলা কী-বোর্ড ব্যবহার করে ওপেন অফিসে কাজ করা খুব সহজ৷ লিনআক্সে এরকম বেশ কয়েক ধরনের অফিস স্যুট পাওয়া যায়৷ এগুলোর মধ্যে ওপেন অফিস, স্টার অফিস, কে অফিস, জিনোম অফিস উল্লেখযোগ্য৷ আপনি যে অফিস স্যুটই ব্যবহার করুন না কেন তার জন্য কী-বোর্ড লে আউটের কোনো পরিবর্তন হবে না৷ এবারে দেখি কিভাবে কী-বোর্ড লে আউটে বাংলা আনা যায়৷

যেকোনো লিনআক্স ইনস্টল করার সময় শুরুতেই কী-বোর্ডের লে আউট (কি ধরনের কী-বোর্ড) সিলেকশনের অপশন দেয়৷ লিনআক্সে বাংলা লিখতে চাইলে ইনস্টল করার সময়েই কী-বোর্ড নির্ধারণ করে দিতে হবে৷ এজন্য কী-বোর্ডের লে আউট সিলেকশনের অপশন আসলে কান্ট্রি বাংলাদেশ সিলেক্ট করে দিতে হবে৷ যখন বাংলাদেশ সিলেক্ট করা হবে তখন কোন কী-বোর্ড লে আউটে কাজ করতে চান তা লিনআক্স ইনস্টলার জানতে চাইবে৷ সেখান থেকে বাংলাদেশ প্রভাত সিলেক্ট করে দিতে হবে৷ এখানে প্রভাত সিলেক্ট করে দেয়ার অর্থ হচ্ছে সিস্টেমে বাংলা কী-বোর্ডের সাপোর্ট রাখা৷

এ তো গেল কী-বোর্ডের কথা৷ এবারে ফন্ট লাগবে৷ লিনআক্স ইউনিকোড সাপোর্টেড ফন্ট পড়তে পারে৷ বাংলা লেখার জন্য তাই পছন্দমতো ইউনিকোড সাপোর্টেড ফন্ট যোগাড় করতে হবে৷ ইন্টারনেটে এরকম ইউনিকোডের বাংলা হাজার হাজার ফন্ট পাওয়া যায়৷ সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন এরকম ফন্ট৷ এরকম কয়েকটি প্রয়োজনীয় ফন্টের লিঙ্ক দেয়া হলো :

www.omicronlab.com/bangla-fonts.html

www.nongnu.org/freebangfont/ekushey.org/index.php/page/otf_bangla_fonts

www.stat.wisc.edu/~deepayan/ Bengali/WebPage/Font/fonts.html
cg.scs.carleton.ca/~luc/bengali.html

www.brothersoft.com/ high-quality-free-bangla-fonts

মনে রাখতে হবে, এসব ফন্ট ফাইলের এক্সটেনশন সাধারণত .ttf হয়৷ তাই খেয়াল রাখতে হবে যা ডাউনলোড করা হচ্ছে তা আসলেই ফন্ট কি না৷ দু-চারটি ফন্ট ডাউনলোড করে রাখতে হবে৷ তারপর ডাউনলোড করা হয়ে গেলে ফন্টের ফাইলে ডবল কিক করে দেখতে হবে যে ফন্টটি কেমন৷ পছন্দের একটি ফন্ট বেছে নিতে হবে৷ অতিরিক্ত ফন্ট তেমন কাজে আসে না৷ মনে রাখতে হবে, সিস্টেমের সমতার জন্য যত কম ফন্ট ইনস্টল রাখা যায় ততই ভালো৷ কারণ যত বেশি ফন্ট ইনস্টল করবেন সিস্টেম লোড হতে তত ধীরগতির হয়ে যাবে৷ তাই অপ্রয়োজনীয় ফন্ট যাতে লোড না হয় সে ব্যবস্থা রাখাই ভালো৷

এবারে ওপেন অফিস ওয়ার্ড সিলেক্ট করে তার টুলস থেকে অপশন সিলেক্ট করতে হবে৷ সেখান থেকে লোড/সেভ সিলেক্ট করার পর জেনারেল সিলেক্ট করতে হবে৷ সেখান থেকে অলওয়েজ সেভ অ্যাজ মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ৯৭/২০০০এক্সপি সিলেক্ট করে দিলে সেভ হওয়া ফাইল এমএস ওয়ার্ডে পড়া যাবে৷ এবারে অপশন মেনুর ল্যাঙ্গুয়েজ অপশন থেকে ল্যাঙ্গুয়েজেস সিলেক্ট করে লোকাল সেটিংস বেঙ্গলি (বাংলাদেশ)সিলেক্ট করে দিতে হবে৷ এবারে এনাবল ইস্ট এশিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজে টিক মার্ক দিয়ে ওকে করে সেটিংস সেভ করতে হবে৷

এবারে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সেটিংস (জিনোমে) বা কন্ট্রোল প্যানেল (কেডিইতে)থেকে কীবোর্ড ওপেন করে কীবোর্ডের লে আউট সিলেকশনের অপশন থেকে কান্ট্রি বাংলাদেশ সিলেক্ট করে দিতে হবে৷ যখন বাংলাদেশ সিলেক্ট করা হবে তখন অপশন থেকে বাংলাদেশ প্রভাত সিলেক্ট করে দিতে হবে৷

এবারে ওয়ার্ড খুলে প্রথমেই ফন্ট সিলেক্ট করে নিন (যে বাংলা ফন্টটি ইনস্টল করা হয়েছে)৷ তাহলেই সেমি ফনেটিক কীবোর্ড প্রভাত দিয়ে লিনআক্সে বাংলায় লিখতে পারবেন৷


ফিডব্যাক : mortuza_ahmad@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
২০০৮ - অক্টোবর সংখ্যার হাইলাইটস
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস