পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থাই হচ্ছে লড়াইয়ের জন্য তৈরি হওয়া। আর এ কারণেই পুরো সিস্টেম চেক করে দেখুন কোনো লুপহোল আছে কিনা এবং উইন্ডোজ অ্যাপ্লিকেশন, ব্রাউজার ও হার্ডওয়্যারের লিক বা ত্রুটি প্যাচ করুন।
পিসি সিকিউরিটি টুলের ইন্টারফেস
বর্তমানে কমপিউটার ব্যবহারকারীরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি হুমকির মুখে পড়েন। শুধু তাই নয়, এ হুমকির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে আশঙ্কাজনকভাবে। সিকিউরিটি কোম্পানি সোফস বর্তমানে ১ কোটি ১০ লাখ ধরনের ম্যালওয়্যার রয়েছে। প্রতি ৫ সেকেন্ডে একটি করে নতুন সংক্রমিত ওয়েবসাইট আবিষ্কৃত হচ্ছে, যা সার্ফারের কমপিউটারে অবৈধভাবে ক্ষতিকর কোড নিয়ে আসে। সুতরাং নতুন হুমকি থেকে নিরাপদ থাকার ব্যাপারে সবাই উদ্বিগ্ন থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
নিচে বর্ণিত টুলগুলো আপনার সিস্টেমকে পুরোপুরি নিরাপদ করতে পারবে। এই টুলগুলো প্রতিটি সিকিউরিটি লুপহোল উন্মোচন করে, কোথায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, তা তুলে ধরে এবং কমপিউটারের যেসব পার্টস ঝুঁকির মধ্যে আছে তা প্রটেক্ট করে, যেহেতু ভাইরাস স্ক্যানার এবং ফায়ারওয়াল নিরাপত্তা বিধানের জন্য যথেষ্ট নয়। পরিপূর্ণ সিকিউরিটি প্যাকেজে সম্পৃক্ত রয়েছে রুটকিট ডিটেক্টরসহ আপডেটার, ব্রাউজার প্রটেকশন টুলসহ আরো অনেক কিছু।
উইন্ডোজ যা চেক করে
যদি অপারেটিং সিস্টেম ক্র্যাশ করে, তাহলে পরবর্তী সব কাজই পন্ড হয়ে যাবে। যেহেতু চেক বা পরীক্ষা করে দেখার কাজটি শুরু হয় উইন্ডোজ সহযোগে। Eset Sysinspector টুল উইন্ডোজ এক্সপি ও ভিসতার যেসব অংশ সচরাচর ক্ষতিগ্রস্ত সেগুলো পরীক্ষা করে দেখে এবং লগ ফাইলের সহায়তায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি সম্পর্কে ব্যবহারকারীকে অবহিত করে। এই টুল ইনস্টলেশনের দরকার হয় না এবং সরাসরি ইউএসবি স্টিক দিয়ে রান করা যায়। এই টুল চারটি জটিল বিষয় অ্যানালাইসিস করে যেমন রেজিস্ট্রি, প্রসেসেস, অটো-স্টার্ট প্রোগ্রাম এবং মাই নেটওয়ার্ক প্লেসেস। স্ক্যানিংয়ের সময় ফিল্টারিং স্লাইডার কন্ট্রোল রিস্ক লেভেল ৭ থেকে ৯-এ সেট করুন। যদি ডিরেক্টরি ট্রি লাল বর্ণে চিহ্নিত হয়, তাহলে প্রদর্শিত রেজিস্ট্রি ব্রাঞ্চ ও ফাইল নেম নোট করে রাখুন। কারণ সিসইনস্পেক্টর এই ক্ষতিকর উপাদানকে দূর করতে পারবে না। আপনাকে ম্যানুয়ালি তা দূর করতে হবে। ওয়েবসাইট www.eset.com
ম্যানুয়ালি এ কাজটি করার আগে ভালো হয় www.runscanner.net ওয়েবসাইট পরখ করা। এতে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন, ফাইলটি আসলে ক্ষতিকর কি না।
পিসি সিকিউরিটি টেস্ট ২০০৮
যদি আপনি ম্যালওয়্যার খুঁজে পান এবং তা রিমুভ করেন, তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবেন কিভাবে তা হার্ডডিস্কে সংক্রমিত হলো। এক্ষেত্রে পিসি সিকিউরিটি টেস্ট টুল সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে। এটি কমপিউটারে ভিন্ন আক্রমণের ভান করতে পারে এবং প্রদর্শন করে সম্ভাব্য দুর্বল জায়গা। এই টুল ইনস্টল করে রান করুন এবং Standard ChecksStart-এ ক্লিক করুন কমপিউটার টেস্ট করার জন্য। যদি ফায়ারওয়াল ও ভাইরাস স্ক্যানার এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারী সম্পর্কে রিপোর্ট করে, তাহলে ভালো লক্ষণ বুঝতে হবে। কেননা, এক্ষেত্রে এই টুল ক্ষতিকর হ্যাকার ও ভাইরাস শনাক্ত করতে সক্ষম। সিকিউরিটি টুল প্রোগ্রাম আপডেট না থাকলে কোনো রিপোর্ট পাঠাবে না। এমন অবস্থায় রুটকিট স্ক্যানার ব্যবহার করা উচিত।
র্যা ডিক্স অ্যান্টি-রুটকিট
কমপিউটারের ক্ষতিকর কার্যাবলী মুহূর্তে তীক্ষ্ণ থেকে তীক্ষ্ণতর হচ্ছে। চমৎকারভাবে ছদ্মবেশ ধারণ করে ফায়ারওয়াল এবং ভাইরাস স্ক্যানারকে কৌশলে এড়িয়ে যায় অথবা গোপন ADS ডাটা স্ট্রিম ব্যবহার করে কমপিউটারকে আক্রান্ত করে। রুটকিট টুল এসব ধবংসসাধক অপসারণ করে এবং ম্যানিপুলেটেড ড্রাইভার, সিস্টেম ফাইল ও প্রসেসকে ঠিক করে।
র্যা ডিক্স অ্যান্টিরুটকিট টুল ইউএসবি থেকে চালু করুন, যাতে করে উইন্ডোজ ফাইল প্রটেকশন এই টুলের সাথে যোগাযোগ সাধনে সক্ষম না হয়। I-click check ট্যাবে সব অপশন সক্রিয় করুন। ফলে রেজিস্ট্রি চেকের আগে একটি সতর্কীকরণ মেসেজ আবির্ভূত হয়।
যদি রুটকিট কোনো কিছু পরিবর্তন না করে, তাহলে স্ক্যানার এন্ট্রিসমূহ রিপেয়ার করতে চেষ্টা করবে। অন্যথায় ক্ষেত্রবিশেষে সিস্টেম কাজ করবে না। যদি আপনি পরিবর্তনসমূহকে প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে আপনি রুটকিটের সাথেই থাকবেন। সবকিছু পরীক্ষা করার পর প্রোগ্রামে যা পরিবর্তন ও রিপেয়ার করা হয়েছে, তার একটি লিস্ট ডিসপ্লে করবে।
সব লুপহোল বাদ দেয়া
উইন্ডোজ ছাড়া ইনস্টল করা কোনো কোনো অ্যাপ্লিকেশন হুমকির কারণ হতে পারে। এসব অ্যাপ্লিকেশনের সিকিউরিটি লুপহোল কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা আপনার কমপিউটারের ক্ষতি করতে পারে। এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান হতে পারে প্রতিটি প্রোগ্রামের সর্বশেষ ভার্সন আপডেট করার মাধ্যমে সব জানা লুপহোলকে বাদ দেয়া।
অনেক সংবেদনশীল প্রোগ্রাম যেমন ভাইরাস স্ক্যানারের শুরু থেকেই স্বয়ংক্রিয় আপডেট ফাংশন থাকে। এসব প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে আপনাকে শুধু চেক করে দেখতে হবে, আপডেট ফিচারটি সক্রিয় কি না। অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনকে আপডেট করতে পারবেন UpdateStar বা SecuniaPSI প্রোগ্রাম ব্যবহার করে। আপডেটস্টার বেশ কিছু অ্যাপ্লিকেশন রিকগনাইজ করতে পারে, পক্ষান্তরে সিকিউনিয়াপিএসআই প্রোগ্রামটি সিকিউরিটি আপডেটের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ। কোন প্রোগ্রাম ব্যবহার করা উচিত তা নির্ভর করছে ইনস্টল করা অ্যাপ্লিকেশনের ওপর।
উভয় টুলের ফাংশন প্রায় একই। ইনস্টলেশনের পর টুল রান করুন এবং চেক করে দেখুন হার্ডডিস্কে কোন কোন প্রোগ্রাম রয়েছে এবং সেগুলো আপডেট কিনা। যদি আপডেট না হয়ে থাকে, তাহলে ইন্টারনেট থেকে আপডেট সংগ্রহ করে নিন এবং বিদ্যমান লিককে বাদ দিন।
ব্রাউজার ক্র্যাশ টেস্ট
ওয়েব ব্রাউজার হচ্ছে অ্যাটাকের সাধারণ টার্গেট। ব্রাউজারের লুপহোল কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা ব্রাউজারকে ক্র্যাশ করতে পারে। http://bcheck.scanit.be/bcheck সাইটের সহায়তায় ওয়েব ব্রাউজারের সিকিউরিটি চেক করে দেখে নিন আপনার ব্রাউজার অ্যাটাক প্রতিরোধে সক্ষম কি না।
আপনার ওয়েবসাইট থেকে কাঙ্ক্ষিত ব্রাউজার ওপেন করুন। এটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রদর্শন করবে আপনার ব্রাউজার ও অপারেটিং সিস্টেম। এ তথ্য হ্যাকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। Only test for buys specific to my type of browser অপশন ডিফল্ট হিসেবে সিলেক্ট থাকতে হবে। Start the test অপশনের মাধ্যমে ব্রাউজারকে আক্রমণের জন্য প্রকাশ করা হয়। এর ফলে আপনার সিস্টেম খুব সহজেই ক্র্যাশ করতে পারে। যদি ব্রাউজার ক্র্যাশ করে, তাহলে তা পুনরায় রিলোড করে সেশনকে রিস্টোর করুন এবং সাইটকে আবার ওপেন করুন।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mahood_sw@yahoo.com