• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > স্টোরেজ এরিয়া নেটওয়ার্কের নানা দিক
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: কে এম আলী রেজা
মোট লেখা:১৫৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০০৯ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
নেটওয়ার্ক
তথ্যসূত্র:
নেটওয়ার্ক
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
স্টোরেজ এরিয়া নেটওয়ার্কের নানা দিক

স্যান বা স্টোরেজ এরিয়া নেটওয়ার্ক (SAN-Storage Area Network) হচ্ছে এক ধরনের ডেডিকেটেড নেটওয়ার্ক, যা ল্যান (লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক) এবং ওয়ান (ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক) থেকে আলাদা। এটি বিভিন্ন সার্ভারের সাথে সংযুক্ত ডাটা স্টোরেজ রিসোর্সকে যুক্ত করে শুধু স্টোরেজ ডিভাইসের একটি পৃথক নেটওয়ার্ক তৈরি করে। স্যানের জন্য বিশেষ ধরনের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়। স্যান হার্ডওয়্যার এমনভাবে তৈরি, যা বিভিন্ন স্টোরেজ মিডিয়ার মধ্যে দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। আর স্যান সফটওয়্যারের কাজ হচ্ছে স্যান কনফিগারেশন, ব্যবস্থাপনা এবং পর্যবেক্ষণ করা। অপর কথায় স্যান হচ্ছে একটি উচ্চগতির সাব-নেটওয়ার্ক, যা বিভিন্ন স্টোরেজ ডিভাইসকে যুক্ত করে। স্টোরেজ ডিভাইস হচ্ছে একটি যন্ত্র, যা ডাটা স্টোর করে। এটি এক বা একাধিক ডিস্ক নিয়ে গঠিত হতে পারে।

স্যানের প্রেক্ষাপট :

সাধারণ সার্ভারের সাথে এটাচড স্টোরেজ (NAS) ডিভাইস ব্যবস্থাপনায় যে জটিলতা রয়েছে তা নিরসনকল্পেই স্যানের উদ্ভাবন হয়েছে। এছাড়া সাধারণ নেটওয়ার্কের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, নেটওয়ার্কের ট্র্যাফিক ক্ষমতার সম্প্রসারণ এবং অপারেটিং সিস্টেমের কারণে যে নেটওয়ার্ক ডিলে বা বিলম্ব হয় তা দূরীকরণের জন্যও স্যান একটি বিকল্প পন্থা হিসেবে কাজ করে। চিত্র-১-এ দেখানো হয়েছে কিভাবে স্টোরেজ মিডিয়া বিভিন্ন অবস্থায় সরাসরি সার্ভার কমপিউটারে এবং নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারে। উভয় ক্ষেত্রেই এ ধরনের স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবস্থাপনা একটি ঝামেলাপূর্ণ কাজ। এর থেকে উত্তরণের জন্যই স্যানের আবির্ভাব।

স্যান ও ল্যান-এর মধ্যে পার্থক্য :

যদিও স্যান ল্যানের মতোই স্ট্যান্ডার্ড হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন ডিভাইসকে সংযুক্ত করে, তারপরও স্যানকে ল্যানের পর্যায়ে ফেলা যাবে না। এজন্য দুটো বিশেষ কারণ এখানে উল্লেখ করা যায় :

ক. স্টোরেজ বনাম নেটওয়ার্ক প্রটোকল :

ল্যান নেটওয়ার্ক প্রটোকল ব্যবহার করে ছোট ছোট প্যাকেট আকারে ডাটা এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য (যা ওভারহেড ইনফরমেশন নামে পরিচিত) অন্যান্যদের সাথে আদানপ্রদান করে। এতে কম ব্যান্ডউইডথের প্রয়োজন হয়। অপরদিকে স্যান স্টোরেজ প্রটোকল যেমন SCSI ব্যবহার করে, যা অপেক্ষাকৃত বড় প্যাকেট বা চাঙ্ক হিসেবে ডাটা আদানপ্রদান করে। স্যানের ওভারহেড ইনফরমেশন কম হলেও এতে ডাটা আদানপ্রদানের জন্য অধিক ব্যান্ডউইডথের প্রয়োজন হয়।

খ. সার্ভার ক্যাপটিভ স্টোরেজ :

একটি ল্যানভিত্তিক সিস্টেম সার্ভারকে ক্লায়েন্টের সাথে যুক্ত করে এবং প্রতিটি সার্ভারেরই তার আওতাধীন স্টোরেজ রিসোর্সে এক্সেসের নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। এক্ষেত্রে স্টোরেজ মিডিয়াকে সরাসরি সার্ভারে যুক্ত করতে হয়, ল্যানে নয়। অপরদিকে স্যানে স্টোরেজ ডিভাইস সরাসরি নেটওয়ার্কে যুক্ত করা যায় এবং সার্ভার ওইসব রিসোর্স সরাসরি এক্সেস করতে পারে।



তবে নেটওয়ার্ক ছাড়াও কোনো স্টোরেজ ডিভাইস একটি বিচ্ছিন্ন বা স্ট্যান্ড-এলোন কমপিউটারে যুক্ত থাকতে পারে। এক্ষেত্রে স্টোরেজ ডিভাইস শুধু এ কমপিউটারের জন্যই কেবলমাত্র এক্সেসেবল। চিত্র-১-এ দেখানো হয়েছে কিভাবে একটি স্টোরেজ ডিভাইস একটি স্ট্যান্ড-এলোন, নেটওয়ার্ক ও স্যানে যুক্ত হয়।

স্যান কিভাবে কাজ করে :

স্যানের আর্কিটেকচার এমনভাবে কাজ করে যাতে ল্যান বা ওয়ানভুক্ত সব সার্ভার এর আওতাভুক্ত সব স্টোরেজ ডিভাইস এক্সেস করতে পারে। স্যানে যদি কোনো নতুন স্টোরেজ ডিভাইস যুক্ত হয় তখন সাথে সাথেই বৃহত্তর নেটওয়ার্কের যেকোনো সার্ভার তার নাগাল পেয়ে যায় এবং ডাটা আদানপ্রদানের কাজ শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে সার্ভার, এন্ড ইউজার এবং স্টোরড ডাটার মধ্যে একটি পথ বা মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। স্যান, সার্ভারের সাথে স্টোরেজ ডিভাইস যেমন অপটিক্যাল জুকবক্স (jukeboxes), টেপ লাইব্রেরি, রম ডিস্ক এ্যারে ইত্যাদি যুক্ত করার বিষয়ে কতগুলো নতুন পদ্ধতি চালু করেছে। নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে স্যানে উচ্চগতিতে ডাটা ট্রান্সফারের কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে :

০১. সার্ভারকে স্টোরেজ ডিভাইসের সাথে সংযুক্তকরণ :

সার্ভারকে স্টোরেজ ডিভাইসে এক্সেস প্রদানের ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পদ্ধতি। এক্ষেত্রে একই সময়ে একাধিক সার্ভার একটি স্টোরেজ মিডিয়াতে এক্সেস পেতে পারে।

০২. একাধিক সার্ভারের মধ্যে আমত্মঃসংযোগ স্থাপন :

স্যানের আর্কিটেকচার এমনভাবে তৈরি যা একাধিক সার্ভারের মধ্যে উচ্চগতিতে বড় আকারের ডাটা আদানপ্রদান হতে পারে।

০৩. স্টোরেজ ডিভাইসসমূহের মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন :

সার্ভারের প্রসেসিং ক্ষমতার ওপর কোনোপ্রকার প্রভাব ফেলা ব্যতিরেকে স্টোরেজ ডিভাইসসমূহের মধ্যে ডাটা আদানপ্রদানের সুযোগ এটি তৈরি করে দেয়। এক্ষেত্রে সার্ভার তার প্রসেসিং ক্ষমতা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারে।

স্যান যা নিয়ে গঠিত :

একটি স্যান নেটওয়ার্ক একাধিক ফ্যাব্রিক সুইচ (fabric switches) দিয়ে গঠিত। বহুল ব্যবহৃত স্যান ফাইবার চ্যানেল ফ্যাব্রিক প্রটোকল নামের এক ধরনের প্রটোকল ব্যবহার করে থাকে। স্যানের সাথে সংযুক্ত থাকে এক বা একাধিক ডিস্ক এ্যারেই কন্ট্রোলার (Disk array controllers) এবং এক বা একাধিক সার্ভার। স্যানের কাজ হচ্ছে ডিস্ক এ্যারে কন্ট্রোলারের আওতাভুক্ত হার্ডডিস্কের স্টোরেজ স্পেস অন্যান্য সার্ভারের মধ্যে শেয়ার করা।

স্যানের প্রধান কাজ হচ্ছে অপারেটিং সিস্টেম এবং স্টোরেজ ডিভাইসের মধ্যে ডাটা বিনিময়ের কর্মকান্ডকে সহজ করে দেয়া। স্যান উপাদানের মধ্যে রয়েছে কমিউনিকেশন অবকাঠামো, স্টোরেজ ডিভাইসেস, কমপিউটার সিস্টেম। স্যানের কানেকটিং উপাদানের মধ্যে রয়েছে রাউটার, গেটওয়ে, হাব, সুইচ ইত্যাদি। স্যানে এ ধরনের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই যে একটি স্টোরেজ ইউটিলিটি কতগুলো সার্ভারের সাথে যুক্ত থাকতে পারবে। এছাড়া স্যানে সার্ভার এবং স্টোরেজ ডিভাইসের কাছাকাছি অবস্থানের কোনো আবশ্যকতা নেই।

স্যান অবকাঠামো :

স্যান টপোলজির উন্নয়ন করা হয়েছে মূলত ফাইবার চ্যানেল ব্যবহার করে। এখানে বলে রাখা ভালো যে ফাইবার চ্যানেল হচ্ছে একটি উন্মুক্ত টেকনিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড, যা নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি বিশেষ করে স্টোরেজ ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ ও ব্যবস্থাপনার কাজ সহজ করেছে। এ প্রযুক্তিতে সহজে এক ডিভাইস আরেক ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে এবং দ্রুততার সাথে ডাটা এক্সেস করতে পারে। ফাইবার চ্যানেলের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে এটি বিভিন্ন প্রটোকলকে এবং একই সাথে বহুসংখ্যক ডিভাইস সাপোর্ট করতে পারে, যা একটি দক্ষ নেটওয়ার্কের জন্য অপরিহার্য। সাধারণ মানের কেবল এবং কানেক্টরের সাহায্যে ফাইবার চ্যানেলে সিরিয়াল ডাটা ট্রান্সপোর্ট স্কিম বাস্তবায়ন করা যায়। এতে বিভিন্ন তথ্য সুইচড নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিভিন্ন রুটে পাঠিয়ে দেয়া যায়। যেহেতু ফাইবার চ্যানেল ট্রান্সপোর্ট লেয়ার প্রটোকল নির্ভরশীল নয়, তাই এটি একাধিক প্রটোকল সম্বলিত ডাটা ট্রান্সমিট করতে পারে। ফাইবার চ্যানেল এমন গতিতে ডাটা সরবরাহ করে, যা রিসিভিং অ্যাপ্লিকেশন ও ডিভাইস সহজেই গ্রহণ করতে পারে। এতে ট্রান্সমিশন পথে ডাটা হারানোর সম্ভাবনাও অনেক কম। স্যানে কিভাবে বিভিন্ন ডিভাইস যুক্ত থাকে তার একটি নমুনা চিত্র-২-এ টপোলজি আকারে দেখানো হলো।



স্যানের সুবিধাবলি :

স্যানের প্রধান সুবিধাবলির মধ্যে রয়েছে এটি সার্ভারের ন্যূনতম ক্যাপাসিটি ব্যবহার করে অভীষ্ট লক্ষ্যে দ্রুততার সাথে ডাটা পৌঁছে দেয়, স্টোরেজ ডিভাইসে একাধিক হোস্ট বা কমপিউটারের এক্সেস সুবিধা প্রদান করে, ডাটা স্টোরেজ গতি বৃদ্ধির জন্য স্বতন্ত্র অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুযোগ দেয়, স্টোরেজ ডিভাইসের অ্যাক্সেস সুবিধা আরও সম্প্রসারিত হয়, ডাটা ব্যবস্থাপনা সহজ হয়, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের কারণে সার্ভারে প্রয়োজনমতো স্টোরেজ ডিভাইস যুক্ত করা যায়। স্যানের প্রাথমিক সুবিধাগুলো নিম্নরূপ:

প্রাপ্যতা :

কোনো একটি ফাইল বা ডাটার কপি সার্ভারে থাকলে তা একটি হোস্ট বা কমপিউটার বিভিন্ন রুট বা পথে অ্যাক্সেস করতে পারে।

বিশ্বস্ততা :

নির্ভরযোগ্য ডাটা পরিবহনের কারণে ডাটার ত্রুটি রেট কমে আসে এবং কোনো কারণে ডাটায় সমস্যা দেখা দিলে তা নিজ থেকে পুনরুদ্ধার হয়।
*স্ক্যালাবিলিটি :

নেটওয়ার্কে চাহিদা অনুযায়ী একের পর এক সার্ভার ও স্টোরেজ ডিভাইস যোগ করা যায়। এতে এক ডিভাইস অন্যের ওপর নির্ভর করে না।

দক্ষতা :

স্যানে ব্যবহৃত প্রটোকল ফাইবার চ্যানেলের ব্যান্ডউইডথ হচ্ছে ১০০ মেগাবাইট পার সেকেন্ড এবং এর ওভারহেড ব্যয়ও কম। এটি স্টোরেজ মিডিয়াকে নেটওয়ার্ক ইনপুট/আউটপুট (I/O) থেকে পৃথক রাখে।

ব্যবস্থাপনা :

এটি কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয় বিধায় এ সিস্টেমে কোনো ত্রুটি সহজেই শনাক্ত এবং তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন করা যায়।

ব্যয় সাশ্রয়ী :

যেহেতু স্যানে প্রয়োজনমাফিক স্টোরেজ ডিভাইস যোগ করা যায় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়, এ কারণে প্রতি গিগাবাইট ডাটা স্টোরেজ খরচ অনেকখানি কমে আসে।

স্যানের প্রয়োজনীয়তা :

নেটওয়ার্কের ইনপুট/আউটপুট (I/O) ব্যান্ডউইডথ, যার দ্বারা ডাটা স্টোরেজ ডিভাইস এবং প্রসেসরের সাথে যুক্ত হয় তা সাধারণত স্টোরেজ ডিস্ক এবং কমপিউটারের ডাটা ট্রান্সফার গতির সাথে সমানুপাতিক নয়। এছাড়া বিভিন্ন প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের ডাটাবেজ সফটওয়্যার চালানোর কারণে কমপিউটারের পক্ষে স্টোরেজ মিডিয়াতে রাখা বা ডাটা অ্যাক্সেস করা কঠিন হয়ে পড়ে। সর্বোপরি বিভিন্ন ফাইল সিস্টেম এবং ডাটা ফরম্যাট ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজন হয় দক্ষ জনবলের। প্রচলিত ডিস্ট্রিবিউটেড অর্থাৎ বিভিন্ন জায়গায় স্টোরেজ মিডিয়া বিক্ষিপ্তভাবে স্থাপন করলে তা ব্যবস্থাপনার জন্য প্রচুর অর্থের ব্যয় হয়। এ ধরনের ডিস্ট্রিবিউটেড সিস্টেমে হার্ডওয়্যারের ক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায় না এবং তা সিস্টেমের জন্য অদক্ষ বলে বিবেচিত হয়। এছাড়া ডিস্ক যখন কোনো সার্ভারের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয় তখন তার পরিবর্ধন বা স্ক্যালাবিলিটির ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হয়ে পড়ে। এসব ক্ষেত্রে ডাটা শেয়ার করতে গিয়ে ফাইলের ডুপ্লিকেট কপি তৈরি হয়। ডুপ্লিকেট কপি এক মিডিয়া থেকে অন্য মিডিয়াতে বা সার্ভারে নিয়ে যাবার সময় তা ল্যান বা ওয়ানের ডাটা ট্রান্সফার গতি কমিয়ে দেয়, এর ফলে বিভিন্ন ধরনের জটিল অ্যাপ্লিকেশন (যেমন ইআরপি-এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং)-এর মধ্যে সমন্বয় সাধনে সমস্যা তৈরি হয়।

স্টোরেজ ডিভাইস :

স্যানে ব্যবহৃত স্টোরেজ ডিভাইসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ডিস্ক সিস্টেম এবং টেপ সিস্টেম। ডিস্ক সিস্টেম আবার বান্স অব ডিস্কস (BOD) এবং রিডানডেন্ট এ্যারেই অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিস্কস (RAID) নামে বিভক্ত। প্রথম ক্ষেত্রে ডিস্কগুলোকে অ্যাপ্লিকেশন স্বতন্ত্র বা পৃথক পৃথক স্টোরেজ ডিভাইস হিসেবে চিনে থাকে। রেইডের ক্ষেত্রে সব ডিস্কই অ্যাপ্লিকেশনের কাছে একটি মাত্র ডিস্ক হিসেবে বিবেচিত হয়। রেইডের ফল্ট টলারেন্ট বান্স অব ডিস্কস-এর তুলনায় বেশি। তবে উচ্চতর দক্ষতার কারণে অনলাইন ডাটা স্টোরেজের জন্য ডিস্ক সিস্টেম অধিক পছন্দনীয়। টেপ সিস্টেমে স্টোরেজ টেপগুলো পর্যায়ক্রমে সজ্জিত থাকে। টেপ সিস্টেমে আরো যা থাকে তাহলো ড্রাইভস, অটোলোডার এবং লাইব্রেরি। টেপ ড্রাইভ টেপকে যুক্ত করে এবং টেপে ডাটা লেখা বা পড়ার কাজ করে। টেপ অটোলোডার অটো ব্যাকআপের কাজ করে থাকে। এগুলো বিরতিহীনভাবে ব্যাপক পরিমাণে ডাটা উৎপন্ন করতে পারে।

স্যান ব্যবস্থাপনা : স্যান ব্যবস্থাপনার জন্য প্রধানত দুটো পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এগুলো হলো :

ক. এসএনএমপি (Simple Network Management Protocol) :

এসএনএমপি মূলত টিসিপি/আইপিভিত্তিক একটি ম্যানেজমেন্ট প্রটোকল এবং এটি মৌলিক ব্যবস্থাপনার কাজ করে থাকে। এটি স্যানভুক্ত আক্রান্ত কোনো ডিভাইসের (যেমন ড্রাইভ, ফ্যান, পাওয়ার ইউনিট) সমস্যা সম্পর্কে একটি নেটওয়ার্ক নোডকে সজাগ করে দেয়। তবে এসএনএমপি আগে থেকেই কোনো সমস্যা অনুমান করতে পারে না। সমস্যা সৃষ্টি হবার পরই সে সিস্টেমকে জানিয়ে দেয়। এছাড়া এর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দুর্বল।

খ. পিএমপি (Proprietary Management Protocol) :

এক্ষেত্রে অনেক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিজস্ব স্যান ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার রান করার জন্য পৃথক একটি টার্মিনাল যেমন এনটি সার্ভার ল্যানে যুক্ত থাকে। এতে স্যানে বাড়তি কিছু ফিচার যেমন-সিকিউরিটি জোনিং, ম্যাপিং, মাস্কিং, ব্যাকআপ অ্যান্ড রিস্টোর, ফল্ট টলারেন্স ইত্যাদি ফিচার যোগ হয়।

উল্লেখযোগ্য স্যান ভেন্ডর :

বেশ কিছু নামকরা আইটি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যানের উন্নয়ন ও বহুল ব্যবহারের বিষয়টি প্রোমোট করছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- হিটাচি ডাটা সিস্টেম, হিউলেট প্যাকার্ড, কম্প্যাক, স্টোরেজ টেক, কমপিউটার অ্যাসোসিয়েট, ওরাকল, ডাটাকোর, সান, ডেল ইত্যাদি। এসব স্যান পণ্য নির্মাতা ও প্রোমোটারদের নিয়ে গঠিত হয়েছে স্টোরেজ নেটওয়ার্ক ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্স (SNIA)।

উপসংহার :

স্যানের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হচ্ছে একে বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের সার্ভার এবং স্টোরেজ ডিভাইসের সাথে কাজ করানো। অর্থাৎ একই সাথে একাধিক সিস্টেমের সাথে ডাটা বিনিময় উপযোগী করে তোলা। পরিশেষে বলা যায় স্যান ওইসব অ্যাপ্লিকেশনের জন্য উপযোগী, যেখানে ফাইবার চ্যানেল বা ফাইবার চ্যানেল প্রটোকল সংক্রান্ত নিরাপত্তা ঝুঁকি সহজেই সামাল দেয়া যায়। এছাড়া যেসব ক্ষেত্রে ফাইবার চ্যানেল নোড এবং লিঙ্ক-এর কারণে সিস্টেমের পারফরমেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেসব ক্ষেত্রেও স্যান অত্যন্ত কার্যকরী একটি ব্যবস্থা বৈকি।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : kazisham@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস