লেখক পরিচিতি
লেখা সম্পর্কিত
প্রয়োজন নিজস্ব প্রযুক্তিভিত
যেকোনো ক্ষেত্রে নিজেদের সুদৃঢ় অবস্থান গড়ে তুলতে চাইলে অপরিহার্যভাবেই চাই নিজস্ব ভিত্তি। প্রযুক্তির সামগ্রিক ক্ষেত্রে এ কথা সমধিক প্রযোজ্য। নিজস্ব ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে না পারলে আমরা কখনোই প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে টেকসই ও নির্ভরযোগ্য অবস্থান নিশ্চিত করতে পারব না। সেজন্য আমরা আমাদের লেখালেখি ও সম্পাদকীয় বক্তব্যে সেই কাঙ্ক্ষিত ভিত করার প্রয়োজনীয় চাহিদাটুকু জোর তাগিদের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ও সেই সাথে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরেছি।
এই উপলব্ধিকে মাথায় রেখে আমরা কয়েক বছর আগেই আমাদের একটি সংখ্যায় প্রচ্ছদ কাহিনীর শিরোনাম করেছিলাম- ‘বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট চাই’। বাংলাদেশের জন্য নিজস্ব স্যাটেলাইটের এটাই ছিল প্রথম দাবি। সে দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি এর যৌক্তিকতাও উপস্থাপন করেছিলাম প্রতিবেদনে। রেখেছিলাম প্রয়োজনীয় সুপারিশ। সুখের কথা, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার দেশের জন্য একটি নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আশা ব্যক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের প্রতিনিধিদলের কাছে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দেশের জন্য নিজস্ব একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সরকারের এ অবস্থান বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সব মহলে সমাদৃত হয়েছে। আমরা আশা করবো, যথাশিগগির বর্তমান সরকার এ কাজটি সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করবে।
আমাদের সুদৃঢ় বিশ্বাস এ সরকারের দেয়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নিজস্ব স্যাটেলাইট প্রধান ভূমিকা পালন করবে। তাছাড়া আমরা যদি আমাদের প্রযুক্তি খাতের জন্য একটি নিজস্ব শক্তিশালী ভিত গড়ে তুলতে চাই তবে এর কোনো বিকল্প নেই। বছরের পর বছর অন্যের ভাড়া করা স্যাটেলাইট থেকে ন্যূনতম সুযোগ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা যেমনি খরচ হয়, তেমনি এক্ষেত্রে থাকতে হয় পরনির্ভরশীল হয়ে। যদি নিজস্ব স্যাটেলাইট সুবিধা পেতে পারি, তখন বাংলাদেশ হতে পারবে জাতিসংঘ মহাকাশ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত। লাভ করবে আন্তর্জাতিক জ্যোর্তিবিজ্ঞান সমিতির সদস্যপদ। অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে আরো বেশ কটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থায়। তাছাড়া দেশের প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন শিক্ষামূলক চ্যানেল, মহাকাশ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা, পাঠ্যপুস্তকে এর অন্তর্ভুক্ত করা, ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও ব্যাপক বাণিজ্যিক মুনাফা অর্জনের সুযোগও সৃষ্টি হবে। তাই আমরা মনে করি, সরকারকে গুরুত্বের সাথে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়নের কথা ভাবতে হবে।
আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট-২০০৯’। এই কংগ্রেসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যোগ দেবেন অসংখ্য প্রতিনিধি। এরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ বিশেষজ্ঞজন। বেজিং ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে এরা পরস্পরের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন। এই অভিজ্ঞতা বিনিময় প্রযুক্তির উন্নয়নে অনেক দেশের সামনে উন্মোচিত হবে নতুন নতুন দুয়ার। বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল এই ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে যোগদানের জন্য প্রস্ত্ততি নিয়েছে। বাংলাদেশের ‘প্রিপকম ফর ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট-২০০৯’ এ লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারও এক্ষেত্রে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছে, যাতে বেজিং ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে বাংলাদেশকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা যায়। আমরা তাদের এই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের সাফল্য কামনা করছি।
সুপ্রিয় পাঠক, আপনারা জানেন আমরা আমাদের পাঠকদের তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি তাদের তথ্যপ্রযুক্তির সাথে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত করতে চাই। সে লক্ষ্যে আমরা এবারে পাঠকদের কাছে আমাদের প্রচ্ছদ কাহিনীর মাধ্যমে কমপিউটার কেনা ও সংযোজনের একটি সরল গাইড উপস্থাপনের প্রয়াস পাবো। আশা করি, এ লেখাটি পড়ে একজন সাধারণ মানুষ নিজে নিজে কমপিউটার কেনার সিদ্ধান্ত নিতে আরো সাহসী হয়ে উঠতে পারবেন, তেমনি চাইলে কমপিউটার সংযোজনও করতে পারবেন নিজে নিজে।
সবশেষে ধন্যবাদ জানাতে চাই কমপিউটার জগৎ মেগা ক্যুইজ-২০০৯-এ যারা অংশ নিয়েছেন এবং যারা পুরষ্কার পেয়েছেন, তাদের সবাইকে। আমরা আশা করবো, আগামী দিনে আরো উৎসাহ- উদ্দীপনা নিয়ে এ ধরনের ক্যুইজে অংশ নেবেন।