তথ্যপ্রযুক্তির সুবাদে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে মোবাইল ফোন এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। আর মোবাইল ফোনে যুক্ত হচ্ছে দিন দিন নতুন নতুন সুবিধা। মোবাইল ফোনে এখন টিভি দেখা সম্ভব। এছাড়াও মোবাইল সেটে রয়েছে ক্যামেরা, ইন্টারনেট, গান শোনা, ই-মেইল, ভিডিও দেখা ও করার সুবিধা। মোবাইল ফোন সফটওয়্যার তৈরির কোম্পানিগুলো কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই। তবে মোবাইল ফোনের হার্ডওয়্যারের দিক থেকে রয়েছে অনেক সমস্যা। এ সংখ্যায় মোবাইল হার্ডওয়্যার কন্ট্রোল সেকশন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ফোনের মাদারবোর্ডের বড় আইসি এবং ছোট ছোট ক্যাপাসিটর, রেজিস্টর, ট্রানজিস্টর ইত্যাদি কম্পোনেন্ট নিয়ে কন্ট্রোল সেকশন। কন্ট্রোল সেকশন পড়ার আগে আপনাকে কম্পোনেন্টসমূহের কাজ ও তার মান কিভাবে বের করতে হবে এর ওপর ধারণা থাকতে হবে।
রেজিস্টরের কাজ
বৈদ্যুতিক বর্তনীতে যে ইলেক্ট্রনিক কম্পোনেন্ট বিদ্যুৎ প্রবাহকে নির্দিষ্ট পরিমাণ বাধা দেয় তাকে রেজিস্টর বলে। আর কোনো রেজিস্টর যে পরিমাণ বাধা দেয় তাকে রেজিস্টেন্স বলে। এক কথায় বিপরীতমুখী ফোর্সকে রেজিস্টেন্স বলে বা রোধ বলে। রেজিস্টরের একক হলো ওহ্ম।
রেজিস্টরের কালার কোডিং এবং ক্যালকুলেশন
রেজিস্টরের গায়ে রেজিস্টেন্সের মান লেখা থাকে কিন্তু কিছু রেজিস্টরের গায়ে কালার ব্যান্ড দেয়া থাকে। কালার ব্যান্ড দেখে রেজিস্টরের মান বের করার জন্য কালার কোডিং ব্যবহার করা হয়। যে দিক কালার পিনের কাছাকাছি থাকে সেদিক থেকে মান বের করতে হয়। ১ম ও ২য় ব্যান্ড কালার কোড অনুযায়ী। ৩য় ব্যান্ডটি হচ্ছে মাল্টিপ্লাইং ফ্যাক্টর। ৪র্থ ব্যান্ডটি হচ্ছে টলারেন্স। ৪র্থ ব্যান্ডটি না থাকলে টলারেন্স +/- ২০%।
ছবি-১ ছবি-২
কালার কোডিং টেবল
এছাড়াও এভোমিটারের সাহায্যে রেজিস্টরের মান নির্ণয় করা যায়। মিটারের পজিটিভ এবং নেগেটিভ সংযোগ মিটারের গায়ে যথাস্থানে আছে কিনা লক্ষ করতে হবে। এবার পজিটিভ এবং নেগেটিভ অন্য প্রান্তে একত্রে লাগিয়ে ধরতে হবে, যদি মিটারের মান শূন্য না আসে তাহলে অ্যাডজাস্ট্যাবল নবটি ঘুরিয়ে মান শূন্যের ঘরে নিয়ে আসুন। এভাবে রেজিস্টরের মান মাপার মিটারটি সেট করা হবে।
ক্যাপাসিটরের কাজ
ক্যাপাসিটরের কাজ বিদ্যুৎশক্তি জমা করে রাখা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ছেড়ে দেয়া। ক্যাপাসিটরের দুই প্রান্তে বৈদ্যুতিক উৎসের ভোল্টেজ দিলে তা চার্জপ্রাপ্ত হয় এবং বৈদ্যুতিক উৎসটিকে সরিয়ে নিলে যে পরিমাণ চার্জ গ্রহণ করেছিল তা জমা করে রাখে। যদি কোনো পরিবাহী তার দিয়ে দুই প্রান্ত যুক্ত করা হয় তাহলে ধারণ করা চার্জ ছেড়ে দেয়। ক্যাপাসিটরের একক ফেরাড। মোবাইলে সাধারণত দুই ধরনের ক্যাপাসিটর ব্যবহার হয়।
১. ইলেকট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর, ২. সিরামিক ক্যাপাসিটর। ইলেকট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর : দুটি অ্যালুমিনিয়াম প্লেটের মধ্যে ইলেকট্রোলাইট বা তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ দিয়ে তৈরি বলে একে ইলেকট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর বলে। ইলেকট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর দুই ধরনের।
১. পোলারিটি ক্যাপাসিটর : ক্যাপাসিটরগুলো সাধারণত হলুদ রঙের হয়। যেদিকে সাদা/বাদামি দাগ থাকে সে দিকের পিনটি (+) পজিটিভ এবং অপরদিক (-) নেগেটিভ মান। নন-পোলারিটি ক্যাপাসিটর ক্যাপাসিটর মোডে রেখে মান বের করতে হবে।
২. সিরামিক ক্যাপাসিটর : Avometer -এর X10-এ রেখে ক্যাপাসিটর মাপতে হয়। ক্যাপাসিটর ভালো থাকলে রিডিং দেখিয়ে ব্যাক করবে। নষ্ট হলে কোনো রিডিং দেখাবে না।
ট্রানজিস্টর
এর সাধারণ কাজ হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করা। এছাড়াও এটি সুইচ হিসেবে ব্যবহার হয়। ট্রানজিস্টর সাধারণত তিন পারবিশিষ্ট হয়। Base-Input, Collector- Output I Emitter-Ground।
ট্রানজিস্টর আবার দুই ধরনের : PNP Transistor, এবং NPN Transistor।
কন্ট্রোল সেকশনের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট :
* সবচেয়ে বড় আইসি। এর চারদিকে পা রয়েছে।
* চিকন এবং লম্বা আইসি হলো র্যা ম।
* রম র্যা মের মতো লম্বা কিন্তু সাইজে একটু ছোট।
* ইইপ রম দেখতে অনেকটা চার্জিং আইসির মতো এবং ৮ পা থাকে।
* অডিও আইসি সিপিইউ থেকে ছোট আকৃতির হয়।
আগামী সংখায় কন্ট্রোল সেকশনের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। (k-এর মান 1000, M -এর মান 1000000)
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : nehad_aiub@yahoo.com