২০০৭-এর নভেম্বরে গুগল ম্যাপস চালু হবার পর পরই পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অনেক আলোচনা-সমালোচনার পরও এক সময় ঠিকই মানুষের প্রতিদিনের জীবনের একটা বড় অংশে রয়েছে গুগল ম্যাপসের ভূমিকা। গুগল ম্যাপস-এর আগের নাম গুগল লোকাল গুগল ম্যাপস হচ্ছে ওয়েবভিত্তিক ম্যাপপ্রযুক্তি, যা শুধু অ-বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার হয়। এখানে রাস্তার ছবি দেয়া আছে, যার মাধ্যমে সারাবিশ্বের মানুষ বিভিন্নভাবে ভ্রমণ করার সুবিধা পাবে। গুগল ম্যাপসের মাধ্যমে বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন বিষয়ের তথ্যসমূহ নিমিষের মধ্যে চোখের সামনে হাজির হয়। গুগল ম্যাপসের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও উপস্থাপন করা যায়, গুগল তা ম্যাপের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে। এসব সুবিধা দেয়ার ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি গুগল উপস্থাপন করেছে গুগল ল্যাটিচ্যুড।
গুগল ল্যাটিচ্যুড মূলত গুগল ম্যাপসের একটি নতুন ফিচার। এটি একই সাথে কার্যকর মোবাইল ফোন ও কমপিউটারে। এর মাধ্যমে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যরা কোন জায়গায় অবস্থান করছেন তার কাছাকাছি জায়গাটি চিহ্নিত করা যায়। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের কেউ যদি লোকেশন শেয়ার করতে চান, তবে গুগল অ্যাকাউন্ট জি-মেইল দিয়ে sign in করতে হবে। এর পর অন্য প্রান্তের বন্ধুকে আমন্ত্রণ করতে হবে। যারা গুগল টক ব্যবহার করেন, তারাও ল্যাটিচ্যুডের সাথে ইন্টিগ্রেট করতে পারেন। লোকেশন ছাড়াও শেয়ার করতে পারেন মেসেজ, ছবিসহ দেখতে পারেন নিজের স্ট্যাটাস। এছাড়াও সুবিধা নিতে পারেন ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেঞ্জারের। এই মুহূর্তে ২৭টি দেশে এবং ৪২টি ভাষায় গুগল ল্যাটিচ্যুড দেখা যাবে।
গুগল ল্যাটিচ্যুড মোবাইলের মাধ্যমে দেখতে চাইলে মোবাইলের ব্রাউজারে গিয়ে লিখতে হবে www.google.com/latitude। এখান থেকে ১.৬ মেগাবাইটের একটি ছোট সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিতে হবে। এরপর আপনার জি-মেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করতে হবে। লগইনের পর আপনার বন্ধু অথবা যার লোকেশন দেখতে চান তাকে সংযুক্ত করে আমন্ত্রণ করতে হবে, অথবা অপর প্রান্ত থেকে যদি কেউ আমন্ত্রণ পাঠায়, তা গ্রহণ করতে হবে। আমন্ত্রণ গ্রহণ করার পর নিজের গোপনীয়তা (প্রাইভেসি) রক্ষা (কন্ট্রোল) করা যায়। সেখানে নিজের তথ্য ও লোকেশন ইচ্ছে করলে লুকিয়ে রাখা যায়। অপর প্রান্তের বন্ধু যদি আপনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে, তবে আপনি গুগল ম্যাপসের মাধ্যমে ওই ব্যক্তি ওই মুহূর্তে কোথায় অবস্থান করছে, তা দেখতে পাবেন। যদি ওই ব্যক্তি জি-মেইল অ্যাকাউন্টে ছবি ব্যবহার করে, তবে ম্যাপের সাথে ছবিও দেখা যাবে। যদি ওই ব্যক্তি গুগল ওয়াইডগেট সংযুক্ত করে তবে তার পাশের বন্ধুদের লোকেশনও আপনি দেখতে পাবেন।
ল্যাটিচ্যুড ব্যবহার করে পাওয়া অবস্হান ও ছবি
কমপিউটারের মাধ্যমে লোকেশন দেখতে চাইলে কমপিউটার ব্রাউজারে গিয়ে লিখতে হবে www.//google.com/latitude। এখান থেকে iGoogle-এ ক্লিক করতে হবে। তারপর জি-মেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করতে হবে। যাদের জি-মেইল অ্যাকাউন্ট নেই, তাদের নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এজন্য খুব সহজ একটা ফরম পূরণ করতে হবে। লগইনের পর iGoogle-এর একটি হোমপেজ আসবে। বন্ধুদেরকে অনুরোধ পাঠানোর জন্য রয়েছে একটি ছোট টুলবার, সেখানে যেকাউকে মেইলের মাধ্যমে অনুরোধ পাঠানো যাবে। আর পুরনো যেকাউকে সংযুক্ত করতে চাইলে শুধু সিলেক্ট করে সংযোগ দিলেই হবে। এরপর গুগল এডগেট চালু করতে হবে। ‘এডগেট’ হচ্ছে লোকেশন শেয়ার করার একটি অনুমোদন।
শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে তিন ধরনের অপশন দেয়া যায় :
০১. যে এলাকায় অবস্থান করছে,
০২. যেই শহরে অবস্থান করছে,
০৩. সব তথ্যকে লুকিয়ে রাখা।
যেসব ফোন সাপোর্ট করবে :
এখন পর্যন্ত ৫টি ফোনসেটে গুগল ল্যাটিচ্যুড ভালো কাজ করে। ফোনগুলো হচ্ছে- অ্যান্ড্রিয়েট, ব্ল্যাকবেরি, আইফোন, সিমবিয়ান এস-৬০ ও উইন্ডোজ মোবাইল।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : info@ahopu.com