• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > রিমোট অ্যাকসেসের কাজে টিমভিউয়ার
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: এস.এম. গোলাম রাব্বি
মোট লেখা:৭২
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - জুন
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ইনটারনেট
তথ্যসূত্র:
ইন্টারনেট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
রিমোট অ্যাকসেসের কাজে টিমভিউয়ার

ধরুন, আপনি ঢাকায় বসবাস করছেন। আর আপনার বন্ধু থাকেন নিউইয়র্কে। কোনো একটি বিশেষ কারণে নিউইয়র্কে অবস্থানরত আপনার ওই বন্ধুর কমপিউটারটি ঢাকায় বসে আপনাকে চালাতে হবে। আবার ধরুন, আপনার অফিস ঢাকাতে। সিডনি, লন্ডন কিংবা প্যারিসে অবস্থিত আপনার প্রতিষ্ঠানের শাখাসমূহে একই সাথে আপনার কমপিউটারের কিছু প্রেজেন্টেশন দেখাতে চান, কিংবা ওই শাখাগুলোর সব সহকর্মীর সাথে সভা করতে চান। অথবা ধরুন, আপনি গাড়িতে বসে আছেন। গাড়িতে বসে আপনি আপনার ল্যাপটপ কমপিউটার থেকে বাসার ডেস্কটপ কমপিউটারটি চালাতে চান। এরকম নানাবিধ প্রয়োজন আজকাল খুব সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে মেটানো সম্ভব। ‘টিমভিউয়ার’ নামের একটি সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে উল্লেখিত সুবিধাগুলো যেকোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী পেতে পারেন অনায়াসে। এ লেখায় টিমভিউয়ারের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

রিমোট সাপোর্ট, রিমোট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ট্রেনিং এবং সেলসের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আলাদা আলাদা প্যাকেজ সরবরাহ করে থাকে এবং সেগুলোর জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান মূল্যও রাখে। কিন্তু টিমভিউয়ার আপনার প্রয়োজনীয় সব সলিউশন একই প্যাকেজের মধ্যে দেয়। টিমভিউয়ারের একটি সাধারণ এবং সহনীয় মূল্যের প্যাকেজে সব মডিউল অন্তর্ভুক্ত থাকে। সব বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীকে টিমভিউয়ার কিনে ব্যবহার করতে হয়। বাণিজ্যিক কাজের বাইরে ব্যবহারের জন্য এটি ফ্রি ব্যবহার করা যায়। অর্থাৎ টিমভিউয়ারের দু’টি সংস্করণই রয়েছে। একটি লাইসেন্স সংস্করণ। অন্যটি ফ্রি।

যেসব কমপিউটার এবং সার্ভার ঠিকভাবে কাজ করে না, টিমভিউয়ারের রিমোট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সুবিধা ব্যবহার করে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সিস্টেম সার্ভিস ইনস্টলেশনের মাধ্যমে দূর থেকেই কমপিউটার রিবুট এবং পুনঃসংযোগ করা যায়।

টিমভিউয়ারে রয়েছে ইন্টিগ্রেটেড ফাইল ট্রান্সফার সুবিধা। এর মাধ্যমে আপনি এক কমপিউটার থেকে অন্য কমপিউটারে ফাইল ও ফোল্ডার কপি করতে পারবেন।

উচ্চতর নিরাপত্তা ব্যবস্থাসম্বলিত টিমভিউয়ারের সব সংস্করণই কী-এক্সচেঞ্জ এবং এইএস (৩৫৫ বিট) সেশন এনকোডিংয়ের মাধ্যমে ডাটা চ্যানেলগুলো সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ রাখে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই মান এইচটিটিপিএস কিংবা এসএসএলেও ব্যবহার হয়।

টিমভিউয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন জায়গায় অবস্থিত বিভিন্ন পার্টনারের সাথে আপনার কমপিউটার শেয়ার করতে পারবেন। ধরুন, আপনার টিমের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছে। এমন অবস্থায় আপনার কমপিউটারের একটি ডকুমেন্ট সবার সামনে উপস্থাপন করতে চান। টিমভিউয়ারের মাধ্যমে এসব সদস্যের কমপিউটারের সাথে সংযুক্ত হয়ে খুব সহজেই এ কাজটি করতে পারবেন।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিমভিউয়ার ব্যবহার করে দূর থেকে যেকোনো কমপিউটার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কোনো আলাদা ইনস্টলেশনের দরকার নেই। শুধু টিমভিউয়ারটি দু’পাশের কমপিউটারে চালান এবং তাদের সংযুক্ত করুন। ব্যস, দৃঢ় ফায়ারওয়াল থাকলেও আপনি এ দু’টি কমপিউটারকে সংযুক্ত এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

রিমোট কন্ট্রোল সফটওয়্যার ব্যবহারে সবচেয়ে বড় অসুবিধাগুলো হলো ফায়ারওয়াল, ব্লকড, আইপি এবং লোকাল আইপি অ্যাড্রেসের জন্য ন্যাট (নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস ট্রানস্লেটর) রাউটিং। টিমভিউয়ার ব্যবহার করলে আপনাকে ফায়ারওয়াল নিয়ে চিন্তিত হতে হবে না। এটি আপনার পার্টনারের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি পথ খুঁজে নেবে।

ধরুন, আপনি গাড়িতে বসে আছেন। এ অবস্থায় ল্যাপটপ থেকে আপনার বাসা কিংবা অফিসের কোনো কমপিউটারকে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। টিমভিউয়ার ওয়েব কানেক্টরের মাধ্যমেও আপনি এ কাজটি করতে পারেন। এইচটিএমএল এবং ফ্ল্যাশে তৈরি এ সলিউশন যেকোনো ব্রাউজার এবং অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহার করা যাবে।

আপনি যদি ল্যান (LAN) অথবা ডায়ালআপ সংযোগ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে টিমভিউয়ার নেটওয়ার্ক সংযোগের ওপর ভিত্তি করে ডিসপ্লের মান এবং নেটওয়ার্কের গতি অপটিমাইজ করবে।

আগেই বলা হয়েছে, টিমভিউয়ার লাইসেন্স ও বিনামূল্যে- দু’ভাবেই পাওয়া যায়। তবে লাইসেন্স সংস্করণটিও অপেক্ষাকৃত সুলভ মূল্যে কেনা যায়।

এবার আলোচনা করা যাক টিমভিউয়ারের ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে। টিমভিউয়ার সফটওয়্যারটি যদি আপনার কাছে না থাকে, তাহলে http://www.teamviewer.com/downlond/index.aspx সাইট থেকে অল-ইন-ওয়ান প্যাকেজটি ডাইনলোড করে নিন। একজন অবাণিজ্যিক ব্যবহারকারী হিসেবে এবার ডাউনলোড করা সফটওয়্যারটি ইনস্টল করে নিন। ইনস্টল করার সময়ে একটি পাসওয়ার্ড সেট করুন। এই পাসওয়ার্ডটি পরে আপনার কাজে লাগতে পারে। ইনস্টলেশন টাইপের ক্ষেত্রে আপনার পছন্দমতো টাইপ সিলেক্ট করুন। (চিত্র-১ লক্ষ্য করুন)।


চিত্র-১

এবার অ্যাকসেস কন্ট্রোলের ক্ষেত্রে প্রথম অপশনটি সিলেক্ট করুন, যাতে আপনার সহযোগীর কমপিউটারের অ্যাকসেস পায়। (চিত্র-২ লক্ষ্য করুন)।


চিত্র-২

ইনস্টলেশন শেষে চিত্র-৩-এর মতো একটি উইন্ডো আসবে। মূলত এটিই টিমভিউয়ারের মূল স্ক্রিন।


চিত্র-৩

মূল স্ক্রিনের বাম পাশে থাকবে আইডি এবং পাসওয়ার্ড। আর ডান পাশে থাকবে আপনার পার্টনারের আইডি লেখার একটি ড্রপ ডাউন লিস্ট বক্স এবং কোন্ টাইপের সংযোগ পেতে চান তার জন্য কিছু অপশন। আইডি এবং পাসওয়ার্ড আপনার পার্টনারকে বলুন, যাতে সে আপনার কমপিউটার অ্যাকসেস করতে পারে।

ধরে নিই, আপনি পার্টনারের কমপিউটার অ্যাকসেস করতে চান। চিত্র-৩-এর আইডি বক্সের আইডিটি আপনার পার্টনারের টিমভিউয়ার আইডি। রেডিও বাটন লিস্ট থেকে প্রথম অপশনটি সিলেক্ট করে ‘Connect to Partner’ বাটন ক্লিক করুন। ক্লিকের সাথে সাথে আপনার কাছে একটি পাসওয়ার্ড চাওয়া হবে।

পার্টনারের টিমভিউয়ার পাসওয়ার্ডটি দিয়ে ‘Log On’ বাটনে ক্লিক করলেই পার্টনারের কমপিউটারটি আপনি অ্যাকসেস করতে পারবেন। উল্লেখ্য, পার্টনারের টিমভিউয়ার আইডি এবং পাসওয়ার্ড আপনাকে জানতে হবে আগে থেকেই। একই পদ্ধতিতে আপনার কমিউটারটিতে আপনার পার্টনার অ্যাকসেস করতে পারবেন। রিমোট সাপোর্টের মতো প্রেজেন্টেশন, ফাইল ট্রান্সফার, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ইত্যাদি সংযোগও করতে পারবেন পার্টনারের কমপিউটারের সাথে। উল্লেখ্য, অবাণিজ্যিক টিমভিউয়ারে সুবিধাগুলো বাণিজ্যিক সংস্করণের চেয়ে বেশ কিছু কম থাকে।

কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : rabbi1982@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস