লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম:
সৈয়দ হাসান মাহমুদ
মোট লেখা:১৪৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - সেপ্টেম্বর
স্টার ক্রাফট ২
ডেভেলপার : ব্লিজার্ড এন্টারটেইনমেন্ট
পাবলিশার : ব্লিজার্ড এন্টারটেইনমেন্ট
সিরিজ : স্টার ক্রাফট
ক্যাটেগরি : রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি
মোড : সিঙ্গেল/মাল্টিপ্লেয়ার
গেমের জগতে ব্লিজার্ড এন্টারটেইনমেন্ট একটি অবিস্মরণীয় নাম। আমেরিকান এই গেম নির্মাতা কোম্পানির যাত্রা শুরু ১৯৯১ সালে সিলিকন অ্যান্ড সাইন্যাপস নামে। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি ব্লিজার্ড এন্টারটেইনমেন্ট নামে আত্মপ্রকাশ করে এবং সেই বছরেই আলোচিত হয় তাদের প্রথম সফল গেম ওয়ার ক্রাফট-ওর্ক ও হিউম্যান। গেমিং দুনিয়ায় তাদের অবদানের কথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ওয়ার ক্রাফট, স্টার ক্রাফট ও ডিয়াব্লো গেম সিরিজের জন্য। এ তিন সিরিজের গেমগুলো স্ট্র্যাটেজি ও রোল প্লেয়িংভক্ত গেমারদের কাছে অমৃতের মতো। আজকের আলোচনায় উঠে এসেছে ব্লিজার্ডের বানানো স্টার ক্রাফট ২ গেমটি। বিশ্বকাঁপানো ও পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম গেম স্টার ক্রাফট গেমটি বের হবার প্রায় ১২ বছর অপেক্ষা শেষে গেমাররা এই সিরিজের দ্বিতীয় গেমটি হাতে পেলো।
সায়েন্স ফিকশন রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজি গেম স্টার ক্রাফট-উইংস অব লিবার্টি মুক্তি পেয়েছে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ও ম্যাক ওএস এক্স প্লাটফর্মের জন্য। গেম দুটির এক্সপানশন প্যাকও মুক্তি পেতে যাচ্ছে খুব শিগগির। প্যাক দুটি হচ্ছে হার্ট অব দ্য সোয়ার্ম ও লিজেসি অব দ্য ভয়েড। প্রথম এক্সপানশনটিতে জার্গদের বিরুদ্ধে ও পরেরটিতে প্রোটোস জাতির বিপক্ষে খেলতে হবে। নতুন এ গেমে জার্গ ও প্রোটোস উভয়ের সাথেই লড়াই করতে হবে। গেমের পটভূমি স্থাপন করা হয়েছে ২৫০০ সালের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির আশপাশের কিছু গ্রহ নিয়ে। গেমে তিন ধরনের জাতি দেখা যাবে। প্রথমটি হচ্ছে মানবজাতি যারা গেমে টেররান নামে পরিচিত। তারা পৃথিবী বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় স্পেসশিপে বসবাস করে এবং অন্যান্য গ্রহ থেকে রিসোর্স সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ভয়ানক ও বিশাল আকৃতির পোকামাকড়সদৃশ জার্গ নামের জাতি। তৃতীয় জাতিটি হচ্ছে প্রোটোস, যারা সায়োনিক পাওয়ারের গুণে বেশ উন্নত ও শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হয়েছে। স্টার ক্রাফট সিরিজের প্রথম গেমের তিনটি এক্সপানশন ছিলো- ইনসুরেকশন, রেট্রিবিউশন ও ব্রুড ওয়ার। ব্রুড ওয়ারের কাহিনীর চার বছর পরের ঘটনা নিয়ে সাজানো হয়েছে স্টার ক্রাফট ২-এর কাহিনী। তাই গেমে পুরনো চরিত্র ও লোকেশনগুলোর দেখা মিলবে। গেমের মূল নায়কের চরিত্রে রয়েছে কমান্ডার জিম রেয়নর। সে স্বৈরাচারী টেররান ডোমিনিয়নের বিরুদ্ধে তার মুক্তি সংগ্রামী বাহিনীর নেতৃত্ব দেবে। টেররানদের পাশাপাশি তাকে নিয়ে গেমারকে জার্গ ও প্রোটোসদের সাথেও মোকাবেলা করতে হবে।
গেমের কাহিনী শুরু হয়েছে স্টার ক্রাফটের প্রথম পর্ব থেকে। তাই যারা আগের গেমগুলো খেলেননি তাদের কাহিনী বুঝতে কিছুটা সমস্যা হবে। তবে নতুন এ গেম খেলার সময় ধীরে ধীরে সব জানা যাবে কারণ ব্যাকফ্ল্যাশ হিসেবে পুরনো কাহিনী দেখানো হবে যা গেমারকে গেমের মূল উদ্দেশ্য বুঝতে সাহায্য করবে। সংক্ষেপে গেমের কাহিনী হচ্ছে- জিম রেয়নর ও তার প্রেমিকা সারাহ কেরিগেন টেররানদের পক্ষে ডোমিনিয়ন এম্পেরর আর্কটুরাস মেঙ্গক্সের অধীনে জার্গ ও প্রোটোসদের হাত থেকে গ্যালাক্সির গ্রহগুলো মুক্ত করার কাজে নিয়োজিত। কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষী আর্কটুরাসের খামখেয়ালির ফলে এক মিশনে সারাহ কেরিগেন জার্গদের হাতে বন্দী হয়। সে ইচ্ছে করলে তাকে বাঁচাতে পারতো কিন্তু সে তা না করে পুরো গ্রহের লাখো মানুষ ও জিমের প্রেমিকা সারাহকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে চলে যায়। এতে জিম ডোমিনিয়ান এম্পেররের বিরুদ্ধে মার্সেনারি দল গঠন করে এবং আর্কটুরাসের স্বৈরাচারী শাসন থেকে গ্যালাক্সির মুক্তির দাবিতে সংগ্রাম করতে থাকে। ওদিকে জার্গদের হাতে কেরিগেন মারা পড়ে না, ক্ষমতাবলে সে হয়ে ওঠে জার্গদের নেত্রী এবং তার নাম হয়ে যায় কুইন অব ব্লেড। সেও প্রতিশোধ নেবার জন্য আর্কটুরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তার জার্গ বাহিনী নিয়ে। টেররান, জার্গ, প্রোটোস ও কিছু ভাড়াটে মার্সেনারির মাঝে ঘাত-প্রতিঘাতে গেমের কাহিনীর নৌকা তরতর করে এগিয়ে যাবে।
গেমের মূল আকর্ষণ হচ্ছে গেমের ইউনিটগুলো এবং তাদের নিয়ে লড়াই করার কৌশল। একপক্ষের ইউনিটের জন্য আরেকপক্ষের ইউনিট কোনোটি কতটা কার্যকর তা বিবেচনা করে খেলতে হবে। ফ্লাইং ইউনিটের সাথে লড়াই করার জন্য উপযুক্ত ইউনিট এবং বড় বা ছোট আকারের ইউনিটের সাথে কোন ইউনিট বেশি মানানসই হবে তা বেশ বিচক্ষণতার সাথে নির্বাচন করতে হবে। গেমপ্লে অরিজিনাল গেমের মতোই রাখা হয়েছে এবং সেই সাথে দেয়া হয়েছে আরো আধুনিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। বেশিরভাগ ইউনিট পুরনো স্টার ক্রাফট থেকেই নেয়া তবে সেগুলো আপগ্রেড করার সুবিধা থাকায় গেমটির মজা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। গেমের মধ্যে প্রোটোস ইউনিটগুলো বেশ শক্তিশালী, টেররানরা মাঝারি এবং জার্গরা কম শক্তিশালী। কিন্তু জার্গরা সংখ্যায় অনেক বেশি তাই কম শক্তিশালী হলেও তাদের ছোটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। বেজ ডিফেন্স ও এয়ার অ্যাটাকের জন্য বেশ কিছু নতুন ইউনিট সংযোজিত হয়েছে। গেমের মজার কিছু ব্যাপারের মধ্যে রয়েছে জার্গ ও প্রোটোসদের প্রযুক্তি সংগ্রহ করে টেররানদের পক্ষে সেই প্রযুক্তির ওপর গবেষণা চালিয়ে তা আরো উন্নত করে নিজেদের কাজে লাগানো এবং গেম চলাকালীন কম সময়ে ইউনিট বানানোর জন্য শক্তিশালী মার্সেনারি টিম ভাড়া করা।
গেমে নতুন চরিত্র হিসেবে যোগ করা হয়েছে টাইকাস ফিন্ডলে নামের এক মার্সেনারিকে। এছাড়া গেমে অন্যান্য কিছু চরিত্রের মাঝে রয়েছে- জিমের সেকেন্ড ইন কমান্ড ম্যাট হর্নার, জেনেটিক রিসার্চের কাজে সাহায্যকারী ডা. এরিয়েল হ্যানসন, ঘোস্ট টিমের দলনেতা গ্যাব্রিয়েল টোশ, প্রোটোস জাতির ডার্ক টেম্পলার জেরাটুল এবং আর্কটুরাসের ছেলে ডোমিয়ান এম্পেররের উত্তরাধিকারী প্রিন্স ভ্যালেরিয়ান। গেমের গ্রাফিক্সের মান অন্যান্য যেকোনো রিয়েল টাইম স্ট্র্যাটেজির তুলনায় বেশ আকর্ষণীয়। গেমের ইউনিট, ভূমিরূপ, বিল্ডিং এবং অন্যান্য স্থাপনার আর্কিটেকচারাল গ্রাফিক্স এতটাই নিখুঁত যে তা নিজ চোখে না দেখা পর্যন্ত বোঝা যাবে না। গেমের শক্তিশালী গেম ইঞ্জিনের ফলে ইন-গেম মুভির গ্রাফিক্স সিনেমেটিক পর্যায়ের গ্রাফিক্সের সমতুল্য করে তোলা সম্ভব হয়েছে। গেমটিতে প্রায় ২৯টি মিশন রয়েছে যা শেষ করতে করতে নতুন এক্সপানশন বের হয়ে যাবে। তাই দেরি না করে শুরু করে দিন কাল্পনিক এক যাত্রা।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট
প্রসেসর : পেন্টিয়াম ৪, ২.৬ গিগাহার্টজ
মেমরি : ১ গিগাবাইট
ভিডিও : ১২৮ মেগাবাইট (জিফোর্স ৬৬০০জিটি/এটিআই ৯৮০০ প্রো)
হার্ডডিস্ক স্পেস : ১২ গিগাবাইট
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : shmt_21@yahoo.com