• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > www.uiscbd.ning.com একটি বৈচিত্র্যময় ব্লগ
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মানিক মাহমুদ
মোট লেখা:২৪
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১০ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
ওয়েব
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
www.uiscbd.ning.com একটি বৈচিত্র্যময় ব্লগ

যদি ব্লগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, ব্লগে কারা সবচেয়ে বেশি লেখে? সহজ উত্তর- যারা আইসিটি ব্যবহার করে। এদের মধ্যে যারা বর্তমান প্রজন্মের এবং আইটিঘেঁষা, তারাই সবচেয়ে বেশি লেখে। যারাই লিখুক, এই ব্লগারদের সাথে সমাজের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর অর্থাৎ তৃণমূল মানুষের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। সে অর্থে এসব ব্লগ যোগাযোগের যত শক্তিশালী মাধ্যমই হোক না কেন, এর সাথে বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা কাজ করে। সরকার যখন বলছে, সেবা যাবে জনগণের দোরগোড়ায়, আইসিটি হবে তার মাধ্যম, তখন ব্লগও হতে পারে তার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আনন্দের কথা হলো, ব্লগ যে তেমনি একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে তার প্রমাণ মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে।

দৃষ্টান্তমূলক সেই ব্লগটির নাম- ইউআইএসসি ব্লগ। এই ব্লগের জন্ম জুন ২০১০-এ। এ ক’মাসেই এর সদস্যসংখ্যা প্রায় এক হাজার। এতে লিখছেন জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, স্থানীয় সরকারের জেলা পর্যায়ে কর্মরত উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তা, বিসিসির কর্মকর্তারা। লিখছেন বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিল তথা বিসিসি জেলা পর্যায়ে কর্মরত সহকারী প্রোগ্রামাররা, যারা জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণের প্রশিক্ষক হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো, এই ব্লগে ছয় শতাধিক উদ্যোক্তাও লিখছেন, যারা বয়সে যুব পুরুষ ও যুব নারী, তারা কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে উদ্যোক্তা হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে আইসিটি ব্যবহার করে সত্যিকার অর্থে জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেবার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ব্লগে এই উদ্যোক্তার সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

উদ্যোক্তারা এখানে লেখেন কিভাবে তারা ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে মানুষকে সেবা দিচ্ছেন, এ প্রক্রিয়ায় মানুষ কতটা উপকৃত হচ্ছে, কি প্রভাব পড়ছে স্থানীয় জনজীবনে তার অভিজ্ঞতা। মানুষ আসলে কি তথ্য চায়, কি সেবা চায়, কিভাবে সেবা পেলে তাদের সুবিধা হয়, এসব অভিজ্ঞতা তারা তুলে ধরছেন নিয়মিত। এই সেবা কার্যক্রম চালাতে গিয়ে তারা কিভাবে ক্ষমতায়িত হচ্ছেন, কি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন, তারও বর্ণনা আসছে এই ব্লগের মধ্য দিয়ে। স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা লিখছেন- ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রমকে তারা কিভাবে বেগবান করছেন। এভাবে সবার সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা তুলে ধরার কারণে ইউআইএসসি ব্লগটি প্রচলিত মানের ব্লগের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। এটি এখন অভিজ্ঞতা বিনিময় করার মাধ্যম নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে একটি বিস্তৃত কাজের প্রক্রিয়াকে ফলোআপ করার শক্তিশালী মাধ্যমে। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর যে অভিজ্ঞতা তা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া, উৎসাহ তৈরি করা এবং ব্যাপক প্রচারণার কাজেও যুক্ত হয়েছে এই ব্লগটি। সেবা পৌঁছে দেবার প্রক্রিয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের নানা সমস্যা যেমন উঠে আসছে এই ব্লগে, তেমনি এর স্থানীয় সমাধানও বেরিয়ে আসছে এই ব্লগের মধ্য দিয়ে।

শক্তিশালী ফলোআপ টুল

বিসিসির প্রশিক্ষকদের একটা কাজ হলো উদ্যোক্তা তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ দান করা। এই প্রশিক্ষকদের দায়িত্ব কেবল সুষ্ঠুভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা নয়। বরং প্রধান দায়িত্ব হলো সঠিক উদ্যোক্তা তৈরি করা, তা হচ্ছে কি-না প্রশিক্ষণপরবর্তী সময়ে খোঁজ রাখা। সঠিক উদ্যোক্তা তৈরির জন্য কেবল প্রশিক্ষককে সেশন পরিচালনা করলেই হয় না। তাকে খোঁজ রাখতে হয় উদ্যোক্তা বাছাই করার সময় ইউএনও এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের ঠিকভাবে যা যা বিবেচনা করার কথা তা করছেন কি-না। ব্লগে এ নিয়ে আলোচনা চলমান থাকার কারণে যার যত প্রশ্ন তা এখানে তুলে ধরা হয়। এই প্রশিক্ষকরা নিজ দায়িত্বে প্রত্যেকে কমপক্ষে একটি করে ইউআইএসসি পরিদর্শন করেন। সেবা গ্রহীতাদের সাথে আলোচনা করেন। এর মধ্য দিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন ইউআইএসসি-কে টেকসই করতে হলে সত্যিকারের চ্যালেঞ্জগুলো কি কি। খুঁজে দেখেন সম্ভাবনাগুলো কি কি। এসব জেনে পরে এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন। এসব অভিজ্ঞতা যখন ব্লগে আসে তখন তা এক মূল্যবান তথ্যায়ন হয়ে দাঁড়ায়। এসব অভিজ্ঞতার আলোকে একাধিক এলাকার উদ্যোক্তারা পরে তাদের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা তুলে ধরতে শুরু করেন। পাশাপাশি ইউএনও ও এডিসি যারা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন, তারাও অনেক চিন্তার খোরাক পেয়েছেন বলে জানান এই ব্লগ পড়ে।



ব্লগের মধ্যে এডিসিরা, ইউএনওরা নিয়মিত লিখছেন। উদ্যোক্তারা, প্রশিক্ষকরা যেসব প্রশ্ন করছেন, যেসব সমস্যা উত্থাপন করছেন, তারা তার যথাযথ উত্তর দিচ্ছেন। উত্তর পেয়ে একাধিক উদ্যোক্তা জানিয়েছেন ‘এটা বিরল ঘটনা’। একাধিক উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, এভাবে লেখালেখির মধ্য দিয়ে এডিসিরা এটা সহজে উপলব্ধি করেছেন যে, ইউআইএসসি দেখাশোনা করা কেবল যেনতেনভাবে করলেই চলবে না, পাশাপাশি এই আমলাদের সাথে আমাদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে, যা আগে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। এভাবে সুসম্পর্ক স্থাপন হবার কারণে অনেক উদ্যোক্তা তার ব্যক্তিগত সমস্যার কথা এডিসিদের বলতে পেরেছেন যার সাথে ইউআইএসসির টেকসই হয়ে থাকার সম্পর্ক রয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ে তথ্যভান্ডার তৈরি হচ্ছে

এ ব্লগের মধ্য দিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে তথ্যভান্ডার তৈরি হচ্ছে। উদ্যোক্তারা স্থানীয় চাহিদা জানেন। এই চাহিদার আলোকে তারা বিভিন্ন বিষয় সার্চ করেন। যেমন : অ্যানথ্রাক্স যখন শুরু হয়, এর কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে ব্লগে লেখা আসে। (লিঙ্ক : http://uiscbd.ning.com/profiles/blogs/ 5681065:BlogPost:10043) লেখাটি এলে আমি মডারেটর হিসেবে তা ইউআইএসসি ব্লগের বাইরের ব্লগারদেরও জানিয়ে দেই। এতে কাজ হয়। পাঠানো মাত্রই অনেক ব্লগার এটিকে সমৃদ্ধ করে তোলেন। উদ্যোক্তারা এটিকে স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করতে শুরু করেন। আরেকটি উদাহরণ হলো ভূমিকম্প বিষয়ে লেখা। (লিঙ্ক : http://uiscbd.ning.com/profiles/blogs/5681065:BlogPost:10507) এ লেখাটির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। বরং এটিতে আমি আন্তর্জাতিক ব্লগারদেরকেও যুক্ত করতে সক্ষম হই। উদ্যোক্তারা স্থানীয় বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের চাহিদা মোতাবেক গ্রুপভিত্তিক তথ্যসেবা দেয়ার তালিকা তৈরি করছেন। (লিঙ্ক : http://uiscbd.ning.com/profiles/blogs/5681065:BlogPost:9998) আরেক উদ্যোক্তা জানাচ্ছেন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ঘরে ঘরে তথ্যভান্ডার তৈরি হচ্ছে। (লিঙ্ক : http://uiscbd.ning.com/profiles/blogs/5681065:BlogPost:9892) এভাবে এই ব্লগ কনটেন্ট তৈরি করতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। অন্যান্য কনটেন্ট সম্পর্কিত আরো কিছু লিঙ্ক : http://uiscbd.ning.com/video/the-infoladies-of-bangladesh, http://uiscbd.ning.com/video/discover-bangladesh-part-1, http://uiscbd.ning.com/photo/uisc-lalmonirhat-pic-3-1?context=latest


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : manikswapna@yahoo.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস