ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন তথা আইটিইউ একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এর সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। এটি জাতিসংঘ ব্যবস্থার একটি অংশ। আইটিইউ’র সদস্য রাষ্ট্র ১৯১টি। এর বাইরে আছে ৭০০-এরও বেশি সেক্টর সদস্য ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান (বেসরকারি কোম্পানি, এনজিও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান)। এ সংস্থা বিশ্ব টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও সেবাসংশ্লিষ্ট কারিগরি ও নীতিসংক্রামত্ম বিষয়ে সমন্বয় সাধনে সরকারি-বেসরকারি খাতের একটি ফোরাম হিসেবে কাজ করে।
আইটিইউ’র রয়েছে তিনটি খাত
০১.
টেলিকমিউনিকেশন স্ট্যান্ডারডাইজেশন (ITU-T), ০২. রেডিও কমিউনিকেশন (ITU-R) এবং ০৩. ডেভেলপমেন্ট (ITU-D)।
ITU-T নিশ্চিত করে বিশ্বব্যাপী টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানের প্রমিতকরণের ব্যাপারে সুপারিশ সূত্রায়ন। ITU-R, রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি স্প্যাক্ট্রামের ন্যায্য ও যৌক্তিক ব্যবহার সর্বাধিক পর্যায়ে পৌঁছানো নিশ্চিত করে। ITU-D বিভিন্ন দেশকে তার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় সহায়তা যোগায়।
আইটিইউ, যাবতীয় ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ ও সম্প্রচার প্রযুক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান ও প্রমিতমান নির্ধারণ ও প্রকাশ করে। এর মাঝে অন্তর্ভুক্ত আছে সবধরনের রেডিও, টেলিভিশন উপগ্রহ, টেলিফোন ও ইন্টারনেট প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিধি-বিধান ও প্রমিত মান নির্ধারণের বিষয়টি। এ সংস্থা বিদ্যমান ও ভবিষ্যৎ সমস্যা ও দ্বন্দ্ব নিরসনের জন আয়োজন করে বৈঠকের। পরিচালনা করে বিভিন্ন ওয়ার্কিং পার্টি ও স্টাডি গ্রুপ। আইটিইউ আয়োজন করে চার বছর পরপর প্রদর্শনী ও ফোরাম, যা ‘গ্লোবাল টেলিকম’ নামে পরিচিত।
আইটিইউ’র আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যানডেট হলো সম্ভাব্য দেশগুলোকে সহায়তা দেয়া, যাতে দেশগুলো তাদের টেলিকমিউনিকেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারে। যদিও আইটিইউ’র সুপারিশমালার ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তবে বেশিরভাগ দেশই আমত্মর্জাতিক ইলেক্ট্রনিক কমিউনিকেশন পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে সেসব সুপারিশমালা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
আইটিইউ টেলিকমিউনিকেশনের ওপর নিয়মিতভাবে বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজ ও পরিসংখ্যান পরিচালনা করে তা প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি প্রকাশ করে ‘The World in 2010 : ICT Facts and Figures শিরোনামে এক পরিসংখ্যানমূলক রিপোর্ট, যার আলোকে তৈরি এ লেখাটি এখানে উপস্থাপন করা হলো।
এ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, গত পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে এবং ২০১০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ২ শত কোটি ছাড়িয়ে যাবে। আবাসিক পর্যায়ে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সুবিধা ২০০৯ সালে পায় ১৪০ কোটি লোক এবং এ সংখ্যা ২০১০ সালে হবে প্রায় ১৬০ কোটি। এই নতুন তথ্য অবমুক্ত করা হয় ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিসটিক ডে-তে। বিশ্বব্যাপী এ দিনটি উদযাপন করা হয় ২০ অক্টোবর ২০১০-এ।
২০১০ সালে নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২ কোটি ৬০ লাখ। এদের মধ্যে ১৬ কোটি ২০ লাখ উন্নয়নশীল দেশের, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার হার অনেক বেশি। ২০১০ সালের শেষের দিকে উন্নত বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭১ শতাংশ অনলাইনে যুক্ত হবে। সেই তুলনায় উন্নয়নশীল দেশের মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ অনলাইনে যুক্ত হবে। উন্নত দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশই বাসায় ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের সুবিধা পায়, অপরদিকে উন্নয়নশীল দেশের জনগণের মধ্যে মাত্র ১৩.৫ শতাংশের নিজেদের ঘরে ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে। উন্নয়নশীল দেশে স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র ও জনসমাগমস্থলে ইন্টারনেট সুবিধা নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য বেশ উল্লেখযোগ্য। ৬৫ শতাংশ ইউরোপীয় ইন্টারনেটে যুক্ত। আর আফ্রিকার জনগণের মধ্যে মাত্র ৯.৫ শতাংশ ইন্টারনেট সুবিধা পায়।
ইন্টারনেটে দ্রুতগতির হাই ব্যান্ডউইডথের কনটেন্ট এবং অ্যাপ্লিকেশনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উচ্চতর গতির ব্রডব্যান্ড কানেকশনের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
আইটিইউ’র সেক্রেটারি জেনারেল হামাদুন ট্যুরে
আইটিইউ মনে করে ইন্টারনেটের দ্রুত সম্প্রসারণের পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে ব্রডব্যান্ড। সম্প্রতি আইটিইউ ও ইউনেস্কো চালু করেছে ব্রডব্যান্ড কমিশন ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট। এর লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী ব্রডব্যান্ডবান্ধব ব্যবহারনীতি গ্রহণে সহায়তা দেয়া। আইটিইউ’র সেক্রেটারি জেনারেল হামাদুন ট্যুরে (Hamadoun Toure) বলেন, ব্রডব্যান্ড হলো পরবর্তী টিপিং পয়েন্ট, যা সত্যিকার অর্থে পরবর্তী ট্রান্সফরমেশন্স টেকনোলজি। এটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, ক্রমোন্নতির প্রেরণা ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে এবং সৃষ্টি করতে পারে অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ। এটি সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার যা মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে সহায়ক। মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জন করতে হবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে।
গত বছর ফিক্সড ব্রডব্যান্ড গ্রাহকসংখ্যার ক্রমোন্নতি ছিল লক্ষণীয়। এ হারে বাড়তে থাকলে ২০১০ সালের মধ্যে ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের বিসত্মার বিশ্বব্যাপী ৮ শতাংশ হবে। তবে ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের সম্প্রসারণ হার উন্নয়নশীল দেশে এখনও অনেক কম। উন্নত দেশে যেখানে প্রতি একশ’ জনের মধ্যে ২৪.৬ জন ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের গ্রাহক, সেখানে উন্নয়নশীল দেশে এ হার মাত্র ৪.৪ জন।
স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে উচ্চগতির ইন্টারনেট এখনো সর্বসাধারণের নাগালের বাইরে। মোবাইল ফোন ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে সর্বব্যাপিতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাক্সেসের সুবিধা বিশ্বের প্রায় নববই শতাংশেই রয়েছে। আইটিইউ নতুন আনুমানিক হিসেবে ইঙ্গিত দিচ্ছে, ২০১০ সালের শেষের দিকে মোবাইল গ্রাহকসংখ্যা ৫শ’ কোটির মধ্যে ৩৮০ কোটি হবে উন্নয়নশীল বিশ্বের।
আইটিইউ’র টেলিকমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট ব্যুরোর ডিরেক্টর সামি আল বাশির বলেন, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের মোবাইল ফোনের আন্ত:প্রবাহের হার হচ্ছে ৬৮ শতাংশ, যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলো মোবাইলপ্রযুক্তিকে তাদের দৈনন্দিন কাজের সাথে সম্পৃক্ত করে নিয়েছে এবং এরা ব্রডব্যান্ড থেকে আরো বেশি সুবিধা পাবে, যদি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবহার সাশ্রয়ী ও সবার নাগালের মধ্যে থাকে।
উন্নত বিশ্বে গত পাঁচ বছরে মোবাইল গ্রাহক উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ২০০৯-২০১০ সালের উন্নত বিশ্বে মোবাইলের গ্রাহকপ্রবৃদ্ধি মাত্র ১.৬ শতাংশ। এসব দেশে মোবাইল মার্কেট ইতোমধ্যেই তাদের সাধ্যের শেষ সীমা পর্যমত্ম পৌঁছে গেছে। এসব দেশে মোবাইল ঘনত্ব প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১১৬টি। আর এ কারণেই উন্নত বিশ্বে বর্তমানে মোবাইলের প্রবৃদ্ধির হার কম।
একই সময় IMT2000/3G সার্ভিসের ক্ষেত্রে গ্রাহকসংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। ২০০৫ সালে এ সার্ভিস বা সেবাগ্রহীতার সংখ্যা যেখানে ছিল মাত্র ৭ কোটি ২০ লাখ, সেখানে ২০১০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৪ কোটি। বিশ্বের ১৪৩টি দেশ বাণিজ্যিকভাবে IMT2000/3G সেবার সুযোগ দিচ্ছে, যেখানে ২০০৭ সালে এ সেবাদাতা দেশের সংখ্যা ছিল ৯৫। গত বছর মোবাইল ব্রডব্যান্ডের ব্যবহার মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে। কোনো কোনো দেশ এ সার্ভিস বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেছে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড এবং পরবর্তী প্রজন্মের ওয়্যারলেস প্লাটফরমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
মোবাইলের প্রবণতা এখন সম্প্রসারিত হয়েছে ভয়েজ থেকে ডাটা অ্যাপ্লিকেশন পর্যমত্ম। এর প্রতিফলন দেখা যায় এসএমএস বা টেক্সট মেসেজের প্রবৃদ্ধি দেখে। গত তিন বছরে এসএমএস বা টেক্সট মেসেজ তিনগুণ বেড়েছে এবং ২০১০ সালে এ সংখ্যা ৬১ ট্রিলিয়নে (১ ট্রিলিয়ন = ১ X ১০১২) পৌঁছে গেছে। অন্য কথায় বলা যায় প্রতিসেকেন্ডে ২ লাখ টেক্সট মেসেজ পাঠানো হয়।
সার্বিকভাবে আইসিটির সার্ভিস চার্জ সব সময় কমার দিকে। তবে উচ্চগতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস এখনো ব্যয়বহুল। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের উন্নয়নশীল দেশগুলোয়। ২০০৯ সালে অ্যান্ট্রিলেভেল ফিক্সড (ওয়্যারড) ব্রডব্যান্ড সংযোগের জন্য উন্নয়নশীল দেশে গড়ে খরচ হতো প্রতিমাসে ১৯০ পিপিপি (পারচেজিং পাওয়ার পার্টি) ইউএস ডলার। অপরদিকে উন্নত বিশ্বে খরচ হয় ২৮ পিপিপি ইউএস ডলার। উন্নয়নশীল দেশে মোবাইল সেল্যুলার সার্ভিসের চার্জ বেশ সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এই খাতে উন্নত বিশ্বে গড়ে প্রতিমাসে ১৫ পিপিপি ইউএস ডলার খরচ হয়। সে তুলনায় উন্নয়নশীল দেশে খরচ হয় প্রতিমাসে ১৮ পিপিপি ইউএস ডলার। আইসিটি খাতে তুলনামূলক সার্ভিস চার্জ বিশেষ করে ব্রডব্যান্ডের জন্য খরচ সবচেয়ে বেশি আফ্রিকায়। এ অঞ্চলে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ সবচেয়ে কম। এ অঞ্চলে যখন ব্রডব্যান্ডের সুবিধা আসতে শুরু করবে, ততদিনে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়বে। যদিও ব্রডব্যান্ডের গ্রাহক বাড়ছে এবং ফিক্সড ব্রডব্যান্ডের আমত্মঃপ্রবাহের হার শতকরা ১ ভাগের কম। মূলত এত কম ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী হওয়ায় উচ্চগতির ও উচ্চক্ষমতার ইন্টারনেটের ব্যাপক সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করেছে। ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারী বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে সংযোগ চার্জও যথেষ্ট কমে আসবে।
জাতিসংঘ ২০ অক্টোবর ২০১০ তারিখকে মনোনীত করেছে World Statistics Day হিসেবে। ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস’ উদযাপনের মাধ্যমে জাতীয় ও আমত্মর্জাতিক পরিসংখ্যানের গুরুত্ব স্বীকার করে নেয়া হয়। এ দিবস পালনের লক্ষ্য হচ্ছে সরকারি তথ্য পরিসংখ্যান সম্পর্কে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি এ ব্যাপারে জনগণকে আস্থাশীল করে তোলা। জাতিসংঘ ব্যবস্থায় আইটিইউ হচ্ছে আন্তর্জাতিকভাবে আইসিটিসংক্রান্ত তথ্য পরিসংখ্যানের মূল উৎস। টেলিকমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট ব্যুরোর (BDT) বাজার তথ্য ও পরিসংখ্যান বিভাগ বিশ্বের ২০০টির বেশি দেশের টেলিযোগাযোগ ও আইসিটিবিষয়ক সূচক সংগ্রহ, সামঞ্জস্য বিধান ও সরবরাহ করে।
বাংলাদেশ নির্বাচিত হলো আইটিইউ’র কাউন্সিল মেম্বার
সম্প্রতি মেক্সিকোর প্লেনিপটেনশিয়ারি কনফারেন্সে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নে ২০১০-২০১৪ মেয়াদের জন্য এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলের কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে নির্বাচিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আইটিইউ’র সদস্যপদ লাভ করে। এরপর এবারই প্রথম বাংলাদেশ আইটিইউ কাউন্সিলের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে নির্বাচিত হয়, যা আমাদের দেশের জন্য এক বিরাট অর্জন বলা যেতে পারে। এর ফলে এখন থেকে বাংলাদেশ আইটিইউ’র প্রবিধান ও নীতি প্রণয়নে যেমন সিদ্ধামত্ম জানাতে পারবে, তেমনি পারবে টেলিযোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে। উল্লেখ্য, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলের জন্য মাত্র ১৩টি আসন ছিল। মোট ১৬১ রাষ্ট্র তাদের সমর্থনে ভোট দেয়, যার মধ্য থেকে বাংলাদেশের পক্ষে ভোট পড়ে ১২৩ এবং বাংলাদেশ অর্জন করে ষষ্ঠ স্থান। এ নির্বাচনে শ্রীলঙ্কা ভোট পায় মাত্র ৭৯টি।
শেষ কথা
সম্প্রতি বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনের নির্বাচনে কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে চার বছরের জন্য নির্বাচিত হয় এবং ষষ্ঠ স্থান দখল করে এটা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গৌরবজনক অর্জন। এ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে এ সম্মান এক দুর্লভ অর্জন। এ দুর্লভ সম্মানে আত্মতৃপ্তিতে শুধু সুখবোধ করলেই চলবে না। আইটিইউ’র সদস্য হিসেবে সবসময় আপডেট থাকতে হবে এবং সরকারের সাথে বিটিআরসি ও এ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের মতামত বিনিময় করতে হবে, যাতে আইটিইউ’র পলিসি প্রণয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে এবং এ সদস্যপদ অক্ষুণ্ণ থাকে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। শুধু তাই নয়, যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আমাদের জাতীয় স্বার্থকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। চাপিয়ে দেয়া কোনো সিদ্ধামত্ম যদি হয় আমাদের স্বার্থের পরিপন্থী, তাহলে তা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করতে পিছপা হবে না আমাদের দেশের প্রতিনিধি- তা আমাদের সবার প্রত্যাশা।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : swapan52002@yahoo.com