• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > আপনার ভবিষ্যৎ দেখুন আগামীর মোবাইল ফোনে
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: আবীর হাসান
মোট লেখা:১৫০
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - ফেব্রুয়ারী
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
মোবাইল
তথ্যসূত্র:
প্রযুক্তি ধারা
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
আপনার ভবিষ্যৎ দেখুন আগামীর মোবাইল ফোনে

অবশ্যই মোবাইল ফোন আয়না নয়, নয় জ্যোতিষীর ক্রিস্টাল বলের মতো কিছু। জাদুকরী কিছুও বলা যাবে না এই নিরীহ-পকেটবাসী যোগাযোগের যন্ত্রটিকে। তবে এও ঠিক, মোবাইল ফোন এখন আর শুধু যোগাযোগের সুবিধা দিচ্ছে না- অনেক কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।

একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এই মোবাইল ফোনের বদৌলতেই মানবসভ্যতার প্রকৃত উৎকর্ষ সাধন হবে বলে আপনি যদি ধারণা করে বসেন, তাহলেও খুব একটা ভুল করা হবে বলে মনে হয় না। মোবাইল ফোনই আপনাকে বাতলে দেবে আপনার ভবিষ্যতের করণীয় সম্পর্কে। ভবিষ্যতে এটিই হয়ে উঠবে আপনার বেশিরভাগ কর্মকান্ডের সঙ্গী। অনেক বড় বড় কাজও সম্পাদন করবে যন্ত্রটি। ভার্চুয়াল যোগাযোগের যত ধরনের উপায় আছে, সবই অচিরে গ্রাস করবে মোবাইল ফোন, এমনকি স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থাকেও।

এই রেডিও ব্যান্ড, ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড স্যাটেলাইট আর মোবাইলপ্রযুক্তি নিয়েই গড়ে উঠছে ভবিষ্যতের কর্মপ্রযুক্তি। যে প্রযুক্তি শুধু যোগাযোগেই কাজে লাগবে না, অন্যান্য কাজেও সহায়তা করবে। আর এর কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে সেই আপাত নিরীহ মোবাইল ফোনকেই।

ব্যাপারটা কেমন হবে? এর উত্তরে সরাসরিই বলা যায়, এতদিন কেন্দ্রে থাকা গ্যাজেট কমপিউটারকে প্রতিস্থাপিত করবে মোবাইল ফোন, আর মোবাইল ফোনের শক্তি হবে সাধারণ কমপিউটারের চেয়ে বেশ বেশিই।

তা কি সম্ভব? সম্ভব বলেই তো মনে হচ্ছে। কারণ, এখন নতুন প্রজন্মের মোবাইল ফোন নিয়ে যেসব কাজকর্ম হচ্ছে সেগুলোকে একটু ঝালিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা কতটুকু। যেমন, অ্যাপলের আইফোন কিংবা গুগলের নেক্সাস ওয়ান প্রযুক্তি। এর আগেই অবশ্য আমরা দেখেছিলাম ব্ল্যাকবেরির ক্ষমতা। তবে অ্যাপলের আইফোন এবং গুগলের নেক্সাস কমপিউটিংয়ের ধারণাকে বেশ ঝাঁকিই দিয়েছে। অনেকে বলতে চাচ্ছেন, ডিভাইসগুলো আসলে মোবাইল ফোন নয়- কমপিউটিং ডিভাইস। কিন্তু মন্তব্যটি মনে হয় রক্ষণশীল ধরনের, যারা মোবাইল ফোনের ক্ষমতায়নটাকে ঠিক মেনে নিতে পারছেন না, তারাই এমনটি বলছেন। এর অনেক কারণও আছে, তবে প্রধান কারণ অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক। কারণ, মোবাইল ফোনে কমপিউটিং ও সব ধরনের যোগাযোগ, এমনকি নিয়ন্ত্রক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে কমপিউটার-ল্যাপটপ আর এর সাথে জড়িত সব ধরনের সফটওয়্যার, ওএস এমনকি ওয়েব পর্যন্ত অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন গত ২০ বছর ধরে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসা ব্যক্তি ও কোম্পানিগুলো। তবে বিষয়টাকে অন্যভাবেও দেখা যায়- নতুন ডিভাইসের জন্য নতুন প্ল্যাটফর্ম, সিস্টেম এবং ওয়েবের দরকার পড়বে। হ্যাঁ, সে তো পড়ছেই, তবে এসব নিয়ে এগিয়ে আসছে কিন্তু কিছু বনেদী কোম্পানিই। যেমন- মোবাইল ওয়েবের প্রাথমিক প্রযুক্তি কিন্তু কমপিউটারের প্রাথমিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনকারী অ্যাপলই দেখিয়েছে, আইফোনের জন্য ভিন্ন ফরমেটের ওয়েব ডিজাইন করে।



প্রায় একই সময়ে গুগল তার সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবসায়কে সম্প্রসারিত করতে ক্লাউড কমপিউটিংয়ের সূচনা করছে, যার প্রাথমিক প্লাটফর্মটি হচ্ছে বিখ্যাত অ্যান্ড্রয়িড। এই অ্যান্ড্রয়িডনির্ভর নতুন একটি প্রযুক্তিও আসছে অচিরেই। এর নাম নেক্সাস এস (Nexus S)। তবে নেক্সাস ওয়ানের মতো একে গুগল সীমিত রাখছে না। অর্থাৎ নেক্সাস ওয়ান সমালোচিত হওয়ার জন্যই হোক বা অন্য কোনো কারণেই হোক, গুগল খুব সীমিত সংখ্যায় এর উৎপাদন করেছিল নিজেরাই। ইতোমধ্যে স্যামসাংয়ের সাথে গুগলের চুক্তি হয়েছে নেক্সাস ওয়ানের বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য। অবশ্য স্যামসাং অ্যান্ড্রয়িড ২.২ প্ল্যাটফর্মে তাদের নিজেদের গ্যালাক্সি এস তৈরি করেছে যা অ্যাপলের আইফোন ফোর (iPhone4)-এর সমকক্ষ। কাজেই নেক্সাস ওয়ান নয়, বরং স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এসকেই বলা যায় নেক্সাস এসের পূর্বসূরি। সংক্ষেপে জানিয়ে দিচ্ছি, নেক্সাস এস-এর কী কী বৈশিষ্ট্য থাকছে : ১ গিগাহার্টজ হামিংবার্ড প্রসেসর আর ৫১২ মেগাবাইট র্যারম ও ১৬ গিগাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজ। এর ফলে প্রচুর হাই ডেফিনিশন মুভি পর্যন্ত স্টোর করা যাবে। আর ওএস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে অ্যান্ড্রয়িড ২.৩। এতে থাকছে দুটো ক্যামেরা, মূল ক্যামেরা হবে ৫ মেগাপিক্সেলের (পেছনে) আর সামনে থাকছে একটি ভিজিএ ক্যামেরা। অন্যান্য স্মার্টফোনের মতোই এতে থাকছে এ-জিপিএস ব্লুটুথ ২.১ এবং ৮০২.১১ বি/জি/এন ওয়াইফাই, থাকছে নতুন একটি প্রযুক্তি, যার নাম এনএফসি- নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশনস।

এটি নিয়ে গুগল প্রধান এরিক স্মিডট বলেছেন, ‘এটি আসলে ফোনই, তবে কথা বলা আর শোনা ছাড়া অন্য অনেক কাজের সহায়ক হবে প্রযুক্তিটা। আমরা তেমন নতুন কিছুই করিনি, অনেক আগেই তো মোবাইল ফোনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ক্যামেরা আর জিপিআরএস। কারণ, এই স্মার্টফোন অনেক সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে, বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়িড প্ল্যাটফর্ম আর ক্লাউড কমপিউটিং।

এই যে মোবাইল ফোনের শক্তি এত বাড়ছে- এতে করে কী কী উপযোগিতা পাবেন কথা বলা ছাড়া?

কমপিউটারের মাধ্যমে ওয়েবের যে সুযোগগুলো পান সেগুলো পাবেন কি না- এ প্রসঙ্গে এটুকু বলতে পারি, ওই ক্লাউড কমপিউটিং প্রজেক্ট এখন এমন ওয়েব নিয়ে কাজ করছে, যার মাধ্যমে মুখের কথা দিয়ে কাজ করা যাবে অর্থাৎ কীবোর্ড, মাউস আর একগাদা তারের ঝামেলামুক্ত হবে ব্রাউজিং। ওয়েবের সংবেদনশীলতা আসবে ভাষা ও শব্দের ওপর। তেমন একটা সাহায্য লাগবে না যন্ত্রের। থাকবে না ব্রাউজারের বর্তমান জটিলতাগুলোও। আরও মজার ব্যাপার হলো, ওয়েব নিজেই আপনার জন্য বেছে দেবে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো, এখনকার অপরিমেয় তথ্যের সাগরে হাবুডুবু খেতে হবে না। আর এ প্রযুক্তিটাও তৈরি করা হচ্ছে মোবাইল ফোনের উপযোগী করে।

এর মধ্যেই আরো খবর আছে এই স্মার্টফোন ও গুগলের অ্যান্ড্রয়িড সফটওয়্যার নিয়ে। এই ত্রিশ সেন্টিমিটার লম্বা আর কম দামের সেলফোনই আগামীতে নিয়ন্ত্রণ করতে যাচ্ছে স্যাটেলাইট। অর্থাৎ আকাশে যোগাযোগের জন্য যেসব স্যাটেলাইট এখন যাচ্ছে সেগুলোকে অভ্যন্তরীণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে কমপিউটার। এই কমপিউটারগুলোও স্যাটেলাইটের আয়তন ও ওজন বাড়ার জন্য অনেকটাই দায়ী। তাই এগুলোকে প্রতিস্থাপন করে ছোট-সস্তা স্যাটেলাইটের সম্ভাবনা যাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছেন স্যাটেলাইট গবেষকেরা। ব্রিটেনের সুরে স্যাটেলাইট টেকনোলজি লিমিটেডের (এসএসটি) গবেষকেরা পরীক্ষামূলকভাবে কমপিউটারের সহযোগী হিসেবে গুগলের স্মার্টফোন টেকনোলজি পাঠাচ্ছেন মহাকাশে। স্যাটেলাইটের ভেতরে থাকা কমপিউটারের ব্যাকআপ হিসেবে কাজ করে এগুলো এবং এক সময় কমপিউটারগুলোর বদলে স্মার্টফোনগুলোই পুরো দায়িত্ব নিয়ে নেবে স্যাটেলাইটের।

কজ ওয়েব
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস