এটুকু নিশ্চিত, বিশ্বের বেশিরভাগ কমপিউটার ব্যবহারকারীই কমপিউটারে গেম খেলায় কম-বেশি আসক্ত। বলা যায়, বিশ্বব্যাপী কমপিউটারের ব্যাপক বিস্তৃতি ও ব্যবহারের পেছনে রয়েছে কমপিউটার গেমের বিরাট অবদান বা ভূমিকা।
৮ বিট গেম কন্সোল থেকে শুরু করে পিসির হাইডেফিনিশন গেম, প্লেস্টেশন থ্রি এবং আজকের দিনের মোশন কন্ট্রোলসম্বলিত এক্সবক্সে ৩৬০ গেমসমূহ দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে আজ এ অবস্থায় উপনীত হয়েছে। গেমিং বর্তমানে নতুন নতুন ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের পথ খুঁজে বের করে নিচ্ছে, যেমন- থ্রিজি কানেকটিভিটি থেকে শুরু করে iOS এবং এবং অ্যান্ড্রয়িড প্লাটফরম পর্যন্ত। সম্প্রতি Deloitte নামের এক প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় ধারণা করা হয় ভারতের গেমিং মার্কেট ৫৩ শতাংশ বেড়ে ২০১৩ সালের মধ্যে হবে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কমপিউটার এবং ভিডিও গেম ডেভেলপমেন্ট হলো দ্রুত সম্প্রসারণশীল এক এন্টারটেইনমেন্ট ক্ষেত্র, যেখানে রয়েছে প্রচুর পেশাদারিত্ব এবং সামষ্টিক ও ব্যক্তিগত সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ। গেম ডেভেলপমেন্টের জন্য দরকার প্রবল আগ্রহ ও একাগ্রতা। শুধু তাই নয়, এর সাথে চাই দক্ষতা ও যোগ্যতা। অন্যান্য এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রির সাথে গেমও এখন এক প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী, যদিও এটি এক কঠিন কাজ পেশা হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে।
গ্লোবাল গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সম্প্রসারণের হার যেমন অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। তেমনই বাড়ছে ক্যারিয়ার হিসেবে গেমিংয়ের চাহিদা। আশা করা যাচ্ছে, ২০১২ সালের মধ্যে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সাইজ হবে ৬৮.৩ ইউএস বিলিয়ন ডলার। PWC-এর রিপোর্ট মতে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে গেমিংয়ের ক্ষেত্রে মার্কেট চাহিদা ৯ বিলিয়ন ডলার। যেহেতু বিশ্বব্যাপী পিসি ইউজার এবং সেলফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ভিডিও গেমের চাহিদা। এমন বিপুল চাহিদার কারণে গেম ডেভেলপমেন্টের চাহিদাও বাড়ছে ব্যাপকভাবে। গেমিং সেগমেন্টগুলো হলো- ক্যাজুয়াল গেম সেগমেন্ট বিশেষ করে স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট ডিভাইসের জন্য, সোস্যাল গেমিং সেগমেন্ট এবং মোশন সেন্সর টেকনোলজিভিত্তিক অ্যাড অনস লিঙ্ক, যেমন- মোভ (PS3), Wii এবং Kinect (এক্সবক্সভিত্তিক)। এছাড়া হার্ড কোর গেমিং সেগমেন্ট এবং কন্সোল গেমিং সেগমেন্টের ক্রমবর্ধমান চাহিদা তো আছেই। এগুলো হচ্ছে সৃজনশীল এবং প্রচুর চাহিদাসম্পন্ন ইন্ডাস্ট্রি যার জন্য দরকার হয় দক্ষতা, প্রচুর ধৈর্য, একাগ্রতা ও নিষ্ঠা। গেমিং ডেভেলপমেন্টে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে যা দরকার তা নিম্নরূপ :
গেম ডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন প্লাটফরম
গেমিং ইন্ডাস্ট্রিকে নিম্নলিখিত তিনটি সেগমেন্টে ভাগ করা যায়। ভারত, চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে এই তিন সেগমেন্টে গেম ডেভেলপ করা হয়। সেগমেন্ট তিনটি হলো-
* অনলাইন গেম এবং (MMORPG ক্যাজুয়াল গেম)।
* মোবাইল গেম।
* পিসি এবং কন্সোল গেম (হোম এবং হ্যান্ডহেল্ড)।
এ অঞ্চলে বিশেষ করে ভারত ও চীনে মোবাইল ও পিসি গেম বেশি জনপ্রিয়। মোবাইল ও পার্সোনাল কমপিউটারের ব্যাপক পেনিট্রেশন এ ধরনের এন্টারটেইনমেন্টকে সম্প্রসারণ করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। উপরোল্লিখিত গেমিংকে জনপ্রিয় করতে ইন্টারনেটও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইদানীং মোবাইল ফোন যেমন আইফোন একটি শক্তিশালী হ্যান্ডহেল্ড গেমিং ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। অনেক ডেভেলপার ডিভাইসের জন্য ডেভেলপ করছে টাচস্ক্রিন ক্ষমতাসম্পন্ন এই ক্যাজুয়াল গেম। আমাদের এসব অঞ্চলে যেভাবে গেম খেলা হয় তার প্রকৃতি পরিবর্তন করে ফেলছে শক্তিশালী কন্সোল। আর এটি সম্ভব হয়েছে গেম খেলার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনীমূলক পন্থা অবলম্বনের কারণে।
ক্যারিয়ার হিসেবে গেমিং বেছে নেয়া
গেম খেলার সময় গেমের দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিক্সে আকৃষ্ট হয়ে অনেক ছাত্রছাত্রী গেমিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার চিন্তাভাবনা করতে পারেন। ক্যারিয়ার হিসেবে গেমিংকে বেছে নিতে চাইলে গেম ডেভেলপমেন্টের বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে তথ্য জেনে নিতে হবে। জেনে নিতে হবে গেমিং ডেভেলপমেন্টের জন্য কোন কোন ক্ষেত্রের চাহিদা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন দরকার, এ ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ কেমন, সর্বোপরি এই ক্ষেত্রে আপনার আগ্রহ উদ্দীপনা কেমন ইত্যাদি। আগ্রহী প্রার্থীকে নিজের মনের কাছে প্রশ্ন করতে হবে তার আগ্রহ আর্ট, প্রোগ্রামিং, ডিজাইন বা অন্য কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের প্রতি কি না?
শিক্ষাগত যোগ্যতা কেমন হওয়া দরকার
গেমে প্রচন্ড আকর্ষণ থাকার সাথে সাথে গেমিং কোর্সে অগ্রাধিকার দেয়া হয় সৃজনশীল ব্যাকগ্রাউন্ডের ছাত্রদের, যাদের রয়েছে ফাইন আর্ট এবং সৃজনশীল বিষয় উপস্থাপনের ক্ষমতা। গ্র্যাজুয়েট ছাত্র প্রত্যাশা করা হলেও শিল্পকলায় প্রকৃত উৎসাহী সৃজনশীল ও দক্ষ হলে চলবে। তবে এক্ষেত্রে ন্যূনতম কলেজ পাস এবং গেমিং কোর্সসম্পন্ন করা থাকতে হবে। প্রাথমিকভাবে গেম স্টুডিওগুলো অনুসন্ধান করতো ভালো পোর্টফলিও এবং গেম ডেভেলপমেন্ট ভালোভাবে বুঝতে পারে এমন লোককে। প্রচন্ড আগ্রহ এবং ক্ষমতা থাকতে হবে যথাসময়ে ডেলিভারি করার জন্য এবং সেট হিসেবে থাকতে হবে সর্বোচ্চ স্ট্যান্ডার্ড। শিক্ষাগতযোগ্যতা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে কোনো গেম স্টুডিও এর জন্য জটিল ধরনের হওয়া উচিত নয়। পক্ষান্তরে প্রোগ্রামিং কোর্সের প্রার্থীকে হতে হবে চটপটে, লজিকের জন্য স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি এবং চিন্তা-ভাবনার ক্ষেত্রে সৃজনশীল। প্রোগ্রামের ধরন ও প্রগাঢ়তার জন্য দরকার ইঞ্জিনিয়ার বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের গ্র্যাজুয়েট।
সুযোগ-সুবিধা
লক্ষণীয়, গেমটিম খুব বড় একটি দল নয়, যদিও একটি অতি উঁচুমানের সৃজনশীল ক্ষেত্র। এখানে হায়ারারকি বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় না। প্রত্যেক সদস্যের অবস্থান বা ক্রমোন্নতি প্রচন্ডভাবে নির্ভর করে তাদের স্বতন্ত্র শক্তি, মেধা এবং সামর্থ্যের ওপর।
এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি গেম টিমের উৎপাদনশীলতা অনেক বাড়িয়ে দেয়। একজন স্বতন্ত্রভাবে ভালো সৃজনশীলতার দক্ষতা দেখাতে পারে। তীক্ষ্ণধী এবং কঠোর প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেকেউ টিমের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তথা প্রধান সদস্য হিসেবে পরিগণিত হতে পারেন অর্থাৎ উন্নতির শিখরে পৌঁছে গিয়ে টিমের প্রধান সদস্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন। সুতরাং যারা শিক্ষনবিস হিসেবে যোগ দেন, টিমের ভেতরেই রয়েছে তাদের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার পথ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের উন্নতি নির্ভর করে তাদের নিজেদের দক্ষতা ও পারফরমেন্সের ওপর। সময়ের পরিক্রমায় স্কিল অ্যানহেন্সমেন্ট এবং অর্জিত জ্ঞানেই তৈরি হয় অভিজ্ঞতা। সুতরাং দরকার ধৈর্য ও অধ্যবসায়। একজন শিক্ষানবিস ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে তার নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা ও সক্ষমতার প্রমাণ দেখিয়ে পরবর্তী ধাপে উন্নীত হতে পারেন।
গেমিং ক্যারিয়ারে যা দরকার
গেমিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে প্রথমত দরকার গেমের প্রতি টান এবং গেম ডেভেলপমেন্ট আপনার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই বোধ। গেম ডেভেলপমেন্ট একটি সৃজনশীল শিল্পকলা সম্পর্কিত অ্যাপ্লিকেশন এবং টেকনোলজি। সুন্দর কোনো কিছু নিবিড়ভাবে দেখার জন্য চিত্রকরকে যেমন উন্মুখ থাকতে হবে তেমনি থাকতে হবে তার শৈল্পিক উপলব্ধি যথাযথভাবে ডিজিটাল ফর্মে উপস্থাপন করার ক্ষমতা। সৃজনশীল এবং ভিজ্যুয়াল আর্টস্কিল এই দুই মিলিত হয়ে একটি নির্দিষ্ট লেভেলের আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারলেই চমৎকার ও আকর্ষণীয় গেম আর্ট ডেভেলপ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে থ্রিডি স্টুডিও ম্যাক্স, মায়া বা ফটোশপ হলো প্রয়োজনীয় সহায়ক টুল, যা দিয়ে চিত্রকর বা ডেভেলপারেরা সৃষ্টি করতে পারেন ভিজ্যুয়াল।
প্রোগ্রামিংয়ের ক্ষেত্রে থাকতে হবে গেমের জন্য প্রচন্ড আগ্রহসহ প্রোগ্রামিংয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা। আইসিটির অন্যান্য খাতের মতো এ খাতটি নয়। এটি পুরোপুরি সৃজনশীল এক কর্ম তা জেনেই গেম ডেভেলপমেন্টকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়া উচিত। মনে রাখতে হবে, গেম প্রোগ্রামিং সব সময় সেরা ফিজিক্স প্রোগ্রাম লেখার মতো নয়।
গেমিং পাইপলাইন
গেম ডেভেলপমেন্ট প্রসেসে মাল্টিপল ধাপ অতিক্রম করতে হয়। যেমন গেমিং পরিকল্পনা এবং ডিজাইন, গেমিং কনসেপ্টের জন্য পছন্দের ডিভাইস/কন্সোল নির্বাচন করা, যা কার্যকর থাকবে গেম প্রোডাশন হওয়া পর্যন্ত। প্রকৃত অর্থে গেম ডেভেলপমেন্ট প্রসেসকে তিনটি ধাপে ভাগ করা যায়: প্রি-প্রডাকশন, প্রোডাকশন এবং পোস্ট প্রোডাকশন। প্রত্যেকটি গেমের ধারণার জন্য প্রডিউসার এবং পাবলিশার্সের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার হয় যারা গেমের প্রাথমিক মুখাবয়র সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে, যেমন গেমের জন্য মাধ্যম এবং প্লাটফরম কি হবে। ফিনান্সিয়াল বাজেট এবং টাইমলাইন চিন্তা করা হয় উপরে উল্লিখিত প্যারামিটারের আলোকে। সব স্টেক হোল্ডারাই চান তাদের গেম বাণিজ্যিকভাবে সফল হোক। আর সে কারণেই গেম ডেভেলপমেন্টের টিমের সাইজ, সময় এবং এর বিস্তার খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করা হয়। এক পর্যায়ে স্টুডিও প্রস্তাবিত গেমের একটি ছোট অংশ প্রোটোটাইপ হিসেবে তৈরি করতে পারে, যা পাবলিশার ও প্রডিউসারের প্রতি নির্দিষ্ট করা হয়।
প্রি-প্রোডাকশনের কর্মকান্ড শুরু হয় একটি ধারণা দিয়ে, যা গেম ডিজাইনার ডেভেলপ করে। গেম ডিজাইনার কাজ করেন বিষয়বস্ত্ত নিয়ে, বিশেষজ্ঞ এবং ডেভেলপার তৈরি করেন গেম ডিজাইন ডকুমেন্ট যা সম্পূর্ণ ডেভেলপমেন্ট প্রসেসের বাইবেল হিসেবে পরিচিত। এই ডকুমেন্টে থাকে গেম প্লের উপাদান, যা যেকোনো গেমের মূল অবয়ব। এরপর এই ডকুমেন্ট ব্যবহার করে ডেভেলপ করা হয় ভিজ্যুয়্যাল কনসেপ্ট। কনসেপ্ট আর্টিস্ট স্কেচ ডেভেলপ করেন, যা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করে প্রতিটি লেভেল, এনভায়রনমেন্ট এবং ক্যারেক্টার কেমন হবে। কনসেপ্ট তৈরি হওয়ার পর ডেভেলপমেন্ট, আর্ট ডিরেক্টর এবং প্রডিউসার তৈরি করা এই পাইপলাইনের ওপর পরিকল্পনা করেন এবং দিনক্ষণ নির্ধারণ করেন, যা নিবিড়ভাবে মনিটর করে পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়াকে।
গেম প্রোডাকশন
গেম প্রোডাকশন এক চমৎকার পরিকল্পিত প্রক্রিয়া, যেখানে রয়েছে দুটি প্রধান উপাদান যেমন আর্ট এবং কোড। আর্টিস্ট এবং প্রোগ্রামারা এক ইউনিট হিসেবে যৌথভাবে কাজ করে গেম ডেভেলপ করে। টিম নির্ভর করে গেমের ধরন ও মিডিয়ামের ওপর। একটি থ্রিডি গেমের ক্ষেত্রে দৃষ্টি দেয়া যাক। থ্রিডি গেমের কনসেপ্ট ডেভেলপ করে থ্রিডি মডেলার, যারা গেমের পরিবেশ এবং ক্যারেক্টার তৈরি করে গেমের আকার এবং গঠন দান করে। টেক্সচারিং আর্টিস্টরা নিয়ন্ত্রণ করেন মডেলের বাস্তবসম্মত রূপ এবং লুক দেয়ার জন্য পেইন্ট করেন। মডেলার এবং টেক্সচার আর্টিস্টদেরকে আবার বিশেষ কয়েক ধাপে ভাগ করা যায় যেমন ভেহিক্যাল আর্টিস্ট, ক্যারেক্টার এনভায়রনেমেন্ট এবং প্রপার্টিস্ট। এটি পুরোপুরি নির্ভর করে গেমের ধরন-প্রকৃতির ওপর। মুভেবল টেক্সচার মডেল এবং ক্যারেক্টার প্রদান করে বোনস এবং যাতে অ্যানিমেশনে প্রয়োজনীয় মোশন দেয়া যায়। অ্যানিমেশনে কাজ করেন স্ট্যাটিক থ্রিডি মডেলে মোশন দেয়ার জন্য এবং কখনো কখনো কাজ করে মোশন ক্যাপচার করা ডাটা নিয়ে যা ক্যারেক্টার মুভমেন্টে বাস্তবতা প্রদান করে।
আর্ট টিম যখন কাজে ব্যস্ত থাকে, তখন প্রোগ্রামিং টিম কাজ করতে থাকেন ব্যাকএন্ড গেম ইঞ্জিন নিয়ে, যা গেমকে কার্যকর করে। প্রোগ্রামিংয়ের ক্ষেত্রেও আবার কিছু উপাদান রয়েছে যেমন গ্রাফিক্স প্রোগ্রামিং, যা ভিজ্যুয়ালকে স্ক্রিনে ডিসপ্লে করার জন্য এনাবল করে। ফিজিক্সের একটি দল ডেভেলপ করে এলিমেন্ট নিয়ে, যা গেমকে সমৃদ্ধ করে ফিজিক্সভিত্তিক বাস্তবতা দিয়ে। এটি গেমের প্রায় সব দিক কভার করে। আরেকটি দল কাজ করেন ইন্টেলিজেন্সের অলীকতা দেয়ার জন্য। ইউজার ইন্টারফেস প্রোগ্রামিং কাজ করে গেম মেনু এবং অপশন নিয়ে, যা ইউজারের জন্য উপস্থাপন করা হয় গেমে ভিজ্যুয়ালি কমিউনিকেট করার জন্য। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রোগ্রামারের আরেকটি দল কাজ করে অডিও ইন্টিগ্রেটিংয়ের জন্য এবং গেমে বাস্তবসম্মত অডিও ইফেক্ট দেয়ার জন্য।
পোস্ট প্রোডাকশন
উপরে উল্লিখিত ধাপগুলো সম্পন্ন করে গেম ডেভেলপ করা হয়। এরপর পেশাদার এবং অপেশাদারদের দিয়ে গেম টেস্ট করা হয়। এরা গেমের ত্রুটি এবং বাগ খুঁজে দেখে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরি করে এবং প্রোডাকশন টিম তা ফিক্স করে। পোস্ট-প্রোডাকশনের দুটি ধাপ যা আলফা এবং বেটা নামে পরিচিত। আলফা হলো সেই ধাপ যেখানে মূল গেম প্লে ফাংশনালিটি বাস্তবায়িত হয়। বেটা ভার্সনে কোনো বাগ বা ত্রুটি থাকে না।
শেষ কথা
ক্যারিয়ার হিসেবে গেমিংয়ের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। গেমিং একটি চমৎকার ক্যারিয়ার। এ লেখায় বর্ণিত ধাপগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হয়ে নিন এবং নিজের যোগ্যতা, আগ্রহ ও সৃজনশীলতার আলোকে বেছে নিন কোন ক্ষেত্রটি আপনার জন্য উপযুক্ত। কারও চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের আলোকে কিংবা লোভনীয় পারিশ্রমিকে প্রলুব্ধ হয়ে ক্যারিয়ার হিসেবে গেমিংকে বেছে নেয়া ঠিক হবে না। কেননা সৃজনশীলতা পুরোপুরিই প্রাকৃতিক থাকে। উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার পরিচর্চার মাধ্যমে এগিয়ে নেয়া যায়। যার ফলাফল হয় চমৎকার ও মধুর।
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : mahmood_sw@yahoo.com