বিশ্বখ্যাত নোটবুক প্রস্ত্ততকারী প্রতিষ্ঠান এসারের বাংলাদেশের পরিবেশক এক্সিকিউটিভ টেকনোলজিস্ লি. সম্প্রতি দেশের বাজারে নিয়ে এসেছে এসার আইকনিয়া নামে নতুন এক নোটবুক, যাতে সংযোজিত হয়েছে ডুয়াল স্ক্রিন। মোবাইল কমপিউটিং ডিভাইসে টাচ্ স্ক্রিনপ্রযুক্তি বেশিদিন আগের নয়। আগে এসার এই প্রযুক্তিকে সংযোজন করেছিল ল্যাপটপের স্ক্রিনে। আইকনিয়া নামের এই পণ্যে বহুমাত্রিক ব্যবহারেব সুবিধা রেখে ১৪ ইঞ্চি মাল্টিটাচ্ ডুয়াল স্ক্রিন প্রযুক্তির ভিন্নতা উপস্থাপন করেছে এসার। যার অর্থ একজন ব্যবহারকারী তার দুই হাতের সব আঙুল শুধু স্ক্রিনেই নয়, বরং পর্যবেক্ষকের মতো ব্যবহার করতে পারবেন কী-প্যাডেও।
যদি কেউ ব্যক্তিগত কমপিউটার সংগ্রহের ব্যাপারে সবচেয়ে আধুনিক হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে অন্য কোথাও নয়; আইকনিয়া পূর্ণ করতে পারে সব ধরনের আকাঙ্ক্ষা। এর মাল্টিটাচ্ ডিসপ্লে ব্যবহারকারীকে নিয়ে যাবে ব্যবহারের নতুন মাত্রায়।
মাল্টিমিডিয়া, এন্টারটেইনমেন্ট, সব ধরনের যোগাযোগ, ওয়েব ব্রাউজিংসহ কর্মক্ষেত্রের যাবতীয় কাজে ডুয়াল স্ক্রিনসম্পন্ন আইকনিয়া ট্যাবলেট বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে, সেই সাথে ব্যবহারকারী তার প্রয়োজনীয় কাজকে চাহিদামাফিক আইকনিয়াতে সাজিয়ে নিতে পারবে। এটিতে বিভিন্ন ডকুমেন্ট অথবা ওয়েবসাইট পড়ার ক্ষেত্রে উইন্ডোকে সম্প্রসারণ করা যায়। তবে ডুয়াল স্ক্রিন বলতে ব্যবহারকারী এটিকে ব্যবহার করতে পারবেন একটি স্ক্রিনে একটি বিষয় এবং আরেকটিতে আলাদা কিছু। যেমন-কেউ টপ স্ক্রিনে ভিডিও দেখছে এবং অন্যটিতে দেখতে পাচ্ছে বা খুঁজে নিতে পারছে মাল্টিমিডিয়া লাইব্রেরি।
আইকনিয়া টাচ্বুক তৈরি করা হয়েছে বিশ্বখ্যাত প্রসেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইন্টেলের কোর আই ফাইভ প্রসেসর দিয়ে। এ প্রসঙ্গে ইন্টেল কর্পোরেশনের পিসি ক্লায়েন্ট গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মলি ইডেন বলেন, ‘আমরা গর্বিত এ কারণে যে, প্রথমবারের মতো এসারের সাথে টেন ফিঙ্গার মাল্টিটাচ ডুয়াল স্ক্রিন নোটবুক ইন্টেলের কোর আই ফাইভ প্রসেসর দিয়ে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করতে পেরেছি, যা আমাদের প্রযুক্তিকে আইকনিয়ার সাহায্যে মানুষের আরও সান্নিধ্যে সর্বাধিক ব্যবহারোপযোগী করে নিয়ে এসেছে।’
বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ও স্থিতিস্থাপকতার যৌথায়নে ইন্টেলের কোর আই ফাইভ প্রসেসর দিয়ে প্রস্ত্তত করা আইকনিয়া পছন্দের ভিডিও, ওয়েব, মুভি সংক্রান্ত কর্মকান্ডের নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ১৪ ইঞ্চি যৌথ ডিসপ্লেতে রয়েছে এইচডি ১৩৬৬ ও ৭৬৮ রেজ্যুলেশন, হাই ব্রাইটনেস, এসার CineCrystal LED ব্যাকলিট টিএফটি LCD এবং বিশেষ সুবিধা, যেমন- সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে করে স্ক্রিনের ইনপুটের সর্বাধিক ব্যবহার হয়। এর বিশেষভাবে তৈরি টাচ্স্ক্রিন আল্ট্রাথিন কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী, যা বিখ্যাত ‘গরিলা গ্লাস’ কোম্পানি দিয়ে প্রস্ত্তত। এটি স্ক্র্যাচ এবং ফিঙার প্রিন্ট প্রতিরোধক, সহজেই পরিষ্কার এবং অপারেট করা যায়।
মাল্টি-টাচ্ স্ক্রিনের সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এসার আইকনিয়ায় ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ বিশেষ সফটওয়্যার, যা খুব সহজেই টাচ্ স্ক্রিনের সাহায্যে সব সফটওয়্যারের ব্যবহার নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে ‘এসার রিং’ উল্লেখযোগ্য। টাচ্ স্ক্রিনের যেকোনো অংশে হাতের পাঁচটি আঙুল একত্রে রাখলেই ‘এসার রিং’ সফটওয়্যারটি কাজ শুরু করবে। এর সাহায্যে খুব সহজেই স্ক্রল করে সব প্রোগ্রামের মেনু থেকে যেকোনো অ্যাপ্লিকেশন শুরু করা যাবে। এছাড়াও ‘এসার রিং’ দিয়ে খুব সহজেই ভার্চুয়াল কীবোর্ড, জেশ্চার এডিটর, উইন্ডো ম্যানেজার, ডিভাইস কন্ট্রোলার অ্যাকসেস করা যাবে। স্ক্রিনের ওপর দুই হাতের দশটি আঙুল টাইপ করার পজিশনে রাখলে আইকনিয়ার ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন সেন্সর সাথে সাথে ভার্চুয়াল কীবোর্ড ওপেন করবে। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ কোয়াট্রে কীবোর্ডের লেআউট, যা ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ সাপোর্ট করে। এই কীবোর্ডের ব্যবহার এতই সহজ যে ইউজার মোটেও তার পুরনো কীবোর্ডকে মিস করবে না। এর আরেকটি অনবদ্য ফিচার হচ্ছে ‘জেশ্চার এডিটর’ যার সাহায্যে ইউজার তার পছন্দমতো পূর্বনির্বাচিত প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে। এর ফলে মাত্র একটি টাচেই ওপেন হয়ে যাবে পছন্দের ওয়েবসাইট, প্রোগ্রাম, অডিও/ভিডিও প্লেয়ার অথবা ডেস্কটপ স্ক্রিন।
‘উইন্ডোজ ম্যানেজার’ সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে ওপেন করা বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনকে ডুয়াল স্ক্রিনে পছন্দমতো অর্গানাইজ করা যাবে। খোলা উইন্ডোকে রিসাইজ করা, দুটি স্ক্রিনের মধ্যে স্থাপন করা, নতুন উইন্ডো খোলা, বন্ধ করাসহ মাল্টিটাস্কিংয়ের অনবদ্য সুযোগ রয়েছে আইকনিয়াতে।
আইকনিয়াতে রয়েছে প্রচুর বিল্টইন টাচ্ অ্যাপ্লিকেশন, যার সাহায্যে ল্যাপটপের কাজগুলো টাচপ্যাডে খুবই সহজে নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা যায়। যেমন- টাচ্ ব্রাউজার, টাচ্ ফটো, টাচ্ মিউজিক, টাচ্ ভিডিওসহ আরও অনেক অ্যাপ্লিকেশন। আইকনিয়া শুধু নোটবুকের ব্যবহারকেই সহজ করেনি, বরং ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো কিছু শেয়ার করার সুবিধাকে নিয়ে গেছে ভিন্ন উচ্চতায়। ইউজার ওয়েবপেজের যেকোনো ছবি, ভিডিও বা নিউজ খুব সহজেই তার নিজস্ব ওয়েবপেজ, ব্লগ বা ফেসবুকের প্রোফাইলে শেয়ার করতে পারবেন। আইকনিয়ার তিনটি ভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের সাহায্যে ওয়েবসাইটে সহজ অ্যাকসেস করা যাবে। এগুলো হচ্ছে- ‘স্যোশাল জগার’, ‘মাই জার্নাল’ এবং ‘স্ক্র্যাপবুক’। ‘স্যোশাল জগার’-এর সাহায্যে ফেসবুক, ইউটিউব এবং ফ্লিকারে আপডেট একই সাথে দেখা যায়। মাই জার্নালের সাহায্যে আগ্রহী বিষয়ের যেকোনো ওয়েব ক্লিপিং সহজেই খুঁজে পাওয়া ও পোস্ট করা যাবে। এই ওয়েবক্লিপিংগুলো পরে নিজে থেকেই আপডেট হবে। ‘স্ক্র্যাপবুক’ যেকোনো ক্লিপিং ও স্ক্রিনশট স্টোর করতে সাহায্য করবে। এই ক্লিপিংগুলো পরে এডিট, রিসাইজ ও নোট অ্যাড করা যাবে। স্ক্র্যাপবুকের সাহায্যে ইউজার তার সংগ্রহের যেকোনো জিনিসের ট্র্যাক রাখতে পারবে, হোক না তা প্রয়োজনীয় বা ইন্টারেস্টিং অথবা হাস্যকর।
কোর আই ফাইভ দিয়ে আসা এই নোটবুকটি দিয়ে মাল্টিমিডিয়া, স্যোশাল নেটওয়ার্কিংসহ যেকোনো মেইনস্ট্রিম অ্যাপ্লিকেশন খুব সহজে পরিচালনা করা যাবে। সর্বাধুনিক ও সর্বোত্তম টেকনোলজির এক অনবদ্য সমন্বয় এসার আইকনিয়ার পারফরমেন্সকে সমৃদ্ধ করতে এতে আরও রয়েছে থ্রিজি কানেকশন সাপোর্টের সুবিধা, এইচডিএমআই পোর্ট ও ডলবি সাউন্ড সিস্টেম। ইউজারকে আউটস্ট্যান্ডিং এন্টারটেইনমেন্ট এক্সপেরিয়েন্স দিতে প্রতিশ্রুতিশীল এসার আইকনিয়া এককথায় অনবদ্য এক নোটবুক। আপনি এই এক্সপেরিয়েন্স নিতে তৈরি তো?
কজ ওয়েব
ফিডব্যাক : pradip@etlbd.com