• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > লিনআক্স মিন্ট ১১ : চতুর্থ সর্বাধিক ব্যবহার হওয়া অপারেটিং সিস্টেম
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: মো: আমিনুল ইসলাম সজীব
মোট লেখা:১৯
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - আগস্ট
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
অপারেটিং সিস্টেম
তথ্যসূত্র:
লিনআক্স
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
লিনআক্স মিন্ট ১১ : চতুর্থ সর্বাধিক ব্যবহার হওয়া অপারেটিং সিস্টেম

অপারেটিং সিস্টেমের জগতে প্রথম অবস্থানে রয়েছে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম। নানা বাগ ও নিরাপত্তাজনিত ত্রুটি থাকার পরও ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক কাজে এই অপারেটিং সিস্টেমই প্রায় সব ব্যবহারকারীর প্রথম পছন্দ। অনেকে আবার উইন্ডোজ ব্যবহার করে এর সফটওয়্যারের সমাহার দেখে। বলা হয়, উইন্ডোজের জন্য যত সফটওয়্যার তৈরি হয়, অন্যকোনো অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে তেমন দেখা যায় না। এছাড়া গেমের ভক্তরা তো নিঃসঙ্কোচেই উইন্ডোজ ব্যবহার করে থাকেন।



উইন্ডোজের পরপরই জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে অ্যাপলের ম্যাকিনটশ বা ম্যাক। সাধারণত ওয়েব ডেভেলপার ও ডিজাইনারদের প্রথম পছন্দ ম্যাক। এছাড়া এর নিরাপত্তা ও স্ট্যাবিলিটির কারণে অনেকেই একে উইন্ডোজের তুলনায় বহুগুণে ভালো বলে আখ্যা দেন।

উইন্ডোজ এবং ম্যাক- এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর পরই চলে আসে লিনআক্সের উন্মুক্ত দুনিয়া। লিনআক্স প্রায় সব শ্রেণীর ব্যবহারকারীকেই কমবেশি আকৃষ্ট করেছে। অনেকেই লিনআক্স ব্যবহার করেন ভাইরাসের ভয় তুলনামূলকভাবে না থাকায় এবং এর স্ট্যাবিলিটি ক্ষেত্রবিশেষে ম্যাকের চেয়েও বেশি হওয়ায়। শুধু তাই নয়, লিনআক্সের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর ডিস্ট্রিবিউশনগুলো। কী ধরনের ব্যবহারকারীর জন্য কী কী সফটওয়্যার তৈরি হতে পারে তার ওপর ভিত্তি করে লিনআক্স দিয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশন। উল্লেখ্য, লিনআক্স মূলত একটি কার্নেলের নাম, যার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশন বা অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা হয়। লিনআক্সের দুনিয়ায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে ক্যানোনিক্যালের অধীনে পরিচালিত ও প্রকাশিত উবুন্টু অপারেটিং সিস্টেম। ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীর পাশাপাশি ইদানীং কিছু করপোরেট অফিসেও ক্যানোনিক্যালের উবুন্টু ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু উবুন্টুর একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে এর মূল আনন্দ পেতে হলে ইন্টারনেট থাকতে হবে। বিনামূল্যে সরবরাহ করা হলেও যেহেতু ক্যানোনিক্যাল একটি কোম্পানি, তাই উবুন্টুর সাথে প্রয়োজনীয় অনেক ফাইলও দেয়া থাকে না, যা পরে ব্যবহারকারীকে ডাউনলোড করে নিতে হয়। কিন্তু সবার জন্য তো ইন্টারনেট সহজলভ্য নয়। তাছাড়া উবুন্টুর চেহারা উইন্ডোজের তুলনায় সম্পূর্ণই ভিন্ন বলে নতুন ব্যবহারকারীদেরও কিছুটা হিমশিম খেতে হয়। এসব সমস্যার কথা ভেবেই একদল লিনআক্সপ্রেমী অব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তৈরি করতে শুরু করেন লিনআক্স মিন্ট, যা একই সাথে লিনআক্স কার্নেল এবং উবুন্টু অপারেটিং সিস্টেমকে কাস্টোমাইজ করে তৈরি। লিনআক্স মিন্টের সর্বশেষ সংস্করণ লিনআক্স মিন্ট ১১ তৈরি হয়েছে উবুন্টু ১১.০৪ ভার্সনের ওপর ভিত্তি করে।

লিনআক্স মিন্ট বিশ্বে জনপ্রিয়তার পাল্লায় চতুর্থ সর্বাধিক ব্যবহার হওয়া অপারেটিং সিস্টেম। বাংলাদেশেও উবুন্টুর চেয়ে তুলনামূলকভাবে লিনআক্স মিন্টের জনপ্রিয়তাই বেশি দেখা যায়। এর কারণ লিনআক্স মিন্টের ইন্টারফেসে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সাথে অনেক সাদৃশ্য এবং জরুরি প্রায় সব ফাইলই ডিফল্ট দেয়া থাকে। আসুন জেনে নেয়া যাক, সেসব সফটওয়্যারের কথা, যা লিনআক্স মিন্ট ১১-তে রয়েছে, কিন্তু উবুন্টু ১১.০৪-এ নেই।

কোডেক/প্লাগইনস

উবুন্টু ব্যবহারকারীদের অন্যতম অভিযোগ হচ্ছে লাইভ সিডি থেকে বা উবুন্টু ইনস্টল করার পর পর কোনো ধরনের মিডিয়া ফাইল চালাতে না পারা। সঙ্গত কারণেই উবুন্টুর পেছনের কোম্পানি বা ক্যানোনিক্যাল এসব মিডিয়া কোডেক ফাইল বা প্লাগইন বিনামূল্যে বিতরণ করতে পারে না। কিন্তু আইনত ব্যবহারকারীরা এগুলো বিনামূল্যে ডাউনলোড ও বিতরণ করতে পারেন। তাই উবুন্টুর ক্ষেত্রে এসব কোডেক ফাইল আপনাকে ডাউনলোড ও ইনস্টল করে নিতে হয়।



লিনআক্স মিন্ট যেহেতু কমিউনিটি পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত, সেহেতু এতে কোডেক দেয়ায় কোনো বাধা নেই। ফলে লাইভ সিডি থেকে কিংবা ইনস্টল করে সাথে সাথে যেকোনো ধরনের গান বা ভিডিও প্লে করতে পারবেন লিনআক্স মিন্টে। উবুন্টুতে যেখানে প্রায় ১০০ মেগাবাইটের বিভিন্ন কোডেক ও প্লাগইন ডাউনলোড করতে হয়, পক্ষান্তরে লিনআক্স মিন্টে তা দেয়াই থাকে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে প্রথমেই উবুন্টুর চেয়ে লিনআক্স মিন্ট বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

জাভা ও ফ্ল্যাশ

উবুন্টুই নয়, উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম টাকা দিয়ে কিনেও জাভা ও ফ্ল্যাশের মতো গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারগুলো পাওয়া যায় না। ফ্ল্যাশ প্লাগইন ইনস্টল না থাকলে ইন্টারনেটে ইউটিউব ভিডিওসহ বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন কাজ করবে না। একই সাথে জাভা না থাকলেও অনেক ওয়েবভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনে কাজ করা যাবে না। লিনআক্স মিন্টে শুরু থেকেই জাভা ও ফ্ল্যাশের সর্বশেষ সংস্করণগুলো জুড়ে দেয়া থাকে। ফলে আপনাকে আর ঝামেলা করে ডাউনলোড করতে হয় না।

গিম্প

লিনআক্স ব্যবহার করে যারা গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের কাজ করতে চান, তাদের অন্যতম পছন্দ হচ্ছে গিম্প। গিম্প অনেকটা ফটোশপের মতোই কাজ করে, যদিও এর ইন্টারফেস সম্পূর্ণ ভিন্ন। এটি বিনামূল্যের সফটওয়্যার যা লিনআক্সের পাশাপাশি উইন্ডোজেও পাওয়া যায়। প্রফেশনাল ডিজাইনিং ও ফটো এডিটিংয়ের কাজ করা যায় এই গিম্প দিয়ে। উবুন্টুর আগের সংস্করণগুলোতে গিম্প ডিফল্ট ইমেজ এডিটর হিসেবে দেয়া থাকত। ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া গিম্প ডাউনলোড করা যাবে না, তাই অনেকেই লিনআক্স মিন্টকে পছন্দ করেন। কারণ এতে গিম্প ডিফল্ট অবস্থায় দেয়াই থাকে।

অ্যাপটনসিডি অথবা ব্যাকআপ

মনে করুন, আপনার কমপিউটারে প্রচুর সফটওয়্যার ইনস্টল করেছেন, এবার এসব সফটওয়্যার নিয়ে একটি ব্যাকআপ রাখতে চান। লিনআক্স মিন্টে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করলেই খুঁজে পাবেন অ্যাপটনসিডি এবং ব্যাকআপ এই দুটি অপশন।

ব্যাকআপ দিয়ে আপনি হোম ডিরেক্টরি কিংবা সম্পূর্ণ ইনস্টলড সফটওয়্যারগুলোর ব্যাকআপ নিতে পারবেন, যা আপনার কমপিউটারের ড্রাইভেই সেভ থাকবে। আর অ্যাপটনসিডি দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন একটি আইএসও ফাইল তৈরি করতে পারবেন, যা দিয়ে যেকোনো কমপিউটারে আবার লিনআক্স মিন্ট ইনস্টল করা যাবে ঠিক আপনার পছন্দের সেটিংসগুলো অবিকল রেখেই। এই অ্যাপটনসিডি উবুন্টুতে কাজ করলেও ডিফল্ট দেয়া থাকে না। লিনআক্স মিন্টে এটি দেয়াই থাকে যাতে আপনার প্রয়োজনমতো আইএসও ফাইল তৈরি করে নিতে পারেন।

অন্যান্য

এসব ছাড়াও লিনআক্স মিন্টে থাকে কমপিজ সেটিংস ম্যানেজার, যা দিয়ে আপনি কমপিউটারের যাবতীয় গ্রাফিক্যাল ইফেক্ট কন্ট্রোল করতে পারবেন। উল্লেখ্য, উবুন্টুকে কাস্টোমাইজ করেই লিনআক্স মিন্ট তৈরি করা হয় বলে উবুন্টুতে যেসব সফটওয়্যার চলে সেসব সফটওয়্যার লিনআক্স মিন্টেও কাজ করবে। তবে লিনআক্স মিন্টের সাথে কোডেকগুলো পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই লিনআক্স মিন্টের ডিভিডি সংস্করণটি ডাউনলোড করে ইনস্টল করতে হবে। সিডি সংস্করণটি ইনস্টল করলে আবার সেই কোডেকগুলো ডাউনলোডের ঝামেলা থেকেই যাবে। তাই সম্পূর্ণ রেডি অপারেটিং সিস্টেম পেতে লিনআক্স মিন্ট ডিভিডি সংস্করণ ডাউনলোড করুন এই লিঙ্ক থেকে : linuxmint.com/download.php


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : sajib@aisjournal.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস