• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের ষষ্ঠ সম্মেলন
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: গোলাপ মুনীর
মোট লেখা:২৩৩
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - অক্টোবর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
গভর্নেন্স
তথ্যসূত্র:
রির্পোট
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের ষষ্ঠ সম্মেলন


কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ২৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় চার দিনব্যাপী ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (আইজিএফ) ষষ্ঠ সম্মেলন। নাইরোবির ইউনাইটেড ন্যাশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ফোরামে ১০০ রাষ্ট্রের দুই হাজারের অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির একান্ত সচিব মো: মিজানুর রহমান, এশিয়া ওমেন ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. ফাহিম হোসেন, মাসিক কমপিউটার জগৎ-এর সহকারী সম্পাদক ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের মহাসচিব এম. এ. হক অনু এবং সোম কমপিউটারসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা হক।

সম্মেলনের প্রথম দিনে ‘ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফর ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের দলনেতা হাসানুল হক ইনু এমপি উন্নয়নশীল দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের জন্য নিম্নোক্ত প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করেন।

০১. উন্নয়নশীল দেশের আন্তর্জাতিক খাতের ঋণ মওকুফ অথবা অর্থের আংশিক তথ্যপ্রযুক্তির খাতে বিনিয়োগ;

০২. প্রাকৃতিক দুর্যোগ উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করে বিধায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জনে তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের জন্য অর্থায়নে আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা;

০৩. সরকারের প্রশাসনে তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগ ও সক্ষমতা অর্জনে এবং তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে সরকারি বড় বড় প্রকল্পে অথবা অবকাঠামো নির্মাণের জন্য উন্নত দেশের আর্থিক সহায়তা;

০৪. TRIPS Agreement বাস্তবায়ন করা, যাতে করে উন্নয়নশীল দেশে প্রযুক্তিজ্ঞান স্থানান্তর করা যায়;

০৫. আন্তর্জাতিক হাইস্পিড ব্রডব্যান্ড এবং আন্তর্জাতিক হাইস্পিড ব্রডব্যান্ডের ব্যাকহল (Backhaul) মূল্য কমানোর জন্য বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৩২টি দেশের সমন্বয়ে Asian Terrestrial Information Highway Network গড়ে তোলা।

সাব সাহারা আফ্রিকান রাষ্ট্র কেনিয়ায় আয়োজিত আইজিএফের প্রথম সভার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে : The Internet as a catalyst for change, access, development freedoms and innovation.

উল্লেখ্য, কেনিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট কালোন মুসাইকা ষষ্ঠ আইজিএফের উদ্বোধন করেন। কেনিয়ার যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী, সচিব এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের মহাসচিব ড. হামাদুন তুরে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র, পোল্যান্ড, জাপান, আজারবাইনের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীসহ আইকানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, আইসিসিআই, গুগল এবং ইন্টারনেট সোসাইটির প্রতিনিধিরা।

নাইরোবির ষষ্ঠ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের চতুর্থ দিনে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন আয়োজিত ‘ডাইনামিক কোয়ালিশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। তিনি তার বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগের ওপর উন্নত দেশগুলোর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার আহবান জানান। এ ছাড়া তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

আইটিইউ আঞ্চলিক অফিস ও আফ্রিকার ঊর্ধ্বতন উপদেষ্টা আলি দিরাসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য সভাপতির একান্ত সচিব মিজানুর রহমান, বিআইজিএফ মহাসচিব এম. এ. হক অনু, আইটিইউ সমন্বয়ক মিস ক্রিস্টিনা, মাইক্রোসফট, ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন, ঘানা ও উগান্ডার আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।



বাংলাদেশ ফোরামের আলোচনা সভা

নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত এবারের আইজিএফের ষষ্ঠ বার্ষিক বৈঠকের ধারণা হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে : ‘ইন্টারনেট অ্যাজ অ্যা ক্যাটালিস্ট ফর চেঞ্জ : অ্যাক্সেস, ডেভেলপমেন্ট, ফ্রিডমস অ্যান্ড ইনোভেশন’। এই মূল ধারণা বা মেইন থিমের উদ্দেশ্য সাধনে আইজিএফ আরো কয়েকটি উপ-ধারণা বা সাব-থিম চিহ্নিত করেছে ষষ্ঠ বার্ষিক বৈঠকে আলোচনার জন্য। এসব উপধারণা হচ্ছে :

০১. ইন্টারনেট ফর গভর্নেন্স।
০২. ইমার্জিং ইস্যুজ।
০৩.ম্যানেজিং ক্রিটিক্যাল ইন্টারনেট রিসোর্স।
০৪.সিকিউরিটি, ওপেননেস অ্যান্ড প্রাইভেসি।
০৫. অ্যাক্সেস অ্যান্ড ডাইভার্সিটি।
০৬. টেইকিং স্টক অ্যান্ড দ্য ওয়ে ফরওয়ার্ড।

উল্লিখিত ষষ্ঠ বার্ষিক আইজিএফ বৈঠককে সামনে রেখে এর প্রস্ত্ততি পর্বের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আইজিএফ ফোরাম গত ২৫ আগস্ট ঢাকায় একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ। আলোচনা সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন ‘সেন্টার ফর ই-পার্লামেন্টে রিসার্চ’-এর চেয়ারপারসন ড. আকরাম এইচ চৌধুরী এমপি।

আলোচনা সভায় শুরুতেই মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ ফ্যাকাল্টির ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের লেকচারার ড. মোহাম্মদ মাহফুজ আশরাফ। এ ছাড়া বাংলাদেশ কমপিউটার কাউন্সিলের সিনিয়র সিস্টেমস অ্যানালিস্ট তারিক এম. বরকতুল্লাহ এবং বিটিআরসির পরিচালক লে. কর্নেল রকিবুল হাসান বাংলাদেশে ইন্টারনেট গভর্নেন্সের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তাদের আলাদা আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তারিক এম. বরকতুল্লাহ ও লে. কর্নেল রকিবুল হাসানের উপস্থাপনায় বাংলাদেশে ইন্টারনেট ও ইন্টারনেট গভর্নেন্স সম্পর্কিত অগ্রগতির বিষয়টি উঠে আসে।

প্রধান অতিথি হাসানুল হক ইনু তার বক্তব্যে বলেন, ‘আইজিএফের বার্ষিক ফোরাম বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারিভাবে অংশ নেয় না। তারপরও এ ধরনের বেশ কয়েকটি আইজিএফ বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশ বেসরকারিভাবে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছে। এ দেশের কিছু আগ্রহী মানুষের চেষ্টার ফলেই তা সম্ভব হয়েছে। নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত আইজিএফের ষষ্ঠ বার্ষিক বৈঠকেও সরকারিভাবে অংশ নেয়া হচ্ছে না। প্রস্ত্ততি চলছে আগের মতোই এ বৈঠকেও বেসরকারিভাবে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর। তারই অংশ হিসেবে আমাদের আজকের এই আলোচনা সভায় আমরা সবাই এখানে সমবেত হয়েছি।

আগের আইজিএফ সম্মেলনগুলোতে যোগ দেয়ার সুফল সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের সম্মেলনে যোগ দেয়ার সুবাদেই আমরা বাংলাকে টপ লেভেল ডোমেইনে অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমরা যদি সরকারিভাবে এ ধরনের একটি সম্মেলনে অংশ নিতে পারতাম, তবে তা থেকে জাতীয়ভাবে আরো বেশিমাত্রায় উপকৃত হতে পারতাম। এ ধরনের আরো অনেক সাফল্যই আমাদের হাতে ধরা দিত।’ সরকারের ডিজিটাল ভিশন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের ভেতরে একটি ডিজিটালবিরোধী প্রশাসন কাজ করছে। তাদের কর্মকান্ড মাঝেমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের প্রয়োজন এসব বিষয়ে নজর দেয়া। সরকার উল্লেখযোগ্যভাবে ইন্টানেটের দাম কমিয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষ এ থেকে উপকৃত হচ্ছে না।’

তিনি বিটিআরসি-কে বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি আরো উল্লেখ করেন, ইন্টারনেটে বাংলা বিষয়বস্ত্ত বা কনটেন্টের চরম অভাব রয়েছে। যদি ইন্টারনেটে পর্যাপ্ত বাংলা কনটেন্টের সম্মিলন না ঘটানো যায় এবং এই বিষয়টি যদি নিশ্চিত করা না যায়, তবে সাধারণ মানুষকে ইন্টারনেটের দিকে আকৃষ্ট করা যাবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আর কোনো দেরি না করেই আমাদের উচিত ডাটা প্রটেকশন অ্যাক্ট এবং ডাটা পাইরেসি অ্যাক্ট প্রণয়ন করা। তা ছাড়া আইক্যান (ICANN) ও আইজিএফ সম্মেলনে সরকারি প্রতিনিধি দল পাঠানোর ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

তিনি তার বক্তব্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আগামী ২০১২ সালের মধ্যে পৃথিবী চলে যাবে আইপিভি৬ (IPv6) প্রযুক্তিতে। অতএব এখন থেকে আমরা যদি এ নিয়ে না ভাবি, তবে এ সময়ে এসে আমরা বাকি দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়ে যাব।

ড. মো: মাহফুজ আশরাফ তার উপস্থাপিত প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয়, প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক পর্যায়ে ব্যাপকভিত্তিক ইন্টারনেট ব্যবহার লক্ষ করা যাচ্ছে। অতএব এখন এটাই চরম সময় এর তত্ত্ব ও অনুশীলন সম্পর্কে জেনে-বুঝে দুর্নীতি দমনসহ জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা জোরদার করে তোলার। আমরা জানি, সুশাসন প্রশাসনে দুর্নীতি কমায় আর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ায়। আর সুশাসন আনা সম্ভব ইন্টারনেটের সফল প্রয়োগের মাধ্যমে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা একটি সামাজিক বিবেচ্য হলেও ইন্টারনেট সিকিউরিটির বিষয়টি কারিগরি সম্পর্কিত বিবেচ্য। ২০০৩ সালে ফেডারেল ট্রেড কমিশনের দেয়া পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, এর আগের বছর আমেরিকায় প্রায় ১ কোটি আমেরিকান আইডি চুরির শিকার হয়েছেন। এই আইডি চুরির মাধ্যমে অর্থ চুরি ও গোপনীয়তা নষ্ট করার ঘটনা ঘটতে পারে। বাংলাদেশে জাতীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্রুত বেড়ে যাওয়ার ফলে আমরাও একই ধরনের প্রতারণার শিকার হতে পারি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রাইভেসির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোনো ধরনের গবেষণা ও নীতি-নির্দেশনার অস্তিত্ব নেই।

বিআইজিএফ তথা বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের পলিসি অ্যাডভোকেসি ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেন, বিআইজিএফের কর্মকান্ডের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে ইন্টানেটের প্রয়োগে সুশাসনের পথকে সুগম করবে। এ লক্ষ্য অর্জনে বিআইজিএফের কর্মতৎপরতা সূত্রে জাতীয়ভাবে আমাদের অবস্থানের উন্নয়ন ঘটবে, সেই সাথে দেশের প্রধান প্রধান সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শেখা, শিক্ষণ. প্রশিক্ষণ, গবেষণা, পরামর্শ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশীদারিত্ব জোরদার হবে।

অন্যান্যের মাঝে এ বৈঠকে উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন এশিয়ান-ওসেনিয়ান কমপিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন তথা অ্যাসোসিও’র ডেপুটি প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ এইচ কাফি, আমাদের গ্রামের পরিচালক রেজা সেলিম, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিফোন অপারেটরস ইন বাংলাদেশের মহাসচিব আবু সাঈদ খান, দৃক আইসিটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম আলতাফ হোসেন। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিআইজিএফ সদস্য এএইচএম বজলুর রহমান।

প্রসঙ্গ : আইজিএফ

ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম তথা আইজিএফ একটি বার্ষিক ফোরাম। এ ফোরাম প্রতিবছর আয়োজিত হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ২০০৫ সালে জাসিংঘের ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি’ তথা ডব্লিউএসআইএস এই ফোরাম গড়ে তোলে। এটি হচ্ছে নীতি-সংলাপের একটি ফোরাম। সমঝোতা গড়ে তোলার কাজ এ ফোরামের নয়। ইন্টারনেট নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত নানা বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় আইজিএফ প্রভাব ফেলে থাকে। এটি বিশ্বের মাল্টিস্টেকহোল্ডার গ্লোবাল ফোরাম। আইজিএফ গড়ে তোলা হয়েছিল ডোমেইন নেম সিস্টেম ব্যবস্থাপনায় মার্কিন সরকারের ভূমিকার বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিরোধ এড়ানোর প্রয়াস হিসেবে। আইজিএফ পরিচালিত হয় একটি স্বাধীন সেক্রেটারিয়েটের মাধ্যমে। এর তহবিল আসে স্বেচ্ছা অনুদানের ভিত্তিতে।



আইজিএফ আলোচনা করে এমন কতগুলো বিষয় নিয়ে, যা ইন্টরনেট বিজনেসের ওপর প্রভাব ফেলে। এসব বিষয়ের মধ্যে আছে : প্রাইভেসি/ডাটা প্রবাহ, সিকিউরিটি, ব্রডব্যান্ড ডেপ্লয়মেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক ডোমেইন নেমসহ যাবতীয় ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রোপার্টি রেগুলেশন অন ট্রেড অ্যান্ড কমার্স এবং কমপ্লায়েন্স রিকয়ারমেন্টস অন নিউ বিজনেস মডেলস। অর্থনৈতিক দক্ষতা অর্জন ও অব্যাহত উদ্ভাবন এগুলো মুখ্য বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বের সরকারি প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য আসার পাশাপাশি ইন্টারনেটের মৌল অবকাঠামো সৃষ্টি, পরিচালনা ও সম্প্রসারণের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে আসে নানা পরামর্শ। বিগত ছয় বছর ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে ইন্টারনেট পলিসি সম্পর্কিত বহুসংখ্যক সুপারিশ পাওয়া গেছে। সেই সাথে সম্পর্ক জোরদার হয়েছে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, সরকার পক্ষ ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের মাঝে। আইজিএফের বড় সুবিধা হচ্ছে, শুধু সরকারগুলোর মধ্যে নয়, স্টেকহোল্ডার গ্রুপগুলোকে সমান সুযোগ দিয়ে এক কাতারে এনে দাঁড় করিয়েছে। আইজিএফ একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছে নীতি, প্রয়োগ, সক্ষমতা অর্জন ইত্যাদি প্রশ্নে মতবিনিময়ের।

এ পর্যন্ত ২০০৫ সালে জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি’ তথা ডব্লিউএসআইএসের সিদ্ধান্তসূত্রে গড়ে ওঠা ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের এ পর্যন্ত পাঁচটি বার্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এসব বার্ষিক বৈঠক বসে।

আইজিএফ ২০০৬ : প্রথম বার্ষিক আইজিএফ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২০০৬ সালে। চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের শুরু ৩০ অক্টোবর, সমাপ্তি ২ নভেম্বর। অনুষ্ঠানস্থল ছিল গ্রিসের অ্যাথেন্স। এ সম্মেলন শুরুর আগে ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অ্যাথেন্স বৈঠকের অ্যাজেন্ডা, কর্মসূচি, কাঠামো ও ধরন অনুমোদিত হয়। এসব অনুমোদিত সুপারিশ পাঠানো হয় জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে। তিনি এরপর দ্বিতীয় আরেকটি বৈঠক ডাকেন। এ বৈঠকে প্যানালিস্ট ও ওয়ার্কশপের একটি সংক্ষেপিত তালিকা তৈরি করা হয়। সেই সাথে অ্যাথেন্সে অনুষ্ঠিত প্রথম বার্ষিক আইজিএফ বৈঠকের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।

সেবারের এ সম্মেলনে একটি উদ্ভাবনীমূলক ফরমেটে মাল্টিস্টেকহোল্ডার প্যানেলের মিথস্ক্রিয় প্রশ্ন ও শ্রোতাদের মন্তব্যের ভিত্তিতে ৬টি প্যানেল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই ৬টি প্যানেল অধিবেশনের শিরোনাম ছিল : সেটিং দ্য সিন, ওপেননেস, সিকিউরিটি, ডাইভারসিটি, অ্যাক্সেস ও ইমার্জিং ইস্যুজ। এসব অধিবেশনে ব্লগ, চ্যাটরুম, ই-মেইল ও টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে রিমোট পার্টিসিপেশনের সুযোগ ছিল।

আইজিএফ ২০০৭ : দ্বিতীয় এ বার্ষিক আইজিএফ বৈঠক শুরু হয় সে বছরের ১২ নভেম্বর। শেষ হয় ১৫ নভেম্বর। অনু্ষ্ঠানস্থল ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো। এ সম্মেলনে নিবন্ধিত যোগদানকারী প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল ২১০০। এর মধ্যে ৭০০ জন এসেছিলেন সুশীল সমাজ থেকে। ৫০০ জন ছিলেন সরকারি প্রতিনিধি, ৩০০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, ১০০ জন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি এবং ৪০০ জন প্রতিনিধি ছিলেন বিবিধ শ্রেণীর। সাংবাদিক প্রতিনিধি ছিলেন ১০০ জন। তবে শেষ পর্যন্ত সম্মেলনে যোগ দেন মোট ১৩৬৩ জন প্রতিনিধি। যোগদানকারী দেশের সংখ্যা ছিল ১০৯টি।

এ সম্মেলনে ৯টি মূল অধিবেশন বসে। আইজিএফ প্রস্ত্ততি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পাওয়া অ্যাজেন্ডা ফরমেটের আওতায় চলে এসব অধিবেশন। মূল অধিবেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় আরো কিছু ওয়ার্কশপ, বেস্ট প্র্যাকটিস ফোরাম, ডাইনামিক কোয়ালিশন মিটিং ও ওপেন ফোরাম। এসব ওয়ার্কশপ ও ফোরামের আলোকপাত ছিল পাঁচটি মূল ধারণা বা থিমের ওপর। পুরো বৈঠকের কার্যক্রম ওয়েবকাস্ট করা হয়। পাশাপাশি চলে এর রিয়েল টাইম ট্রান্সক্রাইব। এসব রেকর্ড আপলোড করা হয় আইজিএফ ওয়েবসাইটে। ব্লগ, চ্যাটরুম ও ই-মেইলের মাধ্যমে রিমোট পার্টিসিপেশনের ব্যবস্থাও ছিল।

আইজিএফ ২০০৮ : তৃতীয় বার্ষিক আইজিএফ বৈঠক বসে ২০০৮ সালে ভারতের হায়দরাবাদে। চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন শুরু হয় সে বছরের ৩ ডিসেম্বর। আর শেষ হয় ৬ ডিসেম্বর। এ সম্মেলনের থিম বা বিবেচ্য ছিল ‘ইন্টারনেট ফর অল’। মুম্বাইয়ের ভয়াবহ বোমা হামলার পরপরই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় বলে সম্মেলনে এ হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয়। এ জন্য সম্মেলনের আয়োজনে কিছু কাটছাঁট করতে হয়। সেবার ৯৪টি দেশের ১২৮০ জন প্রতিনিধি এতে যোগ দেন। এর মধ্যে ১৩৩ জন ছিলেন গণমাধ্যম প্রতিনিধি। দ্বিতীয় বার্ষিক আইজিএফ বৈঠকেও প্রায় সমসংখ্যক গণমাধ্যম প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন।

এ সম্মেলনে পাঁচটি মূল অধিবেশন বসে। প্রতিটি অধিবেশনেই ছিল আলাদা আলাদা আলোচ্যসূচি :

০১. রিচিং দ্য নেক্সট বিলিয়ন,
০২. প্রমোটিং সাইবার-সিকিউরিটি অ্যান্ড ট্রাস্ট,
০৩. ম্যানেজিং ক্রিটিক্যাল ইন্টারনেট রিসোর্সেস,
০৪. ইমার্জিং ইস্যুজ- দ্য ইন্টারনেট টুমরো,
০৫. টেকিং স্টক অ্যান্ড দ্য ওয়ে ফরওয়ার্ড।

প্রতিটি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেছেন স্বাগতিক দেশের প্রতিনিধি। আর এসব অধিবেশনের সঞ্চালক ছিলেন সাংবাদিক প্রতিনিধি ও স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা।

মূল অধিবেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় ৮৭টি ওয়ার্কশপ, বেস্ট প্র্যাকটিস ফোরাম, ডাইনামিক কোয়ালিশন মিটিং ও ওপেন ফোরাম। এসবই কেন্দ্রীভূত ছিল এ সম্মেলনের থিম ও আইজিএফ ম্যান্ডেটে। মুম্বাইয়ে বোমা হামলার কারণে পাঁচটি ওয়ার্কশপ বাতিল করতে হয়। পুরো সম্মেলনের কার্যক্রম ওয়েবকাস্ট করা হয়। ওয়ার্কশপগুলোর অডিও ও ভিডিও করা হয়, যা আইজিএফ ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। জাতিসংঘের স্বীকৃত ভাষাগুলোসহ হিন্দি ভাষায় কার্যবিবরণীর প্রতিলিপি তৈরি করে তা প্রদর্শিত হয়।

আইজিএফ ২০০৯ : চতুর্থ এ বার্ষিক আইজিএফ সম্মেলন শুরু হয় সে বছরের ১৫ নভেম্বর। চার দিনের এ সম্মেলন শেষ হয় ১৮ নভেম্বর। সম্মেলনস্থল ছিল মিসরের শার্ম আল শেখ। সম্মেলনের থিম বা ধারণাবাক্য ছিল : ‘ক্রিয়েটিং অপরচ্যুনিটি ফর অল’। ১১২টি দেশ থেকে ১৮০০ প্রতিনিধি এ সম্মেলনে যোগ দেন। এর আগের সব সম্মেলনের চেয়ে সবচেয়ে বেশি প্রতিনিধি এতে যোগ দেন। বিশ্বের ৯৬টি দেশের সরকার ও ১২২টি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল এ সম্মেলনে। সম্মেলনের প্রতিটি অধিবেশনে ছিল সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি। এর বাইরে ছিল মডারেটেড ওপেন ডিসকাশন। মূল অধিবেশনগুলোর পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় ১০০টি ওয়ার্কশপ, বেস্ট প্র্যাকটিস ফোরাম, ডাইনামিক কোয়ালিশন মিটিং ও ওপেন ফোরাম। সবই কেন্দ্রীভূত ছিল আইজিএফের সার্বিক ম্যান্ডেট ও থিমের ওপর।

পুরো বৈঠকের কার্যক্রম ভিডিও স্ট্রিমিংসহ ওয়েব কাস্ট করা হয়। মূল অধিবেশনগুলোর কার্যবিবরণীর প্রতিলিপি জাতিসংঘে স্বীকৃত প্রাতিষ্ঠানিক সব ভাষায় প্রকাশ করে প্রদর্শিত হয়। সম্মেলনে রিমোট পার্টিসিপেশনের ব্যবস্থাও ছিল।

এই সম্মেলনে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল যোগ দেয়। এ প্রতিনিধিদলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন : ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী এমপি, এনজিও ব্যক্তিত্ব এএইচএম বজলুর রহমান ও মাসিক কমপিউটার জগৎ-এর সহকারী সম্পাদক এম. এ. হক অনু। এ ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি উদ্যোক্তা এ সম্মেলনে যোগ দেন।

আইজিএফ ২০১০ : এটি ছিল আইজিএফের পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে। চার দিনব্যাপী এ সম্মেলন সে বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। সেবার এ সম্মেলনের থিম বা আপ্তবাক্য ছিল : ‘ডেভেলপিং দ্য ফিউচার টুগেদার’। এ সম্মেলনে অংশ নেন বিশ্বের নানা দেশ থেকে ১৪৬১ জন প্রতিনিধি। মোটামুটিভাবে ২০০৯ সালে মিসরের শার্ম আল শেখে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বার্ষিক আইজিএফ সম্মেলনের সমানই ছিল এ সম্মেলনে যোগদানকারী প্রতিনিধির সংখ্যা। মূল অধিবেশনগুলোর পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হয় ১১৩টি কর্মশালা, বেস্ট প্র্যাকটিস ফোরাম, ডাইনামিক কোয়ালিশন ফোরাম ও ওপেন ফোরাম। আইজিএফ কর্মসূচি ও বৈঠকের প্রস্ত্ততি চলে ২০১০ সাল জুড়ে আইজিএফের মিথস্ক্রিয়া ও অংশীদারিত্বমূলক প্রক্রিয়ার আওতায় অনুষ্ঠিত মাল্টিস্টেকহোল্ডারদের কয়েক দফা উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে। পুরো বৈঠক ভিডিও স্ট্রিমিংসহ ওবেকাস্ট করা হয় মূল অধিবেশন কক্ষ ও অন্য আরো ৯টি সভাকক্ষ থেকে। সব বৈঠকের কার্যবিবরণীর প্রতিলিপি সভাক্ষগুলোতে প্রদর্শিত হয় বাস্তব সময়ে। এরপর তা ওয়েবে প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি বৈঠকে যোগ দেয়ার সুযোগ পান। সব অধিবেশনের বিবরণী জাতিসংঘের অফিসিয়াল ভাষায় প্রকাশ করা হয়। সব অধিবেশনের কার্যবিবরণীর লিখিত, অডিও আর ভিডিও রেকর্ড আর্কাইভে সংরক্ষিত করা হয়। রিমোট পার্টিসিপেশন ওয়ার্কিং গ্রুপের মাধ্যমে রিমোট পার্টিসিপেশন জোরদার করা হয়। বিশ্বব্যাপী ৩২টি স্থানে থাকা হাবের মাধ্যমে ৬০০ লোক সম্মেলনস্থলে না গিয়েও এসব স্থান থেকে সক্রিয়ভাবে ফোরামের আলোচনায় অংশ নেন।

এ সম্মেলনেও বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের উদ্দ্যোগে একটি প্রতিনিধি দল যোগ দেয়। আগামী বছর ২০১২ সালে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত হবে ৭ম আইজিএফ।



কজ ওয়েব
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস