• ভাষা:
  • English
  • বাংলা
হোম > জলবায়ু পরিবর্তন : সতর্ক করার দানব রোবট
লেখক পরিচিতি
লেখকের নাম: সুমন ‍ইসলাম
মোট লেখা:৮৭
লেখা সম্পর্কিত
পাবলিশ:
২০১১ - ডিসেম্বর
তথ্যসূত্র:
কমপিউটার জগৎ
লেখার ধরণ:
রোবট
তথ্যসূত্র:
দশদিগন্ত
ভাষা:
বাংলা
স্বত্ত্ব:
কমপিউটার জগৎ
জলবায়ু পরিবর্তন : সতর্ক করার দানব রোবট
জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে এখন সারা বিশ্বেই কাজ চলছে। সবাই এটা দিব্যি উপলব্ধি করতে পারছেন যে, পৃথিবীতে বাস করতে হলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে ভাবনার কোনো বিকল্প নেই। তাই বলে শুধু ভাবনাই যথেষ্ট নয়। নিতে হবে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোকেও। বিশ্ব নেতারা সবাইকে একত্রীকরণের কাজটি করার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে বসে নেই প্রযুক্তিবিদরাও। তারাও তাদের অবস্থান থেকে রাখার চেষ্টা করছেন অনবদ্য ভূমিকা।

এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকজন শিল্পী ও প্রকৌশলী উদ্যোগ নিয়েছেন ৩৫ ফুট দীর্ঘ একটি দানব রোবট সাপ তৈরি করার। এই সাপের কাজ হবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করা। এককথায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা। দানব রোবট সাপটি হবে একটি টাইটানোবোয়া সাপ। এই সাপ ৬ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে বাস করত। এদের দৈর্ঘ্য ছিল ৫ ফুট এবং ওজন ১ টন।



ইটএআরটি দল বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জানায়, ওই দানব ইলেকট্রোম্যাকানিক্যাল সাপটি পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবে এবং মানুষের মধ্যে ভয় ও আশার সঞ্চার করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঠিক কী ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে আমাদের পড়তে হবে, ওই সাপ সেটিই তুলে ধরবে। দূর নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তিতে পরিচালিত হবে ওই রোবট সাপ। এটি চারটি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে। জীবন্ত সাপের মতো এটি এঁকে-বেঁকে পথ চলবে। পাশাপাশি এটির দেহে ঢেউ খেলবে এবং ফুলে উঠবে। যেকেউ এর পিঠে উঠে বসতে পারবে। ছোবল দেয়ার ভয় নেই। মেরুদন্ডে রয়েছে ৩০টি ভাগ এবং এগুলো শক্তিশালী অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। রয়েছে একটি বড় মাথা। সাপটি বিদ্যুৎ পাবে লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি সিস্টেম থেকে। রোবটের রয়েছে এক জোড়া অ্যানিমেটেড চোয়াল। একে আরো আকর্ষণীয় তথা আবেদনময়ী করতে প্রকল্প দলের কর্মীরা পুরো সাপটিকে ধাতব পদার্থ দিয়ে মুড়ে দেয়ার কথা ভাবছেন।

রোবট মেরু ভল্লুক :

ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা লোকের অভাব নেই। এটি একটি রোগ বিশেষ। দীর্ঘমেয়াদে এই রোগ নিশ্চয়ই কল্যাণ বয়ে আনে না। তাই চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিরাময়ে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। এদিকে প্রযুক্তিবিদরা উদ্ভাবন করেছেন একটি রোবটিক মেরু ভল্লুক। এই রোবট নাক ডাকা লোকদের সহায়তা করতে পারবে। গত মাসে টোকিওতে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল রোবট এক্সিবিশন তথা আইআরইএক্সে এই চমৎকার ভল্লুকটি প্রদর্শন করা হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে জুকুসুই-কুন। জাপানি ভাষায় এর অর্থ গভীর ঘুম।

রোবট ভল্লুকটির আকৃতি বালিশের মতো। এর ভেতরে রয়েছে স্পর্শকাতর বহু যন্ত্রপাতি। বাইরে থেকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। টোকিওর ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলী এই মেরু ভল্লুক তথা রোবট বালিশ উদ্ভাবন করেছেন। তাদের লক্ষ্য হলো নাক ডাকাদের এবং যারা নাক ডাকার জটিলতা থেকে রক্ষা পেতে চান তাদের সাহায্য করা।

নাক ডাকার শব্দ প্রতিবারই খুবই জোরে হয়। আর এটা হয় মূলত ঘুমানোর সময় শোয়ার পজিশন বা অবস্থানগত কারণে। বালিশসদৃশ রোবট মেরু ভল্লুকে মাথা রাখলে ভল্লুকটি তার হাত বা পা দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শোয়ার পজিশন ঠিক করে দেবে। তাই নাক ডাকার মতো অবস্থা তৈরি হতে পারবে না। নাক ডাকার শুরুতেই ভল্লুকটি আলতোভাবে স্পর্শ করে শোয়ার অবস্থান পরিবর্তনের কাজটি করে দেবে। তাই ওই ব্যক্তির ঘুমে কোনো রকম ব্যাঘাত ঘটবে না। এটিই নিঃসন্দেহে বিশ্বের প্রথম নাক ডাকা বিরোধী মেশিন। ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত হলেই ঘুম ভেঙে যায় কিংবা বিঘ্ন ঘটে। জাপানের ২০ লাখ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছে।



চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন, রক্তে অক্সিজেন প্রবাহের সাথে ঘুম বিঘ্ন ঘটার সম্পর্ক রয়েছে। তাই ওই রোবটিক বালিশ তথা মেরু ভল্লুক ব্যবহার করে একটি অক্সিজেন মিটার, যা সংযুক্ত থাকে ঘুমন্ত ব্যক্তির হাতে। ঘুমের মধ্যে রক্তে অক্সিজেন প্রবাহ মনিটর করা হয় ওই মিটার দিয়ে। মিটারে যদি অক্সিজেন প্রবাহ কম দেখা যায় তখন ভল্লুক বিশেষ উপায়ে সিগনাল পেয়ে যাবে এবং নেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। নাক ডাকার পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য ভল্লুকের রয়েছে একটি মাইক্রোফোন।

রক্তে অক্সিজেন প্রবাহ কমার এবং নাক ডাকার শব্দ বাড়তে থাকার সাথে সাথেই জুকুসুই-কুন ধীরে ধীরে তার হাতটি উঠিয়ে ব্রাশ করতে থাকবে ঘুমন্ত ব্যক্তির চেহারায়। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি না জেগেই তার শোয়ার অবস্থান পরিবর্তন করে ফেলবে। ফলে বন্ধ হবে নাক ডাকা। এই রোবট ভল্লুক কবে নাগাদ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়ে বাজারে আসবে তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।

চুল কাটার রোবট :

জাপানের ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্যানাসনিক তৈরি করেছে এমন রোবট যে কি না চুল কেটে দেবে। অর্থাৎ এটি একটি নাপিত রোবট। টোকিওতে অনুষ্ঠিত সিয়াটেক মেলায় এই রোবটের কার্যক্রম দেখানো হয়।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, যারা চুল কাটাতে চান কিংবা চুলের যত্ন নিতে চান, তারা এ রোবটটির কাছে মাথা পেতে দিলেই হবে। দক্ষ কর্মীর মতো চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ এবং শ্যাম্পু করার কাজটিও চমৎকারভাবে করে দেবে এ রোবট। ১০টি নয়, রোবটের হাতে রয়েছে ২৪টি আঙুল। এগুলো ব্যবহার করে মাথা ম্যাসাজ এবং সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে সহজেই মাথা ধোয়ার কাজটি করতে পারে সে।

যন্ত্রশিল্পী রোবট :

টিওট্রোনিকা নামের একটি রোবট তৈরি করেছেন ইতালির উদ্ভাবক ম্যাটে সুজি। এটি মানুষের চেয়েও দ্রুতগতিতে পিয়ানো বাজাতে পারে। এর হাতে রয়েছে ১৯টি আঙুল। চোখের স্থানে রয়েছে ভিডিও-ক্যামেরা। তাই যন্ত্রশিল্পী টিওট্রোনিকা চারপাশের সবার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। উদ্ভাবক ম্যাটে সুজি বলেন, প্রায় ৪ বছর ধরে এবং ৪ হাজার ৭০০ ডলারেরও বেশি খরচ করে তিনি টিওট্রোনিকাকে তৈরি করেছেন।

মানুষ-রোবট মিলন :

আর ৪০ বছর পরই মানুষ ও রোবটের মধ্যে গড়ে উঠবে শারীরিক সম্পর্ক। আর এটা হবে রোবট আর মানুষ একসাথে থাকতে থাকতেই। এইডসের মতো ঘাতক ব্যাধির ঝুঁকি মোকাবেলায় এ প্রদ্ধতিকেই বেছে নেবে মানুষ। গবেষকরা সম্প্রতি এমন আশঙ্কাই ব্যক্ত করছেন।

নিউজিল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটনের ট্যুরিজম ফিউচারোলজিস্ট ইয়ান ইয়োম্যান জানিয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ ট্যুরিজমে স্থান করে নেবে বিভিন্ন ইনডোর ট্যুরিজমভিত্তিক পণ্য। এর মধ্যে রয়েছে রোবো-বার স্টাফ, রঙ পরিবর্তনকারী হোটেল রুম এবং রোবো যৌনকর্মী।

ইয়োম্যান বলেন, ট্যুরিজম ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার আজকের দিনের চেয়ে অনেক গুণ বেড়ে যাবে। কারণ রোবট কম খরচে অধিক কর্মক্ষম এবং সেবাও দিতে পারে নিবিড়।

চিন্তাশীল রোবট :

রোবট কাজ করে প্রোগ্রাম ভিত্তিতে। অর্থাৎ যেভাবে প্রোগ্রাম করে দেয়া হয় সেই তথ্যের ভিত্তিতেই রোবট কাজ করে থাকে। মানুষের মতো নিজস্ব অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা থেকে কাজ করার ক্ষমতা তার নেই। কিন্তু এখন সেই দিনের অবসান ঘটতে চলেছে। ভবিষ্যতে এমন রোবট তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে যে কি না পরিচালিত হবে স্বয়ংক্রিয় উপায়ে। অর্থাৎ মানুষের মতো সেও ভাবনাচিন্তা করে কাজ করবে। সম্প্রতি জাপানের টোকিও রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানী ওসামু হাসেগাওয়া এমন একটি রোবট তৈরির কাজ শুরু করেছেন। নাম দেয়া হয়েছে সোইন।

ওসামু বলেন, এই রোবট বাস্তবলব্ধ জ্ঞান থেকে কাজ করবে। তার ভেতরেও প্রোগ্রাম থাকবে। কিন্তু সে বাইরের পৃথিবী থেকে শিখে সূক্ষ্মভাবে কাজ করবে বা সমস্যার সমাধান করবে।


কজ ওয়েব

ফিডব্যাক : sumonislam7@gmail.com
পত্রিকায় লেখাটির পাতাগুলো
লেখাটি পিডিএফ ফর্মেটে ডাউনলোড করুন
লেখাটির সহায়ক ভিডিও
চলতি সংখ্যার হাইলাইটস